নষ্ট গলির মেয়ে (পতিতা) যখন বউ (সম্পূর্ণ) - অধ্যায় ৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-27636-post-2054114.html#pid2054114

🕰️ Posted on June 13, 2020 by ✍️ Biddut Roy (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1097 words / 5 min read

Parent
পর্ব-০৬ ----------------------------------- বিকেল হয়েছে। পশ্চিম আকাশে সূর্যের তেজ কমে গিয়েছে অনেকটাই। সাদা মেঘে কমলা রঙের অালো ছড়িয়ে পড়ছে। মায়া ফুল গাছগুলোতে পানি দিচ্ছে। সন্ধ্যামালতিগুলো ফুটতে শুরু করেছে। অাজ সকালে সোহান ওর হাতে একটা ফোন দিয়েছে। ফোনটা সোহানের আলমারিতে পড়ে ছিলো। দুপুরের দিকে ড্রাইভারকে দিয়ে সিম কার্ড পাঠিয়েছে। মায়ের সাথে অনেকক্ষন কথা বলেছে ও। মা খুব খুশি। এবার বুঝি তার মেয়ে এই নরক থেকে মুক্তি পেলো। সোহানকে প্রানভরে দোয়া দিয়েছেন তিনি। সোহান বলেছে ঘরটাকে নিজের সংসার হিসেবে অাগলে রাখতে। অাচ্ছা সংসার কিভাবে আগলে রাখে? মা কে তো কখনো দেখেনি সংসার করতে। মেয়ে মানুষ তো মায়ের কাছ থেকেই সংসার করা শিখে। এখন কি হবে? ওর তো খালা মামিও নেই বা কোনো বড় বোন নেই সংসার করা শিখাবে। তবে কি সংসার সামলানোর ক্ষেত্রে জিরো মার্কস পাবে? না না, জিরো পেলে কি চলবে নাকি? একজন লোক শখ করে ওকে সংসারের দায়িত্ব দিয়েছে। তার শখটা তো পূরন করতেই হবে। কিভাবে সংসার শুরু করা যায়? রান্না করে নাকি ঘর পরিষ্কার করে? আজ শুরুটা নাহয় রান্না দিয়েই হোক। সোহানকে ফোন করে জিজেস করা দরকার সে কি খেতে চায়? সোহানের নাম্বারে ডায়াল করলো মায়া। -" হুম মায়া।" -" ইয়ে বলছিলাম মানে রাতে রান্না করবো। কি রান্না করবো?" -" তুমি না অসুস্থ?" -" এখন একটু ভালো আছি।" -" এখন রান্না করার দরকার নেই। সুস্থ হও এরপর রান্না করো।" -" করি না একটু।" -" কি খেতে ইচ্ছে করছে বলো আমি আসার সময় নিয়ে আসবো।" -" না আমার জন্য না। আপনার জন্য রান্না করতে চাই। আপনার প্রিয় কিছু।" -" অামার জন্য?" -" হুম।" -" কিছু করতে হবে না। তুমি এই অসুস্থ শরীরে অামার জন্য কিছু করতে চেয়েছো এতেই অামি খুশি। খুব বেশিই খুশি হয়েছি।" -" বেশি কিছু করবো না। শুধু একটা পদের কথা বলেন। অামি তাই করবো" -" এসব জোরাজোরি অামি একদম পছন্দ করি না মায়া। কাজ করছি। অাজাইরা প্যাচাল বন্ধ করো। যত্তসব ....." রাগ করে ফোনটা কেটে দিলো সোহান। কি হলো কিছুই বুঝলো না মায়া। পুরো ব্যাপারটা মাথার উপর দিয়ে গেলো তার। মাত্রই না বললো খুব খুশি হয়েছে। তাহলে এমন রাগ দেখালো কেনো? একটু কষ্ট পেলো মায়া। তার কি দোষ? লোকটাই তো বললো এটাকেনিজের সংসার ভাবতে। হতে পারে ব্যস্ত। তাই