টান (কালেক্টেড) 'Complete' - অধ্যায় ৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-27866-post-2095854.html#pid2095854

🕰️ Posted on June 25, 2020 by ✍️ pnigpong (Profile)

🏷️ Tags:
📖 4291 words / 20 min read

Parent
পরের দিন সকালে দুজনে আবার মিলিত হলো। অনেকক্ষণ ধরে, তারপর খাওয়া দাওয়া করে একটু ঘুমিয়ে দিপু বিকাল বিকাল হাওড়া স্টেশন উদেশ্যে রয়না দিল। কিন্তু যাবার আগে দিপু রাধাকে চমকে দিয়ে, পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করলো। ....... এতে কোনো চমকাবার মত কিছু নেই। তুমি বয়েসে বড় , তোমার আশির্বাদ তো চাইতেই পারি। তাইনা? কাকিমা তো কাকাকে প্রনাম করে, বয়েসে বড় বলেইতো? তোমার ভালবাসা আর আশির্বাদ দুটিই আমার দরকার। বুঝেছ আমার রাধারানী? ...বলে জাপটে ধরে চুমু দিল। .রাধার চোখ ভিজে গেছে , দীপুকে দু হাতে ধরে ওর হাতে কি গুজে দিল। দিপু হাত খুলে দেখে ২০০০ টাকা। .....মাসি আমার তো আছে , আবার কেন দিলে , দিপু অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো .....না,তুই রাখ, তোর্ ব্যবসার জন্য আমি টাকা দেব, ভাবিসনা। টাকা আমার ভালই আছে, দেবার মত লোকই নেই রে। তোকেই দেব। দীর্ঘ ২১ বছর ১৮ দিন পর দিপু তার জন্ম, লেখাপড়া সেখা, বড় হয়ে ওঠার শহর ছেড়ে,পারি দিল অজানার উদ্দেশ্যে। কালকা মেলের টিকেট কেটে দিপু দেখল ট্রেন ছাড়ার সময় বেশ পরে। দোতলা ওয়েটিং রুম এর পাশের বারান্দায় এসেদাড়ালো। সামনে গঙ্গা বয়ে যাচ্ছে, অসংখ লোকের আনাগোনা ব্যস্ত স্টেশন এ।" রবি, এখান থেকে ভারতের সব জায়গায়যাওয়া যায়, আবার সব জায়গা থেকে আসা যায়। তাহলে এটাকে তো আসা যাওয়ার মিলনস্থল বলা চলে। বাবার চিতা ভস্যযদি এখানে ছড়িয়ে দেওয়া যায় .তাহলে তো মানুষের পায়ে পায়ে তা সমস্ত ভারতবর্ষে ছড়িয়ে যাবে, তাই না? ছোটকা এখনইছড়িয়ে দিতে পারে, বাবা তো মানুষের জন্য কাজ করার জন্য জেল খেটেছে , তাহলে মানুষের পায়ে পায়ে ছড়িয়ে গেলে কিঅসুবিধা। কিন্তু আমি জানি ছোটকা কিছুতেই তা করবে না। ওই ইলাহাবাদ এই বিসর্জন দেবে।বাবাকে খুব ভালবাসত যে।আজ খুব বাবার কথা মনে পরছে রে চুদি। মিছি মিছি লোকটাকে মেরে ফেলল। সুন্দর দেখতে ছিল। লেখা পড়ায় ভালো ছিল।তাকে মেরে ফেলল। যদি কোনদিন, যে মেরেছে তাকে পাই, তাহলে জিজ্ঞাসা করব, কেন ওই নিরীহ লোকটাকে মারলো আরআমাকে সারা জীবন এর জন্য অনাথ করে দিল। দেখা হবেই রে রবি, আমি জানি কে মেরেছে, দেখা আমি করবই। তুই দেখেনিস, একটু খালি সময় লাগবে। রাধা মাসি কে জানিয়ে দেখা করব। কাকিমাকে বলে লাভ নেই, ভয় পাবে, আমাকে দেখাকরতে দেবে না। রাধা মাসি তা না। ও আমাকে সাহস যোগাবে, সাহায্য করবে। তুই আমার সাথে থাকিস। কিন্তু দ্যাখ , এই ৩দিনে এত কিছু ঘটল, কিন্তু আমার জন্মদিন কবে কেউ জানেনা। কি আশ্চর্য ,তাই না ?” ট্রেন প্লাটফর্ম এ দেওয়ার পর দিপু unreserved কামরা দেখে বুজলো যে ওকে বসে, তাও মাটিতে, যেতে হবে। তাই হোক,এক নতুন অভিজ্ঞতা হবে। দিপুর সবচাইতে বড় ট্রেন ভ্রমন, রানাঘাট অবধি। এ ছাড়া বার ৩ চন্দননগর আর বান্ডেল গেছে।কামরায় উঠে সে, দরজার কাছেই দাড়ালো । গাড়ি চলতে সুরু করলে ,দরজা এক ব্যক্তি বন্ধ করে তাতে হেলান দিয়ে বসলো।দিপু মুখ কাচুমাচু করে তাকে চোখ দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো একটু বসতে পারবে কিনা। লোকটি একটু সরে ওকে বসার জায়গাকরে দিল আর একটা কাগজ দিল, তাতে বসার জন্য। একটু পর লোকটি ওকে জিজ্ঞাসা করলো কতদূর যাবে, কি কারণেএইসব। যখন শুনলো যে দিল্ল্হী যাবে, ওকে পরামর্শ দিল চেকারকে বলে যদি কিছু করাযায় তা দেখতে। দিপু আর কি করবে,ওর কোনো ধারনা নেই এই ব্যাপারে, ও চুপ করে বসে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলো। ঘন্টা খানেক বাদে কি মনে করেএকটা সিগারেট ধরালো। ঠিক তখনি চেকার এসে উপস্থিত। চেকার লোকটি প্রায় ৫৫-৬০ বছরের। টিকিট দেকতে চাইলে,দিপু তারাতারি সিগারেটটা লুকিয়ে টিকেট বার করে দিল। ওর সিগারেট লোকানো দেখে চেকার অদ্ভূত দৃষ্টিতে দিপুর দিকেতাকালো। "সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র" দিপুর ওই সুন্দর চেহারা, আর নিষ্পাপ মুখ দেখে চেকার একটু তাকিয়ে থাকলো। তারপরবাকি দের টিকেট চেক করে আবার দরজার কাছে এসে দাড়ালো। দিপু তখন ভাবছে যে ওকে বলবে নাকি কিছু করার জন্য।