সত্তা - অধ্যায় ১৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-29132-post-3401520.html#pid3401520

🕰️ Posted on June 16, 2021 by ✍️ Nefertiti (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 683 words / 3 min read

Parent
স্নিগ্ধা পুলিশ স্টেশনে যায়নি, পুরোটা সময় সে গাড়িতেই বসে গান শুনেছে। প্রায় এক ঘন্টা পর কবির ও শাফাকাত সাহেব ফিরে আসে। পুলিশ স্টেশন থেকে তারা একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে লাঞ্চ সেরে নেয়। তারপর আবার রওনা দেয়। "তুমি কি আমিনুজ্জামানের মেয়ে?" শাফাকাত সাহেব স্নিগ্ধাকে জিজ্ঞাসা করে। "আপনি আব্বুকে চেনেন?" অবাক হয়ে বলে স্নিগ্ধা। "চিনবনা কেন! তোমার বাবা আর কবিরের বাবা দুজনই আমার অধিনে চাকরী করতো। পরে আমি আগের কোম্পানি ছেড়ে নতুন কোম্পানিতে যোগ দিলাম। মাসুদ আর জামান দুইজনকেই আসতে বলেছিলাম, মাসুদ এসেছে। জামান আগের কোম্পানিতেই থেকে গেছে। " "তোমার আব্বুর নাম্বারটা দাও তো।" সাফাকাত সাহেব বলেন। স্নিগ্ধা নাম্বার দিলে শাফাকাত সাহেব কল দেন। "আমিনুজ্জামান সাহেব।" "জি কে বলছেন?" "আমি ডক্টর শাফাকাত হোসেন।" "স্যার আপনি!" অবাক হয়ে বলেন জামান সাহেব। "জামান, কোথায় তুমি?" "স্যার, অফিসে।" "আমি তোমার বাসায় যাচ্ছি। ব্যাস্ত হয়ে আসার প্রয়োজন নেই। তোমার স্ত্রীর সাথে দেখা করে চলে যাব।" শাফাকাত সাহেব বলেন। "এ তো আমার সৌভাগ্য, আমি আসছি স্যার।" জামান সাহেব বলেন। সদর থানার এসিস্টেন্ট সাব ইন্সপেক্টর রাসেল আহমেদ লাঞ্চে বের হয়ে থানার সামনের রেস্টুরেন্টটাতে যায়। থানার ব্যাচেলার অফিসাররা অধিকাংশ এখানেই লাঞ্চ করে। একটা খালি টেবিল পেয়ে বসে খাবারের অর্ডার দিয়ে মোবাইল বের করে কল করে সে। "হ্যালো, লিটু, কেমন আছিস?" রাসেল বলে। "ভালই আছি মামা, কিন্তু খুব ব্যাস্ত।" "শুনলাম তোরা নাকি গোলমাল করেছিস গতকাল?" "নাহ! কালকে আবার কি করলাম!" "সবুজদিঘীতে এক ছেলেকে নাকি মেরেছিস?" "কে কাকে কবে কিল ঘুসি দিল সে খবরও আজকাল পুলিশের কাছে যায় নাকি?" "যায়, যায়, ভুল যায়গায় হাত পড়লেই পুলিশের কাছে কেস যায়। শোন, ঐ ছেলে সম্ভবত শাফাকাত সাহেবের আত্মীয়। শাফাকাত সাহেবকে চিনিস?" "না মামা" লিটু জবাব দেয়। "শাফাকাত সাহেব অনেক ক্ষমতাধর মানুষ। ডিসি, এসপি এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যন্ত ওনার হাত আছে। তাই তোকে সাবধান করতে ফোন করেছি। যা হয়েছে তা আমি চাপা দিতে পারব, কিন্তু এর বেশি যেন না হয়।" "ঠিক আছে।" "কেসটা কি বলতো?" রাসেল জিজ্ঞাসা করে। "আসলে এইটা সজল মামার কেস। সজল মামা বলেছিল ছেলেটাকে কেলাতে।" "আমি সজলের সাথে কথা বলে নেব। কিন্তু তুই এর ভেতর আর জড়াবি না।" "ঠিক আছে মামা।" বলে