আমাদের দুই পরিবারের এক হওয়ার গল্প - অধ্যায় ১১
আমি এই প্রথম ভালো করে তনুজাকে দেখলাম, বাঃ সুন্দর একটা চুড়িদার পরে এসেছে। তাকিয়ে দেখছি আমি। কি সুন্দর লাগছে গায়ে ওড়না দেওয়া, হাতে ছোট একটা ভ্যানিটি ব্যাগ। লম্বা চুল পায়ে হালকা একটা হাইহিল পরা তবে হাত খালি কিছু পরা নেই। ঠোটে হালকা লিপস্টিক পড়েছে, দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
তনুজা আমার দিকে তাকিয়ে কি হল চলো ওরা চলে যাচ্ছে তো, এখানে দাড়িয়ে থাকবে নাকি চলো বাইরে যাই।
দিদি আর তপন আগে যাচ্ছে আমি আর তনু পেছনে।
তনুজা বলল খুব ভীর ছিল ট্রেনে তাইনা দেখলাম তো। এই বলে হাত বাড়িয়ে আমার হাত ধরল। সামনে তপন আর দিদি দুজনে হাত ধরে যাচ্ছে।
আমি তনুর নরম হাত ভালো করে ধরলাম আর বললাম কখন এসেছ। ভীরের কথা আর বলনা চিরে চ্যাপ্তা হয়ে গেছি আমরা দুজনে।
তনুজা এই মিনিট ১০ হবে একসাথে আমি আর তোমার দিদি এসেছি। কালকে তোমার উপরে যে কি রাগ হচ্ছিল ফোন কেন বন্ধ করে রেখেছিলে তুমি। আমার ভাই আমাকে প্যাক দিচ্ছিল ওর তোকে পছন্দ না তোকে বিয়ে করবেনা। সত্যি কি তাই।
আমি হাতে একটা চাপ দিয়ে তোমার তাই মনে হয় নাকি আমার তো উল্টো মনে হচ্ছিল তুমি আমাকে পছন্দ করনা সেই ভয়। তোমাদের বাড়ি গেলে তোমার দিকে আমার তাকাতে ভয় করত কি আবার বলো।
তনু সত্যি তুমি একটা হাদারাম তুমি ভাইয়ের বন্ধু ছিলে কেন আমি রাগ করব আমি তো উল্টো ভাবতাম তোমার অহঙ্কার বেশি ভাই বলেছে তুমি মেয়েদের সাথে কথা বলোনা। তাই আমিও তোমার সাথে কথা বলতাম না। তারম্নে কি আমার তোমাকে অপছন্দ নাকি। সুলতা বলেছিল তুমি খুব টেনশনে আছ, আর শুনে হাসিও পাচ্ছিল যে তুমি ভয়তে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছ। আর বন্ধ করবেনা তো। বলে আমার হাতে একটা চাপ দিল।
আমি এই তুমি বাবা মায়ের কথায় রাজি হলে না তো আবার, আমাকে অপছন্দ হলে আগেই বলে দাও সারা জীবনের ব্যাপার কিন্তু।
তনু আমার দিকে ফিরে একদম বাজে কথা বল্বেনা, তোমার মনের মতন হতে পারবো কি তাই বল।
আমি সামনে দাড়িয়ে সে অনেক আগেই হয়ে গেছ বলতে পারিনি আমি। ঐযে না পাওয়ার ভয় আর কিছু না। বাবা মায়ের কথা শুনে সবচাইতে আমি বেশী খুশী হয়েছিলাম কাউকে প্রকাশ করতে পারিনি উল্টো রাগ দেখিয়েছি। তপনের চেয়ে আপন আমার কেউ না ওকেও বলতে পারিনি। শত হলেও ওর দিদি তুমি।
তনু আমার হাত ধরে সত্যি তুমি আমাকে ভালবাসতে।
আমি জানিনা তবে ভালো লাগত দেখতে ইচ্ছে করত, বাড়ি গেলেই ভাবতাম যেন তোমার দেখা পাই। ইচ্ছে না থাকলেও যেতাম শুধু তোমাকে একবার দেখবো বলে। মনের সব সত্যি কথা তোমাকে বলে দিলাম এবার তোমার ইচ্ছে কি বিয়ে করবে আমাকে।
তনু না জানিনা যাও তুমি কিচ্ছু কি বোঝনা তুমি। তুমি সত্যি একটা বাচ্চা ছেলে।
আমি হ্যা আমি তোমার কাছে তাই হয়ে থাকতে চাই কোলে পিঠে করে মানুষ করবে তুমি।
তপন ফিরে বলল কিরে ভাই এখনই সব কথা বলে ফেলবি নাকি আয় অত দূরে কেন।
দিদি ফিরে বলল এই তোমরা কিছু খাবে নাকি এখন।
তনুজা বলল তোর ওনাকে জিজ্ঞেস কর উনি খাবেন কিনা।
তপন বলল সে আমরা যা করি আমরা বুঝবো তোমরা তোমাদের রাস্তা দেখ আলাদা আলাদা যাবো।
তনুজা আমার হাত ঝাকা দিয়ে দেখলে তোমার বন্ধু হবু বউ পেয়ে দিদি এবং বন্ধুকে ভুলে গেল। এই এস তো বলে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল অন্যদিকে।
দিদি বলল এই বাড়ি যাওয়ার আগে ফোন করিস একসাথে যাবো।
তনুজা বলল তুই ফোন করিস আমি পারবোনা চলো তো তুমি। বলে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল। আর বলল কি কিছু খাবে কি।
আমি তনুর মুখের দিকে তাকিয়ে তুমি খাবেনা।
তনুজা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে অমন করে তাকিয়ে আছ কেন আমাকে দেখেনি বুঝি হ্যা চলো দুজনেই খাবো।
আমি আচ্ছা বলে হাত ধরে নিয়ে গিয়ে সামনের একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। কি খাবে।
তনুজা তুমি কি খাবে তাই খাবো বলোনা। তবে হালকা খাবার কেমন।
আমি চাউমিন মিক্সড খাবো।
তনুজা ঠিক আছে তাই বলো।
আমরা দুজনে বসে দুটো চাউমিন দিতে বললাম। পাশাপাশি দুজনে বসলাম। তাকাতে দেখি দিদি আর তপন আসছে। দেখেই বললাম দেখ আসছেন ওঁরা দুজনে।
তনুজা বলল চুপ ডাকতে হবেনা। দেখ আসে কিনা।
এরমধ্যে তপন দাঁত বের করে বলল এই দেখ বসে আছে বলে দুজনে কাছে এল আর পাশে বসে পড়ল। তপন কিরে কি খাবি তোরা।
দিদি আবার কি দুজনার পছন্দ চাউমিন ছাড়া আর কি। এই আমরা মোগলাই খাবো বলনা মোগলাই।
তপন ডেকে মোগ্লাইর অর্ডার দিল।
খাবার দিতে সবাই বসে খেতে লাগলাম। মনে মনে ভাবলাম একটু কথা বলব আবার চলে এল। যা হোক খেয়ে বের হলাম।
তনুজা বলল এই একটা টোটো নাও গিয়ে ঐযে পার্ক ওখানে বসব আমরা কিরে তোরা যাবি নাকি।
দিদি হ্যা কেন যাবনা ডাক টোটো ডাকতোঁ ভাই।
আমি আচ্ছা বলে টোটো ডাকতে টোটো এল সবাই উঠে পড়লাম আমি আর তনু একদিকে আর দিদি আর তপন একদিকে।
দিদি বলল কিরে ভাই কালকে তো ভয়তে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলি আজকে তো কাছে নিয়ে বসেছিস। কি ব্যাপার সমঝোতা হয়ে গেছে বুঝি। আমার হবু ভাইর বউ খুব সুন্দরী। ভাইর আবার পছন্দ হবেনা। কিরে লজ্জা করছিল বুঝি।
তপন ফিক করে হেঁসে দিয়ে সেটা তুমি এখন বুঝলে, দিদি তার হবু বরের জন্য টিফিন করে দিয়েছে নিজের হাতে।
তনুজা বলল দিদি না তাই লজ্জা করছিল আর কিছুনা। পাগল একটা কিছুই বোঝেনা।
আমি ধুর যত সব ইয়ার্কি হচ্ছে তাইনা নিয়ে চলে গেছিলি আবার এলি কেন। তোরা বলত।