আমাদের দুই পরিবারের এক হওয়ার গল্প - অধ্যায় ১
আমি পড়াশুনা শেষ করে চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে একটা ছেলের সাথে পরিচয় হল। আমার নাম সুজন। বয়স ২৪ বছর। যার সাথে আমার পরিচয় হয়েছে ওর নাম তপন। আমরা একই বয়সী ওর বয়স ২৪ বছর। একসাথে পরীক্ষা দেওয়ার পর ওর সাথে আমার ভালই বন্ধুত্ব জমে উঠল। আমাদের পারায় বাড়ি করে এসেছি অল্প কিছুদিন। আগে থাকতো অন্য জায়গায়। দুজনেই ভালো পরীক্ষা দিয়েছি। এরপর ওর সাথে ভালই বন্ধুত্ব হয়ে গেল। দুজনেই আমি ওর বাড়ি এবং ও আমার বাড়ি আসে। আস্তে আস্তে আমরা পারিবারিক বন্ধু হয়ে গেলাম। আমরা দুই ভাইবোন আবার ওরা ও দুই ভাইবোন। ওদের বাড়িতে ওরা চারজন আর এদিকে আমাদের বাড়িতেও আমরা চারজন। আমার দিদি আমার থেকে মাত্র দের বছরের বড়। দিদির নাম সুলতা। তপনের এক দিদি ওনার নাম তনুজা। তপণের বাবা চাকরি করে ইনকাম ট্যাক্সে আর আমার বাবা সেলস ট্যাক্সে। আমার মা গৃহিণী আবার তপনের মাও তাই। যাকে বলে সুখী পরিবার। আমার দিদিও চাকরির পরীক্ষা দেয় আবার তপনের দিদিও চাকরির পরীক্ষা দেয়। একদিন তপনের বাবা আমাদের বাড়িতে আসে বাবার সাথে দেখা করতে তারপর একদিন বাবাও যায় ওদের বাড়ি। এরপর আস্তে আস্তে দিদি ওর দিদির সাথে দেখা করতে গেল দিদি ওর দিদির বান্ধবী হয়ে গেল। দেখা হয়নাই শুধু আমাদের মায়েদের সাথে।
ওদের বাড়ি গেলে ওর বাবা মায়ের সাথে কথা হলেও ওর দিদির সাথে আমার কথা হয়না। তবে যা দেখেছি খুব সুন্দরী। আর আমার দিদির কথা কি বলব দিদি মায়ের মতন সুন্দরী। তপন একটু আধটু দিদির সাথে কথা বললেও আমি ওর দিদির সাথে কথা বলিনা।
আমাদের চাকরীর রেজাল্ট বের হল। ওই একই ডিপার্টমেন্টে আমাদের চাকরি হল। তবে বিল্ডিং আলাদা আলাদা। দুই বন্ধু অফিস করতে লাগলাম। এখন আমার আর তপনের দেখা হলে বাড়িতে আসা যাওয়া হয়না তেমন। রবিবার ছুটি ছাড়া। তবে বাবা মা ওদের বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখে এখন মানে জাকে বলে পারিবারিক বন্ধু হয়ে গেছে আর এদিকে নতুন এসেছে বলে আমরা ওদের ভালো বন্ধু হয়ে গেছি। চাকরির বয়স এই তিনমাস হল। প্রথম মাইনে পেতে দুইমাস হয়ে গেছে। প্রথম বেতন পেয়ে মা আর দিদিকে নিয়ে মার্কেটে গেলাম, যদিও তপনের সাথে কথা বলেই ওদিকে তপন এল ওর মা আর দিদিকে নিয়ে।
আমার মা ওর মাকে দেখেই আরে সম্পা তুই কেমন আছিস বান্ধবী।
আন্টি আরে রমা তুই কেমন আছিস সুজন তোর ছেলে জানতাম না তো।
আমি তপন অবাক
আমি ওমা আন্টিকে তুমি কেমন করে চেনো।
মা আর বলিস না সম্পা আর আমি এক কলেজ থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছি পরে অবশ্য ও যায় অন্য কলেজে আমি যাই অন্য কলেজে আর যোগাযোগ হয়নি। তারপর তোর বাবা আমাকে নিয়ে এল সব শেষ পড়াশুনা।
দিদি বেশ বেশ ভালই হল তবে আমাদের মধ্যে সব চাইতে পুরানো মা আর আন্টি বান্ধবী হিসেবে।
শম্পা আন্টি যাক ভাই না আসলে তো তোর সাথে দেখা হত না। চলো বাবা মায়েরা এবার শপিং করি।
