তুমি এলে তাই - অধ্যায় ১১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-3045-post-232447.html#pid232447

🕰️ Posted on March 7, 2019 by ✍️ sorbobhuk (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1301 words / 6 min read

Parent
Part 11 ওর কান্না ভেজা ডাগর কাজল কালো চোখে খুশির ঝিলিক…দুরের ল্যাম্প পোস্টের আবছা আলোয় ভীষন মায়াবী কোনো এক অপ্সরার মতো লাগছিল ওকে…অল্প খুলে থাকা ভেজা ঠোঁট তির তির করে কেঁপে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে…কই এসো…আমাকে তোমার ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে ভরিয়ে দাও চুমুতে চুমুতে। দু চোখ ভরে ওকে দেখতে দেখতে আলতো করে…ওর ঠোঁটে নয়, কপালে চুমু দিয়ে ওর দিকে তাকালে…অস্ফুট স্বরে ভালোবাসার অনুযোগ জানালো…খুব দুষ্টু তুমি। কেন? কাছে আসতে চাও না তো ডাকো কেন? কাছে এলে যদি আরো কাছে আসতে মন চায়?  আমি কি বারন করেছি? সময় হোক…আসবো…  মৌ কিছু না বলে নিজেকে ওর বুকে আরো নিবিড়ভাবে রেখে বসে থাকলো। ওর বুকের ভেতরের আওয়াজ নিজের বুক দিয়ে অনুভব করতে করতে ডাকলো…এই মৌ… উঁ… তুমি বুঝতে পারো না? কি? আমি কি চাই। আস্তে করে বলল… পারি… তাহলে? ভয় করে…  এই…আমার দিকে তাকাও… মুখ তুলে তাকালে আগের মতো ওর মুখটা দু হাতে ধরে বলল…আমি খুব বুদ্ধু…তাই না? মিষ্টী হাসিতে মুখ ভরিয়ে বলল… বুদ্ধুই তো… গাড়ীর রিমোট লক ছোট্ট একটা আওয়াজ করে খুলেই আবার বন্ধ হয়ে গেল…পবন যে এবার ফিরে আসছে জানালো এইভাবে। ওর চোখে চোখ রেখে মৃদু স্বরে বলল…পবন আসছে…এবারে সরে যাই? ঠোঁট ফুলিয়ে বলল…আসুক…তুমি এখানেই থাকো…তারপরেই কি মনে করে বলল…যাও। অরিত্র একটু সরে গেলে নিজের জামাকাপড় ঠিক করে নিয়ে নিজের জায়গায় বসে ওর দিকে তাকিয়ে বলল…তোমার কাছে টাকা আছে? একটু অবাক হয়ে জবাব দিলো…হ্যাঁ আছে…তোমার লাগবে?  চলো না…কিছু কিনি…কাল তো পবন ভাইয়ার বাড়ি যেতে হবে… সত্যিই তো…ঠিকই বলেছে…খালি হাতে যাওয়াটা খারাপ দেখাবে ভেবে বলল…ইস…আমি একেবারে খেয়াল করিনি… পবনের বাড়ী পৌঁছোতে ঘন্টা খানেকের মতো লাগবে,তাড়াহুড়োর কিছু ছিল না বলে অরিত্র পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছিল। একবার উঠে ঘুম চোখে ঘড়িতে মাত্র সাতটা বাজে দেখে আবার শুয়ে পড়লো। একটু পরেই দরজায় টক টক আওয়াজ…বাধ্য হয়ে উঠে দরজাটা খুলে দিয়েই কে এসেছে না দেখে ফিরে গিয়ে শুয়ে পড়ল কম্বল মুড়ি দিয়ে। মাথার উপর থেকে কম্বলটা আস্তে আস্তে সরে গেল…গালে কারুর আঙ্গুলের আলতো ছোঁয়া…চোখ খুলে তাকালে…খুব মিষ্টি দেখতে কেউ ঠোঁটে আঙ্গুল বুলিয়ে বললো…এই…ওঠো না…কখন থেকে