আমাদের দুই পরিবারের এক হওয়ার গল্প - অধ্যায় ৪২
তনু- সুলো তবুও সবার সামনে একটু লজ্জা থাকা উচিৎ।
দিদি- আরে তনু সব আগেবে বুঝলি তুই ফিরি হতে পারছিছ না তাই আর কিছু না।
এরমধ্যে শাশুড়ি মা আমাদের কাছে এলেন আর বললেন এই তোরা কি খাবি এখন চা না অন্য কিছু একটু পকোরা করব খাবি তোরা।
দিদি- মা চলেন আমি করছি আমার ননদ এসেছে আমিও যাই এই তোমরা বস আমি আর মা করে নিয়ে আসছি।
শাশুড়ি- না বউমা আজকে তোমার ভাই এসেছে তুমি ওদের কাছে থাকো আমি নিয়ে আসছি সব রেডি করা আছে। বসে গল্প কর। এই বলে চলে গেলেন পাছা দোলাতে দোলাতে।
তপন- আমার হাত টিপে দিয়ে দেখলি তোর শাশুড়ি কত ভালো বউমাকে কষ্ট করতে দেয়না।
তনু- না ভাই আমার শাশুড়ি অনেকভালো, আর আমার শ্বশুর সকালে আমাকে চা করে খাইয়েছে। আমাকে ওনারা বউমা না মেয়ে হিসেবে মেনে নিয়েছে বুঝলি।
তপন- বাঃ বাঃ তবে তো তোরা ভাইবোন হয়ে গেলি তাইনা তুই যখন ওনাদের মেয়ে।
তনু- ভাইকে একটা থাপ্পড় মেরে বলল যত সব আলতু ফালতু বকে স্বামী ভাই হবে কেন।
তপন- কেন আগে বলতি ওই ভাইটা আজকে আসবে কি তখন সুজন তো তোর ভাই ছিল তাইনা। তুই তো বলতি ভাইয়ের বন্ধু ভাই হবে। আমাদের তো খুব প্রশংসা করতি দুই বন্ধু না যেন দুই ভাই মনে নেই।
তনু- ভাই এবার কিন্তু অনেক বারাবারি করছিস তুই সে ছিল আগের সম্পর্ক কি গো বলনা তুমি এখন কি আর সে আছে।
আমি- এই তুমি একটু ফিরি হলে কি হয় ভাই ইয়ার্কি করছে আর তুমি রেগে যাচ্ছ কেন তালে তাল দাও দেখবে আর তোমার পেছনে লাগবেনা।
দিদি- হ্যা তনু কি হয়েছে বলছে বললেই কি সব হয় নাকি, তোর ভাইকে আমি কি ভাই বলে ডাকিনি সে সময় ওই সম্পর্ক ছিল এখন না হয় পাল্টে গেছে।
তনু- আমার হাত ধরে বল ভাইটি হ্যা এটা আমার ভাই তোদের হলো তো।
সবাই হো হো করে হেঁসে দিলাম। শাশুড়ি মা হাতে পকোরার বাটি নিয়ে এল বলল কি এত হাসাহাসি হচ্ছে এই নাও সবাই মিলে পকোরা খাও।
দিদি- মা বাবা কই বাবাকে দিয়েছ তো।
শাশুড়ি- আরে না তিনি তার বেয়াই বাড়ি গেল বেয়াইন কে দেখতে। মানে তোমার মা ফোন করেছিল যেতে বলেছে তাই আর দেরী করেনি। বেয়াইনের কথা ফেলতে পারে তোমরা বোঝনা, আমার বান্ধবী কেমন সে আমি জানি।
আমি- তবে তো মা আপনার যাওয়া উচিৎ ছিল না হলে আমার বাবা কি একা থাকবে নাকি। আমার বাবার বেয়াইন কম কিসে আমার মায়ের মতনই তাইনা।
তপন- হ্যা মা আমরা দীঘা গেলে তোমরা চারজনে না হয় একসাথে থাকবে ভালো হবে।
শাশুড়ি- হ্যা সে কথা তোর বাবা বলেছে তোরা গেলে বেয়াই বেয়ান আমাদের বাড়ি এসে থাকবে। একসাথে রান্নাবান্না হবে। তোমার মা তো আমার পুরানো বান্ধবী সেই এক সাথে কলেজে পড়েছি। এই নাও বাবা বলে আমার মুখে পকোরা তুলে দিল আর দিদিকেও দিল। আগে আমার এক ছেলে এক মেয়ে ছিল এখন দুই ছেলে দুই মেয়ে হয়েছে বলে তনু এবং তপনের মুখেও দিল।
