উপন্যাস - এক পশলা বৃষ্টি by sitansu100 - অধ্যায় ১১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39231-post-3508049.html#pid3508049

🕰️ Posted on July 18, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 530 words / 2 min read

Parent
৪ গ্রন্থাগারের বাইরে এসে দীপঙ্কর একটা বিড়ি ধরাল । খালিপেটে বিড়ি খেতে গিয়ে তার শরীর ঘুলিয়ে উঠল । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল দুপুর প্রায় একটা ।একবার পিছনে তাকিয়ে সে দ্রুত সাইকেলে চেপে প্রাণপনে প্যাডেল করতে লাগল । তাকে তাড়াতাড়ি বাড়ী পৌঁছাতে হবে । তার এখন ছোড়দার কাছে খাওয়ার পালা। ছোটো বৌদি জয়া না খেয়ে এখনও বসে আছে । খুব জোড়ে সাইকেল সে চালাতে পাড়ছে না । সামনের দিক থেকে দমকা হাওয়া বইছে । অসাবধানে রাস্তার একটা উঠে থাকা পাথরের ওপর দিয়ে সাইকেল চালাতে গিয়ে ফটাস করে টিউবটা ফেটে গেল । দীপঙ্কর বুঝল আজ কপালে কষ্ট আছে । সাইকেল থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করল। পিছন থেকে রুমা সাইকেল চালাতে চালাতে কাছে এসে বলল- কি ব্যাপার হেঁটে যাচ্ছেন যে ? -টিউব ফেটে গেছে ।   রুমা সাইকেল থেকে নামল । -আপনি আবার সাইকেল থেকে নামলেন কেন ? চলে যান । -না আপনার সঙ্গে একটু হাঁটি । আপনার অসুবিধা নেই তো । দীপঙ্কর রাগে গজগজ করলেও ওপরে প্রকাশ পেতে না দিয়ে বলল – না আমার আবার অসুবিধা কি । গলাটা যতটা সম্ভব মোলায়েম করে বলল – আপনার অসুবিধা হবে বলেই বলছিলাম । -আমার হাঁটতে খুব ভাললাগে । দীপঙ্কর দেখল ওর হাত থেকে নিস্তার নেই । তাই চুপ করে গিয়ে একমনে হাঁটতে লাগল । কয়েক মুহূর্ত চুপচাপ দুজনে রাস্তার দিকে তাকিয়ে হাঁটার পর রুমা আড়চোখে দীপঙ্করকে একবার দেখে নিয়ে অনেকটা উপযাচক হয়ে বলল - আপনার কথা আমি অনেক শুনেছি । দীপঙ্কর চমকে উঠে রুমার মুখের দিকে তাকাল ।রুমা হেসে ফেলে বলল – মলি আপনার ভাইঝি তো ? -হ্যাঁ , আমার বড়দার মেয়ে । -মলি আমার বোনঝি রম্যানির সঙ্গে হাওড়া বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজে একসঙ্গে পড়ে । আমাদের বাড়ীতে প্রায়ই আসে । আর গল্প করতে বসে আপনার কত কথা বলে । হ্যাঁ , মলি আমাকে খুব ভালবাসে । ছোটো থেকেই আমার খুব ন্যাওটা । -আচ্ছা দীপঙ্কর বাবু আমাকে এখানকার বি . এড . কলেজটা কোন দিকে একটু বলে দেবেন । -উত্তর দিকে । আমার সঙ্গে একবার যেতে পারবেন ? দীপঙ্কর থমকে দাঁড়াল । -আমি তো চিনি না , তাই বলছিলাম । -এ্যাপ্লাই করবেন ? কি পাশ ? -আমি ইংলিশে এম. এ. করেছি । কোন বিশ্ববিদ্যালয় ? -বিশ্বভারতী। -ওখান থেকেই তো বি. এড. করতে পারতেন ? -বাবা এই শহরে বদলি হয়ে এল যে । -যাবেন? -আমার তো সময় হবে না । -ওঃ ! -কিছু মনে করবেন না । দাদাদের সংসারে পড়ে আছি । দুবেলা দুমুঠো খেতে দেয় । বাকী খরচা আমাকে টিউশানি পড়িয়ে চালাতে হয় । প্রতিদিন আমাকে চার ব্যাচ টিউশানি পড়াতে হয়। বুঝতেই পারছেন। -কিন্তু এত ভাল রেজাল্ট নিয়ে চাকরির চেষ্টা করছেন না কেন ? কে বলছে করছি না ? আজকেই পোষ্ট অফিসে একটা কলেজের পার্ট টাইম লেকচারারের পদের জন্য এপ্লিকেশন পোস্ট করে এলাম । আসলে কি জানেন এখন পড়াশুনায় ভাল রেজাল্টটা কোনো যোগত্যা নয় । এখন চাকরি পেতে গেলে রাজনৈতিক দাদাদের সুপারিশ লাগে । আর আমি রাজনীতি করাটা মন থেকে মেনে নিতে পারি না । -তাহলে এইভাবেই কাটাবেন? -না ,তা কেন?আমি নেট কোয়ালিফাই করেছি ।দেখি ভবিষ্যতে যদি কিছু হয় । -ঠিক আছে আমি জিজ্ঞাসা করে কলেজে চলে যাব। -সকালে যাবেন । -কেন বলুন তো ? -এখানকার বি.এড. কলেজ সকালে শুরু হয় । ওরা কথা বলতে বলতে চলে এল বাড়ীর সামনে। দীপঙ্কর বলল- এসে গেছি । চলি রুমা দেবী । রুমা বাম দিকে ঘাড় কাত করে মুচকি হেসে দীপঙ্করকে বিদায় জানিয়ে তার বাড়ীর দিকে এগিয়ে গেল ।
Parent