সত্যি কি প্রেম ছিল by Aarushi - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-33523-post-2776277.html#pid2776277

🕰️ Posted on December 28, 2020 by ✍️ Mr Fantastic (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1057 words / 5 min read

Parent
আমি মাথা নেড়ে জানাই "হ্যাঁ"। আমাকে ঠেলে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে আমাকে বলে শাড়ী পড়তে। ---"কেন?" ---"সব মেয়ে রা আজ শাড়ী পরছে তাই। সুপর্ণা, পারমিতা, অরুণিমা সবাই আজ শারী পরে কলেজে আসছে। আমরা সবাই কোথাও খেতে যাবো।" ---"কোথায়?" ---"পিটার ক্যাট, পার্ক স্ট্রিট।" ---"সবাই মানে, কুড়ি জন ?" ---"হ্যাঁ, সবাই। অত চিন্তা তোকে তো করতে হবে না। তুই তারা তারি শারী পরে চল।" আমি সেই দিন একটা, কাঁচা হলুদ রঙের শারী পরেছিলাম। পাড়টা গাড় নীল রঙের। শারী টা আমার পাতলা শরীরের ওপরে যেন একটা মখমলের পরতের মতন এতে গেলো। আমি নিজেকে আয়নায় দেখে হেসে ফেললাম। চুল গুলো একটা আলত হাত খোঁপা করে, ঘাড়ের পেছনে ঝুলিয়ে দিলাম। কানে ছোটো দুটো সোনার দুল, মা আমাকে পরিয়ে দিল। আমি কোন দিন এই রকম ভাবে সাজিনি, নিজেকে দেখিনি।  বাসবি আমার দিকে একমনে তাকিয়ে, আলত করে মাথা নেড়ে বলল---"তুই সত্যি সুন্দরী রে।" আমার কান দুটো লাল হয়ে গেলো---"ধুত কি যে বলিস।" ---"আমি কি আর বলব, যে বলার সে বলবে খানে।" আমার বুক কেঁপে ওঠে, "কে কি বলার জন্য অপেক্ষা করে আছে?" ধুক পুক করে ওঠে মন, হাতুরি পিটতে থাকে ছোটো হৃদয় টা, পাঁজরের ওপরে যেন একটা হাপরের বাড়ি ক্রমাগত মারছে। আমি আর বাসবি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি। যেতে যেতে বাসবি বলল যে, টিফিনের পরে আমরা সবাই মিলে পিটার ক্যাট যাচ্ছি। কলেজে পৌঁছে দেখি, শুভ্র আসেনি। সব মেয়ে গুলো শারী পরে।  ছেলে গুলো তো বলতে লাগলো---"এই প্রথম মনে হচ্ছে যে, পদার্থ বিগ্যানের ছেলে মেয়ে রা ও সাজতে জানে। আর অহনা তো আজ কি যে বলি..." আমি পরাশর কে জিজ্ঞেস করি---"ব্যস অনেক হয়েছে, এবারে বলত শুভ্র কোথায়?" ---"আমি কি জানি, আমাকে বলে গেলো যে দুপুর বেলায় সবাই কে নিয়ে পিটার ক্যাট পৌঁছুতে।"  সারাটা সময় আমি ক্লাসে মন দিতে পারলাম না, সারা সময় ভেবে ভেবে কুল পেলাম না যে কি করছে ছেলেটা, কেন এল না এমন দিনে। বাসবি আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসতে থাকে। আমি শত বার জিজ্ঞেস করা সত্যেও আমায় বলেনা যে শুভ্র কোথায়।  