চেকার নিজেই এসে জিজ্ঞাসা করলো .......আপনি এতদূর এই ভাবে যেতে পারবেন? সাথে লাগেজ কি আছে? .......কিছুনা সার, খালি এই ব্যাগটা আছে। ......দিল্লি কি চাকরির জন্য যাচ্ছেন? ......ওই রকমই, একজন বলেছে যে কিছু একটা করে দেবে, তাই যাওয়া। চেকার এরপর খুটিয়ে খুটিয়ে জিজ্ঞাসা করলোবাড়িতে কে আছে, ও কতদূর লেখাপড়া করেছে এইসব। বোধহয়, কেউ নেই শুনে আর econ. hons শুনে একটু দয়া হলো। স্কুল এর নামটা শুনে, বোঝাগেল বেশ impressed. ওর একেবারে গায়ের কাছে এসে বলল, ......সামনে যেখানে দাড়াবে, আপনি আমার সাথে নেমে আসবেন, দেখি যদি কিছু করা যায়। আমি ধনবাদ অবধি যাব , মনেহয় তার ভিতর একটা বসার জায়গা করে দিতে পারব। ......সার, তা হলে খুব ভালো হয়। বলে দিপু তার সারা জীবনের ট্রেন ভ্রমনের কাহিনী শোনালো । চেকার হো হো করে হেসেউঠলো। এরপর চেকার, ট্রেন দাড়াতেই দীপুকে নিয়ে নেমে পিছন দিকে বেশ জোরে,প্রায় দৌড়ানোর মতই হাটতে লাগলো।একটি reserved কামরার কাছে এসে "বিশ্বাস, বিশ্বাস , শুনে যাও" বলে হাঁক মারলো। কামরার ভিতর থেকে এক ব্যক্তিতারাতারি এসে .....কি ব্যাপার প্রসাদজি , কি হয়েছে ? .....এই ছেলেটি জীবনে almost প্রথম ট্রেন চড়ছে ,একটা বসার কিছু করে দাও । একেবারে বাচচা ছেলে। বিশ্বাস দিপুরদিকে তাকিয়ে উঠে আসতে বলল। দিপু কামরায় উঠে হাতজোড় করে নমস্কার করলো। বিশ্বাস অদ্ভূত চোখে, যেন জীবনেপ্রথম কেউ তাকে নমস্কার করছে, তাকিয়ে ওকে একটা সিট্ দেখিয়ে বলল ......আপনি এইখানে বসুন, এইটা আমার সিট্, কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবেন আমি আপনাকে বসতে দিয়েছি। আর আমিধনবাদে নেমে যাব, আমার জায়গায় যিনি উঠবেন তাকে আমি বলে যাব। আপনি বসুন।প্রসাদজি পরশু retire করবেন, তাইতার কথা রাখতেই হবে। বলে একটু হাসলো। দীপুও হেসে প্রত্যুতর দিল। দিপু সিট্ এ বসে জানলা দিয়ে বাইরে তাকালো। দ্রুত চলে যাচ্ছে ঘন অন্ধকার, মাঝে মাঝে দুই একটা আলোর ঝলকানি,জোনাকি পোকার মতো চমক দিচ্ছে " রবি, বসুধা কুটুম্বকম ,স বান্ধব পদে পদে", কথাটা অন্তত গত ৩ দিন আমার জীবনেলেগে গেছে। রাধা মাসি আমার কে হয়? কোনো রকম রক্তের সম্পর্ক নেই, কিন্তু দ্যাখ, কি না করলো আমার জন্য। এখানে,জীবনে প্রথম ট্রেন চড়া বলতে পারিস। চেকার কে জীবনে আর দেখব না হয়ত, কিন্তু আমার স্মৃতির মনিকোঠায়, এই প্রসাদজিআর বিশ্বাস ঠিক থেকে যাবে। অনেকেই ট্রেন যাত্রার অনেক বাজে অভিজ্ঞতা বলে, হয়ত ঠিক, কিন্তু আমার বেলায় সম্পূর্ণউল্টো। পদে পদে না হলেও, বন্ধুত্যর হাত তো কেউ না কেউ এগিয়ে দিচ্ছে। না রে,এখনো অবধি তো, বাজে কোনো কিছুইহয়নি, বাড়ি থেকে বেরুনোর পর। দেখা যাক দিল্লি তে কি হয়। খারাপ কিছু হবে বলে মনে হয়না। তুই থাকিস, কেমন" কখনঘুমিয়ে পড়েছে বুজতেই পারেনি। ঘুম ভাঙ্গলো। তখন ঘড়ি দেখে প্রায় ৫টা। খিদে পেয়েছে। ব্যাগ থেকে, রাধার দেওয়া, পাউরুটি,ডিম খেয়ে জল খেল। আকাশ আস্তে আস্তে ফর্সা হচ্ছে, তারারা একে একে সরে যাচ্ছে, দিপুর অজান্তে মুখ দিয়ে বেরিয়েআসলো, "রাতের সব তারা থাকে দিনের আলোর আড়ালে। " দুপাশে দ্রুত চলে যাচ্ছে, গ্রাম ,জনপদ,মানুষের বহতা জীবন।জীবন ট্রেন এর মতই বহতা। থেমে থাকেনা, তুমি থামলেই, তোমার গায়ে শ্যাওলা ধরবে, মন খারাপ হবে, তার থেকে চলতেথাক, যা হবে দেখা যাবে। "চরৈবতি।"কিন্তু সব সময় চলতে পারলে ভালই হত, কেননা গয়া স্টেশন এ গাড়ি থামতেই, দিপুরমনে হলো সমস্ত জায়গাটাই বোধহয় পায়খানা। দু ধারে সার বেধে লোক পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে প্রাতকৃত সারছে। আরদুর্গন্ধে প্রাণ ওষ্ঠাগত । আচ্ছা ওই লোকগুলোর এই দুর্গন্ধ লাগছে না, কেউ কেউ তো আবার দিব্বি দাঁতন দিয়ে দাঁত মাজছে।