আমি- একটা হাতে নিয়ে শাশুরিমাকে ধরে খাইয়ে দিলাম। এরপর সবাই মিলে বাকি পকোরা খেলাম।
দিদি- মা আমি এবার চা করে আনি ননদ এসেছে আমি কিছু না খাওয়ালে হয়।
শাশুড়ি- আচ্ছা মা তাই যাও তবে যাও গিয়ে চা করে নিয়ে এস।
তনু- বলল আমিও যাচ্ছি আমার ননদের সাথে বলে বেড়িয়ে গেল।
শাশুড়ি- তবে আর কি দুই বন্ধু কথা বল আমি যাই একটু সন্ধ্যে দিয়ে আসি তোমরা কথা বল। বলে নিজেই বেড়িয়ে গেল। এই বলে শাশুড়ি মা হাতে ঝাটা নিয়ে সব ঘর ঝাট দিতে লাগল।
আমি আর তপন দুজনে খাটে বসা শাশুড়ি এসে ঘর ঝাট দিতে লাগল। নিচু হয়ে ঝাট দিচ্ছিল,
তপন- আমাকে একটা খোচা দিয়ে ইশারা করে দেখালো আমার শাশুড়ির দুধ দেখা যাচ্ছে। উনি ঘর ঝাট দিয়ে চলে যেতে বলল দেখেছিস ভাই কেমন সাইজ। কিরে কেমন মাল আমার মা সত্যি করে বলবি দিদির থেকেও ভালো তাইনা। সাইড দিয়ে কেমন দেখলি তাই বল। ব্লাউজের ভেতরে থাকলেও হেভী তাইনা।
আমি- হুম তুই আমাকে পাগল করে ছেরে দিবি দেখচি, সত্যি দেখার মতন আমার শাশুড়ি, কিন্তু বন্ধু গাছে কাঁঠাল গোপে তেল দিলে হবে কোনদিন এ হবেনা।
তপন- আরে ভাই আশা করতে দোষের কি পেয়েও তো যেতে পারিস কি তাইনা এই যেমন ভাব আমরা দীঘা গেলে যে পাবো এটা কিন্তু নিশিচন্ত কি বলিস একটু চেষ্টা করলে বাদ যাবেনা ভাই। আমি কিন্তু তোর দিদিকে রেডি করে ফেলেছি এবার তুই পারলেই হয়। যদি আমাদের ভালো মতন হয়ে যায় দুই ভাইবোনে তারপর ওরা আমাদের সাহায্য করবে দেখবি।
আমি- ঘোরার ডিম করবে কি করে করবে।
তপন- ভাই আমি ভেবে রেখেছি যদি হয়ে যায় বাড়ি ফিরে ঘরে এসে আমি দিদিকে লাগাবো আর তুই তোর দিদিকে লাগাবি এমনভাবে করব যাতে মা দেখতে পায় ব্যাস তবেই না মাদের পাওয়া যাবে।
আমি- উরি শালা কি বলেরে আমার বুক কেঁপে উঠেছে ভাই কি বলছিস এইসব।
দিদি আর তনু- একসাথে চা নিয়ে এসে কি সব কথা হচ্ছে তোমাদের শুনি কত প্লান করেছ হানিমুনে গিয়ে কি হবে তাইতো।
তপন- হ্যা গো এই কয়টা দিন আমরা স্বরনীয় করে রাখবো সে নিয়ে কথা হচ্ছে ফিরে তো সময় পাবোনা অফিস বাড়ি আর কি।
দিদি- আমাকে চা দিয়ে এই নাও ননদ জামাই চা খাও বলে হেঁসে দিল।
তনু- হাতের কাপ তপনের হাতে দিয়ে তুমিও নাও ননদ জামাই বলে ও হেঁসে দিল।
তপন- দেখলি ভাই আমাদের দিদিরা সম্পর্ক বুঝে গেছে, দিদির থেকে ননদ জামাই আগে কি তোমরা তাই বলছ তো।
দিদি- আবার কি একমাত্র ননদ জামাই আমার একটু জত্ন করতে হবেনা তাই তো, কত সখ তোমাদের শালাবউদের সাথে ইয়ার্কি করবে তাই আমরা হওয়ার চেষ্টা করলাম আর কি, কিরে তনু কি বলিস।
তনু- হ্যা ভেবে দেখলাম ননদ জামাইকে একটু জত্ন না করলে হয়, পরে আবার শাশুড়ির কাছে নালিশ না করে।
তপন- বলল কিরে ভাই আমার শালাবউ কিন্তু দারুন হয়েছে কিরে তোর পছন্দ তো। আদর সোহাগ করে তো তোকে।
আমি- না সেদিক দিয়ে কোন কমতি নেই পরে কি করে সেটাই দেখার এখনও ঠিক আছে। তবেঁ তোর জন কেমন বললি না তো।
