নীলা by Kalidash - অধ্যায় ১০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39301-post-3575387.html#pid3575387

🕰️ Posted on August 8, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 411 words / 2 min read

Parent
বড় হবার সাথে সাথে ওর দুঃখবোধটা আরও বেড়ে গেল। তখন আর শুধু কেনা কাটা করেই ওর কষ্ট ভোলান যেত না। মুখ ভীষণ গম্ভীর করে থাকত। কাঁদত। মুখে বালিশ গুজে দিয়ে শুয়ে থাকত। মা-বাবা ও চাচী কেও ওর ঐ ভাব কাটাতে পারত না। সবাই চলে গেলে আমি খুব আদর করে ডাকতাম, এই সোনা, শোন না—সোনা, মাথায় হালকা ঝাকি দিতাম। ও নীচের ঠোট দাঁতে চেপে ধরে কান্না চেপে রাখার চেষ্টা করত। আমি থুতনি ধরে মুখটা উচু করে বলতাম, নীলা সোনাগো, তুমি কষ্টে থাকলে আমার হৃদয় ছিড়ে যায়। এটা কি জাননা? ও ঝর ঝর করে কেদে দিত। ওর ফর্সা গাল বেয়ে চোখের পানি যখন নামত, মনে হত মুক্তার দানা ঝরে ঝরে পড়ছে। দেখতে ভাল লাগত। চোখের পানি মুছে দেয়ার সুযোগে একটু আদর করতাম। আস্তে বলতাম, চল বেড়িয়ে আসি, ভাললাগবে।   আধ ঘন্টার মধ্যে আমরা তৈরী হয়ে নিতাম। চার দিকে আনন্দ উৎসব। আমরা আনন্দ উৎসবে যোগ দিতাম না। আমার নীলা সোনাকে নিয়ে যেতাম নির্জন পার্কে। গাছের ছায়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতাম। গাছ, আকাশ দেখে দেখে সময় কাটাতে চেষ্টা করতাম। একসময় ক্লান্ত হতাম। ও বলত, আইচক্রীম খাব। কিনে দিতাম। আমি খেতাম বাদম। মাঝে মাঝ আজগোবী কথা বলত। যেমন, জান- সোনা, আমিও মরে যাব।বাবার মত চলে যাব। আর আসব না। দুঃখভরা হাসি দিত। আমি ভয় পেয়ে যেতাম। ওকে বুকে টেনে নিতাম। সাথে সাথে আদর করতাম। ওর ঘাড়ের নরম চুলগুলোতে আঙ্গুল বুলাতাম। পরম আনন্দে ও ডুবে থাকত কিছুক্ষণ। আমি বলতাম, নীলা হাসবে না? আমার কোলে মাথা রেখে চোখ বুঝে বলত, না। হাসতে ভাল লাগছে না। আমি তখন বানিয়ে বানিয়ে নানা রকম হাসির গল্প করতাম। ও খিল খিল করে হেসে উঠত। সাথে সাথে মনে হত পার্কের ঐ ফুলগাছ, মেহগনি গাছ, ও মাটি সবাই আনন্দে ঝনঝন করছে। আস্তে করে দাবির সুরে বলত, সিনেমা দেখব। সিনেমা হলে ঢুকতাম, প্রেমের রসে করুন পরিনতির বই বেশী সময় দেখতে পারতাম না। ও মন খারাপ করত। টেনে হল থেকে বের করে আনতাম। হোটেল থেকে কিছু খেয়ে নিতাম। ও বলত, খুব কষ্ট লাগছে। কেন? বলত, নায়িকার সাথে নায়কের এমন ব্যবহার দেখেও কষ্ট লাগবে না? আমি বলতাম, কষ্টের কি আছে। আমি তো তোমার সাথে অমন ব্যবহার করছিনা। ও হাসত। পার্কে ফিরে খেতাম চুইংগাম, দামী চকলেট। এক সময় নীলা বলত, গা গুলিয়ে যাচ্ছে। বমি বমি লাগছে।বলতে বলতেই বমি করে দিত। টিউবওয়েলের পানি দিয়ে ওর মুখে পানি ছিটিয়ে দিতাম।কিছু সময় পার্কের বেঞ্চে আমার উরুর উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে নিত। আমি ওর পিঠে ছড়িয়ে থাকা চুলে হাত বুলিয়ে দিতাম। পার্কের মানুষগুলো কৌতুহল নিয়ে আমাদের দিকে তাকাত। সন্ধ্যার দিকে ওর জন্য থ্রি পিস, কিছু প্রসাধনী, মা-বাবা-চাচীর জন্য মিষ্টি কিনে বাড়ি ফিরতাম। ও এসেই ঘুমিয়ে পড়ত। সে দিন আর দেখা হত না।
Parent