লিটু ফোন কেটে দেয়। রাসেল লিটুর আপন মামা। সজল রাসেলের বন্ধু। তারা একই কলেজে পড়ত, একই মেসে থাকত। এসএসসি পরীক্ষার পর লিটু তিনি মাস ঢাকায় ছিল, রাসেলের মেসে। সেখানেই সজলের সাথে পরিচয় লিটুর। ইন্টারমেডিয়েটের পর রাসেল পুলিশে যোগ দিয়েছে এ এস আই হিসাবে। লিটু স্থানীয় একটি কলেজে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে রাজনীতিতে অবস্থান পাকা করে ফেলেছে সে। পাশাপাশি পাড়ায় পাড়ায় চাঁদাবাজি ও গুন্ডামী করে বেড়ায়। জামান শিরিনকে আগেই কল দিয়ে জানিয়েছিল শাফাকাত সাহেবের আসার কথা। শিরিন ঘর গুছিয়ে রেখেছে। রান্নাও হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু মেয়েটা বেরিয়েছে অনেক আগে, এখনো ফেরেনি। স্নিগ্ধাকে কল দেয় শিরিন। একবার রিং হয়ে কেটে যায় এবং সাথে সাথে কলিংবেল বাজে। দরজা খুলে দেখে স্নিগ্ধা দাড়িয়ে আছে, তার পিছে শাফাকাত সাহেব আর কবির। "শিরিন অতো ব্যাস্ত হইও না, আমরা লাঞ্চ করেছি। শুধু চার কাপ চা বানিয়ে নিয়ে এসে বস। জরুরি কথা আছে।" তারপর কবির ও স্নিগ্ধাকে জিজ্ঞাসা করে "তোমরা চা খাবে তো?" তারা হ্যাঁ বোধকভাবে মাথা নাড়ে। তখনই কলিংবেল বেজে ওঠে। স্নিগ্ধা গিয়ে দরজা খুলে দেখে ওর আব্বু এসেছে। জামান জিজ্ঞাসা করে শাফাকাত সাহেব এসেছে কিনা, স্নিগ্ধা ড্রয়িংরুমের দিকে দেখিয়ে দেয়। জামান অফিসের ব্যাগটা রেখে ড্রয়িংরুমে যায়। ততোক্ষনে শিরিন চা নিয়ে এসেছে। "একেবারে সঠিক সময়ে এসেছ জামান, বস।" শাফাকাত সাহেব বলেন। শাফাকাত সাহেব চায়ে চুমুক দিয়ে বলতে শুরু করেন "তোমরা জানো যে কবির তার মা বাবাকে হারিয়েছে, অকালে। এই অল্প বয়সে এতো বড় মানসিক আঘাত যে ও সামলে নিয়েছে তা বিস্ময়কর। তারপরও ওর সাপোর্ট দরকার। আমি আমার যতোটা সম্ভব ওকে সাপোর্ট করেছি। চেষ্টা করেছি ওকে চোখে চোখে রাখার। কিন্তু ভবিষ্যতে হয়তো সেভাবে আর সম্ভব হবেনা। এই শহরে আমি আর থাকছি না। আমি চাই তোমরা ওকে সাপোর্ট দাও, দেখাশোনা কর।" "অবশ্যই, মাসুদ আমার খুব ভাল বন্ধু ছিল। তার সন্তান মানে আমারও সন্তান।" জামান বলে। "ও তো আমাদের পরিবারেরই একজন। আমরা ওকে তো স্নিগ্ধার থেকে আলাদা করে দেখি না।" শিরিন বলে। "আমি জানি, কিন্তু আমি চাই তোমরা আরো যত্নবান হও ওর প্রতি।" "অবশ্যই" শিরিন বলে। "স্যার আপনি কোথায় যাচ্ছেন?" জামান জিজ্ঞাসা করে। "আমাকে রিজিওনাল হেড হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ঢাকা হেড অফিসে থাকতে হবে।" বলে শাফাকাত সাহেব কার্ড বের করে দেন। "যোগাযোগ রেখ জামান।" "অবশ্যই স্যার।" "আর তুমিও, কবির।" বলে কবিরকেও একটি কার্ড দেন। "তোমার নাম্বারটা আমার মোবাইলে সেভ করে দাও।" বলে নিজের আইফোনটা কবিরকে দেন শাফাকাত সাহেব।
Parent