অপবিত্র ভালোবাসা - অধ্যায় ১৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69985-post-6034300.html#pid6034300

🕰️ Posted on September 13, 2025 by ✍️ KK001 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1625 words / 7 min read

Parent
জায়ানের কাছে মনে হচ্ছে বুকের উপর পাহাড় সম কিছু একটা রেখে দেয়া আছে যা ওকে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখছে । নড়াচড়ার শক্তি একদম চলে গেছে । জায়ানের কাছে মনে হচ্ছে সুধু মাত্র ওর মস্তিস্ক আর চোখ ছাড়া শরীরের আর কোন অংশ কাজ করছে না । আর এ দুটো ও বর্তমানে নেই , অতীতে চলে গেছে । মস্তিস্ক হাতরে হাতরে একদম প্রথম থেকে ওর আর তুশির সৃতি গুলো খুজে এনে ওর চোখের মাধ্যমে দেখাচ্ছে ।   প্রথমদিনের স্কু*ল , জায়ানের মন খারাপ , ছোট বোনের সাথে এক ক্লাসে পড়তে হবে । কিন্তু তুশি ভারি খুশি । মাথার উঁচু উঁচু করে দুটো ঝুটি বাধা স্কু*ল ড্রেসে তুশি কে একটা পুতুলের মত লাগছিলো । হাত তালি দিয়ে বার বার বলছিলো , কি মজা কি মজা , আমরা দুজন এক সাথে । তুশির খুশি দেখে জায়ানের মন ভালো হয়ে গিয়েছিলো । তুশি সেদিন বলেছিলো , “ আমাদের আর বন্ধু খুজতে হবে না , তুই আর আমি আজ থেকে বন্ধু”। তুশির বলা এই কথাটা জায়ান ভুলেই গিয়েছিলো । মস্তিস্ক আজকে সৃতির পাতা ঘেঁটে ঘেঁটে তুলে আনলো ।   স্কু*লে*র প্রথম বার্ষিক পরিক্ষায় জায়ান তুশির চেয়ে কম নাম্বার পেয়েছিলো , তাই দুজনের সিট আলাদা হয়ে যায় । তুশির সে কি কান্না , শেষে ক্লাস টিচার বাধ্য হয়ে জায়ান আর তুশি কে এক সাথে বসতে দেয় । এতক্ষণ হাউমাউ করে কান্না করা তুশি মুহূর্তেই সব দাঁত বের করে হাসতে থাকে । তখন তুশির সামনের একটি দাঁত পড়েছে । ফোকলা দাঁতের সেই হাসি জায়ান কোনদিন ভুলতে পারবে না ।     স্কু*লে*র প্রথম ঝগড়া , ক্লাসের এক ছেলের সাথে জায়ানের কি নিয়ে যেন কথা কাটাকাটি হয়েছিলো । সেই ছেলে হঠাত করে পাশে বসা তুশির চুলের ঝুটি ধরে টান দিয়ে দৌর দেয় । জায়ান কোনদিন কারো সাথে মারামারি করেনি । কিন্তু সেদিন এতো রাগ হয়েছিলো যা বলার নয় , তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র জায়ান তেড়ে গিয়েছিলো , অতীত অভিজ্ঞতা না থাকার ফলে উল্টো মার খেয়ে ফিরে এসেছিলো । মার খাওয়ার সব অপমান ভুলে গিয়েছিলো যখন তুশি ও ওই ছেলের উপর ঝাপিয়ে পরে আঁচরে কামড়ে দিয়েছিলো । ওই দিন ওদের দুজন কে কলেজ থেকে ওয়ার্নিং দেয়া হয়েছিলো । বাড়িতে এসে মায়ের হাতে দুজনেই মার খেয়েছিলো। মার খেয়ে মায়ের সামনে দুজনেই কেদেছিলো । কিন্তু মা দূরে যেতেই একজন অপর জনের দিকে চেয়ে হেসে দিয়েছিলো । সে এক অধভুত হাসি , চোখ দিয়ে পানি ঝরছে কিন্তু ঠোঁটে হাসি । নিঃশব্দে একজন আর একজন কে যেন বলছিলো , যা করেছি ঠিক করেছি , প্রয়োজনে আবার করবো । জায়ানের কাছে মনে হয়েছিলো , আর কাউকে দরকার নেই ওর ।   