টুকরো টুকরো ভালোবাসার গল্প by romanticboy400 - অধ্যায় ৫২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38520-post-3519844.html#pid3519844

🕰️ Posted on July 22, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 462 words / 2 min read

Parent
“নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা”— হ্যাঁ, শরৎকাল চলে এসেছে। সাথে এসেছে শারদীয় দুর্গাপূজাও। আকাশে বাতাসে পূজার আমেজ। শরতের নির্মল প্রকৃতির আনাচে কানাচে যেন আনন্দ আর আনন্দ। রঙ লাগতে শুরু করেছে মণ্ডপে মণ্ডপে, রঙ লেগেছে মানব মনেও। আর বাংলাদেশ এমন একটা দেশ, যেখানে ধর্মীয় উৎসব মানে শুধু বিশেষ কোন ধর্ম বা সম্প্রদায়ের উৎসব নয়। এ উৎসব সমগ্র জাতির- ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে। তাই আনন্দ থেকে দূরে নেই কেউ। নিবিড়ের সাথে সাথে নিঝুমের বাড়িতেও লেগেছে শারদীয় দুর্গোৎসবের রঙ। মহালয়ার দিন থেকে মহা অষ্টমী পর্যন্ত রোজ মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেরিয়েছে দু’ পরিবার। নিঝুম উড়ে বেরিয়েছে রঙ্গিন প্রজাপতির মত। এবার যে তার মনে অন্যরকম আনন্দ। সে যে কারুর মনের দেবীও হয়ে গেছে। সেই বিশেষ মানুষটিকে এবার রোজ পেয়েছে নিজের পাশে। অনেকক্ষণের জন্য অনুভব করতে পেরেছে তার উপস্থিতি, ঘ্রাণ নিতে পেরেছে মন চাইলেই। পাশাপাশি হাঁটার সময় সবাইকে লুকিয়ে একটু ছুঁয়ে দেওয়া, নিঝুম যখন প্রতিমার দিকে তাকিয়ে থেকেছে মুগ্ধ চোখে, সেইসময় আরেকজনের মুগ্ধ দৃষ্টি তার ওপর পড়ে রয়েছে, তা বুঝতে পেরেই পালিয়ে যাওয়া, ভিড়ের মধ্যে নিঝুমের পাশে ওর অভিভাবকের মত চলা, আর কোন ছেলে যাতে ওর পাশে না আসে সেদিকে কড়া নজর রাখা…আর সুযোগ পেলেই “ভালোবাসি” জানিয়ে দেওয়া… ইশ কী সুখ! “সইবে তো এতো সুখ আমার কপালে?”, একলা মুহূর্তগুলোতে বারবার এ প্রশ্ন ঘুরেফিরে এসেছে নিঝুমের মনে। কিন্তু নিবিড়ের ভালোবাসা পর মুহূর্তেই ভুলিয়ে দিয়েছে সবকিছু, কেটে গেছে সমস্ত সংশয়, রংধনুর সাতটি রঙ নিয়ে হেসে উঠেছে নিঝুম আবার। আজ মহানবমী। নিবিড়রা আজ ওদের গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে। শহরের একক পরিবারগুলো বছরের এই একটা সময়েই একত্রিত হয়ে যৌথ পরিবারের রূপ নেয়। একদিকে খুশি হলেও অন্যদিকে নিবিড়ের মন ভাল নেই। তার প্রাণপ্রতিমাকে যে ছেড়ে যেতে হচ্ছে কিছুদিনের জন্য। গতকাল খুব মন খারাপ ছিল সেজন্যে। রাতে মণ্ডপ থেকে ফেরার পথে বারবার নিঝুমের হাত আঁকড়ে ধরছিল। আরেকটু সময় যদি কাছে পাওয়া যায়, আরও একটুক্ষণ যদি একসাথে থাকা যায়, যদি এই তারাভরা আকাশের নিচে হাত ধরে কখনও শেষ না হওয়া পথ বেয়ে হেঁটে চলা যায়……কল্পনার কতশত রঙ খেলে গেছে মনে। নিঝুম সব বুঝেছে। কিন্তু তাও হাসিমুখে বিদায় দিয়েছে তাকে। ও- ও মন খারাপ করে ফেললে যে ওর নিবিড় আরও মন খারাপ করবে। তাই অশ্রু চেপে হাসিমুখে শেষবারের মত হাতে একটু চাপ দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। কিছু না বলেও অনেক কিছু বলেছিল। সাথে চোখে ছিল একটু দুষ্টুমির ঝিলিক। যেন বলছে, “যাও না। এবার আমার দুষ্টুমিতে বাধা দেবে কে? কিছুদিনের জন্য আমি আবার বনের বাঁদর হয়ে যাচ্ছি!” কিন্তু ভাবার সাথে সাথে অন্যজন যেন মনের কথা পড়ে নিয়েছে, বলেছে, “এই একদম দুষ্টুমি করবি না এই কদিন। মনে আছে তো কী করব বলেছি তাহলে?” নিঝুম ছোট্ট করে ভেংচি কেটে দিয়েছে, বলেছে, “হুহ!”… তারপর একবারের জন্য চোখে চোখ রেখে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেখতে দিতে চায়নি এই বিচ্ছেদে তারও কষ্ট হচ্ছে। আজ সকালে ফোনও করেছিল এক ফাঁকে। বলেছে সাবধানে যেতে, নিজের যত্ন নিতে, মা-কে দেখে রাখতে, রাস্তায় উল্টোপাল্টা কিছু না খেতে, আরও হাজারো উপদেশ। নিবিড় চুপচাপ শুনেছে। স্বাভাবিক উচ্ছ্বলতায় কথা বললেও মেয়েটা ভেতরে কষ্ট পাচ্ছে, আর কেউ না জানুক, সে তো জানে।
Parent