কি করে পারে, বোধহয়,ছেলেবেলা থেকে এই গন্ধ নাকে গিয়ে গিয়ে আর দুর্গন্ধ মনে হয়না। কিন্তু মেয়েরাও তো দিব্বি, খোলামাঠেই ওই একই কাজ করছে। আব্রুর ব্যাপার নেই কোনো। কি আশ্চর্য , ঘোমটা টানা এক হাত, ওদিকে মাঠের মধেই কাজসারছে। আসলে লজ্জা ,শরম , আব্রু এই সবই আপেক্ষিক। স্থান ,কাল পাত্র পেক্ষিক । দিপু বুঝলো, যে পায়খানায় যেতে হলে এটাই সেরা সময়। কিন্তু যাবে কিভাবে।একে তো ব্যাগটা আছে, তারউপর জায়গাছাড়লেই অন্য কেউ বসে যেতে পারে। কি করবে ভাবছে, একটি ছেলে দিপুর বয়েসী এসে সিগারেট ধরালো, দিপু ছেলেটিকেদেখল একটু সময়, তারপর ইংরাজিতে ছেলেটিকে বলল . তার জায়গা আর ব্যাগটা নজর রাখতে ও একটু টয়লেট এ যাবে।ইংরাজির মাহাত্য বুঝলো দিপু। ছেলেটি সঙ্গে সঙ্গে দিপুর জায়গায় বসে ওকে নিশ্চিন্ত করলো।দিপু একটা সিগারেট ধরিয়েপায়খানায় ঢুকলো।মিনিট ৭-৮ ভিতর কাজ সেরে ফিরল। দাঁত মেজে ছেলেটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে। নিজের সিট্ এ বসলো।ছেলেটি দিপুর সাথে আলাপ জমালো। ওর পুরো ফ্যামিলি সাথে যাচ্ছে। বলল দিপু ইচ্ছা করলে ওর সাথে আসতে পারে। সাথেমা,বাবা, আর বোন্ আছে। দিপু জিজ্ঞাসা করলো জায়গার অসুবিধার কথা, ছেলেটি পাত্তা দিলনা। দিপু ছেলেটির সাথে ওদেরজায়গায় গেল। ছেলেটির নাম বিষ্ণু। অর বাবা মা আর বোন্ এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। ওরা উত্তর প্রদেশের লোক।বেড়াতে বেরিয়েছিল। আন্দামান ঘুরে দিল্লি যাচ্ছে। .....প্রিয় , তুমি আগে কখনো দিল্লি গেছ ? বিষ্ণুর বাবা জিজ্ঞাসা করলো .....না আঙ্কেল ,বলতে পারেন এটাই আমার প্রথম ট্রেন যাত্রা। চেকার ভদ্রলোক খুব ভালো, কি মনে করে আমাকে এইজায়গাটা দিয়েছেন। আমার কোনো ধারনাই নেই।আমার কাছে, দিল্লি আর দামাস্কাস দুটিই সমান। দিপুর কথা বলার ভঙ্গি তেসবাই হেসে উঠলো। ......তোমার বাবা, মা তারা কি কলকাতায় থাকেন ? বিষ্ণুর মা জিজ্ঞাসা করলেন ......কেউ নেই। খালি এক কাকিমা আর কাকা আছেন তারা আহমেদাবাদ চলে গেছেন আজ ৩ দিন। সেই জন্যই আমি দিল্লিযাচ্ছি। একজন আমাকে দিল্লি যেতে বলেছেন , কিছু একটা হয়ে যাবে আশা করি। .......কেউ নেই, মামা বাড়ির কেউ ? ভদ্রমহিলা সহানুভূতির স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন। .......না আন্টি , তারা আছেন কিন্তু আমি তাদের চিনিও না। আসলে বাবা ,মা না থাকলে যা হয় আরকি। ওই কাকিমাইআমার সব। কাকা ট্রান্সফার হয়ে গেলেন তাই আর কলকাতায় কি করব, দেখি দিল্লিতে। কিছু একটা হবে। ইচ্ছা করেই বিরজুরপ্রসঙ্গ এড়িয়ে গেল বিষ্ণু দিল্লিতে পরে। এইবার law এ ভর্তি হয়েছে। বোন্ টা ba পরে, ইতিহাস নিয়ে। মেয়েটির বেশ মিস্টি চেহারা। নাম,সহেলী।আলাপিও বটে। দিপু বেশ গুছিয়ে ওদের সাথে আড্ডা দিতে লাগলো। সকালের চা,জলখাবার ওরাই দিল। পয়সা দেবার চেষ্টা করতেই সবাই রে রে করে উঠলো। কিছুক্ষণ পর দিপুর খুব ঘুম পেল। ওদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে দিপু ওপরের বাংক এ উঠে লম্বা হয়ে ব্যাগটা মাথায় দিয়ে ঘুম। টানা ৫ ঘন্টা ঘুমালো। বেলা ২ টো নাগাধ ঘুম ভাঙ্গলো। আবার আড্ডা,. দিপুর সবচাইতে যেটা আশ্চর্য লাগলো এই ট্রেন যাত্রায় তা হলো, কত সহজে একেবারে অপরিচিত মানুষ কাছা কাছি আসে। জানালা দিয়ে নতুন নতুন শহর , নগর দেখতে দেখতে প্রায় দিল্লির কাছা কাছি পৌছে গেল। বিষ্ণু নিজেদের ঠিকানা আর ফোন নম্বর দিয়ে দীপুকে বলল ও যেন যোগাযোগ করে। ভদ্রমহিলা দিপুর মাথায় হাত রেখে বিড় বিড় করে কি বলল। সহেলীও ওকে তাদের বাড়িতে যেতে বলল। রাত ৮টা নাগাধ দিপু রাজধানীতে পা রাখল। কিন্তু সেই রাত্রে আর কোথাও না গিয়ে প্রথমেই প্লাটফর্ম এ রেস্টুরান্ট এ গিয়ে পেট ভরে ভাত , তরকারী, ডাল ,ডিম খেয়ে ওয়েটিং রুম এ ঢুকলো। সমস্ত ঘরটাতে প্রায় ১৫০ জন লোক শুয়ে বসে আছে। পা ফেলার জায়গা নেই। হটাত নজরে এলো, একটা দরজার পাশে একটা বড় কালো লোহার বাক্স। বেশ পুরানো।দিপু চুপ করে গিয়ে তার উপর বসলো। একটু পর বুজতে পারল,কেন কেউ ওখানে বসেনি। পাশের দরজাটা, ঘরটার টয়লেট এ যাবার। যতবার কেউ যাচ্ছে, ওই টয়লেট এর দুর্গন্ধ দিপুর নাকে আসছে। কিন্তু কিছু করার নেই দিপু চুপ করে ঘরটা দেখতে লাগলো। । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল মাত্র রাত ১১টা বাজে।কি করবে,দিপু ঘরের দিকে মন দিল।ওর সামনেই ৬-৭ ফুট দুরে একদেহাতি পরিবার সুয়ে আছে,দুটি বাচ্চা আর স্বামী স্ত্রী। বৌটা কোলের বাচ্চা কে বুকের মাঝে নিয়ে ঘুমাচ্ছে। আশ্চর্য লাগলো দিপুর, ঘুমের মাঝে যেই বাচ্চাটা মার কোল থেকে একটু সরে গ্যাছে, বৌটা অমনি ওই ঘুমের ভিতরই বাচ্চাটাকে নিজেরদিকে টেনে নিয়ে আসছে। কি করে টের পায়, এই গভীর ঘুমের ভিতর,এই বোধহয় মাতৃস্নেহ। স্বামীটা অন্য বাচ্চাটাকে নিয়েএকটা বাক্সর উপর মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছে। মাঝে মাঝে বিচি চুলকাচ্ছে।শালার দাদ আছে নিশ্চই। একটু দুরে একটি পরিবার,বৌটা নতুন বিয়ে হওয়া মতন,পাশে শাশুড়ি তাকে আড়াল করে ঘুমাচ্ছে। বরটা অন্য পাশে বসে আছে। জিনিস পত্রপরিবারটির মাজখানে। সাবধানী আছে। এক মোটা আর তার বউ,সেটাও মোটা , পাশাপাশি ঘুমাচ্ছে। লোকটার বিকট নাকডাকার আওবাজ।উফ, এই টয়লেট এর গন্ধ ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু কি করবে।দিপুর চোখ, ওই গন্ধর ভিতরও বুজে আসল। কিছুশব্দে , ঘুম ভাঙ্গলো। দেখল, ভোর ৪টে বাজে। কিছু পরিবার চলে যাচ্ছে। দিপু তড়াক করে লাফ দিয়ে তাদের একজনেরজায়গায় মাটিতেই, সুয়ে পড়ল। তাদের কাগজ পাতা ছিল। এক ঘুমে রাত কাবার। বেলা ৭টার একটু আগে ঘুম ভাঙ্গলো। উঠেব্যাগ কাধে নিয়ে পেচ্ছাপ করে, চোখে মুখে জল দিয়ে বাইরে এলো।ভারতের রাজধানী, একটু একটু করে জাগছে। বাচ্চারা স্কুলযাচ্ছে। একটা চায়ের দোকান দেখল যেখান থেকে std করা যায়। প্রথমেই রাধাকে phone করলো।একবারেই পেয়ে গ্যালো .......হাঁ .মাসি ঠিকঠাক পৌছেছি, না কোনো অসুবিধা হয়নি। আমি এখনি ওনার বাড়িতে যাচ্ছি , এখানেই বাস পাওয়া যাবে।চিন্তা করনা। ঠিক আছে তুমি ওনাকে ফোন করে দাও। আচ্ছা , রাখলাম। পয়সা মিটিয়ে দিপু এক পুলিশ কে জিজ্ঞাসা করেবাস নম্বর জেনে , রয়না দিল। বাসে এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞাসা করতে তিনি কোথায় নামলে সুবিধা হবে বলে দিলেন,এমনকিস্টপ আসলে ওকে নামতেও সাহায্য করলেন। বাস স্টপ থেকে হেটে মিনিট ১০ পর বাংলোটা দেখতে পেল। সামনে পুলিশপাহারায়। দিপু গিয়ে পুলিশকে ভিতরে যাবার অনুমতি চাইতেই সে বলল ........কলকাতা থেকে আসছেন ? সাহেব আমাকে বলে দিয়েছেন একটু আগে, যান ভিতরে যান। আস্তে আস্তে দিপু ভিতরেঢুকলো। সামনেই একটা বড় ঘর, কয়েকজন লোক দাড়িয়ে, আর একজন বসে।দীপুকে দেখেই একজন বলে উঠলো .......এইত এসে গ্যাছে, আসুন আসুন, ভিতরে আসুন। দিপু ভিতরে ঢুকলো। দিপু ঢুকে দেখল ঠিক মাজখানে একজন বসে আছে, লম্বা দারুন স্বাস্থ্য, পিছন দিকে আচড়ানো চুল,দাড়িগোফ কামানো , বছর৪০-৪২ বয়েস হবে। দীপুকে দেখে কাছে আসতে বললেন। এইখানে দিপু একটা চাল দিল, ও ঝপ করে ভদ্রলোকের পায়ে হাতদিয়ে প্রনাম করলো। ভদ্রলোক উঠে দাড়িয়ে দিপুর কাধে হাত রেখে সহাস্সে ইংরাজিতে বললেন ...... রাধা সকাল থেকে দুবার ফোন করেছে, যে তুমি এসেছকিনা..আরে রাধা তোমাকে এখানে কেন পাঠালো, তুমি তোবম্বে গেলে পারতে। মডেল বা হিরো হয়ে যেতে। এস, বলে ওকে একটু পাশে নিয়ে বললেন, .......তিনটে লোক আমাকে কিছু করতে বললে, আমি তা করবই। এক, আমার দলের যিনি নেতা, ২।আমার স্ত্রী আর তিন ,ওই রাধা। এই তিনজন আমাকে বললে আমাকে করতেই হবে। তুমি কোন সাবজেক্ট নিয়ে পরেছ? ......ইকোনমিক্স এ অনার্স। .......বাহ, এখন তুমি বিশ্রাম নাও। এই মুকেশ, বাংলা জানে একটু একটু, ওর ঘরেই তুমি আপাতত থাক। খাবার ওর সাথেইখাবে। আর দিল্লি শহর ঘুরে দ্যাখো। মোটরসইকেল চালাতে জানো , লাইসেন্স আছে ? .......