বসে আছি। রোজ তোমার জন্য বসে থাকি…দিদানকি ভাবে বলোতো? উমম…কিচ্ছু ভাবে না…একটু বোসো না আমার পাশে… উঁ হুঁ…দরজা খোলা… শুধু তো পাশে বসবে… দরজা খোলা থাক না… আচ্ছা বসছি…তুমি ওঠো…  গরম চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে দার্জিলিং চায়ের সুগন্ধে মন ভরে গেল…আঃ…খুব সুন্দর ফ্লেভার বেরিয়েছে আজ…কে বানিয়েছে…তুমি? বলে মৌ এর দিকে তাকালো ভালো করে…এত সকালে ঠান্ডার ভেতরে স্নান করে নিয়েছে…সদ্যস্নাতা কুমারী মেয়েদের বোধহয় আলাদা একটা সৌন্দর্য থাকে…ঠিক যেন সদ্য ফোটা ফুলের মতো…মুগ্ধ চোখে দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করল…এই ঠান্ডায় স্নান করে নিয়েছো? মিষ্টি হাসিতে মুখ ভরিয়ে দিয়ে ঘাড় নেড়ে জানালো…হ্যাঁ…যখন কথা বলতে পারতো না তখন ও এইভাবে শরীরের ভাষায় কথা বলতো…আজ ও সেইভাবে বলতে দেখে খুব ভালো লাগলো। জিজ্ঞেস করল…কেন? ঠান্ডা লেগে যাবে না? এমনি…ইচ্ছে হল…তাই… একটু অবাক হয়ে বলল…এমনি এমনি ইচ্ছে হল…এত ঠান্ডায় স্নান করতে? কি জানি…কিরকম সব অদ্ভুতুড়ে ইচ্ছে…মেয়েদের ব্যাপার স্যাপার কেমন যেন গোলমেলে।  ঠোঁট কামড়ে ধরে দুষ্টুমি ভরা গলায় বলল…মেয়েদের সাথে না মিশলে জানবে কি করে কেন ইচ্ছে হয়। হুমম… মনে হয় বুঝতে পারছি। তাই? হ্যাঁ… একটূ যেন লজ্জা পেয়ে মুখ নামিয়ে নিয়ে বলল…সত্যিই বুঝতে পেরেছো? হ্যাঁ বুঝেছি…তোমার শরীর খারাপ।  আরো লজ্জা পেয়ে মুখ নিচু করে বলল…ইস…  চা খেয়ে অরিত্র আবার কম্বলের তলায় ঢুকে গেছেআধশোয়া হয়ে, মৌ সোফাতে বসে অরিত্রর ব্যাগ গোছাতে গোছাতে জিজ্ঞেস করল…এই…তুমি কবে যাচ্ছো? কোথায়? সিডনি? হুঁ… নভেম্বরের আঠাশ। দু মাসের জন্য তো? হ্যাঁ… একটা কথা বলবো… কিছু মনে করবে না তো?  মনে করার কি আছে…বলো। আমাকে একটা ফোন কিনে দেবে? বাড়ীতে তো দুটো ফোন আছে…আবার কি হবে বলতে গিয়েও থেমে গেল। ও কেন ফোনের কথা বলছে বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবুও মজা করে জিজ্ঞেস করল… কি করবে ফোন নিয়ে? ফোন নিয়ে আবার কি করে …ফোন করবো। হুম…কাকে? ভাঁজ করা জামাকাপড় এক এক করে ব্যাগে ঢোকাতে ঢোকাতে বলল…মেজদি…ছোড়দি…জেঠিমা…জেঠু… হুম…ভালো…ব্যাস?…আর কাউকে নয়? আড় চোখে অরিত্রর দিকে তাকিয়ে বলল…আছে…আর একজন…যদি…ফোন করে…তাহলে না হয়…তার সাথেও কথা বলবো… ও…তা…সেই আর একজনটা কে? উমম…সে আছে একজন…কিছু বোঝে না…সবাই যা ভাবে…ঠিক তার উল্টোটা করে। তাই? তাহলে তো একেবারে ভালো নয়। কে বলেছে তোমাকে ভালো নয়…আমার কাছে তো ভালো। তাহলেই হবে। ঠিক হ্যায়…কিনে দেবো। তা…আমি ফোন করলে কথা বলবে তো? নাকি…বলবে…এখন নয়…পরে ফোন ক’র…ব্যাস্ত আছি। হুমম…ইচ্ছে হলে বলতে পারি…তবে কথা দিতে পারছি না… শুক্লাদি ঘরে ঢুকে জিজ্ঞেস করল…কি আবার কথা দিতে পারছিস না রে? ফিক করে হেসে বলল… এই যে তোমাদের আদরের নাতি…ব্যাগ গুছিয়ে দিচ্ছি…কোথায়,ভালো বলবে …তা নয়…আমার পেছনে লেগেছে… জিজ্ঞেস  করছে ফোন করলে কথা বলবো কিনা। তুমি বলো…কেন বলবো কথা…আমাদেরকে ফেলে কেমন মজা করে কতদুরে চলে যাবে।  