আমারা সবাই যখন পার্ক স্ট্রিটএর জন্য রওনা দেই তখন দেখি শুভ্র আমাদের জন্য বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে। আমি প্রায় দৌড়ে গিয়ে ওর কলারটা টেনে জিজ্ঞেস করি---"সকাল থেকে কোথায় ছিলিশ? ক্লাসে আসিস নি কেন?" আমার ঐ রকম দৌড়নো দেখে আমি বেশ বুঝতে পারি যে সবাই বেশ মিটি মিটি হাসছে আমার পেছনে। আমি তো লজ্জায় লাল হয়ে পড়ি। পারমিতা আমার দিকে তাকিয়ে আলত হেসে বলে---"কিরে এবারে শান্তি?" আমি কিছু না বলে চুপ চাপ করে দাঁড়িয়ে থাকি আর ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার মুখ দেখে সবাই হেসে ফেলে। আড় চোখে তাকিয়ে দেখি, সুপর্ণার মুখটা একদম হটাত করে কালো হয়ে ওঠে। আমি দেখে বেশ মজাই পেয়েছিলাম সেই দিন। সত্যি কি প্রেম ছিল (#12) আমরা সবাই মিলে ট্যাক্সি চেপে পার্ক স্ট্রিট গিয়ে পৌঁছালাম। ছেলেরা একটা আলাদা ট্যাক্সি আর মেয়েরা একটা আলাদা ট্যাক্সি। সুতরাং আমি শুভ্র কে একা কিছু জিজ্ঞেস করার অবকাশ পাইনি।  গন্ত্যব স্থলে নেমেই ওকে ধরি আমি---"কি রে সকাল থেকে কোথায় ছিলিছ বলতো? আমি তোকে খুঁজে খুঁজে হয়রান।" আমার দিকে একটু খানি হেসে জিজ্ঞেস করে---"আমাকে কেন খুঁজ ছিলিছ?" ---"যেন তুই জানিস না, এমন একটা ভাব দেখাচ্ছিস?" ---"সত্যি বলছি আমি কি করে জানবো, আমি তো তোকে খুঁজছিলাম না, তুই আমাকে খুঁজছিলিস। যাই হোক চল ভেতরে।" "সত্যি কি তুই কিছু বুঝিস না শুভ্র" আমার খুব ইছ্যে হয়েছিল সেই দিন ওকে আমি এই কথা টা জিজ্ঞেস করি, কিন্তু তার মাঝে বাসবি এসে আমাকে ডেকে নিয়ে যায় ভেতরে। ঢুকে দেখলাম আমাদের জন্য একটা টেবিল আগে থেকে বুক করা। আমি বাসবি কে জিজ্ঞেস করাতে ও উত্তর দেয় ও টেবিল আগে থেকে বুক করে রেখেছিলো। আমি একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। এতো বড় একটা রেস্তুরান্ত তাতে আবার টেবিল বুক করা, আমরা সবাই মিলে প্রায় কুড়ি জন মানুষ। ও এতো পয়সা পেল কোথা থেকে? আমার একদিকে বাসবি আর একদিকে পারমিতা বসলো। আমি আশা করেছিলাম যে শুভ্র আমার পাশে বসবে কিন্তু ও বসলো বাসবির পাশে। কিছু ঠিক করে আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না, সব কিছু আমার কেমন যেন স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছিলো। মন টা বেশ খুশি খুশি ছিল।  আমি থাকতে না পেরে বাসবি জিজ্ঞেস করি---"হ্যাঁ রে কাকিমা বা আমার মা আমাদের দিনে কুড়ি টাকার বেশি তো দেয় না, এতো খরচ যোগাড় করবি কোথা থেকে?" আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে বাসবি---"তোর সব জেনে দরকার কি রে? আজ তোর জন্মদিন, তোর দিন, মজা করনা। এখানে ছেলো কাবাব খুব ভাল, ওটাই অডার করি কি বল?" অবাকে হয়ে তাকিয়ে দেখি ওর দিকে---"কোন দিন তো আমায় না নিয়ে কোথাও যাসনি, কি করে জানলি এই খানে ওটা সব থেকে ভাল পাওয়া যায়?" ---"শুভ্র বলেছে।" "মানে?" আমার মনের এক কোনে একটা ভীষণ ঝড় ওঠে, মাথা ঘুরতে থাকে আমার, হৃদয় টা হটাথ করে থেমে যাবার উপক্রম হয় "তাহলে কি শুভ্র বাসবি কে ভালবাসে?"  