সার, আমি গাড়িও চালাতে জানি। আর সেই সূত্রেই রাধা মাসির সাথে পরিচয়। .......বাহ, খুব ভালো। হয়ে যাবে কিছু একটা , রাধা পাঠিয়েছে .,না করলে খেয়ে ফেলবে আমাকে। আমার স্ত্রী আর রাধার খুবভাব। দুজনে আমাকে শেষ করে দেবে।আমি রাধাকে জানিয়ে দিচ্ছি যে তুমি পৌছে গ্যাছো। হেসে বললেন। তারপর , ডাকদিলেন "মুকেশ , ওকে তোর্ সাথে নিয়ে যা, নাস্তাপানির ব্যবস্থা করে দে। তোর্ ওখানেই একটা চৌকি পেতে বিছানা দিয়ে দে। খাবার তোর্ ওখানেই। ঠিক আছে"। দিপু মুকেশের সাথে ঘর থেকে বেরিয়ে বাংলোর পিছন দিকে একটা ঘরে ঢুকলো। বড়ই ঘরদুজনের পক্ষ্যে,সাথে বাথরুম আছে। মুকেশ ,প্রথমেই দীপুকে বলে দিল যে ও মাসে একবার কলকাতা যায় চা আনতে। ও এখানে অনেক দোকানে চা সাপ্লাই করে।বিরজুর সাথে ২ বছর আছে। লেখাপড়া বিশেষ কিছু হয়নি। রাতে মুকেশ রান্না করে খায় ,দিপুর যদি আপত্তি নাথাকে তো খেতেপারে।আপত্তি? পেলে বর্তে যায়। সুরু হলো দিপুর দিল্লির জীবন। পরের ৫ দিন সুধু mpর একটা পুরনো রাজদূত বাইক নিয়েদিল্লি চক্কর মারলো। দেখার যে কটা জিনিস আছে মোটামুটি দেখল। এক রাত্রি বেলা বিরজু ওকে ডেকে পাঠালো। সামনেবসিয়ে ......শোনো , প্রতিদিন আমার সাথে অন্তত ২০ জন লোক সকালে দেখা করতে আসে। কাল থকে তুমি, যারাই আসবে, কি কারণে আসছে, নাম ধাম সব একটা খাতায় লিখে রাখবে। আর তাদের দেওয়া দরখাস্ত ফাইল করে রাখবে। তোমার টেবিল এর ডান দিকের ড্রআর খোলা রাখবে। প্রতেকেই, ১০,২০, ৫০তোমাকে ওখনে দিয়ে যাবে। ওই টাকাতেই এখানে যারা আসে তাদের চা বিস্কিট ,তা ছাড়া ৮-১০ জন যারা এখানে থাকে, যেমন পার্টির লোক আছে, এ ছাড়া তুমি মুকেশ এরা আছো ,এদের খরচা চলে। কাউর কাছে চাইবে না, কে কত দিল দেখবে না। কেউ যদি না দেয় , তো কিছু বলবে না, বা অন্য ভাবেনেবে না।লোকে খুশি হয়েই দেবে। সেটা তোমার ব্যবহারের উপর নির্ভর করবে। এখন যে আছে, সে ইংরাজি একেবারেই বলতেপারেনা। আমি,ওই দরখাস্তর ওপরে ইন্সট্রাকশন দিয়ে দেবে, তুমি ইংরাজিতে লিখে টাইপ করে আমাকে দিয়ে সই করেপাঠাবে। টাইপ জানো তো? জানো ? বাহ ,গুড। ফুল হাতা জামা জুতো পরবে। আর লোক বুঝে ইংরাজিতে কথা বলবে। তোমার ইংরাজি বেশ ভালো। কোনো অসুবিধা হলে আমাকে জানাবে। আর সব থেকেবড় কথা যেটা , যে কি লিখলে, বা কাকে লিখলে ,কেন লিখলে,সম্পূর্ণ গোপন রাখবে। কোনো ইন্সট্রাকশন পছন্দ না হলে,খোলা মনে আমাকে বলবে।অন্য কাউর সাথে আলোচনা করবেনা। কাল সকাল ৭টা থেকে তোমার কাজ সুরু। খাতা পেন সবড্রআরএর ভিতর চাবি দিয়ে চাবি নিজের কাছে রাখবে। টাকা ,তুমিও রাখতে পারো আমাকেও দিতে পারো।আমি এই কাজের জন্য তোমাকে আলাদা করে ১০০০ টাকা দেব।কাউকে কিছু বলার দরকার নেই. ........সার টাকা আপনি রাখুন, বাকিটা আমি সব করব, পরের দিন সকাল ৭টা থেকে দিপুর নতুন জীবন সুরু হলো। প্রথম দিন কাজের শেষে দিপু টাকা হিসাব করে দেখল মোট ৪৩০ টাকা জমা পড়েছে।টাকা নিয়ে ও বিরজু কে দিল। ৪৩০দেখে বিরজু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো। দিপু একটু হকচকিয়ে গেল। .......৪৩০, আমাকে কোনদিন ৩৫০ এর বেশি দেয়নি। কেন তোমাকে বসিয়েছি বুজতে পারছ? রাধা যাকে তাকে পাঠাবে না ।গুড , ভেরি গুড। তোমাকে কিছুদিন পর আরো খুব দায়িত্বের কাজ দেব। নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত রাখো। তোমার প্যান্টশার্ট আছেতো ? না থাকলে কিনে নীয়, আমি দাম দিয়ে দেব। ......না সার আছে, জিন্সএর প্যান্ট চলবে তো ? ....হাঁ হাঁ , আজক্কাল সবাই তো পড়ছে , ,তুমি বরং, জামা ,পারলে হালকা রঙের কিনে নীয়। তোমার কোনো নেশা আছে? .....না সেরকম কিছু নেই ,তবে ,, লুকবনা কিছু, দিনে ২-৩ সিগারেট খাই ব্যাস। আর ক্যারাটে প্রাকটিস টাই আমার নেশা। ......