নীলা by Kalidash - অধ্যায় ৪৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39301-post-3604058.html#pid3604058

🕰️ Posted on August 16, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 413 words / 2 min read

Parent
এই জাতীয় পত্র পেতাম হোস্টেলের ঠিকানায়। আমার সামনে এই কলেজ, পুকুর, মাঠ, গাছ-পালা, আকাশ, রাতের জ্যোৎস্না সবই মিথ্যে-ছলনা। বাবার সাথে অনেকদিন আর দেখা হলনা। কোন মুখে বাবার সামনে দাড়াব? আমার অধঃপতনে বাবা খুব কষ্টে একদিন স্ট্রোক হয়ে মারা গেলন। আমি হয়ে পড়লাম একা। সান্তনা দেবার মত কেউ রইল না। বাবার প্রচন্ড ভালবাসার স্মৃতি আমার এখনও মনে পড়ে। চাচা-চাচী বাবার মৃত্যুর পর আসলেন। খুব কান্নাকাটি করলেন। চাচী আমাকে জড়িয়ে ধরে কাদলেন।গোপনে আমাকে খরচাপাতি দিতে চাইলেন। আজ খুব জানতে ইচ্ছা করে, এই চরম দুঃখে আমার সোনা আমাকে কি মনে করেছিল? ওকি ঐ মাঝ বয়সি ভদ্রলোক ব্যবসায়ী মানুষটিকে কবুল করেছিল? দিন যায় রাত আসে, আকাশে জ্যোৎস্না আর তারায় রাত ঝিকিমিকি করে, পাখির ঝাক মাথার উপর দিয়ে উড়ে যায়। চারদিক আলোয় ভরে যায়। এভাবে চলতে চলতে একদিন হিসাব করলাম, বেশ মাস খানিক আমার নীলা, আমার আতœা, ভালবাসা, আমার নিশ্বাস, প্রেরনা আমাকে চিঠি লেখেনি। ভাবলাম এটাই স্বাভাবিক। অতীত অতীতই। কেন তাকে ঘাটাই বার বার। অবশেষে একখানা চিঠি পেলাম। আজও মনে হয় এই চিঠি না পাওয়াই ভাল ছিল। চিঠি খানা যে ভাবে মনে আছে তুলে দিচ্ছি- ওগো রাজাসোনা, আমার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। খুব ইচ্ছা ছিল তোমাকে শেষ দেখব, পারলাম না। আমাকে ভালবেসে তুমি শুধু অপমানিত হলে। কিছুই তোমাকে দিতে পারলাম না। ভেবেছ আমি স্বামী  কে নিয়ে ভাল আছি? ওগো আমার- স্বামীগো আমার ভালবাসা, আমার জীবন, মরন, সবই তো তুমি। এই কথা ঐ পশুকে বলেছি বলে আমাকে ভীষণ সাস্তি দেয়। জানি তুমি আমাকে উদ্ধার করতে পারবেনা। আমাকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জাপান নিয়ে যাবে। ওখানে আমাকে চিকিৎসা করাবে। আমি জানি, গোপনে ডাক্তারকে দিয়ে আমাকে হত্যা করবে। ওর ডায়েরী পড়ে তাই জেনেছি। আমি বাধা দেব না। একটা কথা তোমাকে বলি, সোনা আমাকে তুমি ক্ষমা করোনা। আমার শরীরকে আমি আজও পবিত্র রেখেছে। তোমার নীলা আজও পবিত্র! এখনও আমি আমার শরীরকে স্পর্শ করতে দিইনি- নীলা, লালারক, কাশ্মীর। চিঠি পড়ার পর আমি বদ্ধ উম্মাদ হয়ে গেলাম। ভিটেমাটি জমি জমা বিক্রি করে জাপান যাবার জোগাড় করতে লাগলাম। আমার অস্বাভাবিক আচারণ কারও চোখ এড়াল না।হেস্টেল সুপার একদিন বললেন মদটদ খাও নাকি? কোন উত্তর দিলাম না। একদিন বুঝতে পারলাম জাপান যাওয়া হবে না। আমার সোনাকে উদ্ধার করতে পারব না। ও তীলে তীলে মরবে। জমি বিক্রি করে যে টাকা পেলাম, তাই দিয়ে হোটেলের এক বৎসরের চার্জ মিটিয়ে দিলাম। বন্ধুদের খাওয়াতে লাগলাম। হোটেলে লাইব্রেরী ছিলনা। ত্রিশ হাজার টাকার বই কিনে লাইব্রেরী করে দিলাম। নাম দিলাম ‘নীলা গ্রন্থাগার’। দশ হাজার টাকা দিয়ে একটা রিভলবয় কিনলাম। কিছু কার্তুজ । সন্ধ্যার পর বেরিয়ে পড়তাম ফাকা একটা মাঠে। ফ্রি হ্যান্ডে গুলি ছুড়তে প্রাকটিস করতাম। ভাল ওস্তাদও পেয়ে গেলাম। ৫০ ফুটের মাথায় নিশানা অব্যার্থ হয় এমন প্রকটিস করলাম। মোটা অংকের পুরস্কার দিলাম গুরুকে।
Parent