সবাই মিলে শপিং করলাম। মাকে শাড়ি দিদিকে লেজ্ঞিন্স চুড়িদার আর বাবার জন্য নিলাম জিন্স প্যান্ট আর টি শার্ট কারন বাবা এখনও এইগুলো পড়তে পছন্দ করে।
আমার দিদি আর ওর দিদি দুজনে ভালো বন্ধু হয়ে গেছে দুজনে আলাদা করে কি কি কিনলো আমি টাকা দিলেও জিজ্ঞেস করিনি আর তপন ও তাই করল। ওই প্যাকেট ছিল আলাদা।
হঠাত তনুজা দি বলল এই তোরা দুই বন্ধু কি নিবি। এই প্রথম আমাকে বলল এর আগে দেখা হলেও কথা বলা হয়নি।
আমি দিদির দিকে তাকাতে দিদি বলল আরে আমার ভাই লাজুক চলো দেখি ওদের কি কিনে দেওয়া যায়। বলে দুই দিদি দেখে আমাদের ব্লেজার আর সুট কিনে দিল। দুই বন্ধুর এক কালারের। তনুজা দি আমার গায়ে ধরে বলল না মানবে ভাইদের কি বলো তুমি। বলে দিদিকে দেখাল।
দিদি হ্যা ভালই হয়েছে কোন অনুশঠনে পরে যেতে পারবে। বলে নিয়ে নিল। এরপর বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম।
আমি দিদি মা কি খাবে।
দিদি ভাই আমি মোগলাই খাবো আর মা তুমিও তো মোগলাই খাবে আর এই তনুজা তুমি কি খাবে। মাসীমা আপনি।
তনুজা বলল আমি মিক্সড চাউমিন খাবো, মা মোগলাই খাবে।
দিদি এই ভাই তোরা কি খাবি।
আমি দিদি আমি তো জানিস চাউমিন ভালো খাই, এই তপন তুই।
তপন না আমি মোগলাই খাবো।
আমি সব অর্ডার দিলাম। একে একে সব দিয়ে গেল। মা দিদি মাসীমা আর তপন মোগলাই আর আমি এবং তনুজা দি চাউমিন খেলাম। খেয়ে দেয়ে সবাই বাড়ি আসলাম। ওরা চলে গেল ওদের ঘরে আর আমরা চলে এলাম আমাদের বাড়ি বেশী দূর তো না অল্প দূরে। ঘরে এসে সবাই পরে দেখলাম। কারন বাবাও বাড়ি ছিল।
দিদি চুড়িদার পরে আমাকে বলল একটা ছবি তুলে দে তো, ভাইয়ের টাকায় প্রথম চুড়িদার পড়লাম। আমি আচ্ছা বলে দিদির ছবী তুলে দিলাম। আমার মোবাইল দিয়ে একে একে মা বাবা সবার পরে দিদি আমার ছবি তুলে দিল। দিদি আমাকে পাঠা আমি তনুজাকে পাঠাবো।
আমি হুম বান্ধবীকে পাঠাতে হবে তাইনা। বলে দিদিকে পাঠিয়ে দিলাম সব কটা।
দিদি সব গুলো তনুজা দিদিকে পাঠালো। একটু পরে দিদিদ বলল ভাই রিপ্লাই দিয়েছে দারুন বলে। দিদি মেসেজ দিল তোমাদের গুলো পাঠাও।
একটু পরে তনুজা দি ওদের গুলো পাঠালো।
দিদি দেখ তো কেমন লাগছে ওদের দারুন না। তনুজাকে দারুন লাগছে আর আঙ্কেল আন্টিও দারুন। আর দেখ তপনকেও দারুন লাগছে। মা এসে দেখে বলল না সবাইকে ভালো লাগছে ভালো জিনিস না কিগো দেখ ছেলের কামাইয়ে প্রথম আমাদের পোশাক দারুন লাগছেনা সবাইকে।
বাবা বলল হ্যা ছেলেদের চাকরি তো হল এবার যদি মেয়ে দুটোর চাকরি হত ভালো হত।
এরমধ্যে তপনের বাবার ফোন কি দাদা কেমন আছেন অনেকদিন হল দেখা হয়না একদিন আসেন না আপনারা আমাদের বাড়ি এক সাথে বসে গল্প করা যাবে। সামনের রবিবার আমাদের বাড়ি আসেন সবাইকে নিয়ে। দুপুরে আসবেন আর রাতে যাবেন।
বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে কি গো কি বলছে যাবে নাকি সামনের রবিবার। তোমার বান্ধবীর সাথে দেখা হবে।
মা হ্যা চলো তবে যাই না হয় পরের রবিবার আমাদের বাড়ি আসতে বলবে। কতদিন পরে সম্পার সাথে দেখা হয়েছে ভাবতেই পারিনা।