হয়তো এমনটা করলো। জোনাকির মুখোমুখি বসে অাছে মায়ার মা বিউটি। জোনাকি পান চাবাচ্ছে অার বিউটির সাথে কথা বলছে। -" তোর মাইয়্যার তো কপাল খুইল্লা গেছে রে বিউটি।" -" হ বুবু।" -" বেডার হাব ভাবে তো লাগতাছে তোর মাইয়্যারে এক্কেবারে তার কাছে রাইখা দিবো। বিয়া-শাদি করবো নাকি? জানোস কিছু?" -" না তেমন কিছু তো কইলো না।" -" কেন জানি মনে হইতাছে তুই জানোস। জাইনাও না জানার ভান করতাছোস।" -" ছিঃ বুবু। কি কন? সত্যিই জানি না অামি।" -" বুবু.......।" -" কিরে কুসুম? এমনে হাঁপাইতাছোস ক্যান?" -" কাজলের ব্যাথা উঠছে। ডাক্তার লাগবো।" -" এহ্ ডাক্তার লাগবো। ডাক্তার খরচা দিবো কেডা? তোর বাপে? অাজকা সাতমাস ধইরা কাজলের ইনকাম বন্ধ। ওরে উল্টা খাওয়াইতে হইতাছে। ঐ বিউটি যা তো কাজলের কাছে। অার কুসুম তুই ফখরুলরে গিয়া কইবি দাইরে খবর দিতে। অার বিউটি শোন, যদি মাইয়্যা হয় সোজা অামার কাছে নিয়া অাইবি অারযদি পোলা হয় এতিমখানায় দিয়া অাইসা পড়বি। " -" বুবু মাস দুয়েক মার কাছে থাকতে দেন। দুধের বাচ্চাটা মা ছাড়া কেমনে থাকবো?" -" ইশশ, পীড়িত কত্ত! এত পীড়িত কই পাস বিউটি? বাচ্চা একটা লগে ঝুলায়া রাখলে কি বেডারা ওর কাছে যাইবো নাকি? মাইয়্যা হইলে না হয় ছাড় দেওন যায়। পোলা হইলে এক চুলও ছাড় দিমু না অামি। ওর পোলার লাইগা কি অামি অামার ধান্দা লাটে উঠামু? বেহুদা কথা বাড়াইস না তো। যা, কাজলের কাছে যা।" বিউটি দৌড়েগেলো কাজলের রুমে। ব্যাথায় কোঁকাচ্ছে সে। বিউটি পাশে বসতেই হাত চেপে ধরলো কাজল। -" বুবু শোনো।" -" কি রে বইন?" -" অামার যদি মাইয়্যা হয় তুমি যেমনে পারো অামার মাইয়্যাডারে এইখান থেইকা সরায়া ফালাইবা। ওরা কেউ জানার অাগেই কামডা সারতে হইবো। -" কেমনে সরামু? ফখরুলরে দেখোস না কারো বাচ্চা হইতে নিলে দরজার বাইরে কেমনে খাড়ায়া থাকে। " -" তাইলে বুবু বাচ্চারে লবন খাওয়াইয়া মাইরা ফালাইও। অামি চাই না অামার মাইয়্যাডা এইখানে পইচা মরুক। এখানে পইচা মরার চেয়ে একবারে মইরা যাওয়া ভালো।" -" কি কস পাগল ছাগলের মতো?" -" ঠিক কইতাছি বইন। নিজে এতকাল পইচা মরছো। তুমি বুঝো না পইচা মরার কষ্ট কি?" -" অাইচ্ছা দেখি কি করা যায়। তুই অাল্লাহ রে ডাকতে থাক কাজল। কালেমা পড় বেশি কইরা।" সন্ধ্যা হয়ে গেছে। কাজশেষ করে অফিস থেকে বেরিয়েছে সোহান। গাড়িতে উঠে হুঁশ হলো মায়ার কথা। ব্যবহারটা কি বেশিই খারাপ হয়ে গেলো? ভালো কথাই জানতে চেয়েছিলো মেয়েটা। রাগ না দেখালেও চলতো। এত রাগ সোহানের অাসে কোথ্থেকে সেটা সে নিজেও বুঝে না। বাসায় এসে পৌঁছেছে সোহান। ড্রইংরুমে বসে টিভি দেখছে মায়া। ঘরে ঢুকেই মায়ার কপালে হাত দিয়ে দেখলো কপালে