তুশির প্রথম পিরিয়ড , তখন দুজন একি ঘরে আলাদা বিছানায় ঘুমায় । মাঝ রাতে হঠাত তুশির ধাক্কা খেয়ে ঘুম ভাঙ্গে জায়ানের । তুশি অঝোরে কাঁদছে । এক হাতে তলপেট চেপে রেখছে । হঠাত ঘুম থেকে উঠে এই দৃশ্য দেখে জায়ান একটু ভড়কে যায় । জিজ্ঞাস করে কি হয়েছে । তুশি কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে , “আমি মনে হয় মরে জাচ্ছি” ধরমর করে ওঠে জায়ান । ডিম লাইটের নীল আলোতে দেখে তুশির রাতের পোশাকের সাদা পাজামার কিছু অংশ কালো মতন হয়ে আছে । ভয়ে ভয়ে হাত দেয় জায়ান , জায়গাটা ভেজা ভেজা । তুশি ব্যাথায় ঠোঁট বিকৃত করে বলে “রক্ত”। আকাশ ভেঙ্গে পরে জায়ানের মাথায় । সেদিন দিনের বেলাও তুশি স্কু*লে কয়েকবার বলেছিলো ওর পেট ব্যাথা করছে । কিন্তু জায়ান পাত্তা দেয়নি । জায়ানের মাথায় সুধু একটা কথাই ঘুরছিলো বার বার , তুশির কিছু হলে ওর কি হবে , তুশিকে ছাড়া ও থাকবে কিভাবে । বিছানা থেকে উঠে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিলো , তারপর নিজের বিছানায় শুইয়ে কান্না জরানো কণ্ঠে চেঁচিয়ে বাবা মা কে ডেকেছিল । তুশি তখন ওর কোলের উপর , তুশির হাত জায়ানের হাতে । জায়ান মনে মনে সুধু বলছিলো , “ না না না প্লিজ না” এর পর বাবা মা এলে ওরাও কিছুক্ষন হতভম্ব হয়ে  থাকে। কিন্তু কিছুক্ষন পর যখন মা তুশিকে ভালো করে দেখে , তখন বাবা মায়ের মাঝে চোখে চোখে কি যেন কথা হয় । মা তুশি কে নিয়ে চলে যায় । বাবা জায়ানের সাথে থাকে , জায়ান অঝোরে কাঁদতে থাকে । ওর বাবা সেটা দেখে ওকে সান্তনা দিয়ে বলে “ তুশির কিচ্ছু হয়নি , ও বড় হয়েছে তাই এটা হয়েছে” জায়ান বাবার শান্ত ভাব দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলো । তুশি ছিলো বাবার চোখের মনি , সেই মেয়ে মারা যাচ্ছে আর বাবা চুপচাপ বসে আছে । পরে অবশ্য মা জায়ান হালকা ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলো , এসব সব মেয়ের হয় ।   তুশির বড় হওয়া , সেই যে রক্ত বেরুলো , এর পর তুশির শরীর ধিরে ধিরে পরিবর্তন হতে শুরু করলো । তুশি জায়ান কে এড়িয়ে চলতে লাগলো । তুশির ফ্ল্যাট বুকে দুটো চোখা মাংস গজিয়ে উঠলো । একদিন জায়ান আনমনে নিজের অজান্তেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তুশির বুকের দিকে তাকিয়ে ছিলো । জায়ানের মনে অন্য কোন চিন্তা ছিলো না , ব্যাপারটা ব্যাস ঘটে গিয়েছিলো , তুশির শরীরে যে পরিবর্তন এসেছে তার প্রতি জেনারল কিউরিসিটি  । কিন্তু তুশি খুব কড়া রিয়েক্ট করলো , যখন জায়ানের দৃষ্টি কোথায় টা