তপন- আরে ভাই কোন চিন্তা নেই আমার জন খুব ভালো, পরে আরো ভালো হবে এটা আমার বিশ্বাস।
দিদি- হয়েছে হয়েছে নাও এবার চা খাও আমরা যাবনা, তোমাদের তো বেরানো হল শাশুড়ির হাতে পকোরা খেলে আমরা গিয়ে তনুর শাশুড়ি হাতে কিছু খাবোনা।
তনু- আমার শাশুড়ি তোর কি রে।
দিদি- হেঁসে দিয়ে আরে আমার মা এখন পরে গেলে হবে মা এখন তো বান্ধবীর শাশুড়ি আর বরের শাশুড়ি তাই বললাম।
তনু- কেন আমাদের শ্বশুর দুজন খারাপ নাকি দুজনেই খুব হান্ডসাম বিশেশ করে আমার শ্বশুর কত কিছু করে শরীর ফিট রাখার জন্য তোর শশুরের থেকে ভালো বুঝলি। মানে দুটোই বাবা তবে আমার শ্বশুর বাবা অনেক ফিট সব দিক দিয়ে। তুই তোর শশুরকে বলবি যেন নিয়মিত শরীর চরচা করে বুঝলি।
শাশুড়ি মা এসে কিরে এবার তোরা যাবি নাকি রাতে বাড়ি আসবি না গুছ গাছ করতে হবে কালকে তোরা যাবি।
দিদি- হ্যা মা এইত এখুনি যাবো বেশী সময় থাকবোনা এসে গুছাতে হবে। কি গো চলো রেডি হোয়ে নাও।
তপন- এইত বলে বেড়িয়ে প্যান্ট পরে এল আর দিদি শাড়ি পরে নিল নতুন বউ বলে কথা তনুও শাড়ি পরে এসেছে। তপন মা তবে আমারা একটু ঘুরে আসি বাবা তো ওখানে আছে তুমিও চলোনা।
শাশুড়ি- না এই ভর সন্ধ্যে বেলা আমি যাবনা তোরা যা ঘুরে আয় বেশী দেরী করবি না বউমা তাড়াতাড়ি এস আর কালকে কখন বের হবি খেয়ে যাবি কিছু নাকি।
তপন- না না সকাল সারে ৫ টায় বাস বললে হবে খাওয়া যাবেনা আমরা পৌঁছে খেয়ে নেবো। আসলাম মা তুমি দরজা বন্ধ করে দাও। বলে আমরা সবাই বের হলাম।
আমি- এই তনু তোমার ননদ জামাইকে তুমি নিয়ে চলো আর আমি আমার শালাবউকে হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছি বাড়ি গেলে দিদি হবে রাস্তাস্য শালাবউ।
তপন- কিরে শালা শালাবউর হাত ধরতে ইচ্ছে করছে বুঝি বলে হেঁসে দিল ঠিক আছে তবে নিয়ে চলো তোমার শালাবউ বলে বলল এই আমার শাল্বউ এদিকে এস বলে ওর দিদির হাত ধরল।
তনু- হেঁসে লুটপুটি তোমরা না কি যে বল লজ্জা করেনা যত সব আজগুবি কথা বাত্রা তোমাদের বলে ভাইয়ের হাত ধরে যেতে লাগল।
আমি- দিদির হাত ধরে আস্তে করে বললাম কিরে লজ্জা করছে নাকি তনুর মতন।
দিদি- শুধু তপন কে বলল তোমরা এখানে বসেই শুরু করে দিলে সে দীঘা গিয়ে বলতে কেউ জানতোঁ না। এখানে তো সবাই কমবেশী চেনে বিশেষ করে আমাদের তোমরা যদিও এক বছর এসেছ কম চেনে। ঠিক আছে চলো ভাইবোনে হাত ধরে জাওয়াই যায় যদি আমাদের বিয়েতে তো সবাইকেই নেমন্তন্ন করেছিল তাই না।
তপন- কেন ভাইবোনে বুঝি হাত ধরে যাওয়া যায়না যাও তো তোমরা আমরা আসছি ভাইবোনে।
আমি- ঠিক আছে আয় দিদি বলে একটু জোর পায়ে আগে গেলাম। আর দিদিকে বললাম কিরে জামাইবাবু কেমন আদর করেছ তো।
দিদি- কেন তুমি বোঝনা বৌদি তোমাকে আদর করেছ তো। কেমন আমার বৌদি।
আমি- সব তো বউদির কাছ থেকে সকালে শুনেছিস তাইনা কি করে কি হয়েছে সবই বলেছে তোকে আর কি বলব।
