নাম না জানা এক সম্পর্কের গল্প (দেয়ালের ওপারে) - অধ্যায় ১১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-51218-post-5060568.html#pid5060568

🕰️ Posted on December 13, 2022 by ✍️ Bangla Golpo (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1775 words / 8 min read

Parent
পর্ব -১১          সাত্যকি একটা ক্যাফেতে বসে আছে। তার সামনে বসে আছে জয়। সে ছবি দেখে যা ভেবেছিল, তারচেয়ে মানুষটা একটু খাটো। নাকের নিচে একগুচ্ছ গোঁফ। গোঁফটা ঠিক মুখের সাথে মানাচ্ছে না। কেমন অদ্ভুত দেখাচ্ছে। ওভারল সবকিছু মিলে ভালো, সে মনে করল।         "আপনি স্বচ্ছন্দবোধ করছেন না বোধ হয়!"         জয়ের প্রশ্ন শুনে সাত্যকি বলল, " আসলে সেরকমটা না।"          "কি খাবেন বলুন?" জয় জিজ্ঞেস করলো।          "সরি, কিছু মনে করবেন না। আমি এখন কিচ্ছুই খাবো না।" সাত্যকি উত্তর দিলো।         "ক্যাফেতে এসে না খেয়ে চলে যাওয়াটা, কেমন দেখাবে না?"         "আপনি নিজের জন্য কিছু নিন। আসলে আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না।"          "সেটা কি করে হয়? আপনি না খেলে আমি কি করে খেতে পারি!"          সাত্যকি কিছু একটা ভেবে জয়কে বলল, "আচ্ছা, আপনি যা খাবেন সেটাই অর্ডার করুন, আর আমি শুধু এক কাপ কফি নিবো, এর বেশিকিছু না। প্লিজ আর জোর করবেন না।"          "আচ্ছা, সমস্যা নেই।" জয় মাথা নেড়ে বলে ওয়েটারকে ডেকে খাবার অর্ডার করে দিলো।          জয়ের সাথে আজই সাত্যকির প্রথম দেখা। আগে অবশ্য দুই একবার ফোনে আলাপ হয়েছে তাদের। হঠাৎ একদিন সাত্যকির বাবা তাকে ফোন দিয়ে জয়ের কথা জানায়। ছেলেটা ভালো। সবাই পছন্দ করেছে। এখন তুই পছন্দ করলে বিয়ের কথা সামনে আগাবো আমরা। সাত্যকির বাবা ফোনে তাকে কথাগুলো বলে। সে ফোনে জয়ের একটা ছবি পাঠিয়ে দেয়। জয়ের ছবি দেখে সাত্যকির অপছন্দ হয় নি। কিন্তু একটা মানুষের ছবি দেখে সেই মানুষটার সম্পর্কে কতটুকু আর জানা সম্ভব। সে চেয়েছিল, জয়ের সাথে দেখা করে সে সিন্ধান্ত নিবে। কিন্তু সেই কথা তাকে বলতেই হয় নি। জয়ই তাকে জানায়, সে দেখা করতে চায়। যদি সাত্যকির কোনো সমস্যা না থাকে। সাত্যকি চেয়েছিল, তাই সে আর না করে নি।          "আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। আমার অনার্স শেষ হতে কয়েকমাস মাত্র বাকী। তারপর মাস্টার করার ইচ্ছে আছে। কিন্তু বাবা যদি বিয়ের কথা বলে, আমি আমার বাবাকে না করতে পারবো না। আমি বাবার মুখের উপর কখনো কথা বলতে পারি না? ছোট বেলা থেকেই বাবা যা বলে এসেছে আমাকে তাই করতে হয়েছে। তাছাড়া সবচেয়ে বড় কথা হলো, বাবাসহ আমার বাসার সবাই আপনাকে পছন্দ করেছে। আপনাদের পরিবারও ভালো। আমি জানি, বাবা যেহেতু আপনাকে পছন্দ করেছে, সেহেতু এখানে আমার পছন্দ অপছন্দের তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। শেষ মুহুর্তে বাবার সিন্ধান্তই মেনে নিতে হবে আমাকে। প্লিজ, আপনি কিছু একটা করুণ।" সাত্যকির কন্ঠে করুণার সুর। একটানা কথাগুলো বলার কারণে তার গলা শুকিয়ে গেছে। টেবিলে থাকা পানির গ্লাসটা ধরে একবারে ঢকঢক করে পুরো গ্লাস খালি করে ফেলল সে।          "সাত্যকি!"          "জি বলুন।"         "যদি আমাকে আপনার পছন্দ না হয় তাহলে আমিও চাইনা এই বিয়েটা হোক? বাবা-মায়ের কথায় চোখ মুখ বন্ধ করে কোনো মেয়ের বিয়ে করা উচিত না, বলে আমি মনে করি। কারণ বিয়ের পর কোনো বাবা-মা সংসার করবে না। তাদের মেয়েকেই করতে হবে। তাই এখানে সর্বপ্রথম একে অন্যকে পছন্দ করাটা জরুরি। যাতে পরে এটা নিয়ে কোনো সমস্যা না হয়।" এটুকু বলে কিছুটা সময় থেকে জয় আবার বলল, "তাছাড়া যদি অন্য কোনো কারণ থাকে আপনার তাহলে আপনি চাইলে আমার সাথে নির্দ্বিধায় শেয়ার করতে পারেন। মানে আমি বুঝাতে চাচ্ছি, যদি আপনি অন্য কাউকে পছন্দ করে থাকেন তাহলে সেটা নির্দ্বিধায় আমাকে বলতে পারেন। আমি কিছু মনে করবো না। যতটা সম্ভব আমি আপনাকে সাহায্য করবো।"          "বিশ্বাস করুণ, আমার অন্য কোনো কারণ নেই। তাছাড়া আপনাকে অপছন্দ করার মত তেমন কিছু দেখছি না। কিন্তু আমি এই মুহুর্ত বিয়ে করতে চাচ্ছি না।"          "যাক ভালোই হলো। আসলে আমিও চাচ্ছি না।"          "কি, চাচ্ছেন না?" সাত্যকি কিছুটা অবাক হলো।          "বিয়ে করতে৷" জয় উত্তর দিলো।          জয়ের কথায় সাত্যকি অনেকটা আশ্বস্ত হলো। তার মুখে হাসি ফুটেছে। জয় সেটা লক্ষ করল। জয় বলল, "কিন্তু এখন চাচ্ছি না মানে এটা নয় যে বিয়ে করতে চাই না। আমি আসলে সব কথা সরাসরি বলতে পছন্দ করি। তাই সরাসরি বলছি আপনাকে।" জয় কিছুটা সময় নিলো। সে তার কথাগুলো গুছিয়ে নিলো। সে বলল, "দেখুন, আজকাল কম বেশি সবারই কোনো না কোনো অতীত থাকে। আমার যে একদমই নেই, এটা বললে মিথ্যে বলা হবে। আর আমি চাইনা কোনো নতুন সম্পর্কের শুরুটা হোক মিথ্যে দিয়ে। আমি এটাও চাইনা, এই কথাগুলো আপনি বিয়ের পরে কোনো ভাবে জানতে পারেন। কারণ তখন জানা, আর এখন জেনে সিন্ধান্ত নেওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য।"          জয় থামল। সাত্যকিও কোনো কথা বলল না। সে জয়কে সময় দিলো তাকে তার কথা গুছিয়ে নিতে।          "একটা মেয়ের সাথে আমার রিলেশন ছিলো। অনেক দিনের। তিন বছরের মত। গত বছরই আমাদের ব্রেক আপ হয়ে যায়। মাস খানেকের মধ্যেই তার বিয়েও হয়ে যায়। আমি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এতোদিনে ভুলেও গেছি। তবুও আমি আরো কিছুটা সময় নিতে চাচ্ছি কারণ আমি চাইনা কাউকে ঠকাতে। যদি সম্পূর্ণভাবে কাউকে মন থেকে না চাইতে পারি তাহলে তার সাথে কোনো সম্পর্কে জড়ানো উচিত না, আমি এটা বিশ্বাস করি। এছাড়া আমাদের উচিত