বুঝতে পারলো । মুখে কিছু বলল না , তবে জায়ানের সামনে একদন আড়ষ্ট হয়ে থাকতো , কথা বলতো কম , আগের মত ফিজিক্যাল টাচ হতো না ওদের মাঝে । এমন কি টিভি দেখার সময় ও দুজনে এক সাথে বসতো না । তখনো জায়ান আর তুশি এক ঘরেই ঘুমায় । তবে তুশি বেশ সামলে চলে , আগে জায়ানের সামনেই পোশাক পরিবর্তন করতো , এখন বাথরুমে গিয়ে করে । বুকে সব সময় ওড়না রাখে । ব্যাপারটা জায়ান বুঝতে পারলো কিছুদিন পর । তবে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি । জায়ান মনে করলো তুশি আর আগের মত ওর সাথে সময় কাটাতে চায় না । বন্ধু হিসেবে জায়ান ওর কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তুশির এমন আচরণ  জায়ান কে খুব আঘাত করেছিলো । তাই জায়ান ও তুশি কে এভয়েড করে চলতে শুরু করেছিলো । বেশ অনেক দিন ওদের মাঝে এই মান অভিমান চলেছিলো । প্রায় মাস তিনেক হবে । ওদের বাবা মা তুশির পিরিয়ডের বড় তিন বেড রুমের একটি বাসা খুজছিলো । এবং এক সময় পেয়েও গেলো । নতুন বাসায় তুশি আর জায়ানের আলাদা ঘর । প্রথম কয়েকদিন জায়ান খুব খুশি ছিলো , নিজের আলাদা ঘর , স্বাধীনতা , তুশির অদ্ভুত আচরণ আর সহ্য করতে হবে না । কিন্তু জায়ান খেয়াল করলো ওর ঘুম আসেনা রাতে ঠিক মত । রাতে একবার ঘুম ভাংলে সব সময়ের অভ্যাস মত পাশে তুশির বিছানা না দখে অদ্ভুত এক অনুভূতি হতো । মাঝে মাঝে তো কান্না পেতো । ধিরে ধিরে জায়ানের মনে আরো বেশি ক্ষোভ জমা হতে থাকলো । তুশির সাথে কোন কারন ছাড়াই বাজে ব্যাবহার করতে শুরু করলো । কিন্তু তুশি এসবের কোন প্রতিবাদ করতো না । আগে একটা জিনিসের জন্য দুই ভাই বোন যেমন প্রতিযোগিতা করতো সেটা আর ওদের মাঝে নেই ।   একদিন তো সব সীমা লঙ্ঘন করলো জায়ান , তখন ওরা দুজন দুই রুমে ঘুমালেও পড়াশুনা করতো এক সাথে । একদিন জায়ান একটা অঙ্ক কিছুতেই মেলাতে পারছিলো না , বার বার ভুল করছিলো । তুশি পাশ থেকে দেখে যখন বলতে গেলো জায়ান কোথায় ভুল করছে , ঠিক তখনি জায়ানের জমিয়ে রাখা ক্ষোভ ফেটে বেরুলো । সামনের বই খাতা সব ফেলে দিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠলো “ সব কিছু তুইই বুঝিস , আমি কিছু বুঝি না , আমার সাথে এতো ভাব দেখাবি না , এই ভাব অন্য কোথাও গিয়ে দেখা” কথা গুলো হয়তো সেদিন জায়ান তেমন কঠিন বলেনি , কিন্তু ওর শারিরিক ভাব ভঙ্গিতে ছিলো প্রচণ্ড রাগের বহিঃপ্রকাশ । তুশি একেবারে চুপসে গিয়েছিলো , হঠাত জায়ানের এমন আচরণ কিছুতেই বুঝতে পারছিলো না । প্রায় মিনিট খানেক কোন ধরনের রিয়েক্ট করতে ভুলে গিয়েছিলো । ধিরে ধিরে তুশির ফর্সা মুখ লাল হতে শুরু করে , ঠোঁট দুটো ফুলে উঠতে শুরু করে , না তুশি শব্দ করে কান্না করেনি । ফুলে ফুলে কাদছিলো সুধু । আর