জ্বর অাছে কিনা। নাহ, টেম্পারেচার তেমন নেই। হালকা অাছে। সম্ভবত ১০০ ডিগ্রি হবে। -" মায়া..." -" জ্বি।" -" যাও চুল বেঁধে অাসো। অামি ফ্রেশ অাসছি একসাথে রান্না করবো।" -" অাপনি রান্না করবেন?" -" অামি একটামেয়ে মানুষের চেয়ে ভালো রাঁধতে পারি। এখন যাও। ভালোমতো চুলটা খোপা করবে। রান্নায় যাতে চুল না পড়ে। খাবার চুল দেখলে অামার মেজাজ বিগড়ে যায়।" -" জ্বি যাচ্ছি।" মায়ার খুশি খুশি লাগছে। খুব দ্রুত চুলটা অাটসাট করে বেঁধে কিচেনে চলে এসেছে সে। লোকটা রাগি হতে পারে। কিন্তু ভালো। অনেক ভালো। খুব পছন্দ হয়েছে লোকটাকে মায়ার। এমন মানুষকে মনের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসা যায়। কিন্তু মায়ার ভালোবাসতে বারন। সে যে নষ্ট গলির মেয়ে। ঐ পাড়ার মেয়েদের শুধু ব্যবসা করাই মানায়, ভালোবাসা ব্যাপারটা তাদের সাথে যায় না। -" চলে এসেছো?" -" জ্বি।" -" কি রান্না করতে চাও? " -" অাপনার কি পছন্দ?" -" অামার তো কত কিছুই পছন্দ। তুমি কোনটা ভালো রাঁধতে পারো সেটা বলো।" -" অামি ডাল ভুনা করতে পারি, অালুভর্তা, ডিমভাজি, অার মাছভুনা করতে পারি।" -" ব্যস এতটুকুই?" -" হুম। অার কিছু পারি না।" -" যাস্ট এই কয়টা মেনু পারো। অার তুমি অামাকে জিজ্ঞেস করছো কি খেতে চাই অামি? যদি বলতাম অামি মোরগ পোলাও খাবো তখন তুমি কি করতে?" -" শামীম ভাইয়ের কাছ থেকে শিখে নিতাম।" -" ওর মোরগ পোলাও জঘন্য হয়। অাল্লাহ বাঁচিয়েছে অামি তোমাকে তখন রাঁধতে না করেছি। অার নয়তো ঐ মোরগ পোলাও অামাকে গিলতে হতো।" -" তাহলে এখন কি করবো?" -" কি অাবার করবে? অামি তোমাকে শিখাবো। যাও ডিপ থেকে মুরগি নিয়ে অাসো। মুরগি নরম হতে হতে পেঁয়াজ কেটে, চাল ধুয়ে রেডি করি।" মাথার বা পাশটা চিনচিন ব্যাথা করছে মায়ার। মাথাব্যাথাটা বোধহয় শুরু হচ্ছে। কিন্তু সেদিকে পাত্তা দেয়ার তিল পরিমান শখ নেই মায়ার। সে রান্না শিখতে চায় সোহানের কাছ থেকে ।ভালো একটা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষন সময় কাটাতে চায়। ভালোবাসতে বারন, কিন্তু পাশে দাঁড়াতে তো বারন নেই। পেঁয়াজ কাটছে সোহান। পাশে দাঁড়িয়ে মায়া শসা ছিলছে। -" অাচ্ছা কখনো কাউকে ভালো লাগেনি তোমার?" -" নাহ। সবাই এক ধাচের ছিলো। কিন্তু হুট করে একজনকে ভালো লাগতে শুরু করেছে।" -" অামাকে?" -" মনে হয়।" -" ভালো লাগার মানুষটা নিঃসন্দেহে অামি। সেটা তোমার মুখ দেখেই বুঝা যায়। এবং সেটা অামি গতরাতেই টের পেয়েছি যখন তুমি অামাকে বলেছো আমার হাত ধরে তুমি ঘুমাতে চাও ।কারও হাত ধরে ঘুমানোর অর্থ জানো? অর্থটা হচ্ছে পাশের মানুষের মধ্যে তুমি নির্ভরতা খুঁজে পাচ্ছো। চলবে....
Parent