তোমাকে দিপু বলেই ডাকব। আমার একটা ফার্ম হাউস আছে। মাঝে মাঝে লোকে ভাড়া নেয়। পার্টি দেয় আরকি। তবে,নিরামিষ পার্টি না। তখন তুমি ওই ফার্ম হাউস এ রাত কাটাবে। গন্ডগোল হলে পুলিশ ডাকার দরকার হলে, বা আমাকেজানানোর মত হলে জানাবে। ভুলেও, হাজার প্রলোভন থাকলেও ওদের সাথে যোগ দেবে না। ভারতের কিছু লোক কিভাবে নগ্নজীবন কাটায় খালি দেখে যাবে। ......দিপু ,তোমার বাবা মা কি ভাবে মারা যান, কতদিন আগে? ......দিপু ,তোমার বাবা মা কি ভাবে মারা যান, কতদিন আগে? ......বাবা যখন মারা যান তখন আমার বয়েস ৬। আর মা যিনি, আমি জন্মদাত্রী বলি,কেননা তিনি কোনদিনই আমার মা হয়েউঠতে পারেননি, তিনি তার ৬ মাস বাদে বিয়ে করে চলে যান। কাকে বিয়ে করেছেন, কোথায় থাকেন ,কি ভাবে থাকেন কিছুজানি না, জানার ইচ্ছাও নেই। বাবা আসলে এক্সিডেন্ট এ মারা যান। কিন্তু এক্সিডেন্ট ঘটানো হয়েছিল। ইচ্ছা করে তার স্কুটারেধাক্কা মারা হয়। কিন্তু তখন ইমার্জেন্সি চলছিল, তা ছাড়া আমার বাবা অন্য রকম রাজনীতি করতেন . আর জেল একাটিয়েছেন প্রায় ১ বছর। তাই পুলিশ কিছুই করেনি। খুব সৎ লোক ছিলেন। মিছিমিছি তাকে প্রাণ দিতে হয়। আমি জানি কেতাকে মেরেছে। কোনদিন যদি তার খোজ পাই, তাহলে জিজ্ঞাসা করব, যে মারলো কেন, কি কারণ ছিল। এই মাদুলি দেকছেনসার,এতে তার চিতাভস্য আছে। আমার জন্য, এই পৃথিবীতে মাত্র দুটো প্রাণ চিন্তা করে, এক রাধা মাসি আর আমারকাকিমা। তিনি পরিয়ে দিয়েছেন। .......দিপু , ওই ইমার্জেন্সি সময়েই আমার রাজনীতিতে হাতে খড়ি। যে সমাজের সপ্ন দেখতাম বা এখনো দেখি, কোনদিন যদিসেই সমাজ আসে, হাটু গেড়ে বসে আনন্দের সাথে আমার যা কিছু আছে সব দিয়ে দেব। সব দোষ কবুল করব। তুমি থাকতেথাকতে দেখবে, এই গরিব দেশের কিছু লোক কি ভাবে বড়লোক হয়। হয়ত তুমিও হবে। কিন্তু যাই হয় মনুষত্ব হারাবে না,তাহলেই তোমার মৃত্যু।প্রেম ভালবাসা, স্নেহ এই সব না থাকলে মানুষ হয় না, পশু হয়, পশু। তুমি কাউকে ভালোবাসো? ......হাঁ সার। ওটা আর কিছু এগোবেনা। ও কথা থাক সার। ....ঠিক আছে . তোমার যদি পড়ার নেশা থাকে তাহলে এখানে অনেক পত্রিকা আসে, পড়তে পারো । মনে রেখোknowledge is power দিপুর সাথে কথা বলার সময় বিরজু ইংরাজীতেই কথা বলে। বেশ ভালই ইংরাজি বলে। দিপু কাজ ভালোভাবেই করছে, তারচিঠির ড্রাফটিং দেখে বিরজু খুব খুশি। একদিন এক দখিন ভারতীয় ব্যবসায়ী অন্নেক্ষণ ধরে দেখা করবে বলে অপেখ্যা করতেকরতে দিপুর সাথে ভাব জমায় । অনেক বিষয় নিয়ে অন্নেক্ষণ কথা বলে। তারপর বিরজুর সাথে দেখা করে প্রথমেই .......mp সাহেব, এই ছেলেটিকে আপনি কোথা থেকে পেয়েছেন? আমি ব্যবসাদার মানুষ, কথা বললে লোক চিনতে পারি,আপনি যদি মনে করেন তাহলে আমাকে দিতে পারেন, ও জীবনে উন্নতি করবে। আমি ওকে খুব ভালো জায়গায় বসাব। .......হাঁ দিতে পারি যদি ওর একটা ডুপ্লিকেট আপনি আমাকে দেন, বিরজু হেসে উত্তর দিল। আর মনে মনে রাধা কে ধন্যবাদদিল। বিরজুর পরিবার পাটনায় থাকে ,ওর স্ত্রী ওখানে কলেজে পড়ায় । ছুটি তে আসে। একটি ছেলে আর একটি মেয়ে নিয়েপুজোর সময় খুব অল্প কদিনের জন্য এসে দিপুর কথা বার্তায় , ব্যবহারে আর চেহারায় মুগ্ধ। দীপুকে পাটনা যাবার নিমন্ত্রণদিয়ে গেল। দিপুর জীবনে মোড় ঘুরল পুজোর পর রাধা আসার পর। দিপুর মনে একটা খচখচানি আছে ,সেটা ওর কাকিমাকে খবর দেওয়া নিয়ে। একদিন দিপু একটা চিঠি লিখে তার বর্তমানঅবস্থা জানিয়ে রাধার ঠিকানা দিয়ে কাকিমাকে লিখল, কলকাতায় আসলে রাধা মাসির সাথে দেখা করে বিস্তারিত জানতে।রাধার সাথে ওর পরিচয় কি ভাবে সেটাও লিখল। বুদ্ধি করে কাকার নাম pronob bhattacharjee,AGM ,লিখে ব্যাঙ্ক এরনাম লিখে ব্যাঙ্ক এর Ahmedabad LHO , HR Deptt . Gujarat লিখে পোস্ট করলো। মনে ভাবলো, যে ওখানে বাঙালিAGM নিশ্চই খুব বেশি হবে না। HR নিশ্চই খোজ করে পাঠিয়ে দেবে। দিপুর আন্দাজ ঠিকই ছিল। ব্যাঙ্ক এ একটু দেরীহয়েছিল, তবুও ঠিক ওর কাকার কাছে পাঠিয়ে দেয় চিঠিটা।ছোটকা চিঠি পেয়ে প্রথমে আশ্চর্য পরে অবাক এবং প্রচন্ড খুশিহয়। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে কনা কে জানায় .........