প্রতিটা সম্পর্ককে মূল্যায়ন করা। মানুষটাকে সম্মান করা। আরো একটা কারণ হলো, বিয়ে নিয়ে আমি তারাহুরো করতে চাচ্ছি না। যাকে বিয়ে করবো, তাকে আগে জানতে চাই, বুঝতে চাই। বয়সের সাথেসাথে মানুষের মধ্যে পরিপক্বতা আছে। তাই এখন ভুল করলে সেই ভুলটা শোধরানো সম্ভব হয়ে উঠে না। এই কারণে আমি তারাহুরো করে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চাই না।"           সাত্যকি মুগ্ধ হয়ে জয়ের কথাগুলো শুনলো। মানুষটা কি সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে। প্রথম দেখেই জয়কে যেরকম মনে করেছিল তার, সে হয়তো তারচেয়ে ভালো। একটা মানুষ যখন সম্পর্কে গুরুত্ব বুঝে, সম্পর্কটাকে মূল্যায়ন করতে জানে, তার সাথে চোখ বন্ধ করে সারাজীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়, এটা সাত্যকির বিশ্বাস। সে মনে করে, বর্তমানে যদি কেউ তাকে সম্পূর্ণ ভাবে ভালোবাসে তাহলে সেটা তার জন্য যথেষ্ট। অতীত নিয়ে তারও কোনো মাথাব্যথা নেই।          "কিছু বলছেন না যে?" সাত্যকিকে চুপচাপ থাকতে দেখে জয় জিজ্ঞেস করলো।         "অতীত নিয়ে আমিও ভাবিনা। আমরা ভুল করি। মানুষ মাত্রই ভুল করবে। মানুষ যখন কোনো সম্পর্কে সৎ থাকে, অটুট বিশ্বাস রাখে, একে অন্যকে বুঝে উঠে, তাহলে সেই সম্পর্কে কখনো ভাঙ্গন ধরে না।"         "আপনি ঠিক বলেছেন। আমি এটাই বিশ্বাস করি। আপনার চিন্তাভাবনা সাথে আমার অনেক মিল।" জয় কথাটা বলে হাসলো। সাত্যকি সেটা লক্ষ করল। সেও জয়ের হাসির সাথে তাল মিলিয়ে মুচকি হাসল।          তারা খেতে খেতে আরো বেশ কিছুক্ষণ গল্প করল। চলে যাওয়ার সময় হলে জয় একটা রিকসা ঠিক করে দেয় সাত্যকিকে। সাত্যকি বিদায় নিলে, রিকসা চলতে শুরু করে। তখনি জয় দৌড়ে এসে রিকসা থামিয়ে সাত্যকিকে বলল, "আমি কি বাসায় বলতে পারি, আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে?"          সাত্যকি কোনো উত্তর দিলো না। অবশ্য তার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। জয় তার মুখের হাসি দেখেই বুঝে গেছে সাত্যকি তাকে পছন্দ করেছে। সে আবার বলল, "বিয়ে নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। বিয়েটা পরেই হবে। আমি বাসায় কথা বলল।"          "ধন্যবাদ।" কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল সাত্যকি। তারপর সে আবারো জয়ের কাছ থেকে বিদায় নিলো। তবে এবার যাওয়ার আগে সে বলল, "এভাবে আর দৌড়ে আসবেন না। আমার নাম্বার-তো আছেই আপনার কাছে। যে কোনো সময় চাইলেই ফোন দিতে পারেন। সমস্যা নেই।"          জয় মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিলো। ঠোঁটে হাসি। সাত্যকি চলে যাচ্ছে। জয় দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে বিদায় দিয়ে যাচ্ছে। সাত্যকিও দূর থেকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। তার মুখেও হাঁসি। চোখের আড়াল হওয়ার আগ পর্যন্ত জয় এক দৃষ্টিতে সাত্যকির চলে যাওয়া দেখল।          