নাম না জানা এক সম্পর্কের গল্প (দেয়ালের ওপারে) - অধ্যায় ১৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-51218-post-5082162.html#pid5082162

🕰️ Posted on December 30, 2022 by ✍️ Bangla Golpo (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1745 words / 8 min read

Parent
 পর্ব- ১৪           রিয়া ক্লাস শেষ করে সবেমাত্র ক্যান্টিনে ঢুকলো। ভেতরে যেতেই সে দেখলো, রুদ্র এক কোনে বসে আছে। কোনো কিছু ভাবার আগেই সে রুদ্রের টেবিলের সামনে গিয়ে বসতে বসতে বলল, "কেমন আছো, রুদ্র।"          "ভালো আছি। তুমি?"         "এইতো চলে যাচ্ছে। মন খারাপ?"         "না!"          "তোমাকে দেখে কিন্তু সেরকমটা মনে হচ্ছে না।"         "দেখে কি মনে হচ্ছে?"          "তোমার মন খারাপ।"          "আসলে তেমন কিছু না।"         "কোনো সমস্যা থাকলে তুমি চাইলে আমাকে বলতে পারো। তোমার সাহায্যে আসলেও আসতে পারি। মাঝেমধ্যে আমরা আকস্মিক ভাবে এমন কারো থেকে সাহায্য পেয়ে যায়, যেটা আগে কখনো আমরা ভাবতে পারি না। তাই...!"          রিয়া কথা শেষ করতে পারলো না। রুদ্র বলল, "আসলে তেমন কিছুই না। আর তোমার কোনো সাহায্য লাগছে আমি নিজেই সেটা বলবো।"          "চা খাওয়াবে তো আমাকে?" কথার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে রিয়া বলে।         "অবশ্যই, কেনো নয়।" রুদ্র হাসিমুখে উত্তর দেয়।         রুদ্র চায়ের অর্ডার দিলো। রিয়াকে দেখে রুদ্র আজকাল অবাক হয়। মেয়েটার মধ্যে হঠাৎ এতো কনফিডেন্স কিভাবে এলো? যে মাসখানেক আগে তাকে দেখে নার্ভাস হয়ে যেতো, সে ইদানিং কি দারুণ আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলে। ব্যাপারটা রুদ্র হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে লক্ষ করেছে। রুদ্রের অবশ্য ভালোই লাগে এই রিয়াকে। রিয়ার এই পরিবর্তন রিয়ার ব্যক্তিত্বকে অনেকটা পরিবর্তন করে দিয়েছে।         রিয়া অবশ্য সবার সাথে এমনই ছিলো। একমাত্র রুদ্রের কাছে এলেই সে শিশু হয়ে যেতো। কিন্তু সে ধীরে ধীরে এটা কাটিয়ে উঠেছে। যাকে ভালোবাসি তাকে দেখা নার্ভাস হলে কি চলে? রিয়ার হঠাৎ একদিন কথাটা মনে হল। সেদিন থেকেই সে ঠিক করল, না সে আগে রুদ্রের ভালো বন্ধু হয়ে উঠবে। তাকে কাছ থেকে আরো জানবে, বুঝবে। এভাবে সারাক্ষণ ভয় পেয়ে থাকলে সে কখনোই রুদ্রের কাছাকাছি আসতে পারবে না। সেই জন্যই তার এই পরিবর্তন।          রিয়া একদিন রুদ্রকে হঠাৎ তুমি করে বলতে শুরু করে। রুদ্র তারপরও কয়েকবার আপনি বললেও, তার কাছে বিষয়টা বেমানান লাগছিল। তাই সেও আবার তুমি বলতে শুরু করে।          আজকাল রিয়া নিজ থেকেই রুদ্রকে মেসেজ দেয়, ফোন করে। রুদ্র বিরক্ত হলো কি হলো না, সেই ব্যাপারে সে ভাবে না। যাকে ভালোবাসি, তাকে যদি একটু বিরক্তই না করতে পারলাম তাহলে ভালোবেসে লাভ কি? রিয়া আর কোনো কিছু নিয়ে ভাবে না। ভয় পায় না।          "আজকের মত ক্লাস শেষ?" রুদ্র জিজ্ঞেস করল।         রিয়া তখনো চা খাচ্ছিল। সে বলল, "হ্যাঁ, আজকের মত ক্লাস শেষ। তোমার ক্লাস নেই।"         "একটা আছে, কিন্তু সেটা করার ইচ্ছে নেই।"          "চলো তাহলে নিউমার্কেটের দিক থেকে ঘুরে আসি। আমার কিছু বই কেনা দরকার। কিন্তু একা একা বলে কয়দিন ধরে যাওয়া হচ্ছে না। প্লিজ রুদ্র, না বলো না।"          রিয়া রিতীমত অনুরোধ করে যাচ্ছিল। রুদ্র শেষমেষ রাজি হয়ে গেলো। তারা দুইজন ক্যাম্পাসের ভেতর থেকেই একটা রিকসা নিয়ে নিলো। রিকসায় উঠে রিয়া এটা সেটা নিয়ে নানা কথা বলে যাচ্ছিলো। হঠাৎ আগের বারের একসাথে রিকসায় যাওয়ার ঘটনা মনে পড়ে গেলো রুদ্রের। সে বলল, "গতবার কি কান্ড ঘটিয়েছিলে মনে আছে?"          রিয়া তাৎক্ষণিক বুঝলো না। সে জিজ্ঞেস করল, "কোন বার?"         "ভুলে গেলে, ইরিনাকে দেখে হাসপাতাল থেকে ক্যাম্পাসে রিকসায় আসার কথা।"          রিয়ার সেই ঘটনা মনে পড়তেই তার খানিকটা লজ্জা লাগলো। সে বলল, "হ্যাঁ, আমি প্রচন্ড নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। প্রথমবার তোমার সাথে রিকসায় উঠেছিলাম কি-না।"          "এখন নার্ভাস লাগছে না?"         "না!" ছোট্ট করে রিয়া তাৎক্ষণিক উত্তর দিলো।         "কেনো?"          রুদ্রের এই প্রশ্নের উত্তর রিয়ার কাছে নেই। কিন্তু তার এখন রুদ্রকে দেখলে নার্ভাস লাগে না। ভয় লাগে না। কোনো জড়তা কাজ করে না। সে এখন সবার মতই রুদ্রের কাছেও সাবলীল।          "তোমাকে শাড়িতে সুন্দর লাগে।"  রিয়া কথাটা তাৎক্ষণিক ঠিক বুঝে উঠতে পারলো না। সে তো শাড়ি পরেই নেই। তখনই তার মনে পড়লো, সে সেদিন শাড়ি পরে ছিল। রুদ্র হয়তো সেদিনের কথাই বলছে।          "শাড়ি বুঝি তোমার পছন্দ?"         "কোন ছেলের শাড়ি পছন্দ নয়? ছেলেদের তো ওই একটাই দূর্বলতা, শাড়ি।"          তারা চলে এসেছে নীলক্ষেত। রিয়া দোকান ঘুরে ঘুরে বই দেখছে। রুদ্রও দুই একটা বই হাতে নিয়ে দেখছে। হঠাৎ রিয়া বলল, "তুমি বই পড়তে পছন্দ করো?"          "তেমন একটা পড়া হয়না।" রুদ্র বলল।          "আমি আবার ভীষণ পছন্দ করি। প্রতি মাসেই বই কেনা হয় আমার। অবসর সময়টা বই পড়ে কাটাতে ভালো লাগে।" রিয়া আগ্রহ নিয়ে কথাগুলো রুদ্রকে বলে।          "ওহ আচ্ছা।" রুদ্র ম্লান গলায় বলে।          রুদ্রের ভালো লাগছে না। সেটা সে রিয়াকে বলতেও পারছে না। মেয়েটা এতো আগ্রহ নিয়ে বই দেখছে, এই মুহুর্তে চলে যাওয়ার কথা বলাটা কেমন দেখায়। রুদ্র বিরক্ত হলেও রিয়াকে কিছু বলল না।          রিয়া বেশকিছু বই কিনেছে। রুদ্র সে সব বইয়ের নাম আগে কখনো শুনেনি। আসলে তার গল্প-উপন্যাসের বইয়ের প্রতি আগ্রহ কম। মানুষ কিভাবে এতোটা সময় নিয়ে বই পড়ে তার বুঝে আসে না।          "এই বই দুইটো তোমার।" তারা রিকসা করে রিয়ার বাসার দিকে যাচ্ছে। তখনই রিয়া দু'টো বই রুদ্রের দিকে এগিয়ে দিয়ে কথাটা বলল।          "এইসবের কোনো দরকার নেই। আর আমি বই তেমন একটা পড়ি না। বাসায় বেশকিছু বই পড়ে আছে, সেগুলো উপর শুধু ধুলো জমছে, কখনো খুলে দেখা হয়নি। এগুলো নিলে, এগুলোর অবস্থাও হয়তো ওদের মতই হবে। তারচেয়ে বরং তোমার কাছেই যত্নে থাকুক।" রুদ্র বলল।          "এগুলো তোমার জন্যই কিনেছি। এই দু'টো বই আমার পড়া, এবং আমার ভীষণ পছন্দেরও। সেই কারণেই তোমাকে দিচ্ছি। প্লিজ না করবে না। পড়তে হবে এমন না, তবে পড়লে আমি ভীষণ খুশি হবো। এছাড়াও বই দু'টো পড়লে তোমারও ভালো লাগছে।"          রিয়ার জোরাজোরিতে রুদ্র শেষমেশ বই দুটো নিলো। তারপর তাদের মধ্যে পরে তেমন একটা কথা হলো না। রিয়া আগ্রহ নিয়ে কয়েকটা কথা বললেও রুদ্রের নিষ্প্রাণ উত্তরে রিয়া আগ্রহ হারিয়ে ফেলল।          রুদ্র এখন দাঁড়িয়ে আছে রিয়ার বাসার সামনে। রিয়া বিদায় নিয়ে চলে যেতে যেতে কিছু একটা ভেবে রুদ্রকে আবার ডেকেছে। রুদ্র হেঁটে কিছুটা দূরে চলে গিয়েছিল। রিয়ার ডাক শুনে সে ফিরে এসে বলল, "কিছু বলবে?"         "উঁহু।"         "কী?"         "তোমাকে সেদিন কুরিয়ারের অফিসের ওদিকটায় দেখেছিলাম। কোনো কাজে গিয়েছিলে?"         "হ্যাঁ, কুরিয়ার অফিসে একটা কাজ ছিলো। অবশ্য আমিও তোমাকে দেখেছি সেদিন।"         "তাই!" রিয়া অবাক হলো। সে আবার বলল, "আমাকে-তো ডাকলেই পারতে।" রিয়ার কিছুটা আপসেট হয়ে শেষ কথাটা বলল।         "আসলে তখন মন মেজাজ বড্ড খারাপ ছিলো।"         "কি দরকারে গিয়েছিলে?" রিয়া সরাসরি জানতে চাইলো।         রুদ্রের এখন ইচ্ছে করছে না সেই সব কথা রিয়েকে বলতে। তার কারণ কথা বাড়ালে তরুর প্রসঙ্গ চলে আসবে। এবং রিয়া সেটা ভাল ভাবে নিবে না।         "কি হলো?" রুদ্রকে আবার জিজ্ঞেস করে সে কিছুটা সময় থামলো। তারপর সে নরম কন্ঠে আবার বলল, "কোনো সমস্যা থাকলে আমাকে বলতে পারো। আমার পরিচিত একজন আছে ওখানে জব করে। যদি তোমার কোনো সাহায্যে আসতে পারি, তাহলে আমি খুশি হবো। বরং আমার ভালোই লাগবে৷"          রিয়ার কথা শুনে রুদ্র হঠাৎ কিছুটা আশার আলো দেখলো। সে প্রথমেই রিয়াকে জিজ্ঞেস করল, "সে তোমার কি রকম পরিচিত?"         "আমার কাজিন, ওখানে জব করে।"          রুদ্র তার মনে মনে কথাগুলো গুছিয়ে নিলো। সে বলল, "আসলে সেদিন আমি গিয়েছিলাম ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে। কিন্তু সকাল থেকে অপেক্ষা করে গেলেও ম্যানেজার সেদিন আসে নি। পরে রাগ করে আর যায়নি। কাল পরশু আরেকবার যাবো বলে ভেবে রেখেছিলাম।"          "কি জন্য ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে চাচ্ছো?" রিয়া আবারো সরাসরি রুদ্রকে জিজ্ঞেস করল।         "একটা মেয়ে নিয়মিত আমাকে চিঠি দেয়, সেটা নিশ্চয়ই তুমি জানো?"         "হ্যাঁ, তরু নামের একটা মেয়ে।"          "হ্যাঁ। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে...!" রুদ্র থামলো। সে তার কথাগুলো গুছিয়ে আনতে পারছে না অদ্ভুত কারণে। কীভাবে গুছিয়ে রিয়াকে কথাগুলো বলবে সেটাই ভাবছে। রিয়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে রুদ্রের সামনে। সে বুঝতে পেরে রুদ্রকে তাড়া দিলো না।          "তরু আগে রেগুলার চিঠি দিলেও ইদানিং অনিয়মিত ভাবে চিঠি দিচ্ছিলো। কোনো মাসে একটা আবার কোনো মাসে একটা ও না। আমি কোনো কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। সেই কারণে তরুর খোঁজে কুরিয়ার অফিসে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখান থেকে কিছুই জানতে পারিনি। অনেক রিকোয়েস্ট করার কারণে, সেখানের একজন ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে বলে। আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেদিন উনি আসে নি। আসলে তরুর ঠিকানা জানাটা আমার খুব দরকার।" রুদ্র সম্পূর্ণ কথা রিয়াকে জানালো না। যতটা প্রয়োজন মনে করেছে ততটুকু জানালো।          রিয়া সবটা মনোযোগ দিয়ে শুনলো। সে বলল, "তুমি চাইলে আমি আমার কাজিনকে বলে দেখতে পারি। যদি কোনো ভাবে কিছু জানা যায়।"         "হ্যাঁ, অবশ্যই।" রুদ্রের চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।          রুদ্র যে খুশি হয়েছে, সেটা তাকে দেখে রিয়া বুঝতে পারল। তরুকে খুঁজতে রুদ্রকে সাহায্য করতে তার খারাপই লাগবে। যতই হোক, সে রুদ্রকে ভালোবাসে। কেউ জেনে শুনে তার ভালোবাসার মানুষকে হাতছাড়া করতে চায় না। কিন্তু রিয়া এটা নিয়ে অনেক ভেবেছে। সেদিন সে রুদ্রকে কুরিয়ার অফিসে সামনে দেখেই বিষয়টা কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছিলো। সে রুদ্রকে সাহায্য করবে কি করবে না? এটা নিয়ে অনেক ভেবে অবশেষে সিন্ধান্ত নিয়েছে, সে এটার শেষ দেখতে চায়। তরু কে? এই প্রশ্নের উত্তর সেও জানতে চায় রুদ্রের মত করে।          "এখনই এতো খুশি হলে পরে তরুর ব্যাপারে কিছু জানতে না পারলে হতাশা হবে। তাই আগে থেকে বেশি আশা করা উচিত না।" রিয়া ম্লান গলায় বলল।          "উঁহু!" রুদ্র বলল।          "আচ্ছা, এবার তাহলে আমি যাই!"         "আচ্ছা, ফোনে কথা হবে।"          "হ্যাঁ, অবশ্যই।"          "তরুর ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করার থাকলে নির্দ্বিধায় জিজ্ঞেস করতে পারো। যদি ওকে খুঁজতে সাহায্য হয় তাহলে আমি বলল যতটুকু জানি।"         "আচ্ছা করবো।"          রিয়া বিদায় নিয়ে চলে গেলেও রুদ্র কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। রিয়া তাকে এভাবে সাহায্য করবে সে ভাবতেই পারে নি। সে বুঝতে পেরেছে রিয়ার মুখ দেখে বিষয়টা হজম করতে তার একটু কষ্ট হচ্ছে। তবুও রিয়া তাকে সাহায্য করছে এটাই বড় ব্যাপার। রিয়ায় প্রতি তার মনোভাব অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেলো মুহুরর্তেই।          