টুকরো টুকরো ভালোবাসার গল্প by romanticboy400 - অধ্যায় ৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38520-post-3415725.html#pid3415725

🕰️ Posted on June 21, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 479 words / 2 min read

Parent
ভালোবাসা মানে পাশে থাকা "কি ব্যাপার সকাল আটটা বাজে। আজ কি অফিসে যেতে হবে না নাকি?" - ঝুমের ডাকে চোখ ডলতে থাকে জীত। জানালার পর্দাটা সরিয়ে দেয়ার সাথে সাথেই সকালের আলোটা চোখে এসে পড়ে জীতের। বিছানার পাশেই ভেজা চুল ঝাড়তে শুরু করে ঝুম। ভেজা চুলের ছাট এসে জীতের মুখে পড়ে। জীত ঝুমের হাতটা ধরে কাছে নিয়ে এসে কপালে একটা চুমু একে দিয়ে বলে, "ভালোবাসি,ভালোবাসি, ভালোবাসি" ঝুম ও জীতের নাকটা হালকা টেনে বলে, "ভালোবাসি,ভালোবাসি, ভালোবাসি" এমনটা প্রতিদিনই হয়। ভালোবাসা বাড়ে ধীরে ধীরে। কখনোই কমে না। ছ বছর হলো ঝুমের আর জীতের বিয়ে হয়েছে। এতটুকু পরিমান মন খারাপ করতে দেখেনি ঝুমকে। জীত এতেই খুশি। লাভ ম্যারিজ। দুজনকেই দুজন খুব সুন্দর করে বোঝে। ঝুম কখনোই পুরো পৃথিবী দাবি করে না জীতের কাছে। জীত ই তার জন্য যথেষ্ট। জীত ঝুমকে রাজকুমারী বলে ডাকে। ঝুমের খুব লজ্জা লাগে। আবার অনেক ভালোও লাগে। জীত ঝুমকে ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। অফিসে যাওয়ার আগে ঝুম আমার রুমাল কই, ঝুম আমার মোবাইল কই,ঝুম আমার টাই কই,ঝুম আমার ফাইল কই, এইটা কই ওইটা কই নানা কথা বলে ঝুমকে অস্থির করে ফেলে। এমনকি টাইটাও নিজ হাতে বাধা শিখেনি কারন ঝুম বেধে দেবে বলে। বড্ড ক্লান্ত হয়ে যেত ঝুম। কিন্ত অফিসে যাওয়ার সময় যখন ঝুমের কপালে চুমু দিয়ে জীত বলে, 'সারাটাদিন তোমায় অনেক মিস করবো ' তখনই যেন ঝুমের ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে মুখে হাসি ফুটে ওঠে। পরম বিশ্বাসে মাথা এলিয়ে দেয় জীতের বুকে। কিন্তু জীবনে সুখের পাশাপাশি দুঃখও আছে। জীত সবসময় তা লুকানোর চেষ্টা করে। ঝুম রোজ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদে। কিন্তু জীত ঝুমের শব্দ ছাড়া কান্না বুঝতে পারে। তখনই চোখের জল স্পর্শ করে ঝুমের অধর থেকে সরিয়ে দেয়। রাগ করে বলে, 'আবার কান্নাকাটি করলে আমি কিন্তু মরে যাবো ' এটা বলে জীতও কেঁদে দেয়। এভাবেই কষ্ট ঢেকে যায়। কিন্ত ঝুমের কষ্টটা যেন একটু বেশিই। তিন বছর আগের ঘটনা। ছ মাসের অন্তঃস্বত্তা ঝুম। বেশ ভালোই চলছিল জীত আর ঝুমের দিনগুলো। পেটের ভেতর থাকা বাচ্চা টা পা দিয়ে ধাক্কা মারে আর ঝুম ব্যাথায় কাতরে ওঠে। এদিকে জীত হেসে হেসে প্রায় খুন।আর রেগে গিয়ে ঝুম বলত“ তোমার মতোই দুষ্টু হবে”। কোনো এক দুপুরবেলা হঠাৎ বাথরুম থেকে চিৎকার এর আওয়াজ আসে। জীত বাথরুমের দরজা খুলে যেন চোখে মুখে অন্ধকার দেখা শুরু করলো। বাথরুমের মেঝে রক্তে লাল হয়ে রয়েছে। আর ঝুম যন্ত্রনায় ছটফট করছে। এরপরে ঘটনা স্বাভাবিক হতে পারতো। কিন্তু ভাগ্যে হয়তো অস্বাভাবিক কিছু ছিল। প্রচন্ড আঘাতের কারনে মা হবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ঝুম। ঝুম শুধু কেঁদে যায় জীতের হাত ধরে আর জীত মিথ্যে শান্তনা দিতে থাকে। "কাঁদছ কেন? ধুর পাগলি। ভগবান হয়তো আরো বড় উপহার রেখেছে আমাদের জন্য। কিচ্ছু হবে না। কাঁদবে না তো। তাহলে কিন্ত আমি কেঁদে দেবো।" মুহূর্তগুলো খুবই কষ্টকর। এখনো ঝুম যখন বারান্দায় একা একা বসে থাকে তখন জীত পাশে গিয়ে বসে আকাশের দিকে আঙুল দেখিয়ে বলে, "ওই যে চাদটা দেখছো না? তার পাশের তারাটাই আমাদের বাচ্চা টা" মনটা যেন আরো ভারী হয়ে যায় ঝুমের। ভারি মনটা আর ধরে রাখতে না পেরে জীতের বুকে এলিয়ে দেয়। আর জীত ঝুমের কপালে চুমু দিয়ে বলে, "ভালোবাসি,ভালোবাসি, ভালোবাসি" কী অদ্ভুত এই ভালবাসা তাই না।
Parent