কনা, দারুন ব্যাপার, দিপু চিঠি দিয়েছে। ভালো আছে, বাড়িতে গিয়ে বলব। ........দিপু চিঠি দিয়েছে ? অমি তো ভাবতেই পারছিনা। কি লিখছে দিপু? তুমি তারাতারি আসবে, আমি ভিশন excited শুনে।যাই হোক দিপুর যে পরিবর্তন হয়েছে এটা দিপু নিজে আর ওকে যারা জানে প্রতেক্যেই বুজতে পারছে। নভেম্বর মাসে রাধা দিল্লি আসলো। তার নিজের ফ্লাট আছে ,মোটামুটি পশ এলাকায়। সেখানেই উঠে বিরজু কে ফোন লাগালো২ দিন পর। বিরজু সাথে সাথে দীপুকে দিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে দিল। দিপুত খুশিতে ফেটে পড়ছে। ঘরের বেল বাজতেই, রাধা দরজাখুলে এক গাল হেসে ওকে জড়িয়ে ভিতরে নিয়ে দরজা বন্ধ করলো। দিপু র দু কাধে হাত রেখে দ্বারা ,তোকে একটু দেখেনি।এখনো মেয়েরা তোকে আস্ত রেখেছে ভেবেই তো আমি অবাক .......আমিও অবাক মাসি, আমার এখন আর অন্য মেয়ে ভালো লাগেনা। খালি তোমার কথা মনে হয়। এই বলে এক চুমু।রাধাও জড়িয়ে চুমু খেল। তারপর রাধা সব কিছু জানতে চাইল। দিপু সবিস্তারে বলল। .......মাসি উনি আমাকে বলেছেন যে আরো দায়িত্যৰ কাজ দেবেন, সেটা কি রকম বুজতে পারছি না। .......বিরজু আমাকে বলেছে, এখন চল ওর সাথে দেখা করি। তারপর কথা বলে তোকে বলব। দুজনে গাড়িতে বিরজুর বাংলোতে আসলো। বিরজু রাধা কে দেখে জড়িয়ে ধরে ভিতরে নিয়ে গেল। তারপর দুজনে কথা বার্তা বলল, একটু গোপনে অনেকক্ষণধরে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার রাধা বিরজু আর দিপু আড্ডা মারছে, তখন বিরজু বলল ........দিপু তোমাকে একটা ব্যবসায় লাগাবো। সম্পূর্ণ তোমার ব্যবসা। আমি হেল্প করব। তোমার নাম একটা prop,ship ফার্মখুলতে হবে। আমি পরিচয় করিয়ে দেব, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক আর মিডিয়া হাউস এর সাথে। ওদের খুব প্লেন এর টিকিট এর দরকারহয়। তুমি ওদের টিকিট কেটে দেবে। তুমি টিকিটের উপর ২% কমিসন পাবে। এই কমিসন ওই এয়ারওয়েস গুলো দেয়। তারা তাদের এজেন্ট কে দেয়, ৩-৪% .সেই এজেন্ট আবার তোমার মত সাবএজেন্ট দের কমিসন দেয়। ভালো ব্যবসা ,খালি ভালো জানাশোনা লাগবে। সেটা আমার উপর ছেড়ে দাও। রাধা তোমাকে১লক্ষ্য পঞ্চাশ হাজার দেবে। তুমি যদি মাসে ওই টাকা দুবার ঘোরাতে পার তাহলে ৩ লক্ষ হয় ,তার ২ % মানে ৬০০০ তোমার ইনকাম। তুমি যত টাকা ঘোরাবে ততো তোমার ইনকাম বাড়বে। কিছুদিন পর ওই এজেন্ট রাই তোমাকে ধার দেবে।তখন আর তোমার টাকা লাগবে না। কি করবে তো ? .......করব মানে, কালকেই করব,খুব ভালো হবে। দেখবেন আপনাদের মুখ পুড়বে না। কথা দিলাম এখন খুব ভালো করছে। তার একটা অফিস আছে.......আমি আরেকজনকেও করে দিয়েছি। তারটা অন্যরকম। হোটেলেরসাথে ,টিকিট কাটা, হোটেলের লোক ধরে আনা এইসব। সে, সদর বাজারের কাছে, তার ঘরেই, আমি বলে দেব, তুমি একটাটেবিল আর চেয়ার রেখে বসবে, আর তার টেলিফোন ব্যবহার করবে, তাকে মাসে ১০০০ টাকা দেবে। আমি বললে সে কিছুবলতে পারবেনা। তার টিকি বাধা আমার কাছে। ও বেশি লেখাপড়া জানেনা, কোনোমত স্কুল পার করেছে। তুমি তাকে একটুহেল্প করবে, কেননা সে ইংরাজি বলে তুলসীদাস এর মত। তিন জনে বিরজুর শেষ কথা সুনে হেসে উঠলো .........দিপু তুই আজ থেকে আমার ফ্লাট এ থাকবি। কথা আছে, ওখানে গিয়ে ব্বলব বিরজু ও সাথে যাবে। তিনজনে রাধার ফ্লাট এ আসলো। রাধা চা বানিয়ে এসে বসলো। ......শোন দিপু , পার্টি চালাতে গেলে টাকার দরকার হয়। একটা লোকসভা ইলেকশন মানে একটা সিট্ এর জন্য, প্রায় ১কোটি লাগে। তাহলে বুজতে পারছিস যে কি টাকার দরকার হয়। সেই টাকা কোনো নেতা নিজের কাছে রাখেনা। অন্য কাউরকাছে , খুব বিশ্বাসী কেউ তার কাছে রাখে। আমার কাছে বিরজু রাখত, কিন্তু কলকাতা থেকে দেওয়া নেওয়া করা মুশকিলআর খরচা অনেক। তাই তুই এই ফ্লাট এ থাকবি। এখানে ২টো গোপন জায়গা আছে, আর এই আলমারি আছে। এখানে তুইটাকা রাখবি। দরকার মত তোর্ কাছ থেকে চেয়ে নেবে। কিন্তু তুই কোনো সময়েই ওই টাকা খরচা করবি না। যদি করিসজানিয়ে করবি। যেহেতু ,আমি পার্টি করিনা, তাই আমার কাছে রাখত। তোর্ ব্যবসা থাকবে, আর এই জিম্মেদারী। তুই আরবেশি ওই বাংলোতে যাবিনা। যাবি কিন্তু রোজ না। আর ফোন এ কথা বলবি, কোড এ। বিরজু বলে দেবে। কেমন। ........