সাত্যকির সাথে কথা বলা ক্রমশ বাড়তে থাকলো। সময়ের সাথে তাদের সম্পর্ক অনেকটা গাড় হলো। দুইজন একে অন্যকে আরো খানিকটা জানলো। ভালোবাসতে শুরু করলো।          জয় আজকাল প্রায়ই অফিস শেষে সাত্যকির সাথে দেখা করতে আসে। সাত্যকিকে একদিন না দেখতে পেলে সে অস্থির হয়ে উঠে। সাত্যকি হলে থাকার কারণে জয় তার সাথে বিকাল কিংবা সন্ধ্যায় দেখা করতে এলে সাত্যকির বন্ধুদের সাথে প্রায় তার দেখা হয়ে যায়। এতোদিনে সে সবার নাম জেনে গেছে।          জয় একদিন সাত্যকিকে বলল, "তোমার বন্ধুগুলো চমৎকার। আজকাল এরকম বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।"          জয়ের কথা শুনে সাত্যকি অনেক খুশি হয়। তার মাথা থেকে একটা দুশ্চিয় দূর হয়ে যায়। আজকাল খুব কম মানুষই আছে যারা মেয়েদের ছেলে বন্ধদের সহজে মেনে নেয়। সেই অল্প কিছু মানুষের মধ্যে জয় একজন। অবশ্য জয় সহজে মেনে নেওয়া আরেকটা কারণ তার বন্ধুরাও ভালো। সে এরকম বন্ধু পেয়ে আসলেই ভাগ্যবান।          সাত্যকি খুশি মনে তার বন্ধুদের কথা প্রায়ই জয়কে জানায়। প্রায় চার বছর একসাথে কাটানো ভালো মুহুর্ত, আনন্দ, দুষ্টুমি, সবকিছু জয়ের সাথে সে শেয়ার করে। রুদ্রের কথা, ইরিনার কথা, ফাহিমের কথা, রিয়ার কথা একটু বেশি বেশি বলে। তার আরো কিছু বন্ধু আছে। কিন্তু সকল বন্ধুদের মধ্যে এই কয়জন একটু বেশি আপন। জয় সে-সব গল্প শুনে যায়। সাত্যকির আগ্রহ নিয়ে বলা কথাগুলো জয় মনোযোগ শ্রোতার মত করে শুনে। আসলে তার ভালো লাগে। সাত্যকির কথা শুনতে ভালো লাগে। সাত্যকি সারাক্ষণ তার কন্ঠে গুনগুন শব্দ করলেও জয়ের তা শুনতে ভালো লাগে। কখনো তার বোরিং লাগে না। কখনোই না। এটা কি ভালোবাসা?         সময়ের সাথে সাথে সাত্যকির বন্ধুদের সাথে জয়েরও বন্ধুত্ব হয়ে গেলো। তারা আজকাল একসাথে বসে আড্ডা দেয়। চা খায়। গল্পে মেতে উঠে। মজা করে, দুষ্টুমি করে। সাত্যকির বন্ধুরাও জয়কে মেনে নিয়েছে। সবাই-ই জয়কে পছন্দ করে। একজন বড় ভাইয়ের মত। সে আবার বন্ধুর মত। সবাই টুকটাক নিজেদের সমস্যা কথা জয়ের সাথে শেয়ার করে। জয় যতটা সম্ভব পরিস্থিতি, বাস্তবতা কিংবা সেই পরিস্থিতি কি করণীয় সেটা বুঝিয়ে বলে। একজন বড় ভাইয়ের মত ভরসা দেয়। নির্ভরতার বট বৃক্ষ হয়ে উঠে ক্রমশ সবার কাছে।          জয়ের জীবনে এমন পরিবর্তন দেখে সে নিজেই অবাক হয়। তার ছাত্রজীবন কেটেছে একাকিত্বে। সে খুব গোছানো স্বভাবের ছিলো। সবার সাথে মিশতে পারতো না। মন খুলে কারো সাথে কথা বলতে পারতো না। মূলত জয় অনেকটা ইন্ট্রোভার্ট টাইপের মানুষ ছিলো। তাই তার বন্ধুদের সংখ্যা কম ছিল। সবসময় একা একা থাকতে পছন্দ করতো। ক্যাম্পাসে আসতো, ক্লাস করে আবার চলে যেতো।          সেকেন্ড ইয়ারে উঠেই সে হুট করে একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে যায়। কাকতালীয় ভাবে তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে। দুইজন আলাদা মানুষ। একে অন্যের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। আশ্চর্যের বিষয়, তাদের সম্পর্কটা তিন বছর ছিলো। ক্যাম্পাসের সবাই বলতো, এই সম্পর্ক ছ'মাসও ঠিকবে না। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণিত করে তাদের সম্পর্ক ঠিকলো তিন বছর। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বর্তমানে জয়ে সেই সব নিয়ে আর ভাবে না। সে সাত্যকিকে পেয়েছে। সে একগুচ্ছ বন্ধু পেয়েছে। তার এখন প্রায়ই ইচ্ছে করে সাত্যকিদের সাথে ক্লাস করতে, ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে, হুটহাট পাগলামি করতে। কিন্তু সে পারে না৷ সে সেই সময়টা কাটিয়ে এসেছে। এবং নিজের ভেতর গুটিয়ে থেকে কাটিয়েছে। সে অবশ্য এটুকুতেই খুশি। এখন তার অনেকগুলো বন্ধু হয়েছে, ভালোবাসার মানুষ হয়েছে।         জয়ের এই পরিবর্তনটা শুরু হয় তখন থেকেই। বছরখানেক আগে তার ব্রেক আপ হলে সে সম্পূর্ণভাবে বদলে যায়। এদিকে জব লাইফে এসে নতুন পরিবেশে সাথে মানিতে নিতে হয় তাকে। প্রথম দিকে সে বিভীষিকার মধ্যে পড়ে যায়। কিন্তু সে আস্তে আস্তে সব কিছু গুছিয়ে নেয়। নিজেকে পরিবর্তন করতে শুরু করে। এবং অবশেষে সবকিছু মিলে সে নিজের স্বভাবটা পরিবর্তন করে ফেলে। মানুষের সাথে মিশতে শুরু করে। মন খুলে কথা বলতে শুরু করে। হাসিখুশি থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করে। সে জীবন থেকে অনেক কিছু শিখেছে। বাস্তবতার কঠিন সমীকরণ তাকে এক্সট্রোভার্ট হতে সাহায্য করেছে। সে জীবনের কাছে আর নিজেকে সমর্পণ করতে চায় না। মানুষ ভুল করে সেটা থেকে না শিখলে তাকে সারাজীবন কষ্টই পেতে হয়।          সাত্যকির পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার ব্যস্ততার কারণে বেশকিছু দিন সাত্যকি জয়ের সাথে দেখা করেনি। ফোনেও কথা বলা কমিয়ে দিয়েছে। জয় বুঝে। তবুও আজকাল সে চায় সাত্যকিকে দ্রুত বিয়ে করতে। তাকে সম্পূর্ণ ভাবে নিজের করে নিতে। তার নিজের কাছে নিয়ে আসতে চায়। এই সামান্য দূরত্ব সে সহ্য করতে পারে না। সে আর কোনো দূরত্ব চায় না। কোনো লুকোচুরি চায় না। কিন্তু পরক্ষণে সাত্যকিকে বলা তার কথাগুলো মনে পড়ে। সে তাকে কথা দিয়েছিল, পড়াশোনা শেষ হলেই সে বাসায় বিয়ের কথা বলবে। কিন্তু সে আর অপেক্ষা করতে পারছে না। সাত্যকি বুঝেনা কেনো, এই অপেক্ষা তাকে কতটা যন্ত্রণা দেয়। এটা নিয়ে জয়ের রাগ হয়। অভিমান হয়। তবুও সে অপেক্ষা করে। এই অপেক্ষায় মধ্যে যেমন যন্ত্রণা আছে, তেমন অদ্ভুত একটা আনন্দ আছে, ভালোবাসা আছে।  চলবে...!
Parent