রুদ্র সরাসরি বাসায় না গিয়ে আলিফের বাসায় এলো। বেশকিছু দিন ধরে আলিফের খোঁজ নেই। ফোন করলে ধরে না, মেসেজের উত্তর দেয় না। রুদ্র আলিফের ডিপার্টমেন্টে খোঁজ নিয়ে জেনেছে সে ক্লাসেও যায় না। বিষয়টা রুদ্রের কাছে ভালো লাগে নি। আলিফের নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে। সেই কারণে সে আজ আলিফের সাথে দেখা করার জন্য সরাসরি চলে এসেছে তার বাসায়।          আলিফ বসে আছে রুদ্রের সামনে। চোখ লালা। ক্লান্ত। অনেক দিন ভালো করে ঘুমায় না, দেখেই বোঝা যাচ্ছে। মুখ শুকিয়ে গেছে। রুদ্র আলিফকে এভাবে দেখে সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।          "কিরে কি হয়েছে তোর?" রুদ্র জানতে চাইলো।         "কি হবে? কিছু হয়নি-তো!" আলিফের কন্ঠ কেমন ভাড়ী।          "কিছু হয়নি বললেই হবে? ক্যাম্পাসে যাস না। ফোন দিলে ধরিস না। মেসেজের রিপ্লাই করিস না। তোকে দেখে মনে হচ্ছে, রাতে ঠিকঠাক ঘুমাসও না। কি হয়েছে বল আমাকে।"          রুদ্র বেশকিছু সময় ধরে আলিফকে বুঝানোর পর সে তাকে সবটা খুলে বলল। আলিফ সবটা শুনে বলল, "নদীকে কিছুটা সময় দে। সব মানুষের নিজস্ব অতীত থাকে। আমরা তাদের দেখে অনেক সময় বুঝতে পারি না। হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা কষ্টটা দেখতে পাই না। নদীর জীবনে সেরকম কোনো কালো অধ্যায় থাকতেই পারে। তুই-তো ওর ব্যাপারে সবটা জানিস না, জানিস?"         "নদী অতীত সম্পর্কে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেনা। আমি দুই একবার জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু তেমন কিছুই বলেনি।"          "ওকে একটু সময় দে আলিফ। ওর পাশে থাক। ওকে বুঝতে দে, তুই ওর পরিস্থিতি বুঝতে পারছিস, ওকে বুঝতে পারছিস। দেখবি, ও যখন তোকে বিশ্বাস করবে তখন সবকিছু খুলে বলবে।"         "হ্যাঁ, আমি সেটাই করবো। কিন্তু আমি ওকে কীভাবে যেনো অনেক ভালোবেসে ফেলেছি। আমি আগে বুঝিনি রুদ্র। এখন খুব কষ্ট হচ্ছে।"          "আমি জানি, এই কষ্টটা সহ্য করা যায় না। তবুও আমাদের হাতে-তো কিছুই করার নেই।"          দুইজনে চুপচাপ একে অন্যের পাশে বসে রইল। দুইজনের বুকের ভেতর অসংখ্য প্রশ্ন। সেই সব প্রশ্নের উত্তর তাদের জানা নেই। মুহুর্তে ঘরটা দীর্ঘশ্বাস ভরে উঠলো। দুইটা মানুষ প্রায় একই রকম দুঃখ নিয়ে বসে আছে।          "ক্যাম্পাসে আয়, সবার সাথে দেখা কর, ক্লাস কর, দেখবি ভালো লাগবে। এভাবে নিজেকে ঘরের মধ্যে বন্দী করে রাখলে কষ্ট আরো বাড়বে।" রুদ্র বলল।         "উঁহু!" আলিফ নিষ্প্রাণ ভাবে উত্তর দিলো।          তারা দুইজন আরো বেশকিছু বসে রইল পাশাপাশি। নিজেদের দুঃখ ভাগাভাগি করার চেষ্টা করলো। কিন্তু পৃথিবীর কারো দুঃখের ভাগ কেউ নিতে পারে না। যার যতটুকু দুঃখ তাকে ততটুকু উপলব্ধি করতে হয়।  চলবে...!
Parent