ঠিক আছে, ওই নিয়ে চিন্তা করনা। সামলে নেব। কিন্তু ওনার সাথে আড্ডা মারতে আমার বেশ ভালো লাগে, একটু অন্যরকম কথা বার্তা হয়, তাই না গেলে খারাপ লাগবে। ........আরে তুমি যাবে, আমার আড্ডা মারতে ভালো লাগে। সবাইতো খালি টাকার ধান্দাতে আসে, তুমি গেলে আমার ভালোলাগবে। নিশ্চই যাবে।রাধা তোমাকে সব দেখিয়ে দেবে। টাকা গুনতে হবেনা। খালি বান্ডিল গুলো গুনবে। একজনকে আগেরাখতে দিতাম ,ব্যাটা প্রতি প্যাকেট থেকে ১-২ টো সরাত । তুমি দেখবে, কোনো বড় পার্টির , বামেরা বাদে, কোনো বড় নেতামারা গেলে , ২-১জন লোক হটাত বড়লোক হয়ে যায়। আসলে ওদের কাছে টাকা রাখা হত। আর কেউ জানতনা। সব টাকাতখন সে মেরে দেয়। তুমি আজ থেকে এখানেই থাকবে, রাধা এখন এক মাস থাকবে,ও সব বুঝিয়ে দেবে। তোমার জিনিসপত্রতুমি এখন আমার সাথে গিয়ে নিয়ে এস। আর এখানে কাউকে, বিশেষ করে আমার জানাশোনা কাউকে আনবেনা। .......ঠিক আছে সার। আমি তাই করব, ......কালকেই তুমি একজনের কাছে যাবে, সে তোমাকে ওই ফার্ম করতে সাহায্য করবে। তারপর তোমার অফিস এ যাবে,কালকেই। ৩-৪ দিনের ভিতর আমি ২ টো ব্যাঙ্ক আর ২টো মিডিয়া হাউস এর সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেব। তুমি খুবভালই পারবে। এ ছাড়া তুমি নিজেও চেষ্টা করবে। আমার রাজদূত টা ব্যবহার কর আপাতত। দিপু আর বিরজু বেরিয়ে গেল , দিপুর জিনিসপত্র নিয়ে, রাজ্দূতে চাপিয়ে রাধার ফ্ল্যাট এ এসে। হাত পা ছড়িয়ে সুয়ে পড়ল। .......মাসি, মাসি একটু সুনে যাও .....দ্বারা এখন রান্না করছি, ওখান থেকেই বল , দিপু উঠে রান্না ঘরে গিয়ে রাধাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ........মাসি আরেকটা মাদুলি করতে হবে, তোমার চরণ ধুলি রাখব। ........তোকে বলেছিলাম না , দেখলি তো। বেইমানি করবিনা কিছুতেই, তোর্ বিপদ হলে বিরজু দেখবে, চিন্তা নেই। আমাকেবলে গেছে। ........ধুর বিপদ, ও সব নিয়ে আমি চিন্তা করিনা। শোন আমি কাকিমাকে একটা চিঠি দিয়েছি পাবে কিনা জানিনা। যদি পায়তাহলে তোমার সাথে দেখা করবে, তুমি যা বলার বল। দিলাম চিঠি, পেয়েত ঘাবড়ে যাবে "দিপু চিঠি দিয়েছে ,সেকি, কি হলোদিপুর" কনার স্বর নকল করে বলল ….“কাকিমা তো আর জানেনা দিপু প্রেমে পড়েছে। এই মেয়েটার, হাসতে হাসতে বলে পিছন দিক দিয়ে রাধাকে চুমু খেল,রাধাও ঘাড় ঘুরিয়ে চুমু দিল। .........এখন একমাস আমি আমার ছোট নাগরকে নিয়ে মজা করব।হেসেবললরাধা।দিপুজড়িয়েধরল।দুহাতে। সব সেরে রাধা আর দিপু বিছানায় সুয়ে আছে। রাধা দুটো বালিশ খাটের পিছনে রেখে হ্যালান দিয়ে সুয়ে, দিপু মাই মুখে নিয়েnipple মুখে নিয়ে চুষছে, রাধা দিপুর মাথায় হাত বলাতে বলাতে ......হাঁরে , তুই এই ৩ মাস কাটালি কিভাবে? কাউকে করিসনি? ......তুমি যে ভাবে কাটালে সেইভাবে। অন্য কাউকে ইচ্ছা হয়নি। ডান হাতে বাঁ দিকের মাই এর বটা নিয়ে সুরসুরি দিছে। মুখতুলে ......মাসি তুমি আমাকে পাল্টে দিয়েছ। একেবারে পাল্টে গ্যাছি আমি .. বলে উঠে দুহাতে মুখ ধরে চুমু দিল। রাধাও দুহাতেদিপুর মুখ ধরে চুমু দিল। বেশ দীর্ঘস্থায়ী হলো চুমু। ......মাসি, তুমি আমার কে জানো ? তুমি হো মাতা, পিতা ভি তুম হো , তুমি হো বন্ধু,সখা ভি তুম হো। .......ভগবান বানিয়ে দিলি আমাকে , তুই ও আমাকে পাল্টে দিয়েছিস। স্বামী মারা যাবার পর, অনেকেই বিয়ে করতেচেয়েছিল, বনির কথা ভেবে করিনি আর কাউকে ভালবাসব, ভাবতে পারতামনা। তুই কালাপাহাড়এর মত সব ভেঙ্গে চুরমারকরে দিয়েছিস। দুঃখ হয়, তোর বয়েসটা এত কম কেন। .......তুমি কেন আমাকে ওই ভাবে সেদিনের মত আগে পাশে বসে হাত ধরনি, তাহলে আমি আগেই পাল্টাতাম। এখন আমারখুব ভালবাসতে ইচ্ছা করে। সবাইকে । কাকার ছোট মেয়েটা আমার খুব ন্যাওটা ছিল, আমি এড়িয়ে যেতাম, কারণ কোনোটান রাখব না বলে।
Parent