আমার চোখে চোখ রেখে, তাকিয়ে থাকে বাসবি, আলত করে আমার গাল গুলো ওর মিষ্টি নরম আঙ্গুল দিয়ে ছোঁয়---"কি ভাবছিস, ঐ পাগলের কথা? আরে না না, আমি আর ও কিছু না। তুই একটা পাগলী মেয়ে রে।"  আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসে, আমি জড়িয়ে ধরি বাসবি কে, একটু খানি ফুঁপিয়ে উঠি। আমি পলক ভেজা চোখে তাকিয়ে থাকি শুভ্রর দিকে। আমার চোখে জল দেখে ও আমাকে জিজ্ঞেস করে---"কি হল তোর?" মিষ্টি হেসে, চোখের জল মুছে ওকে বলি আমি---"কিছু হয় নি। তুই আমার সব থেকে ভাল বান্ধবী রে।" তারপরে এল ছেলো কাবাব, শুরু হোলও গল্প গুজব। আমি এক সময় হেসে শুভ্র কে জিজ্ঞেস করি---"তুই তো কলকাতার ছেলে নস, তাহলে এই রেস্তুরান্ত এর কথা জানলি কি করে।" ও একটা দুষ্টু হাসি হেসে সুপর্ণার দিকে তাকিয়ে থাকে। ভুরু নাচিয়ে সুপর্ণা কে জিজ্ঞেস করে---"কি গো কি জিজ্ঞেস করছে, তুমি উত্তর টা দেবে না আমি দেবো?" সুপর্ণা লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে, সবাই প্রায় মুখ টিপে হাসতে শুরু করে। বেশ প্রানবন্ত ভাবে শুভ্র নিজেকে ব্রেকআপ থেকে সামলে নিয়েছে দেখলাম। সুপর্ণার সাথে বেশ ভাল ভাবে কথা বলছে ও। আমি বেশ বুঝে গেলাম যে ওরা কোন সময় এসেছিলো এখানে খেতে। খাওয়া দাওয়া শেষ, সবাই এক এক করে সুভেচ্ছা জানায়।  পারমিতা শুভ্রকে জিজ্ঞেস করে---"তোর কি কিছু বলার আছে?" আমি উৎসুক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে, কি বলতে চায়। ও একবার পারমিতার দিকে, একবার সুপর্ণার দিকে, একবার বাসবির দিকে তাকিয়ে দেখে। আমার মুখ টা লাল হয়ে ওঠে, বুক টা একটা অজানা উৎসুকময় আনন্দে ভরে উঠতে থাকে "কি বলতে চলেছে ও, সেটা কি আমার সম্পর্কে?" ফুসফুস যেন হাপর টানে বুকের পিঞ্জরে।  আমার দিকে তাকায় ও, আমি জুলু জুলু নয়নে দেখতে থাকি ওর দিকে এক দৃষ্টে। সবাই যেন বাকরুদ্ধ হয়ে এক দৃষ্টে দেখতে থাকে ওর দিকে। এক সেকেন্ড যেন একটা বছর বলে মনে হচ্ছিলো আমার। ওর ঠোঁট নাড়ানো দেখে আমার অজান্তেই আমার দুই হাত আমার বুকের মাঝে জড়সড় হয়ে আসে। আমি ওর আওয়াজ শুনতে পাই---"অহনা...।" আমার মনটা ঢুম ঢুম করতে থাকে "তোকে আমি..." আমি প্রানপনে ভাবতে থাকি তার পরের শব্দ টা। ---"তুই আমার সব থেকে ভাল বান্ধবী রে, অহনা।"
Parent