অপবিত্র ভালোবাসা - অধ্যায় ১২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69985-post-6013147.html#pid6013147

🕰️ Posted on August 19, 2025 by ✍️ KK001 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 961 words / 4 min read

Parent
তুশি বেশ কয়েক বার এদিকে সেদিকে জায়ান কে খুজেছে , না পেয়ে হতাশ হয়েছে । ‘উজবুকটা কথা দিয়েছিলো’ মনে মনে ভাবে । খুব কান্না পায় তুশির , আজকে ওর একটা বিশেষ দিন , পুরনো জীবন কে বিদায় বলে আজ ও নতুন জীবনের দিকে পা বাড়াচ্ছে । জীবনের এই মহেন্দ্র ক্ষণে , হাসি কান্নার মিলন স্থলে , ফেলে আসা জীবনের একজন গুরুত্ব পূর্ণ মানুষ কে খুব মিস করছে ও।   জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই , হাসি কান্না দুষ্টুমি , মারামারি সব কিছুতেই দুজনে এক সাথে থেকেছে । ভাই হোক আর বন্ধু , তুশির সবচেয়ে বিশ্বাসের যায়গা ছিলো জায়ান । কত সৃতি এক সাথে , বলতে গেলে ঘণ্টা নয় দিন পেরিয়ে যাবে । কিন্তু আজ সব কিছু পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে । মুখে যাই  বলুক তুশি জানে , আজকের পর থেকে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে । পরিবর্তন হবে ওর প্রায়োরিটির , পরিবর্তন হবে ওর অভ্যাসের , পরিবর্তন হবে ওর দায়িত্বের । পুরনো পরিবার ছেড়ে আপন করে নিতে হবে নতুন একটি পরিবার কে  । এই মানুষ গুলো কে জানতে বা বুঝতে বুঝতেই চলে যাবে অনেক গুলো দিন । তাই ইচ্ছা থাকেলো আর আগের মত জায়ান বা ওর মায়ের সাথে সময় কাটাতে পারবে না , তুশি সেটা খুব ভালো করেই জানে ।  এমন কি যখন ওদের সাথে দেখা করতে নিজের পুরনো বাড়িতে যাবে , তখনো আগের মত কোন কিছুই হবে না । একটা পিছুটান থেকেই যাবে , নিজের নতুন পরিবারের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য ওকে বার বার মনে করিয়ে দেবে , ফিরতে হবে ।   এই যে অভির হাত ধরে ধিরে ধিরে হেটে যাচ্ছে , এই হাটা ওকে নিয়ে যাচ্ছে নতুন এক জীবনের দিকে , পুরনো জীবন কে অতিত করে । এই সময় জায়ান , যে কিনা ওর পুরোন জীবনের সবচেয়ে কাছের মানুষ , তাকে পাশে পাওয়ার জন্য মনটা হু হু করছে তুশির । এই সময় যদি জায়ান পাশে থাকতো , ওর অন্য হাতটা ধরে রাখতো এগিয়ে দিতো ওর নতুন জীবনের দুয়ারের পথে । তাহলে হয়তো এই পথতা এতটা ভারাক্রান্ত মনে হতো না তুশির ।   উপরে উপরে তেমন একটা কাঁদছে না তুশি , কিন্তু ওর ভেতর টা বার বার কাপড় থেকে পানি নিংড়ানোর জন্য যেভাবে নিংড়ানো হয় তেমন করেই কেউ যেন মুচড়ে দিচ্ছে । ধিরে ধিরে তুশি আর অভি ওদের নতুন জীবনের যাত্রার জন্য  সাজিয়ে রাখা বাহন যা ওদের জন্য অপেক্ষা করছে সেটার সামনে এসে দাড়ায় । তুশি শেষ বারের মত দাড়ায় , নিজের মা কে জড়িয়ে ধরে । ডুকরে কেঁদে ওঠে তুশির মা , সাথে তুশিও যোগ দেয় । আশেপাশের মানুষ জন সবাই সান্তনা দেয় । বুক ফেটে কান্না আসে তুশির , বলতে ইচ্ছে হয় , মা তোমাকে অনেক জ্বালাতন করছি , ক্ষমা করে দিও । কিন্তু বলতে পারে না , সুধু মা কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে ।   শেষে তুশির মা তুশির কপালে একটা চুমু একে দিয়ে বিদায় জানায় । অভি তুশি কে হাত ধরে গাড়িতে বসার ইশারা করে । নিজে তুশির জন্য দরজা খুলে দাড়িয়ে থাকে । তুশি অভির হাত ধরে পা বাড়ায় গাড়িতে ওঠার জন্য , কিন্তু কয়েক মুহূর্ত থেমে চারপাশটা ভালো করে আর একবার দেখে নেয় , ওর মনে ক্ষুদ্র আশা হয়তো জ্যায়ানটা দূর  থেকে দাড়িয়ে দেখছে । কিন্তু হতাশ হয় তুশি , তারপর একটা বড় নিঃশ্বাস ফেলে গাড়িতে উঠে বসে ।  এর পরপর ই অভি গাড়িতে উঠে তুশির পাশে বসে , তুশির একটা হাত নিজের হাতে নিয়ে আলতো করে চাপ দেয় । গাড়ি ছেড়ে দেয় , পেছনে ফিরে তাকায় তুশি , নিজের মা কে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখে । যতক্ষণ দৃষ্টির সীমানায় থাকে তুশি সেদিকে তাকিয়ে থাকে । তাপর ডুকরে কেঁদে ওঠে ।   অভি যে এতক্ষণ তুশির হাত ধরে ছিলো , ধিরে ধিরে তুশির মাথা নিজের বুকের কাছে নিয়ে আসে , দু হাতে তুশি কে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে , বে কিছুক্ষন তুশি কে কাঁদতে দেয় । তাপর ধিরে ধিরে তুশির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে “সসসস বেবি , আই এম হিয়ার, আই উইল আলয়েস বি হিয়ার উইথ ইউ” ধিরে ধিরে তুশির কান্না থেমে আসে , অভির বুকে মাথা রেখে অন্যরকম এক অনুভূতি অনুভুত হয় তুশির । আগেও রেখেছে , কিন্তু আজকে ফিলিং অন্য রকম ।একটা অন্য রকম ভরসা পাচ্ছে তুশি , অভির শক্ত সমর্থ হাতের মোলায়েম স্পর্শ ওকে ভরসা দিচ্ছে যে , যত কষ্ট আসুক যত ঝর আসুক , যত বাধা আসুক জীবনে , এই বাহু বন্ধনে ও নিরাপদ । দুনিয়ার কোন শক্তি ওর কোন ক্ষতি করতে পারবে না , যত বড় দুঃখ আসুক ওকে এই বুক ঢালের মত আগলে রাখবে ।   বর্ষার প্রথম বৃষ্টি যেমন তপ্ত ধরণি কে শীতল করে , ঠিক তেমনি নিজের পরিবার কে ফেলে আসার দুঃখ ধিরে ধিরে তুশির মন থেকে বিদায় হতে শুরু করে । আর সেই শূন্য স্থান দখল করে নেয় ভালোবাসায় সিক্ত একটা ভেজা অনুভূতি । চোখের পানি শুকিয়ে গিয়ে সামনের রঙিন জীবনের রং ধনু ভেশে ওঠে । নিজের এমন অনুভূতি খোদ তুশিকেও অবাক করে ।   এক সময় কি ছিলো ও , আর এখন কি হয়েছে । এক সময় পার্টি , এয়াল্কোহল , ছোট পোশাক কে আধুনিকতা মনে করা তুশি। আজ এমন হতে পেরেছে সুধু মাত্র অভির কারনে । মাঝে মাঝে অভিকে ওভার পজেসিভ ব্যাক ডেটেড মনে হতো । কিন্তু আজ বুঝতে পারছে সম্পর্ক কি ? মডার্ন যুগের ঠুনকো ভালোবাসার চেয়ে অভির এই মান্ধাতার আমলের ভালোবাসা তুশির কাছে বেশি এট্ট্রাক্টিভ লেগেছে ।   তুশি জানে ওর সাথে সম্পর্কের আগে অভি খুব ওয়াইল্ড  ছিলো । আর সেখান থেকেই অভি বুঝতে পেরেছে ভালোবাসা কি । একে অপরের প্রতি শারীরিক আকর্ষণ ই সুধু ভালোবাসা না , একে অপর কে সমস্ত মন প্রান উজার করে গ্রহণ করা কেই ভালোবাসা বলে । একে অপরের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেয়াকেই ভালোবাসা বলে । একে অপরের ভালো মন্দ দুটো দিক কেই মেনে নেয়াকে ভালোবাসা বলে । আজাকালের মডার্ন মেয়েদের মতন , পান থেকে চুক খসে পরলেই বিচ্ছদের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রবনতাকে আর যাই হোক ভালোবাসা বলে না ।   এতদিন তুশি এসব কথা শুনেছে , বিশ্বাস করার চেষ্টা করেছে । কিন্তু আজ সত্যি সত্যি বিশ্বাস হচ্ছে , অভির বাহু বন্ধন ওকে বাকি দুনিয়ার সব কিছু ভুলিয়ে দিচ্ছে । যেন এই পৃথিবীতে সুধু ও আর অভি আছে , বাকি সব কিছু কেমন ধোঁয়াশা লাগছে ।    <><><>
Parent