সাজু ভাই সিরিজ (সিরিজ নম্বর-০২) (গল্প:- হারিকেন) (সমাপ্ত গল্প) - অধ্যায় ৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-52262-post-5100448.html#pid5100448

🕰️ Posted on January 14, 2023 by ✍️ Bangla Golpo (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 2232 words / 10 min read

Parent
পর্ব-০৪ রকির কথা ভাবতে গিয়ে বুকটা ধুকধুক করে ওঠে সাজু ভাইয়ের, সত্যি সত্যি যদি বিপদের মুখে পরে তাহলে তো নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না। সে নিজেই তাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে, তাই এখন তো সবকিছু তার নজর রাখা উচিৎ ছিল।  হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ এদিক সেদিক তাকিয়ে মাথা ঠান্ডা করলো, বাস থেকে নামার পর কে কে তাদের দেখেছে সেটা মনে করতে চেষ্টা করছে সাজু ভাই। হোটেলের রিসিপশনের লোকটা তার পিছনে এসে বললো,  - কোন সমস্যা ভাই?  - আমার সঙ্গে আমার বন্ধু ছিল কিন্তু এখন তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। আমি এমনিতেই একটা সমস্যার সমাধান করতে ঘুরছি তাই আমার পদে পদে বিপদ।  - তাহলে তো সমস্যা মনে হচ্ছে, আচ্ছা আপনি কি তার নাম্বারে কল দিয়েছেন?  - রকি নিজে আমাকে কল করেছে কিন্তু আমি তো রিসিভ করতে পারি নাই, এখন নাম্বার বন্ধ।  - খুবই টেনশনের বিষয়।  - আচ্ছা কক্সবাজারে গতকাল একটা হোটেলে একজন ডাক্তারের উপর আক্রমণ হয়েছে। ভই আপনি কি সেই হোটেলের লোকেশান বলবেন প্লিজ?  - এখান থেকে দশ মিনিটের মতো হাঁটলে আপনি সেই হোটেলে যেতে পারবেন। হোটেল "রুমিলা" - আমি একটু সেখানে যেতে চাই।  - কিন্তু আপনার বন্ধু নিখোঁজ এদিকে আপনার সারারাত জার্নি করে ক্লান্ত, যদি বিশ্রাম করতেন তাহলে কিন্তু খুব ভালো হতো। আর আপনার বন্ধু ফিরে আসবে বলে মনে হচ্ছে, আমার মনের কথা সবসময় মিলে যায়।  সাজু ভাই কিছু একটা বলবে ঠিক তখনই অদুরে রকিকে আসতে দেখা গেল। সাজু ভাই দ্রুত রকির কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো:- - তুই ঠিক আছিস রকি?  - হ্যাঁ, কেন কি হয়েছে? আর তোকে কল দিলাম তুই রিসিভ করলি না কেন?  - দেখতে পাইনি কিন্তু যখন দেখেছি তখন তো তোকে পাচ্ছি না, কল দিলাম নাম্বার বন্ধ। কোথায় গেয়েছিলি? আর নাম্বার বন্ধ কেন?  - মোবাইলে মাত্র ২% চার্জ ছিল, তাই কল দেবার পরে বন্ধ হয়ে গেছে।  - সারারাত বাসের মধ্যে না ঘুমিয়ে মোবাইলে শুধু অনলাইনে গেমস খেলবি তাহলে কোনদিন চার্জ শেষ হবে না।  - রাগিস কেন ভাই?  - কোই ছিলি তুই?  - একজনকে ফলো করতে করতে একদম তার সঙ্গে অনেকদূর চলে গেলাম।  - কার পিছনে? আগে রুমে গিয়ে মোবাইল চার্জে দেবো, তারপর বাথরুমে যাবো, তারপর বিষয়টা নিয়ে কথা বলবো।  অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাজু ভাই কৌতূহল দমন করে রকিকে নিয়ে রুমে গেল। তারপর ফ্রেশ হয়ে রকির কাছে জিজ্ঞেস করলো,  - এবার বল।  - দোস্ত তুই যখন গেইট দিয়ে ঢুকছিলি তখন হঠাৎ করে রাস্তায় তিনটা মেয়ে একসঙ্গে হাঁটতে দেখি। খুব পরিচিত মনে হচ্ছিল বলে আরেকটু নিকটে সরে গেলাম, তারপর কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারছি ওটা টিকটকের সেই লামিয়া মুনতাহা। আর তার সঙ্গে তার দুই বান্ধবী, যারা প্রায় সময় লামিয়ার সঙ্গে ভিডিও করে।  - তুই জানিস আমি কতটা টেনশনের মধ্যে পরে গেছিলাম?  - সরি বন্ধু।  - আচ্ছা তৈরি হয়ে নে, এখনই নিচে গিয়ে নাস্তা করে ডাক্তার সাহেবের আক্রমণ হওয়া হোটেলে যাবো। - এখনই?  - হ্যাঁ, কারণ বেশিক্ষণ সময় কক্সবাজারে থাকা হবে না রকি, চট্টগ্রামে কাজ আছে।  - আজকেই ফিরতে হবে? - এখনো বলতে পারি না, কিন্তু হোটেলে গিয়ে সেখানে কিছু তথ্য নেবো। সিসিটিভি ফুটেজ যদি থাকে তাহলে সেগুলো চেক করবো, তারপর যদি প্রয়োজন মনে হয় তবে থাকবো নাহলে আজকেই চট্টগ্রামে ব্যাক করবো।  - আমি আরও ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে একটু "হোটেল রুমিলায়" যাবো।  - কোন হোটেল?  - হোটেল রুমিলা।  - আমি তো সেখানেই যাবো কারণ সেই হোটেলেই ডাক্তারের উপর আক্রমণ হয়েছে।  - বলিস কি? কিন্তু লামিয়া ও তার বান্ধবীরাও তো সেই হোটেলে আছে। আমি তাদের পিছনে পিছনে হোটেল পর্যন্ত গেছিলাম, তখন হোটেলের নাম লেখা দেখলাম।  - এতো সকালে তারা বাইরে ছিল?  - হ্যাঁ,।  - দেখতে কেমন?  - চেহারা দেখতে পারি নাই, সেই টিকটিকের মতো বোরকা পরে হিজাব দিয়ে মুখ ঢাকা।  - তুই চিনলি কীভাবে?  - তাদের সেই বোরকা আর হিজাবের স্টাইল সব দেখে মোটামুটি নিশ্চিত।  - তাহলে আর দেরি না করে চুপচাপ রুমিলা যেতে হবে, চল তাড়াতাড়ি।  নাস্তা করে দুজনেই একসাথে হাঁটতে লাগলাে, সব কেমন আতঙ্কিত মনে হচ্ছে। সাজু ভাইয়ের কাছে বারবার মনে হচ্ছে তাকে কেউ গভীরভাবে চোখে চোখে রাখছে, কিন্তু আশেপাশের কাউকেই তার সন্দেহ হচ্ছে না। যখনই কাউকে সন্দেহ করতে যায় ঠিক তখনই সে গায়েব হয়ে যায়।  হোটেলের সামনে আসতেই রকি ব্যস্ত হয়ে সাজু ভাইকে বললো " দোস্ত ওই যে লামিয়া " সাজু ভাই দেখলো সত্যি সত্যি সত্যি পরিচিত চোখ জোড়া হিজাবের ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে। আরো কিছু কাছে গিয়ে মাত্র ৫/৬ ফিট স্থান দুরত্ব রেখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। লামিয়া এবং তার বান্ধবীরা অবাক হয়ে গেল, নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে লামিয়া বললো:- - কিছু বলবেন?  - সাজু ভাই বললো, কতকিছুই তো বলার জন্য অপেক্ষা করে আছি সেগুলো শোনার কি সময় হবে তোমার?  - সরি, বুঝতে পারছি না।  - তোমার নাম লামিয়া মুনতাহা, তাই না?  - হ্যাঁ কিন্তু আপনি কে?  - আমার নাম সাজু, সবাই সাজু ভাই হিসেবে চেনে আমাকে।  - কিন্তু আমার কাছে কি?  - কতমাস ধরে তোমাকে টিকটকের মধ্যে দেখে আমি তোমাকে খুঁজছি, জানো?  - আজব তো, আমি কীভাবে জানবো?  - ওহ্ হ্যাঁ তাই তো, তুমি কীভাবে জানবে?  - আর কিছু বলবেন মিঃ সাজু ভাই?  - গানে গানে বলবো?  - মানে কি? আচ্ছা বলেন, শুনি।  - তোমার প্রেমে, পরেছি আমি... দোষ হলে ক্ষমা করে দিও। যদি নির্দোষ হই তবে ভাললো..বেসে, আমায়.. আপন করে নিও।  - কি পাগলের কবলে পরলাম রে বাবা, এমন করে আজব কর্মকান্ড আর কেউ করে নাই।  - হ্যাঁ করে নাই এবং করবেও না, কারণ তোমার জন্য একজনই পাগলামি করবে আর সে হচ্ছে সাজু, ওরফে সাজু ভাই।  - মাথা পুরোটা নষ্ট হয়ে গেছে।  - আমি তোমার প্রতিটি ভিডিও দেখি, সবসময় সুন্দর মন্তব্য করে তোমার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করি, শুধু তোমার সন্ধান পাবো বলে।  - তো? এখন তো পেয়েছেন, সাধ মিটেছে?  - যদি সারাজীবন একসঙ্গে থাকার জন্য হাতটা বাড়িয়ে দেই, গ্রহন করবে?  - আশ্চর্য ব্যাপার, আপনাকে চিনি না জানি না, আর হুট করে এসে পাঁচ মিনিটের মধ্যে আপনি আমাকে সারাজীবন একসঙ্গে থাকার প্রস্তাব দেন?  - আচ্ছা সরি, তাহলে পরিচয় যখন হয়েছে তখন ঠিকই তোমার সঙ্গে বারবার দেখা হবে। আমরা একটা কাজের জন্য তোমাদের হোটেলে যাচ্ছি, কাজ শেষ করে আবারও তোমার সঙ্গে আমার দেখা হবে।  - আমাদের হোটেলে গতকাল একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে তাই বাহিরের কেউ এখন ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না।  - কোন সমস্যা নেই কারণ আমি পারবো, কারণ সেই ঘটনার রহস্য বের করার জন্য মাঠে নেমেছি আমি সাজু ভাই।  - ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে লামিয়া বললো, আপনি কি তাহলে গোয়েন্দা নাকি?  - পেশাগত নয় বা কোন লাইসেন্সও নেই কিন্তু সখের জন্য করি, এ পর্যন্ত ৩/৪ টা মামলার ঠিক সমাধান করতে পেরেছি।  - বাহহ অসাধারণ, আমার কাছে অবশ্য গোয়েন্দা কাহিনি পড়তে ভালো লাগে কিন্তু বাস্তবে কখনো কোন গোয়েন্দার সঙ্গে কথা হয়নি।  - আচ্ছা ভালো থেকো, আবার দেখা হবে।  শেষ মুহূর্তে একটা ভাব নিয়ে লামিয়ার সামনে থেকে চলে এলো সাজু ভাই ও রকি। লামিয়া মনে হয় কিছুটা অবাক হয়েছে, না না অনেকটা অবাক হয়ে গেছে সে। তার এই জীবনে সে এভাবে কোন ছেলেকে তার সঙ্গে কথা বলতে দেখেনি। দেখবে কীভাবে? কারণ সে বিগত চারবছর ধরে কখনো মুখ খোলা রেখে বাহিরে আসে না।  ★★★ চট্টগ্রামে ওসি সাহেবের কাছে কল দিয়ে তারপর কক্সবাজারের এক পুলিশের সাহায্য নিল সাজু ভাই। সেই দারোগার সঙ্গে হোটেলের মধ্যে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ চতুর্দিকে হাটলো তারপর তারা ঘটনাস্থলের রুমের মধ্যে গিয়ে দরজার সামনে বা কতটুকু দুরে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে সেটা লক্ষ্য করলো।  - দারোগা বললেন, সাজু সাহেব আমাদের কাছে সেই মুহূর্তের ভিডিও ফুটেছে আছে। আমরা তো গতকালই দেখেছি, আপনি চাইলে এখনই সেটা দেখতে পারেন।  - অবশ্যই দেখতে চাই।  - সেখানে স্পষ্ট দেখা গেছে হোটেলের এক কর্মী তার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নক করে। তারপর ডাক্তার সাহেব দরজা খুলে দিলে কর্মী ভিতরে প্রবেশ করে। দুই মিনিট পরে কর্মী রুম থেকে বের হয়ে যায় কিন্তু দরজা কেউ বন্ধ করতে আসে না। আর পাঁচ মিনিট পরেই ডাক্তার সাহেবের স্ত্রীর আহাজারি দরজার সামনে দেখা যায়। কিন্তু সেই কর্মীর আকৃতি অনুযায়ী এই হোটেলে তেমন কেউ কাজ করে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এক কর্মীকে কেউ একজন মাথার পিছনে আঘাত করে পোশাক নিয়ে গেছে।  - সাজু ভাই বললেন, স্যার তবুও আমি সেইটা দেখতে চাই। আর সেই আহত কর্মীর সঙ্গে আমি কথা বলতে চাই, ব্যবস্থা করতে পারবেন?  - হ্যাঁ অবশ্যই।  খুব মনোযোগ দিয়ে ভিডিও ফুটেজ দেখলো সাজু ভাই, পরপর তিনবার দেখে সে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললো:- "এতো বুদ্ধি ছিল তার? " - দারোগা বললেন, ঠিক বুঝলাম না।  - দারোগা সাহেব ভালো করে লক্ষ্য করে দেখুন ওটা কোন ছেলে নয়, ওটা একটা মেয়ে। পুরুষের পোশাক পরে পুরুষ আকৃতি নিয়ে একটা মেয়ে ডাক্তারের কাছে গেছিল।  - বলেন কি?  - হ্যাঁ স্যার, আচ্ছা আমার হাতে সময় তেমন নেই, আমি সেই আহত কর্মীর সঙ্গে কথা বলবো।  আহত কর্মীকে জিজ্ঞেস করে যতটুকু জানা গেল তা হচ্ছে, সে একটা রুমের মধ্যে তালা দেবার জন্য এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কেউ একজন পিছন থেকে আঘাত করে তারপর তার কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরেছে তখন তার চারিদিকে অনেক মানুষ এবং তার পোশাক পাশেই পরে আছে এবং সে পরে আছে সেই খালি রুমে যেটা সে তালা দিতে এসেছে। তার জ্ঞান ফেরার আগেই ডাক্তার সাহেবের উপর আক্রমণ হয়েছে।  ★★★ সাজু ভাই রকিকে নিয়ে হোটেল থেকে বের হয়ে রাস্তায় নামলো, তারপর দুজনেই হাঁটতে হাঁটতে তারা যে হোটেলে উঠেছে সেখানে গেল।  - রকি তখন বললো, আমরা কি চট্টগ্রামে যাচ্ছি?  - না রকি।  - কেন?  - খুনি একজন নয় বরং ২ বা তার বেশি। আর কক্সবাজারে এখনো খুনির বড় একটা অংশ আছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে।  - কীভাবে বুঝলি?  - শুধুমাত্র মারিয়া স্বামী রাহাত সাহেবকে যদি খুন করার টার্গেট থাকতো তাহলে তো ডাক্তারকে খুন করার দরকার ছিল না। অসুস্থ মারিয়ার স্বামীকে খুন করলেই বেশ হতো।  - তাহলে তাদের কোন সম্পর্ক নেই?  - অবশ্যই আছে, কারণ রাহাত সাহেব এখানে খুব ভালো করে জড়িত আছে।  - কীভাবে?  - খুজতে হবে রকি, খুঁজতে হবে। শোন, বিকেলে আমি বের হবো, তুই রুমের মধ্যে থাকবি, আমি না ফেরা পর্যন্ত তুই রুম থেকে বের হবি না।  - কেন রে?  - রাতে ফিরে সবকিছু বলবো।  কিন্তু দুপুরের পরে আকাশে মেঘ জমতে দেখতে পাচ্ছে সাজু ভাই, আবহাওয়া কেমন একটু যেন পরিবর্তন হচ্ছে। তবু আসরের দিকে রুম থেকে বের হয়ে গেল সাজু ভাই, আর রুমের দরজা বাহির থেকে তালা দিয়ে বন্ধ করে গেল। রাস্তায় নেমে সে চা বিস্কুট বিক্রি করা পিচ্চি ছেলেটার কাছে কল দিল। তারপর সেই ছেলের বলা স্থানের উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলাে সাজু ভাই।  সকাল বেলা লামিয়ার সঙ্গে দেখা হবার পরেই সাজু ভাই ওই চা বিস্কুট বিক্রি করা পিচ্চিকে ডেকে বলেছিল যে " সারাদিন ওই মেয়েটা ও তার বান্ধবী সবার দিকে নজর রাখতে হবে। এক হাজার টাকা দিয়ে তাকে পিছনে লাগানো হয়েছে, আর পিচ্চি সেই সকাল থেকে লামিয়া যেখানে যায় সেখানেই আশেপাশে গিয়ে চা চা, এই চা... বলে ডাকে।  সমুদ্রের পাড় থেকে অনেকটা দুরে এসে নির্জন স্থানে লামিয়াকে পাওয়া গেল। আকাশের অবস্থা ভালো না বলে সন্ধ্যা হবার আগেই এদিকটায় মানুষ একটু কম। পিচ্চিকে ছুটি দিয়ে লামিয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়াল সাজু ভাই।  - লামিয়া বললো, আরে মিঃ গোয়েন্দা যে, তা সারাদিন পরে খুঁজে বের করলেন আমাকে?  - আমি তোমার সঙ্গে একা একা কিছু কথা বলতে চাই, সময় হবে?  - কি কথা? আমার জীবনের কোন গোপনীয় তথ্য নেই যেগুলো এই দুই বান্ধবী জানে না। তাই যা বলার তাদের সামনে বলেন সমস্যা নেই, আমরা সবাই একই আত্মা।  - তোমাকে আমি অনেক খুঁজেছি শুধু নিজের জীবনে জড়াতে চাই বলে, বিশ্বাস করো এমনটা কখনো ভাবিনি কাউকে নিয়ে। আমি একটা মেয়ে বিয়ে করেছিলাম কিন্তু সে তার পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে চলে গেল। তবুও তেমন কষ্ট পাইনি কিন্তু তোমার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে ছিল খুব। আজও তোমার সম্পুর্ণ চেহারা দেখতে পারি নাই কিন্তু তবুও ভালবাসা তোমাকে।  - আপনি তো শুধু আমাদের ভিডিও দেখেছেন কিন্তু আমাদের আসল পরিচয় জানেন? আপনি যদি জানতেন তাহলে ভালবাসা তো দুরের কথা বরং ফিরেও তাকাতেন না।  - তাহলে বলো, তারপর বিবেচনা করি।  - দরকার নেই, ক্ষমা করবেন প্লিজ।  - তোমার জীবনে কেউ আছে?  - স্পেশাল কেউ নেই কিন্তু তবুও অনেক মানুষ জড়িয়ে আছে।  - তবুও তোমাকে চাই।  - বললাম তো আমার আসল পরিচয় পেলে খুব ঘৃণা করবেন আমাকে।  - একটুও ঘৃণা আসবে না কথা দিচ্ছি।  - এতটা কনফিডেন্স?  - হ্যাঁ নিজের উপর বিশ্বাস।  - যদি সত্যি পরিচয় পাবার পরে আপনার চোখে ঘৃণা দেখা যায় তাহলে কি করবেন?  - কোনদিন সামনে আসবো না, আর তোমার টিকটক আইডি দিয়ে বের হয়ে যাবো।  লামিয়া তখন তার বান্ধবীদের সামনে যেতে বলে নিজে দাঁড়িয়ে রইল, সাজু ভাই বললো:-  - বলো কি বলতে চাও?  - আমি কোনদিন নিজের মুখ বের করে ভিডিও করিনা কেন জানেন?  - না তো।  - কারণ এই ভদ্রসমাজ আমাকে তাহলে চিনে ফেলবে।  - মানে?  - সমাজের যত ভদ্রলোকের সারি আছে তাদের মধ্যে কিছু কিছু মুখোশধারী আছে। তারা রাতের আঁধারে নিভৃতে টাকার বিনিময়ে কিছু মেয়েদের কিনে নেয়। সারারাত তাদের নিয়ে ফুর্তি করে আর সকাল হলে তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভদ্রতার মুখোশ পরে মিশে যায় ভদ্রসমাজে। আমি সেই মুখোশধারীর রাতের টাকায় কেনা পণ্য, তারা যেন দিনের বেলা অনলাইনে আমাদের মুখ চিনতে না পারে তাই মুখ ঢাকা থাকে। আমিও তাদের মতো মুখোশ পরে চলাচল করি, কেউ জানে না রাতের আধারে আমাকে নিয়ে কত পুরুষ মেতে ওঠে আনন্দে।  একটানা কথাগুলো বলে সাজু ভাইয়ের দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে রইল লামিয়া। সাজু ভাই তখন যেন হারিয়ে গেল ভিন্ন জগতের মধ্যে, তারপর অনেক কষ্টে বললো:- - তারমানে তুমি পতিতাবৃত্তি করো?  - হ্যাঁ, আপনার চোখে অজস্র ঘৃণা দেখতে পাচ্ছি তাই আশা করি আপনার কথা রাখবেন। আপনি ভালো থাকবেন সবসময়, আর যদি কখনো কোন সময় রাতের আঁধারে দরকার হয় তাহলে ডেকে নিবেন, টাকার রেড একটু বেশি।  - তুমি কি সকল পেশার মানুষের সঙ্গে থাকো?  - হ্যাঁ, ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে ডাক্তার বলো, ইঞ্জিনিয়ার বলো, প্রফেসর বলো, পুলিশ বলো, আর যত মানুষ বলো।  - ডাক্তারের সঙ্গেও যোগাযোগ হয়?  - হতেই পারে, হাহাহা হাহাহা, আসি।  লামিয়া চলে গেল, একা একা মন খারাপ করে যেন নিজেকে অবিশ্বাস হচ্ছে সাজু ভাইয়ের। সে কি সত্যি ভাবছে নাকি ভুল? মাগরিবের আজান দিয়েছে আগেই, চারিদিকে কেমন ফাঁকা ফাঁকা হয়ে গেছে। হঠাৎ করে একটা মাইক্রো এসে থামলো তার পাশে, হুটহাট করে ৪/৫ জন লোক কালো মুখোশ পরে বেরিয়ে গেল। তাদের হাতে বড় লাঠি জাতীয় কিছু, সাজু ভাই কিছু বলার আগেই তারা ঘিরে ধরলো।  একজন তাকে হাত ধরে পিছনে মুড়ে রাখলো আর আরেকজন একটা কাপড় দিয়ে মুখ চেপে ধরছে। বাকি দুজন হাতের লাঠি দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করে যাচ্ছে, প্রচুর ব্যথায় চিৎকার করতে গিয়েও চিৎকার দিতে পারলো না। তীব্র কষ্টগুলো তখন চোখের পানি দিয়ে বের হতে লাগলো, একসময় থমকে গেল লাঠিচার্জ। ততক্ষণে বালুতে লুটিয়ে পরেছে সাজু ভাইয়ের শরীর।  . চলবে...?  . বানান ভুল হতেই পারে সেটা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ রইল। 
Parent