। রক্ত গোলাপ। by chakraabhijit - অধ্যায় ৩৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38991-post-5188410.html#pid5188410

🕰️ Posted on March 31, 2023 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 535 words / 2 min read

Parent
'Wow !! তুই যা বললি শুনে মনে হচ্ছে সিনেমার নায়কের আবির্ভাব হলো' অরূপ উত্তেজিত হয়ে বললো. 'যা বললে তাতে মনে হচ্ছে ঋত্বিক রোশনের মত দেখতে' রুমার প্রাকিতিক ও স্বাভাবিক অভিব্যক্তি. 'হুম ওর যা লুক আর ম্যানারিজম তাতে ওর সাথে আমার আলাপ আছে জেনে অনেক মেয়ে আমার সাথে বন্ধুত্য করতে এগিয়ে আসতো' এই কথাটা শুনে রুমার মুখটা গম্ভীর হয়ে গেলো. মেয়েরা কি অদ্ভূত চিন্তা করুন একটু আগে আমার বউ ওকে ঋত্বিক রসন হিসেবে কল্পনা করে ফেললো, আর কোনো মেয়ে আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইলো তো সেটা অন্যায় হয়ে গেলো. সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ থুড়ি নারী. 'এত অত্যাচারের পরে ও কি করে বেচে রইলো সেটাই একটা প্রশ্ন তারপর তো হ্যান্ডসম যুবক হয়ে কলকাতায় এলো সেটা আরেক রহস্য.' রহস্য সন্ধানী অরুপের অবধারিত প্রশ্ন. 'ঠিক আছে চল এখনো বৃষ্টি পড়ছে চল তোদের রাজের গল্প বলি তার আগে একটু চা খেলে ভালো হত না' রুমার দিকে তাকিয়ে বললাম. রুমা প্রায় দৌড়ে কিচেনে চলে গেলো. womanly instinct গল্প শোনার জন্যে. বেরেলি স্টেশন। প্রচন্ড ঝড় জলের মধ্যে দিয়ে একটা হুড খোলা জিপ ছুটে চলেছে স্টেশনএর দিকে. ড্রাইভার কে সেটা বোঝা যাচ্ছেনা. আরোহী তিনজন, একজন বাহাদুর, একজন মৃত সিমরন একজন রাজ. তিনজনের নিস্তেজ দেহ কোনরকমে গাড়ির মধ্যে আটকে রয়েছে. অঝোর ঝড়ে বৃষ্টি সবাইকে ভিজিয়ে জব জবে করে দিয়েছে. সিমরণের দেহটা একটা বেডশীট দিয়ে মোড়ানো. শক্ত কাঠের মত শুয়ে রয়েছে গাড়ির পিছনের সিটে. কোনরকমে একটা দড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে. রাজের ছোট্ট শরীরটা গাড়ির ঝাকুনিতে নিচে পরে গেছে, সেখানেই সে শুয়ে রয়েছে. বাহাদুরের শরীর সামনের সিটে একটা বেল্ট দিয়ে বাধা. কোন দিকে যাবে একটা ট্রেন জানা নেই, তার জেনারেল কম্পার্টমেন্ট. উলঙ্গ, রক্তাক্ত রাজকে কোনো উচ্চ শ্রেনীর কম্পার্টমেন্ট এ কেউ তুলতেই দিলোনা ওই ভদ্রলোককে. বাধ্য হয়ে জেনারেল কম্পার্টমেন্ট এ গাদাগদি ভিড়ে তুলে দিতে হলো. বৃষ্টিতে ভিজেই হোক বা যে কোনো কারণেই হোক রাজের সংজ্ঞা ফিরে এসেছিলো. মা মা করে কাঁদছিল সে. সেই ভদ্রলোক হয়তো কোন আশঙ্কায় ওকে দুরে সরিয়ে দিতে চাইছিলো. তাই স্বাভাবিক ভাবে দরজা দিয়ে ঢোকানোর অপেক্ষা না কোরে ওকে তুলে কোলে করে লোকজনের মাথার ওপর দিয়ে ঢুকিয়ে দিলো, কারন গার্ড সবুজ পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে, আর সাথে সাথেই ট্রেন ছেড়ে দিলো. এত ভিড়ে দেখাও গেলনা রাজের কি হলো. পরের স্টেশন আসতে আসতে ভিড়টা একটু ধাতস্থ হলো. রাজকে নিয়ে তুমুল হট্টগোল. এরকম রক্তাক্ত একটা শিশুকে সামন্য সুযোগ করে বসতে দেওয়া বা শুতে দেওয়ার মত মানসিকতা যাত্রীদের কারোরই ছিলনা. পারলে ওকে ধাক্কা মেরে নামিয়ে দেয় সবাই. বেচারা রাজ শারীরিক যন্ত্রণার থেকেও স্বজন হারা হয়ে বিভ্রান্তের মতন কাঁদতে থাকলো. সেটা সবার কাছে আরো বেশি করে বিরক্তির কারণ হয়ে উঠলো. বেচারা ভিড়ের চোটে ঠিক মত হাটতেও পারছেনা খালি হোচট খেয়ে পরে যাচ্ছে. ক্রমাগত রক্তক্ষরণে দুর্বল ওর শরীর. এর ওর পায়ের সাথে ঠোকর খেতে খেতে কয়েক পা যাচ্ছে তো আবার ফিরে আসছে পুরনো জায়গায়. মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ও, জীবনে তো কোনোদিন মাকে ছাড়া একা কোথাও যায়নি, মাকে দেখতে না পেয়ে ভীষণ ভয় পেয়ে আছে ও. স্বজন ছাড়া রাজ, নিজের খেলার জিনি্* নিজের নরম তুলতুলে বিছানার সাথে মায়ের স্নেহ আর পারিপার্শ্বিক সবার ভালবাসার সাথে ঠোক্কর খেতে থাকা এই সরকারী রেল কম্পার্টমেন্টএর তুলনা করে উঠতে পারছিলোনা. এতদিন বিদেশি গাড়ির নরম গদিই যার জিবনের একমাত্র বাহন ছিলো সে আজ ট্রেন কম্পারটমেন্টের মধ্যে নিজেকে মেলাতে পারছিলোনা দিশেহারা হয়ে গেছিলো দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে তারস্বরে কেঁদে জাচ্ছিলো যদি ওর কান্না শুনে ওর মা এসে ওকে কোলে তুলে নেয়। কোথায় মা মার দেহ এখন ণীলিমা ভবনের পিছনের বাগানের মাটির তলার স্থায়ি বাসিন্দা হতে চলেছে।
Parent