কিছু মনের সত্যি কথা - অধ্যায় ৫১০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30209-post-5791486.html#pid5791486

🕰️ Posted on October 30, 2024 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 500 words / 2 min read

Parent
অণুগল্প   'দাদু, আমাকে পাঁচপাতা সেফটিপিন, পাঁচ প্যাকেট ন্যাপথলিন আর পাঁচটা চিরুনি দিন না..' 'সব পাঁচটা করে?' 'হ্যাঁ দাদু, বড্ড হারায় যে..' বলে, হরলিক্সের শিশির মতো মোটা কাঁচের চশমা পরা 'দাদু' কে টাকা দিয়ে রওনা হয় তৃণা। ভেবেছিল আজ মেট্রো থেকে নেমে অটো নেবে, কিন্তু বাস ই নিতে হবে..। টাকা কম আছে। কি করবে? হাজরা মোড়ে মাটিতে কাগজ বিছিয়ে জিনিস বিক্রি করা বয়স্ক মানুষ টাকে দেখেই মনে হচ্ছিল সকাল থেকে কিচ্ছু বিক্রি হয়নি ওঁর। আহা, বাসে আর কত ভিড় হবে! মানুষ টা যে একটু খুশি হলেন! জ্বলে উঠল লাল সবুজ টুনির রোশনাই। ************************** মাথা নিচু করে চেয়ারে বসেছিল শরণ্যা। ছোটকাকু টা যে কি! বলা নেই, কওয়া নেই, অফিসের কোন জুনিয়ারের বাবা মা কে এনে হাজির। ওনারা নাকি কাকুর মোবাইলে ওর ছবি দেখে 'আলাপ' করতে এসেছেন।আরে আলাপ না ছাতার মাথা! আসলে বিয়ের সম্বন্ধ। ওর মতো 'একদা ধর্ষিতা' মেয়ের এভাবে বিয়ে হওয়া সম্ভব? 'দাদা, আপনার মেয়ে কে বড্ড মনে ধরেছে আমাদের...' বাবা কে বললেন ছেলের মা। 'কিন্তু..আপনি কি জানেন..' 'দাদা, প্লিজ, রেপ সারভাইভার ও। একজন যোদ্ধা। ওকে আমরা সসম্ভ্রমে নিজের করে নেব।' এবার মুখ খুললেন ছেলের বাবা। অবাক চোখে তাকানো শরণ্যা আর হাসি হাসি মুখে, স্মিত চোখে ওর দিকে তাকানো ছেলেটির চোখে তখন ভাললাগার, ভালোবাসার তুবড়ি। ************************** 'কালু আঃ আঃ' পাড়ার ছেলেদের মুখে ডাক শুনে ডাক শুনে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আসে কালু। কদিন আগের টানা বৃষ্টিতে একটা বাড়ির সিঁড়িতে বসেছিল বলে মার খেতে হয়েছে ওকে। 'কালু, তোর খুব লেগেছে না? স্যরি। এই পাড়ার সবাই মিলে আমরা ঠিক করেছি এবার কোনো শব্দবাজি ফাটাবো না, যাতে তোদের কারো অসুবিধা না হয়..' বলল ছেলেগুলো। কালুর গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে। কালু ভালবাসার স্পর্শ বোঝে, তাই লেজ নাড়িয়ে দিল। দু পেয়ে আর চার পেয়ে দের ভালবাসায় জ্বলে উঠল তারাবাজির ঝিকিমিকি। ************************** 'দাদা ওই মিষ্টির দোকানে দাঁড় করান তো' বিপুল বপু ভদ্রমহিলা রিক্সা থেকে নেমে ঢোকেন দোকানে। আজ বেজায় ভিড়। ভাইফোঁটা বলে কথা। আর রোদ ও উঠেছে বেশ কড়া আজ। গামছা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হাওয়া খেতে খেতে ভাবছিলেন রিক্সাচালক শম্ভু। হঠাৎ দেখেন, সওয়ারি ভদ্রমহিলা এলেন, হাতে বড় একটা হাঁড়ি, দুটো প্লাস্টিকের প্যাকেট। তাড়াতাড়ি সিট থেকে নেমে ওনাকে সাহায্য করতে যায় শম্ভু। 'থ্যাংকইউ দাদা' মিষ্টি হেসে বলেন উনি। তারপর একটা প্লাস্টিকের প্যাকেট ওনার হাতে তুলে দিয়ে বলেন 'এই যে দাদা, এটা আপনার...এত গরম, তার মধ্যে সকালে বেরিয়েছেন নিশ্চয়ই। খেয়ে নেবেন, কেমন?' 'না না দিদি লাগবে না' লজ্জা পেয়ে বলে শম্ভু। 'দিদি বললে তো? তবে তো আজকের দিনে দিদির কথা শুনতেই হবে'! হাসতে হাসতে বলেন উনি। শম্ভু তাকায় ওনার দিকে। ভাইবোনের ভালবাসার চিরন্তন চরকি দুজনের মুখে। ************************** 'এই যে, কি যেন নাম তোমার? বাসনা?' গিন্নিমার মুখে নিজের নাম শুনে দুরু দুরু বুকে এগিয়ে আসে বাসনা। রান্নার কাজে সাহায্য করার জন্য আজ ও এসেছে এই বাড়িতে। সেন্টার থেকে একজনের বদলি হিসেবে। 'এই যে এই ডিব্বাটা বাড়ি নিয়ে যাও। কাল আসার সময় আনবে কিন্তু মনে করে। 'কিন্তু মাসিমা..' 'শোনো মেয়ে, আমার বাড়িতে হেল্প করলে তুমি, নিজের বাড়িতে নিশ্চয়ই রান্না করার সময় পাও নি? যাও, নিয়ে যাও...' তাকিয়ে থাকে বাসনা, অন্যকাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া 'মাসিমা'র দিকে। মানুষটা সারাদিন ওকে কাজ করিয়েছেন, বকাঝকাও করেছেন, কিন্তু মন টা যে মাটির প্রদীপের মতো! ************************** সম্পর্কের এই রোশনাই থাকুক সবার জীবনে প্রতিক্ষণ। ভাল থাকুন সক্কলে। শুভ দীপাবলি এবং ভাতৃদ্বিতীয়ার শুভেচ্ছা...।।
Parent