আমাদের দুই পরিবারের এক হওয়ার গল্প - অধ্যায় ৭
তপন না ভাই তার থেকে মাঠে বসি চল বলে দুজনে যেতে লাগলাম।
এরমধ্যে দিদির ফোন ধরতেই
দিদি এ ভাই তোরা কোথায়।
আমি এইত মাঠে বসব বলে যাচ্ছি। তোরা কোথায় মা তোরা বাড়ি গেছিস।
দিদি হ্যা বাড়ি এসেছি এইমাত্র মা বলল তোর খোঁজ নিতে বাড়ি চলে আয়।
আমি যাচ্ছি একটু পরে, ছুটির দিন আসছি কিছুখন পরে। সবে এলাম তো।
দিদি আচ্ছা বাড়ি আসিস তাড়াতাড়ি তোর সাথে আমার কথা আছে।
আমি কিরে তপনের সাথে কথা বলবি নাকি।
দিদি না না দরকার নেই তুই আগে আয় তারপর রাতে দেখা যাবে।
আমি আচ্ছা তবে রাখলাম।
দিদি শোন কাকিমা বলছিল তোকে যেতে খেয়ে আসতে ওই বাড়ি থেকে। যাবি নাকি তুই।
আমি না না আজকে আর যাবনা বাড়ি আসবো রাখলাম। বলে কেটে দিলাম।
তপন বলল কেন গেলে কি হবে। চল যাবি খেয়ে যাবি আমাদের বাড়ি থেকে।
আমি না ভাই তোদের বাড়িতে বাঘ আছে দেখলেই ভয় করে কি আবার বলে তার ঠিক আছে পরে একটু স্বাভাবিক হোক আজকে না ভাই। এই সপ্তাহে তো ছুটি আছে তাইনা তখন দেখা যাবে।
তপন কিরে বসবি তোকে বাড়ি যেতে বলল। এই দ্যাখ আমার দিদি ফোন করেছে বলে তুলে বল দিদি।
তনুদি কোথায় তোরা সুজন তোর সাথে আছে নাকি। আমি শুনতে পাচ্ছি সব কথা।
তপন হ্যা আমরা দুইজনে মাঠে বসলাম।
তনুদি বাড়ি আয় এখন সন্ধ্যের পরে মাঠে বসতে হবেনা মাতালের আড্ডা সুলতা বলল কোন দরকার নেই বাড়ি আয়।
তপন আচ্ছা আসছি তবে রাখ তুই। বলে নিজেই কেটে দিয়ে বলল কিরে ভাই দুজনেই খোঁজ নিল ব্যাপার কি। না চল বাড়ি যাই আমার মনে হয় ঝারি হবে। তোর দিদির মত নেই আর আমার দিদিরও মত নেই যা বোঝা গেল।
আমি ঠিক তো বয়সে বড় এই হয় নাকি তুই বল। বাবা মা দুইজনে যে কি ভাবলো কে জানে চলো বাড়ি যাই।
তপন দেখ দিদি তোর নাম্বার চাইছে মেসেজ দিয়েছে। দেবো।
আমি ভয় করে ভাই কি ঝারি দেয় এমনিতেই কথা বলিনা দিতে হবেনা। তোর ফোন দিয়ে কথা বলিয়ে দিস। চল বাড়ি যাই ধুর ভালো লাগছেনা রবিবারটা বেকার করে দিল মা বাবা।
তপন একদম ঠিক কথা ভাই না ওঠ চলে যাই বলে দুজনে উঠে চলে গেলাম। তপনকে বাড়ির সামনে দিয়ে আমি চলে গেলাম।
আমি দরজায় বেল বাজাতে দিদি এল দরজা খুলে দিল সোজা ভেতরে গেলাম। বাবা মায়ের সাথে কোন কথা বললাম না সোজা রুমে গেলাম। অফিসের কিছু কাজ ছিল তাই নিয়ে বসলাম। কিছুখন পরে দিদি এল কি করছিস।
আমি অফিসের কাজ করে রাখছি। কালকে যেতে হবেনা।
