কিছু মনের সত্যি কথা - অধ্যায় ৪২০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30209-post-5104248.html#pid5104248

🕰️ Posted on January 18, 2023 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 554 words / 3 min read

Parent
দূরের আলোগুলোর দিকে তাকিয়ে, এতক্ষণের চেপে রাখা কথাটা বলেই ফেলে মিলি। "বাবু, একটা কথা বলি? তুই আবার রাগ করিস না শুনে। কাকিমা তোকে নিয়ে খুব ওরিড থাকেন রে।" "ও মা! কেন?" অবাক গলা প্রীতির। "বুঝিসই তো… মা তো… কাকিমার তো চিন্তা হবেই। কাকিমা না থাকলে তোর কি হবে…" "হুম… বুঝি রে…" "প্রীতমটা যে এমন বদমাইশ হবে।" দাঁতে দাঁত চাপে মিলি। "ছাড়…যা হবার তো হয়েই গেছে।" ক্লান্ত স্বর প্রীতির। "তা বলে তোর মতো একজনের সঙ্গে… আর তুই ও একটা বোকার হদ্দ… অ্যালিমনি নিলি না কেন?" "কেন নেব ওর দয়ার দান? আমি তো নিজের পেট চালাতে পারি…" "তাও… একটা ভবিষ্যতের জন্য নিতে পারতিস।" "আমার লজ্জা লাগে রে… ও তো আমার ছিল না, তাহলে ওর টাকায় আমারই বা অধিকার থাকে কি করে?" "হুম! কিছু জমাচ্ছিস তো?" "তেমন কিছু না রে। জানিসই তো, আমার মাইনে খুব বেশি না… তারমধ্যে সংসার খরচ, মায়ের ওষুধ, ডাক্তার - চলে যাচ্ছে সেটাই অনেক…" আহা, কী বিপন্ন কন্ঠ! তবু, মিলিকে আজ কথা বলতেই হবে। বন্ধু হয়ে বন্ধুকে না বললে হয়? "তুই আরেকবার জীবন শুরু কর প্রীতি। তোর তো কোনো পিছুটান নেই… আবার শুরু কর! প্লিজ!" এর আগেও একবার দুবার এই কথা বলেছে মিলি। জানে, প্রীতির উত্তর কি হবে। "তুই কী পাগল হলি?" বা "বাবা,,একবার সুযোগ দিয়েই হলো না, আবার!" কিন্তু, এবার চুপ করে আছে কেন প্রীতি? "কি রে, রাগ করলি? আই অ্যাম স্যরি। আসলে…" ও কথা শেষ করার আগেই প্রীতি একটু হাসল। তারপর বলল "আসলে.. কিভাবে বলব জানি না… মানে… একজনের সঙ্গে কিছুদিন আগে আলাপ হয়েছে। বেশ ভাল লেগেছে আমার।" "আচ্ছা? সে কে? কি করে? কোথায় থাকে?" অনেক প্রশ্ন মিলির বুকে এখন। "বলছি বাবা, বলছি। সব বলব বলেই তো আরো এলাম আজ। ওঁর নাম শিবেন্দু। ঢাকুরিয়ায় বাড়ি। আই টি কোম্পানিতে আছে।" "কিভাবে আলাপ?" "ফেসবুকে। আমি মাঝে মাঝে একটা দুটো লেখা লিখি তো…সেটা পড়েই মেসেজ করেছিল… তারপর কথা হতো। দেখাও হয়েছে।" "তারপর?" "আই ডোন্ট নো, মিলি। বাট, অনেক, অনেকদিন পর কারো কথা, কারো শিক্ষা আমার ভাল লেগেছে।" লাজুক গলায় বলে প্রীতি। "ও ও কি ডিভোর্সি?" "না… বিয়ে করেনি। আমার থেকে একটু ছোটোও… বছর দুয়েকের…" "আর ইউ শিওর ও তোর সাথে খেলছে না? আর তোর রিলেশানশিপ স্টেটাস জানে?" তীক্ষ্ণ হচ্ছে মিলির স্বর। "হ্যাঁ হ্যাঁ, সব জানে। তুই তো জানিসই, আমি স্ট্রেইড ফরোয়ার্ড, কিছুই লুকোতে চাই না। তবে… আমার তো ওকে খুবই সিরিয়াস মনে হয়েছে। ওর মা বাবার সাথেও আলাপ হয়েছে।" "ওঁরা মেনে নিয়েছেন তোকে?" "হ্যাঁ… ওনারা নাকি ভাবতেই পারেননি, ওনাদের ভ্যাবলাকান্ত ছেলে কাউকে এ জীবনে নিজে নিজে পছন্দ করবে!" গলে যাওয়া হাসি এখন প্রীতির মুখে। শেষ চেষ্টা করে মিলি। "আর ইউ শিওর, এটা কোনো ফাঁদ না? বা, জাস্ট তোর শরীরের জন্য…" এবার জোরে হাসে প্রীতি। "ধ্যাত! বোকা মেয়ে। সেসব না। এই দু হাজার বাইশে, নিছক শরীরের জন্য সম্পর্কও কি কম হয়? এক্সট্রা ম্যারিটাল অ্যাফেয়ার তো ঘূনপোকার মতো ছেয়ে গেছে সমাজে… তবে জানি না ভবিষ্যতে কি হবে। আপাতত তো আমি জীবন যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে, সেদিকে ভাসছি…"। থমথম করছে মিলির বুক! এক্সট্রা ম্যারিটাল! হুঁহু! অদ্রীশ কোথায় থাকবে এই দু'দিন, ও কি জানে না? সব জানে। না চাইলেও মেনে নিতেও হয়। কিন্তু তা বলে যাকে 'বেচারা' ভাবে, ভেবে এসেছে - সে কিনা টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যাবে? আর, এমনি লাল -লাল, ব্লাশ করা মুখে, অনাবিল হাসতে হাসতে বলবে নতুন মানুষটির কথা? পুড়ে যাচ্ছিল বুকটা, মিলির। সময় নিয়ে, একটু থেমে, বলল "ওয়াও প্রীতি! আই অ্যাম। সো হ্যাপি! আয় এই খুশিতে আমরা আজ ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করি… আমি খাবার গরম করে আনছি এখানেই…" হ্যাঁ, এখানেই ডিনার হোক আজ। বড় আলো না, মোমবাতির আড়ালটুকুই বড্ড দরকার এখন মিলির… নিজের জন্যও… নিজের জন্যই....
Parent