টুকরো টুকরো ভালোবাসার গল্প by romanticboy400 - অধ্যায় ৩৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38520-post-3469093.html#pid3469093

🕰️ Posted on July 7, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 628 words / 3 min read

Parent
আরও কিছুক্ষণ থাকার পর ওরা চলে যায়। একটু পর নিঝুম বাবার সাথে একটু বাইরে বের হয়। বাইরে গেলে বাবার মোবাইল ওর হাতেই থাকে। হঠাৎই নিবিড়ের নাম্বার থেকে একটা মেসেজ আসে, “কেমন আছিস?” নিঝুমের মেজাজটা একটু খিঁচরে ছিল নিবিড়ের উপর। তাই রিপ্লাই করে, “দেখেই তো গেলি কেমন আছি। আবার জিগ্যেস করছিস কেন? যা তোর বউয়ের খোঁজ নে গিয়ে। বাই” নিবিড়ের রিপ্লাই আসে, “মানে?” এর আর কোন উত্তর দেয় না নিঝুম।     রাকটিকাল পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথমদিন অনন্যার সাথে যায় নিঝুম। গাড়িতে যেতে যেতে নিবিড়কে আর আকাশকে নিয়ে অনেক কথা হয় দুজনের মাঝে। একই কোচিঙে পড়ার সুবাদে আকাশ অনন্যারও পরিচিত। তার পুরনো বয়ফ্রেন্ডের বন্ধু আকাশ। সেই হিসেবেও পরিচিত। আকাশ খুব একটা পছন্দ করেনা অনন্যাকে। অনন্যাও আকাশের ব্যাপারে নানা উল্টোপাল্টা কথা বলে। তবে নিঝুম এসব কিছুতে নাক গলায় না। আকাশ তার ভাল একজন বন্ধু। যদিও এই মুহূর্তে আকাশের উপর সে রেগে আছে সেদিনের ব্যাপারে, তবে আকাশ তাকে খুব অল্প সময়ে আপন করে নিতে পেরেছে, এজন্য সে আকাশের প্রতি কৃতজ্ঞ। কথায় কথায় অনন্যা হঠাৎ বলে, “জান নিঝুম, কাল নিবিড় আমাকে খুব সিরিয়াসলি জিগ্যেস করেছে আমি ওকে বিয়ে করব নাকি।” নিঝুম অবাক হয়ে যায় শুনে। নিবিড় জানেনা ওর বয়ফ্রেন্ড আছে? মাথা কি পুরোটাই গেছে ছেলেটার? সে কিছু বলার আগেই অনন্যা বলে, “আমি শুনে খুব হেসেছি। ওকে আমি বিয়ে করব নাকি? ও আমার পিছে ঘুরে, আর সব ছেলের মতই।” বলে আবার হেসে ওঠে। কান গরম হয়ে যায় নিঝুমের এই কথা শুনে। মেয়েটা কাকে কী বলছে বুঝে বলছে তো? তবে মুখে সেটা প্রকাশ করেনা। বলে, “নিবিড় খুব ভাল ছেলে। ও যদি সিরিয়াসলি কিছু বলে থাকে তাহলে সেটা মিন করেই বলেছে।” অনন্যা কথার মোড় ঘুরিয়ে দেয় হঠাৎ। বলে, “কিন্তু আকাশকে নাকি ও পছন্দ করে না?” নিঝুম উত্তর দেয়, “হু করে না। কিন্তু কেন করে না আমি জানিনা। আকাশের সাথে আমি আর কথা বলিনা। ও নিবিড়কে অপমান করেছে।” অনন্যা খোঁচা দিতে ছাড়ে না, “কেন, আকাশ না তোমার খুব ভাল বন্ধু?” নিঝুম অপমানটা হজম করে বলে, “নিবিড়ের থেকে ভাল নয়। হ্যাঁ এটা সত্যি যে ও আমার ভাল বন্ধু, কারণ অন্য অনেকের চেয়ে অনেক কম সময়ে ও আমাকে বুঝতে পেরেছে, সেজন্যই ও আমার ভাল বন্ধু।” অনন্যা বলে ওঠে, “হ্যাঁ নিবিড়ের চেয়েও ভাল।” এবার আর সহ্য করতে পারেনা নিঝুম। তার আর নিবিড়ের বন্ধুত্ব একযুগেরও বেশি সময়ের। তের বছর ধরে তারা বন্ধু। আর এই মেয়েটা মাত্র তের সপ্তাহের পরিচয়ে তাদের বন্ধুত্বে যা না তা বলতে শুরু করে দিয়েছে? গাড়ির সামনের সীটে বসেছিল সে। অনন্যার কথা শুনে একটা শব্দও উচ্চারণ করেনা সে। শুধু পিছে ফিরে এক পলক তাকায় মেয়েটার দিকে। তারপর পাথরের মূর্তির মত নির্বাক নিশ্চল হয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বসে থাকে। পুরোটা রাস্তা আর একটা কথাও বলেনা। ফেরার পথেও অনন্যার হাজার সাধাসাধিতেও নিঝুম কথা বলে না। আজ অনন্যা তার সবচেয়ে দুর্বল জায়গায় আঘাত করেছে। সে কখনওই পারবেনা অনন্যাকে ক্ষমা করতে। আর নিবিড়? নিবিড় প্রশ্রয় না দিলে অনন্যা এসব বলতে পারত না। তাই নিবিড়ের ওপরও রাগ উঠতে থাকে নিঝুমের। তবে নিবিড়কে কিছু না বলারই সিদ্ধান্ত নেয় সে। ঠিক করে, যোগাযোগ কমিয়ে দেবে এখন থেকে। ও অনন্যাকে নিয়ে যা ইচ্ছা করুক। নিঝুম আর নেই এসবে। আর আকাশকে নিয়ে কথা বলেছে তো, ঠিক আছে, এখন থেকে আকাশই হবে তার বন্ধু। তাই নিবিড়ের মানা থাকা সত্ত্বেও সেদিন জেদ করে নিঝুম আকাশকে ফোন করে। কিন্তু ফোন ধরেই আকাশের “ফোন করিস না কেন” অভিযোগের ফিরিস্তি শুনে বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দেয়। এরপর নিবিড়কে ফোন করে। অনন্যার ব্যাপারে কিছু বলে না। নিবিড় নিজেই শুনেছে অনন্যার কাছ থেকে কী হয়েছে। সেজন্য সে স্যরি বলে। কিন্তু নিঝুম বলে দেয়, “তুই কেন স্যরি বলছিস? তোর স্যরি বলার তো কিছু নেই নিবিড়। অনন্যার সাথে তোর সম্পর্ক গভীর হয়েছে, এখন সে আমাকে যা খুশি বলতেই পারে। কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বটা আমার কাছে এখনও অনেক মূল্যবান। এটা নিয়ে যাকে তাকে যা তা আমি বলতে দিতে পারিনা। আকাশকে নিয়ে তোর যখন এতই সমস্যা সেটা তুই আমাকে সরাসরি বললে পারতি যে সমস্যাটা আসলে কোথায়। অনন্যার মত বাইরের মানুষের তো আমাদের বন্ধুত্ব নিয়ে কথা বলার কোন অধিকার নেই। ” এরপর নিবিড়কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ফোন রেখে দেয়।
Parent