দিদি বলল কাজ হলে আমাকে ডাক দিস কেমন।
কিছু সময় পরে মা বাবা এস কিরে কি করছিস অফিসের কাজ নাকি।
আমি হ্যা
মা বলল তনুর মা তোকে খেতে যেতে বলেছিল জাবিনা।
আমি না না আর না অনেক খেয়েছি দুপুর বেলা। রাতে হালকা খাবো বুঝলে। এখন যাও তোমরা কাজ শেষ করে নেই। সকালে ৮ টার ট্রেন ধরব।
মা তপন যাবে।
আমি হ্যা যাবেনা মানে সপ্তাহের প্রথম দিন না গেলে হবে।
মা তবে শেষ করে এদিকে আয় খেতে দেবো দুপুরে একটুও বিশ্রাম হয়নি তাড়াতাড়ি ঘুমাবো।
আমি হ্যা আসছি যাও তোমরা। কাজ শেষ করতে ৯ টা বেজে গেল। তপনকে ফোন করলাম কিরে অফিসের কাজ করেছিস।
তপন হ্যা এই শেষ করলাম ভাই এখন খেতে যাবো তোর।
আমিও শেষ করেছি এইত আমিও খেতে যাবো।
তপন রাতে ফোন করিস কেমন ফিরি হলে।
আমি দেখি এদিকে তো মা বাবা একবার এসেছে আবার দিদিও এসেছে বুঝলি।
তপন আরে ভাই এখানেও একই হয়েছে কি বলবে বার বার এসেছে বুঝলি আমি এরিয়ে গেছি। এখন খেতে যাচ্ছি কি বলে কে জানে ভালো লাগছেনা মানানো যাচ্ছেনা বুঝলি।
আমি হুম একদম তাই রাখ খেয়ে নে কথা বলব পরে। বলে রেখে দিয়ে বের হলাম দেখি বাবা মা বসা দিদি নেই। আমাকে দেখেই মা দিদিকে ডাক দিল এই সুলতা খেতে আয় তোর ভাই এসেছে।
দিদি এসে কই ভাই আমাকে তো ডাক্লিনা।
আমি এইত এলাম আমার আগেই মা তোকে ডাক দিল। সবাই খেতে বসলাম। খেতে খেতে মা বলল কিরে তোরা ভাইবোনে কি ভাবছিস কিছু।
আমি না তোমরা এমন একটা কাজ করলে আগে বলবে তো, না বলে একদম প্লান করে গিয়ে বলে দিলে। কি একটা বিপদে ফেলেছ আমাদের কি দিদি তুই বল।
দিদি আমি কি বলব, বেকার বসে খাচ্ছি বাবা মায়ের কি বলার আছে আমার। চাকরি পেলে না হয় কিছু বলতে পারতাম।
বাবা মা দিদির কথা শুনে মিটিমিটি হাসছে দেখেই রাগ হচ্ছে আমার। বললাম হেস না তো। দেখলেই আমার ভয় লাগে ওকে বিয়ে করতে হবে সে আমি পারবোনা। কোনদিন ভালো করে কথা বললাম না। ধুর আমার ভালো লাগেনা একদম।
মা ঠিক আছে আমরা তো জোর করছিনা দুই পরিবার থেকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি মাত্র, করতে হবে তা তো চাপিয়ে দেই নাই। তবে ভালো হবে এ কথা বলতে পারি অনেকদিন ধরে দেখছি তো যেমন ছেলেটা তেমন মেয়েটা। ওদেরও পছন্দ মানে ওদের বাবা মায়ের বুঝলি।
আমি যাক আজকেই বলতে হবে নাকি ফাইনাল এক সপ্তাহ সময় তো নিয়েছে আসুক সামনের রবিবার তারপর দেখা যাবে। একদিনেই সব বলতে হবে নাকি একদিন কথা বললাম না হ্যা বলে দেবো তাদের মতামত আছেনা।
