।।রিভু।। --- avi5774 - অধ্যায় ১০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-47645-post-4841727.html#pid4841727

🕰️ Posted on June 15, 2022 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 734 words / 3 min read

Parent
কিছুক্ষন পরে ওর মা নতুন পাটভাঙ্গা একটা শাড়ি পরে একটা ট্রেতে স্টিলের গ্লাসে করে লসসি নিয়ে এই ঘরে ঢুকলো। পিছনে হাসি হাসি মুখে সুবিমল। ‘কি নাম তোমার, মা?’ পান খাওয়া দাঁত বের করে মহিলা হাসিহাসি মুখ করে জুলিকে জিজ্ঞেস করলো। ‘জুলি সেন।’ ‘তুমি তো বড়বাড়ির মেয়ে?’ ‘হ্যাঁ’ ‘খুব সুন্দর রে।’ সুবিমলের দিকে তাকিয়ে বললেন। সুবিমলের মুখেও গর্বের হাসি। ‘তা মা, বড়মা জানেন?’ ‘কি জানেন?’ জুলি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো। ‘এই তোমার আর বাবুর ব্যাপার?’ সুবিমলের দিকে তাকিয়ে জুলিকে জিজ্ঞেস করলেন ওর মা। ‘আমি বুঝতে পারলাম না কি বলছেন।’ ‘এই যে তোমরা একে অন্যকে পছন্দ করো সেটা...।’ ‘না সেরকম কিছু তো বলিনি। আসলে ...।’ সুবিমলের মুখটা কালো হয়ে গেলো। জুলি কি ওকে প্রত্যাক্ষান করতে চাইছে। ওরা গরিব তাই? ‘সেকি গো? তোমরা তো লুকিয়ে চুরিয়ে দেখা সাক্ষাত করছো! এগুলো জানাজানি হয়ে বড়মার কানে গেলে তো খুব বকুনি দেবে তোমাকে।’ ‘অতটা ভাবিনি আন্টি।’ ‘এমা আন্টি কি গো? এত সাহেব রা ডাকে। আমি তো দেখছোই... আমাকে তুমি মাসিমা ডাকো জেঠিমা ডাকো, মা না হয় পরেই ডাকবে?’ জুলি চিন্তায় পরে গেলো এই মহিলাকে মা ডাকতে হবে? ‘তুমি যাওতো? ও লজ্জা পাচ্ছে।’ সুবিমল ওর মায়ের উদ্দেশ্যে বললো, সাথে জুলির চোখ এড়িয়ে চলে যাওয়ার ইঙ্গিত করলো। ‘কি ভাবছো? আসলে কি জানো তো মা খুব অসুস্থ। তাই আমার বৌয়ের মুখ দেখে যেতে চায়। এই জন্যে এরকম হ্যাংলামো করছে।’ ‘অসুস্থ? কি হয়েছে উনার?’ ‘ক্যান্সার।’ ‘ওহো। ভেরি স্যাড। ট্রিটমেন্ট করাচ্ছো না?’ ‘হ্যাঁ তাতো হচ্ছেই, তবে ডাক্তাররা আর আশা দিতে পারছেনা।’ ‘ওঃ। আচ্ছা তুমি বলছিলে এটা তোমাদের বাড়ি। ওই ভদ্রলোক কি বলছিলো ভাড়া টাড়া নিয়ে?’ সুবিমল থমকে গেলো। কয়েক মুহুর্ত চুপ করে থেকে বললো ‘আরে এ এক উন্মাদের পাল্লায় পরেছি। আমরা যাদের থেকে কিনেছি এই বাড়ি তাদেরই আত্মিয়। ও এখন ওর ভাগ নেওয়ার জন্যে আমাদের পিছনে পরেছে। কেসও করেছে। ক্লাবে ডেকে কয়েকবার ধমকও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাগল কি আর ভালো কথা শোনে?’ ‘কিনলে যখন এ বাড়ি কিনলে কেন? কি অবস্থা বাড়িটার।’ ‘অনেক যায়গা আছে তাই কিনেছি। আমরা তো তোমাদের মতন বড়লোক না যে প্রাসাদ কিনবো। আর মায়ের চিকিতসায় জলের মতন টাকা চলে গেছে, এটা যে ঠিকঠাক করে সারাই করবো তারও উপায় নেই। নাও লসসিটা খেয়ে নাও।’ জুলি গ্লাসটা তুলতে গিয়েও রেখে দিলো। এরকম নোঙরা গ্লাসে কিছু খেলে শরীর খারাপ অবধারিত। কেমন একটা বোটকা মাছ মাছ গন্ধ আসছে। কিন্তু সুবিমল ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ও না থাকলে জুলি ঠিক লুকিয়ে ফেলে দিতো। ‘কি হোলো খাও।’ ‘তুমি?’ ‘আমি রোজ দুপুরে খাই। তুমি খাও দেখোনা সন্দেশ দেওয়া আছে। খুব টেস্টি।’ একদমে জুলি গ্লাসটা শেষ করে দিলো। মাছের আঁশটে গন্ধটায় গা গুলাচ্ছে। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা দরকার। ‘আমি বাড়ি যাই।’ ‘সেতো যাবেই। আমি কি আটকে রাখতে পারবো?’ সুবিমলের মুখে চওড়া রোমান্টিক হাসি। ‘তাহলে চলো। আমাকে মেন রোডে ছেরে দেবে। আমার একটা কাজ আছে। তাড়াতাড়ি যেতে হবে।’ একটা ঢেকুর আপ্রান চেষ্টায় রুখে দিলো জুলি। ও জানে মাছের গন্ধটা বেরিয়ে আসবে। ‘আরেকটু বসবে না। মা এখন পুজোতে বসবে। মায়ের সাথে দেখা করে যেতে। আমিও চুপ করে তোমাকে দেখতাম। ভালো করে তো দেখায় হয়নি।’ ‘সে আবার কি কথা। ভালো করে দেখা হয়নি। থাক আরেকদিন আসবো।’ ‘আধঘন্টা আর। তোমাকে মন ভরে একটু দেখেনি। আবার কবে তুমি সুযোগ পাবে।’ জুলি মুখে অস্বস্তির কথা বলতে পারছেনা। এখানে বসে থাকতেই ওর কেমন গা ঘিনঘিন করছে। ওর ঘরে কত রোদ ঢোকে, কত আলো হাওয়া। আর ও বসে আছে এরকম একটা ঘুপচি ঘরে। অস্বস্তি চেপে বললো ‘আমার খুব গা গুলাচ্ছে। আসলে সকালে কিছু খাইনি, বেরোবো বলে ভেবেছিলাম বাইরে খেয়ে নেবো। এই মিষ্টী লসসি খেয়ে কেমন গা গুলাচ্ছে। বমি হয়ে যেতে পারে।’ ‘আরে বলবে তো? ভাত খাবে?’ জুলি আঁতকে উঠলো। ‘না না না। ভাত খাওয়ার কথা বলছিনা। বাড়িতে গিয়ে ভাত না খেলে মা দুটুকরো করে দেবে। তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আসো কিছুটা তারপর আমি চলে যেতে পারবো। আসলে আমি এদিকটা ঠিক চিনিনা। আজ প্রথম এলাম।’ ‘দাঁড়াও বমি পেলে দুটো কাজ করা যেতে পারে। এক গলায় আঙ্গুল দিয়ে পেট থেকে সব বের করে দেওয়া, দুই লেবুর রস খাওয়া।’ মহা মুস্কিল হোলো তো। জুলি মনে মনে ভাবছে। গা গুলানো টা আরো বেরে যাচ্ছে। কতক্ষন ধরে রাখতে পারবে তা জানেনা। সুবিমল চলে গেছে ভিতরে। লেবুর রস আনতে আবার সেই গ্লাস? জুলি ভাবছে আর ওর আতঙ্ক বেড়ে চলেছে। দ্রুত পায়ে সুবিমল ফিরে এলো, হাতে আবার সেই স্টিলের গ্লাস। জুলি দৌড়ে বাড়ীর উঠোন টপকে সুবিমলের মা যে ঘরটা থেকে বেড়িয়েছিলো তাতে ঢুকে ওয়াক করে বমি করে দিলো। মুহুর্তের মধ্যে সেখান থেকে ছিটকে বেরিয়ে এলো, বাকি বমিটা মেঝেতেই হর হর করে ঢালতে শুরু করলো। এ যেন আর শেষ হতে চাইছেনা। সুবিমল ওর পাশে বসে ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কিছুক্ষন ওই ভাবে বসে থেকে ক্লান্ত জুলি উঠে দাড়ালো। সুবিমল উঠোনের কোনে এক বালতি জল এনে দিলো ওকে। মুখ ধুয়ে নেওয়ার জন্যে। চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে জুলি।
Parent