জায়ান দাড়িয়ে দাড়িয়ে রাগে ফুসছিলো । কিছুক্ষন পর হঠাত করেই জায়ানের রাগ পরে যায় । সামনে তুশি কে এভাবে কাঁদতে দেখে , ওর মন সিক্ত হয়ে ওঠে । কিন্তু কি বলবে বুঝতে পারে না । তুশি কে সান্তনা দেয়ার ভাষা ও হারিয়ে ফেলে , ওর কারনেই কাঁদছে তুশি , এই বোধটা ওর সামনে বাধা হয়ে দাড়ায় কোন কিছু বলতে। কিছু না বলেই জায়ান ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় ।   জায়ান মা অথবা বাবার কাছ থেকে মার খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলো । ও ভেবেছিলো তুশি নিশ্চয়ই বিচার দিয়েছে । আর ছোট বোন কে সুধু সুধু দুঃখ দেয়ার কারনে ওর বাবা মা নিশ্চয়ই ওকে ছেড়ে দেবে না , মার না হোক বকা অন্তত দিবে । কিন্তু রাতের খাবারের সময় ও যখন কেউ কিছু বলল না , তখন জায়ান বুঝতে পারলো তুশি বিচার দেয়নি । জায়ান আরো বেশি গিল্টি ফিল করতে লাগলো । রাতে বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করতে লাগলো । একা একা তুশির কাছে  একশবার মাফ চাইলো । কিন্তু তাতেও মন ভরলো না । তারপর একা একা নিজের কর্মের জন্য এক্সপ্লেনেশন দিতে লাগলো । কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্চে না । তখন জায়ান উঠে বসে , বেশ কিছুক্ষন মাথা নিচু করে রাখে । তারপর উঠে দাড়ায় , নিজের ঘর থেকে বের হয় । পাশেই তুশির ঘর , দরজা দেয়া । দরজায় টোকা দিতে ভয় হয় জায়ানের , যদি তুশি ওকে ঢুকতে না দেয় । যদি চলে যেতে বলে । জায়ান কাঁপা হাতে টোকা দেয় , ভেতর থেকে কোন শব্দ আসে না , জায়ান আবার টোকা দেয় । এবার ও ভেতর থেকে কোন সাড়া আসে না। জায়ান কিছুক্ষন চুপ করে দাড়িয়ে থাকে । একবার ভাবে ফিরে যায় , হয়তো তুশি ঘুমিয়ে গেছে । কিন্তু পা চলে না জায়ানের । জায়ান জানে দরজা খোলাই থাকে , জায়ান দরজার নব ধরে মোচর দেয় । খুব ধিরে ধিরে দরজা খোলে , জায়ানের ইচ্ছা ছিলো যদি তুশি ঘুমিয়ে থাকে তাহলে একবার ওকে দেখেই চলে যাবে । কিন্তু জায়ান অবাক হয়ে দেখে তুশি দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে । জায়ান কিছু বলতে পারে না , তুশি কে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে ফেলে । এই কান্না সুধু ওই দিনের রাগের জন্য নয়। গত কয়েক মাসের জামানো দুঃখ ছিলো । আর সেটাই ছিলো জায়ান আর তুশির জ্ঞান হওয়ার পর প্রথম হাগ ।   জায়ান জোর করে নিজের মস্তিস্ক কে শাট ডাউন করার চেষ্টা করে । এসব কথা মনে করতে চায় না । এসব সুধু দুঃখ ই বাড়াবে । কিন্তু জায়ানের মস্তিস্ক ওর সব চেষ্টা ব্যারথ করে দেয় । জায়ান বুঝতে পারে আজকের রাত ওর জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ আর কঠিন রাত হতে যাচ্ছে । <><><>
Parent