মা আচ্ছা তোর চিন্তা নেই খেয়ে নে এক সপ্তাহ ভাব তারপর বলবি তোরা দুজনেই। তুই তনুর সাথে না হয় ফোনে কথা বলে দেখিস তার কি ইচ্ছে।
আমি ঠিক আছে বলে খেয়ে উঠে চলে গেলাম ঘরে।
দিদি আর মা গোছগাছ করে ঘরে গেল টের পেলাম। বাবা মায়ের দরজা বন্ধ হয়ে গেল।
আমি বসে আছি বিছানায় প্রতিদিন বাবার সাথে খবর দেখি আজকে সেও হলনা। এত সকালে ঘুম আসবে নাকি কি চিন্তা মাথায় ঢুকিয়ে দিল।
এরমধ্যে আমার দরজা খুলে দিদি ঘরে ঢুকল কিরে ঘুমিয়েছিস।
আমি না এত সকালে ঘুম আসে নাকি। আয় দিদি বস পাশে বস কি করল বলতো বাবা মা আর ওদের বাবা মা।
দিদি হুম একদম তাই এভাবে তাড়াহুড়া করে সব বলে দিল। তবে তনু মেয়ে কিন্তু ভালো। তোর সাথে মানাবে।
আমি দিদি তুই না তবে তপন কি খারাপ নাকি ভদ্র ছেলে আমার প্রিয় বন্ধু বলতে পারিস। তুই বিয়ে করবি ওকে।
দিদি বাবা মা দিলে আমি না করতে পারবোনা।
আমি মন থেকে বলছিস তো নাকি আমাকে বাজিয়ে দেখছিস। ভাবতো সম্পর্ক কেমন হবে তুই হবি বন্ধুর বউ উঃ না আমরা দুই বন্ধু এ মেনে নিতে পারবোনা। দিদি একটা সত্যি কথা বলবি তোদের মানে তোর আর তনুদির কি মত বলনা আমাকে।
দিদি হেঁসে বলল তনু তো বলেছে এবার জব্ধ করতে পারবো আসলে কথা বলেনা তোর ভাই। এবার কোথায় যাবে যাদু।
আমি ধুর দিদি হেয়ালী করিস না তো আমার তো মনে হয় তনু দির মত নেই।
দিদি তোর নাম্বার চেয়েছিল দিয়েছিস।
আমি না তপনকে দিতে বারন করেছি। সত্যি বলছি দিদি আমার ওকে দেখলে ভয় করে কেমন যেন। ভালো করে দেখিনাই কোনদিন। তুই তো তবুও তপনের সাথে বসে কথা বলতি আমি কোনদিন কোন কথা বলিনাই।
দিদি আমি কিন্তু তোর নাম্বার ওকে দিয়ে দিয়েছি বুঝলি। তোকে রাতে ফোন করবে।
আমি ওরে বাবা কি বলিস কি কথা বলব আমি। না আমি ধরবইনা ওর কল। তুই যা তো আমাকে বিরক্ত করতে এসেছিস তাইনা। যা তোর যদি ভালো লাগে দেবো তপনের নাম্বার।
দিদি দরকার নেই ওর দিদি দিয়েহে আমাকে আমি তো ফোনে কথা বলব।
আমি তুই গিয়ে বল আমি বন্ধ করে ঘুমাবো এখন।
দিদি দেখবো আবার দুই একদিনের মধ্যে তো কথা না বলে থাকতে পারবেনা।
আমি না না আমি ওসবের মধ্যে নেই দিদি তাই যা গিয়ে কথা বল তো আমাকে একা থাকতে দে তো। বয়সে বর বন্ধুর দিদিকে বিয়ে করব সে আমার দাঁরা হবেনা বুজলি।
দিদি তবে ভাই দেখা যাক কে কি করে আমি দেখবো। বলে দিদি বেড়িয়ে গেল।