দিদি- তুই কাছে ছিলি বুঝি তাইনা।
আমি- হুম আমার কানে হেডফোন ছিল সব শুনেছি।
দিদি- পাজি একটা দিদির কথা শুনেছে, তবে তনু যা বলল ও তোকে পেয়ে খুব খাশী ভাই।
আমি- সে তো তপন আমাকে বলেছে তোমাকে পেয়ে তপন খুব খুশী।
দিদি- যাক ভাই আমরা ভালো সবাই খোলামেলা এমন হলে কোন দন্দ থাকবেনা কি বলিস তুই।
আমি- হুম আরাও খুশী আবার ওরাও খুশী।
দিদি- তবে তোর বন্ধু কিন্তু তোর থেকে বদবুদ্ধি নিয়ে চলে বুঝলি।
আমি- কেন আবার কি হল।
দিদি- তুমি সব জানো আবার বলছ, সব সময় ওই গল্প পরে জানিস, ওর নাকি খুব ভালো লাগে আমাকেও পরিয়েছে বার বার, তোরা পরেছিস দুইজনে।
আমি- না তবে তনুকে তো তুই দিয়েছিস তাইনা ও পড়েছে আমাকে বলেছে। আর আমি আর তপন অনেক আগে থেকেই পরি নতুন কি।
এরমধ্যে তপন আর তনু কাছে এল বাবা কত জোরে হাটছিস তোরা এসে তো গেলাম বলে দরজায় নক করতেই মা দরজা খুলে দিল। মা এখন একটা লাল শাড়ি পরে আছে দারুন লাগছে মাকে দেখতে, তপন শালা তো তার শাশুড়িকে দেখেই কেমন করল।
আমরা সবাই মিলে ঘরে গেলাম। দেখি বাবা আর আমার শ্বশুর মশাই বসা। দেখেই বলল ও তোরা এসেছিস আয় আয় মা কালকে গেছিস আর এখন দেখলাম তোকে যদিও আমার মা এসেগেছে আর চিন্তা কিসের এস মা বস।
আমরা গিয়ে সবাইকে নমস্কার করলাম একে একে বাবা মা এবং শ্বশুর মশাইকে।
মা- না ওরা ওদের ঘরে যাক তোমরা কথা বলছ ওরা কি করবে এখানে।
শ্বশুর- হ্যা যাও তোমরা তোমাদের ঘরে যাও।
মা- হ্যা আমি তোদের জন্য খাবারের ব্যাবস্থা করছি।
দিদি- মা মানে আমার শাশুড়ি কিছুখন আগে পকরা খাইয়েছে পেটে জায়গা নেই। তুমি কি করবে মা।
মা- আরে আমিও তো পকোরা রেডি করেছি তোরা আসছিস দেখে বেয়াইন ফোন করেছিল ঠিক আছে অল্প দিচ্ছি যা তোরা ঘরে যা।
আমরা চারজনে ঘরে বসলাম মা পকোরা নিয়ে এলা আমাদের সামনে পেল্ট রাখলো। সবাইল মিলে পকরা খেয়ে নিলাম।
তনু মা আমি চা করে দেই এখন আমার ছেলে চা ভালো খায় বলে মা আর তনু বেড়িয়ে গেল।
কিছু সময় পরে তনু চা বাবা আর শশুরকে দিয়ে আমাদের রুমে এল চা নিয়ে বসে সবাই চা খেলাম। কথা আর তেমন কিছু হলনা একে মা একবার ব্বা একবার আবার শ্বশুর এল আমাদের সামনে তারপর একটু রাত হতে দিদি বলল মা এবার যেতে হবে কালকে বের হব না।
বাবা আর মা কিছু টাকা দিদির হাতে দিয়ে বলল জামাইকে নিয়ে খরচা করিস এই নে।
আমি কিছু বললাম না চুপ করে দাড়িয়ে আছি।
দিদি- বলল ভাই সকালে সময় মতন বেড়িয়ে আসবি আমরা রেডি হয়ে থাকবো কেমন।
বাবা- বলল ভেবনা মেয়েকে দিয়েছি বলে কি ছেলেকে দেবনা তোমাদের ও দেবো আমি। বলে বাবা বের করে বউমার হাতে দিল এই নাও মা দুজনে মিলে খরচা করবে কেমন।
এরপর দিদি আর তপন সাথে ওদের বাবা বেড়িয়ে গেল। এরপর আমরা কিছু সময় কথা বলে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলাম।