সহপাঠিনী(সমাপ্ত) by uttam4004 - অধ্যায় ১৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38583-post-3423259.html#pid3423259

🕰️ Posted on June 24, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 578 words / 3 min read

Parent
থানায় নিয়ে গেল আমাদের     কিছুক্ষণ পরে অন্য একটা ঘরে জোড়ায় জোড়ায় ডাক পড়তে লাগল। আমি আর রেণু গেলাম সেই ঘরে। নাম, বাড়ির ঠিকানা, বাবার নাম, বয়স – সব নোট করল। রেণু আর আমি বার বার বলছিলাম, ‘প্লিজ ছেড়ে দিন। আর কখনও হবে না।‘ যে পুলিশটা নোট করছিল, সে কোনও কথা না বলে ডিটেলস নোট করল। তারপর বলল, ‘হাজার টাকা করে ফাইন দাও।‘ শুনে তো আমরা দুজনে দুজনের দিকে তাকালাম। দুহাজার টাকা আমাদের কাছে কোথায়। বড়জোর এক দেড়শো টাকা আছে। রেণুর কাছেও হয়তো ওইরকমই। তবে এটা বুঝেছিলাম যে এটা ফাইন না, তোলা আদায় করছে। আমরা বললাম, ‘স্যার আমরা স্টুডেন্ট। কলেজে পড়ি। অত টাকা কোথা থেকে পাব স্যার। দেড় দুশো টাকা আছে স্যার।‘ পুলিশটা বলল, ‘পার্কে গিয়ে যখন অসভ্যতা করছিলে, তখন খেয়াল ছিল না? ফাইন না দিতে পারলে বাড়িতে খবর যাবে, বাবা মাকে আসতে হবে। এখন ভেবে দেখ কি করবে। বাইরে গিয়ে বোসো।‘ আমরা ওই ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আবার বেঞ্চে বসলাম। রেণুকে ফিস ফিস করে জিগ্যেস করলাম, ‘তোর কাছে কতটাকা আছে রে?’ দুজনেই মানিব্যাগ বার করলাম। গুনে দেখা গেল সাড়ে তিনশো টাকা হচ্ছে। একটু পরে আবার ডাক পড়লো ভেতরে। গিয়ে বললাম, ‘স্যার সাড়ে তিনশো হচ্ছে। আর কিচ্ছু নেই। প্লিজ স্যার।‘ ওই পুলিশটা বলল, ‘হবে না ওতে। দুজনে পাঁচশো করে এক হাজার দিতে পারলে বলো না হলে বাড়িতে খবর যাবে। আর তাড়াতাড়ি করো। আমাদের অনেক কাজ আছে।‘ আমরা বললাম, ‘স্যার একজনকে ছেড়ে দেবেন প্লিজ। কাছেই থাকি আমরা। যোগাড় করে আনছি।‘ কি মনে হল পুলিশটার, বলল, ‘মেয়েটা থাক, তুমি যাও। হাজার টাকা না আনতে পারলে কিন্তু ঝামেলা হবে মনে রেখ। আর পালিয়ে গেলে কিন্তু বাড়ি থেকে তুলে আনব। ‘ রেণুর দিকে তাকালাম। ও মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। ওকে বাইরের বেঞ্চে বসিয়ে আমি থানা থেকে বেরলাম। কার কাছে যাওয়া যায় সেটা ভাবতে লাগলাম। বুথ থেকে কয়েকজন বন্ধুকে ফোন করে বললাম ঘটনাটা। চারজনের কাছে টাকা পাওয়া যাবে আর ওদের বাড়িগুলোও খুব দূরে না। তবুও সবার বাড়ি গিয়ে একটু কথা বলে টাকা যোগাড় করতে করতে ঘন্টা দেড়েক কেটে গেল। একজন বন্ধুও এল আমার সঙ্গে, তবে আমি ওকে বাইরে থাকতে বললাম। প্রায় দুঘন্টা কেটে গেছে আমি রেণুকে রেখে টাকা আনতে বেরিয়েছি। ভেতরে ঢুকে দেখি রেণু নেই। আমার তো মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা। এদিক ওদিক তাকাচ্ছি দেখে একজন পুলিশ বলল, ‘ভেতরে যাও।‘ যে ঘরে আমাদের নাম ঠিকানা নোট করা হয়েছিল, সেই ঘরে ঢুকতে গিয়ে তো আমার পা আটকে গেল। ভেতরে রেণু দাঁড়িয়ে আছে, আর চেয়ারে ওর বাবা আর অন্য একজন। সবারই মাথা নীচু। পুলিশটা আমাকে দেখতে পেয়ে বলল, ‘এই যে, এই ছোঁড়াটা ছিল সঙ্গে।‘ রেণু আমার দিকে তাকাল, ওর বাবা আর অন্য ভদ্রলোক পেছনে ঘুরে আমার দিকে তাকালেন। রেণুর বাবা আমাকে খুব ভাল করেই চেনেন। চেঁচিয়ে বলে উঠলেন, ‘তুমিইইইইইই!!!!’ চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে সপাটে একটা চড় মারলেন। বললেন, ‘হারামজাদা সর্বনাশ করার জন্য তোমার ছোটবেলার বন্ধুই জুটেছিল? আর যদি কোনও দিন আমাদের বাড়িতে দেখেছি পিটিয়ে ছাল তুলে দেব তোমার।‘ রেণু এগিয়ে এসে ওর বাবার হাত ধরল, ‘ওর একার দোষ নেই তো! আমিও তো ছিলাম। আর বাবা আমরা শুধু গল্পই করছিলাম। উনারা যেটাকে অসভ্যতা বলছেন, মোটেই সেটা করি নি।‘ রেণুর বাবা এবার ঘুরে ওকে চড় মারার জন্য হাত ওঠালেন। আমি উনার হাতটা ধরে ফেললাম। বললাম, ‘কাকু ওকে মারবেন না প্লিজ সবার সামনে।‘ আবার আমার গালে চড়। ‘আমার মেয়েকে কী করব না করব সেটা তুমি ঠিক করে দেবে জানোয়ার।‘ পুলিশটা উঠে এসে বলল, ‘এখানে এরকম করবেন না। বাড়ি নিয়ে যান মেয়েকে।‘ রেণুর হাত ধরে টানতে টানতে ওর বাবা আর অন্য ভদ্রলোক বেরিয়ে গেলেন। পুলিশটার বোধহয় আমাকে মার খেতে দেখে মায়া হল। বলল, ‘যাও তুমিও যাও। শাস্তি তো হয়েই গেছে। আর পার্কে বোসো না কখনও।‘ আমি মাথা নেড়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। আমার বন্ধুটা বাইরে থেকে দেখেছে রেণুদের বেরিয়ে যাওয়া।
Parent