সমাহার by নীললোহিত - অধ্যায় ১২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38509-post-3416665.html#pid3416665

🕰️ Posted on June 21, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 407 words / 2 min read

Parent
এইভাবে ঝগড়া দিয়ে ওদের দুজনের প্রেমের শুরু। তারপর একে অপরকে ভাললাগা। সেই ভাললাগা কখন যে ভালবাসায় পরিণত হয়েছে, তা ওরা কেউই বুঝতে পারেনি। লুকিয়ে সন্ধ্যের পর বড়মাঠে দেখা করা। ফুচকা খাওয়া, টিকিট কেটে সলমন খানের সিনেমা দেখা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওদের প্রেমটা গাঢ়ত্ব পাচ্ছিল। প্রথম প্রথম একটা সন্দেহ ছিল। সেটা অবশ্য মালতির মায়ের। গত কয়েকমাস ধরে নিজের মেজমেয়েটির হাবভাব বেশ সন্দেহজনক লাগছিল তার। অবশেষে একদিন বাপের হাতে ধরা পড়ে গেল মালতি। পেটে বাংলা পড়লে মানুষটার দেহে দানবের শক্তি ভর করে। মাথাটাও ঠিক রাখতে পারেনা। হাটতলার মাঝখান থেকে একরাশ লোকের সামনে পঞ্চা দুলে ওর মেজমেয়েটাকে চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে, এ দৃশ্য সেদিন অনেকেই দেখেছিল। এরপর সবার সঙ্গে যা হয়, তা সবই হয়েছিল মালতির সঙ্গে। নির্মম মারের মুখে পড়েও সে বলতে ভোলেনি, ও রতনকে ভালবাসে। এরপর থেকে মালতির বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল। অথচ কেউ বুঝতে পারেনি ঠিক কি কারণে রতনকে পছন্দ নয় পঞ্চার আর ওর বউয়ের। ঠিক এই সময়েই একজন জ্ঞাতির পরিচয়ে একটি ছেলেকে পছন্দ হয়ে গেল পঞ্চার। এক সপ্তাহের মধ্যেই বিয়ের ঠিক হয়ে গেল। অথচ মালতির তখন সবে সতেরো। কিন্তু সে বিয়েটা হয়নি। হঠাৎ নমিতা বৌদির ডাকে হুঁশ ফিরল মালতির। বসার ঘর থেকে ডাকছে। মালতি তাড়াতাড়ি রান্নাঘর থেকে বসার ঘরে এল। দেখল এর মধ্যেই ছেলের বাড়ির লোকগুলো চলে গেছে। মালতিকে দেখে বৌদি বলল, “মালতি, প্লেট আর গ্লাসগুলো সাবধানে নিয়ে গিয়ে বেসিনে রাখ্।” মালতি বলল, “বৌদি, ওরা কি চলে গেল?” “হ্যাঁ।” “কি বলল গো? মৌদিকে পছন্দ হয়েছে ওদের?” বৌদি ঠোঁট বেঁকিয়ে বলল, “কি জানি বাপু। কিছুই তো বলল না। বলল পরে খবর দেবে।” মালতি উৎসাহে বলল, “ছেলেটা দেখতে কিন্তু বেশ। মৌদির সঙ্গে মানাবে কিন্তু।” “দাঁড়া বাপু, গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল। কি বলে দেখি। নে, নে, তাড়াতাড়ি কর্। প্লেটগুলো বেসিনে নিয়ে যা। আর মেজে ফেল। দেখিস, আবার ভাঙ্গিস না যেন।” বৌদির তাড়াতে আর কোনো কথা না বলে গ্লাস আর প্লেটগুলোকে তুলে নিয়ে আসে। তারপর রান্নাঘরের বেসিনে সেগুলো রেখে একএক করে মাজতে থাকে। কিন্তু ওর মনটা আবার ফিরে যেতে থাকে পিছনে। ফেলে আসা অতীতে। বাপ-মায়ের ঠিক করা ছেলের সাথে বিয়ের দিন তিনেক আগে এক রাতে রতনের সাথে পালিয়ে যায় মালতি। যোগাযোগটা করিয়ে দেয় মালতির ছোটবেলার বন্ধু পদ্মা। রিক্শাটা আগেই বিক্রি করে দিয়েছিল রতন। সেই টাকায় মালতিকে কলকাতায় নিয়ে চলে আসে। ওঠে শিয়ালদার কাছের একটা বস্তিতে। ওখানে ওর এক মাসতুতো দাদা আর বৌদি থাকে। তাদের দয়াতে মাথার উপর একটা ছাদের খোঁজ পায় ওরা। পরেরদিনই কালীঘাটে নিয়ে গিয়ে মালতির সিঁথিতে সিঁদুর ঘষে দেয় রতন। এটা প্রায় পাঁচ বছর আগের কথা। দাদার কথায় একটা গ্যারাজে চাকরি পায় রতন। আর বৌদি দু’-তিন ঘরের কাজ পাইয়ে দেয় মালতিকে। এভাবেই দু’জনের পথচলা শুরু।
Parent