শুক্লাদি হেসে ফেলে বলল…আচ্ছা…ও কি ঘুরতে যাচ্ছে? অফিসের কাজে যাবে… ইস…আর কাউকে যেন পাঠানো গেল না…ওকেই পাঠাতে হবে…আর যেন কেউ কাজ জানে না। তোমাদেরকে কে দেখবে বলোতো? কেন…তুই তো আছিস…আমাদের কে দেখবি। ইস…আমি দেখবো তোমাদের কে…আমাকে কে দেখে তার ঠিক নেই… আচ্ছা ঠিক আছে…আমরা আমাদের কে দেখে নেবো…তুই চল…ওদিকে দুজন মৌমৌ করে মাথা খারাপ করে দিচ্ছে…মেয়েটা কোথায় গেল…সকাল থেকে দেখতে পাচ্ছি না্…বেরোতে হবে…কখন তৈরী হবে… চলো…আমার তো হয়ে গেছে…ওদিকে দেখো…তোমাদের আদরের নাতি এখোনো বিছানা ছাড়েনি… শুক্লাদি অরিত্রর দিকে তাকিয়ে বলল…এই ছেলে…ওঠ…যাবি না নাকি… অরিত্র আড়মোড়া ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বলল…আমার কাছে একটু বোসো না… শুক্লাদি ওর পাশে বসলে কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে কোমর জড়িয়ে ধরে বলল…শুক্লাদি…কতদিন তুমি আমাকে আদর কর না বলোতো… আচ্ছা বাবা…দিচ্ছি… মৌ ব্যাগ গোছানো হয়ে গেলে বেরিয়ে যাবার আগে শুক্লাদিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল…ছোটো দি্দান…কই…আমাকে তো এমন করে আর আদর করো না… এই মেয়ে…কোথায় তোকে আদর করি না রে…সারা রাতকে আমাকে জড়িয়ে ধরে কে ঘুমোয় তাহলে… ইস…আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোই…মানে তো…আমি তোমাকে আদর করি…তাই না… হুম…বুঝেছি…ঠিক আছে…আজ রাতে আদর করে দেবো। দিদান তুমি কি ভালো…বলে…শুক্লাদি কে ছেড়ে বেরিয়ে যাবার আগে…অরিত্রর পিঠে একটা ছোট্ট কিল মেরে বলল…ইস…কি শখ…আদর খাবে… বেরোতে বেরোতে সাড়ে নটা বেজে গেল। সামনের সিটে দাদু, মাঝখানে দিদান আর শুক্লাদি, পেছনের সিটে ওরা দুজনে বসে। পবনের হাত এমনিতে খুব ভালো, ধীরে সুস্থে গাড়ী চালাচ্ছে। রাস্তার দু ধারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যি দেখারম তো…কত রকমের নাম না জানা গাছ…কত রকমের ছোটো বড় রঙ্গীন বাহারী ফুল ফুটে আছে…মানুষের যত্ন ছাড়াই…এক দিকে পাহাড়, আর এক দিকে গভীর খাদ,  অরিত্র ক্যামেরা টা নিয়ে একের পর এক ছবি তুলে যাচ্ছিল, পেছনের সিটে বসায় একটু অসুবিধা হচ্ছিল ছবি তুলতে, সামনের সিটে বসতে পারলে ভালো হত কিন্তু দাদু দিদানদের পেছনে বসলে অসুবিধা হয় বলে নিজেরা পেছনে বসেছে। খুব মন দিয়ে দুরের একটা পাহাড় টেলি লেন্স দিয়ে কাছে আনার চেষ্টা করছিল…পায়ের উপর কোনো কিছুর আলতো ছোঁয়া পেয়ে দেখতে গিয়ে মৌ এর দিকে চোখ পড়ল। ঘুম ঘুম চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে দেখে জিজ্ঞেস করল…ঘুম পাচ্ছে? মাথা নেড়ে জানালো… হ্যাঁ। হুমম…শোবে?  হুঁ… ঠিক আছে…আমি দিদানের কাছে যাচ্ছি…তুমি শোও… মুখটা গোমড়া করে বলল…না… তো? ওর কোলের দিকে ইশারা করে বোঝালো…কোলে মাথা রেখে শোবে। অরিত্র দিদানদের দিকে ইশারা করে ওকে বোঝাবার চেষ্টা করলো…ওরা কি ভাববে। মাথা নেড়ে বোঝালো…কিছু ভাববে না। অরিত্র ভাবছিল কি করবে…দিদান দুরের একটা পাহাড় দেখে ঘাড় ঘুরিয়ে মৌ এর দিকে তাকিয়ে বলল…দেখ…পাহাড়টা কি সুন্দর লাগছে… উঁ…আমার ঘুম পাচ্ছে…তোমরা দেখ। ছবি তুলছে তো…পরে দেখে নেব। ঘুম পাচ্ছে তো শুয়ে পড়… কোথায় শোবো…তোমার নাতি বসে আছে তো…ওর দিকে পা রেখে কি করে শোবো? কোথায় আবার…ওখানেই শো… দিদান বলে দিয়েছে শুতে…অতএব…আর কি ভাবার আছে…এমন একটা ভাব করে অরিত্রর কোলে মাথা রেখে সিটের উপরে পা ভাঁজ করে শুয়ে পড়ে এক হাত দিয়ে ওর কোমর জ়ড়িয়ে ধরল।  শুক্লাদি একটা শাল ব্যাগ থেকে বের করে অরিত্রকে দিয়ে বলল…গায়ে দিয়ে দিতে…না হলে শীত করবে। কোলের উপরে শুয়ে থাকায় আর ইচ্ছে মতো ছবি তোলা যাচ্ছিল না দেখে দিদানকে দিয়ে ক্যামেরা টা দাদুর কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে বসে ছিল, মৌ মাথাটা একটু তুলে আরো ঘন হয়ে শুলে তাকিয়ে দেখলো…ঘুমোয় নি…ওর দিকে তাকিয়ে আছে দুষ্টুমি ভরা চোখে…ভাবখানা যেন এমন…দেখলে তো…কেমন শুয়ে আছি তোমার কোলে মাথা রেখে। সামনের সিটের দিকে ওর মাথার পেছনটা থাকায় দিদানরা তাকালেও বুঝতে পারবে না, ও না ঘুমিয়ে তাকিয়ে আছে । চোখ কুঁচকে কিছু যেন একটা বলতে চাইলে অরিত্র ইশারায় জিজ্ঞেস করলো…কি? বাঁ হাত বাড়িয়ে ওর ডান হাত টা দেখিয়ে নিজের মাথার দিকে আঙ্গুল তুলে বোঝালো ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে হবে। মাথায়…কপালে আস্তে আস্তে করে হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করলে চোখ বুজে শুয়ে থাকলো…মনে হল…এবারে ঘুমোবে। অরিত্র বাইরের দিকে তাকিয়ে থেকে ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে ভাবছিল…বলে তো দিলাম…আমাকে একটু সময় দাও…কথা যখন দিয়েছি…আমাকে পারতেই হবে। গাড়ীর দুলুনি আর তার সাথে খুব প্রিয় কাউকে এত কাছে পাওয়ার উষ্ণ অনুভুতি…মনে যতই চিন্তা থাকুক না কেন…বুকের ভেতরে একটা সুখের অনুভুতি নিয়ে নিজেই কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতে পারেনি।
Parent