দাদীর পরলোক গমন,আর আমার মাতৃভ্রমণ - অধ্যায় ১০
১০,৪,২০
ইদানিং দিন কি ভাবে কাটতেছে ঠিক বুঝতেছিনা, আজ আবার শুক্রুবার ৷
মনে হয় তিন দিন পর পরেই শুক্রবার আসে ৷
আম্মুর ফোন ঠিক হয়নি তাই আমার ফোন দিয়েই আব্বুর সাথে কথা বলে, আর আমার ফনে যে অটো রেকর্ডিং চালু আছে তা বোধই বলে দিতে হবে না ৷
রাতে সময় পেলে ইয়ারফোন দিয়ে মা বাবার মধ্যকার কথোপথন শুনি,
নানা ধরনের কথা,
—সামনে রোজা আসছে বাজার কে করবে বাবা যদি না আসে, ফোন নষ্ট হয়ে গেছে, সুর্য্য সারা দিন আমার ফোন টিপে পড়া লেখা করে না,
বাবা জিগাস করেছিলো তার দেওয়া তিন হাজার টাকা মার কাছে দিয়েছিলাম কিনা? মা তখন বলেছিলো,
মটর নষ্ট হয়েছিলো, আমি ঠিক করাইছি ৷ এসব সাংসারিক কথা,
তবে, সাংসারিক বিষয়গুলো ছাপিয়েও একটা জিনিস মায়ের কথায় লক্ষনিয় ছিলে, তা হলো,
বাবাকে না না উছিলায় বাড়িতে আসতে বলার আকুলতা!
কিন্তু বাবা প্রতিবার তাএড়িয়ে গিয়েছেন স্পষ্ঠ ভাবে,এক পর্যায়ে বলে বসলেন,
তোমার ছেলে মেয়ে বড় হচ্ছে আর তুমি এখনো এসব বিষয় নিয়ে আছো ৷ নামাজ পড় ঠিক মতো, এসব বিষয় আর মনে আসবে না ৷
অথছ, মা যে বাবার থেকেও কয়েকগুন বেশী ফরহেজগার তা বাবাও জানতেন ৷
সেদিন সন্ধ্যায় আমিই বাবাকে ফোন দিই,
—আব্বু আস্লামুয়ালাইকুম,
—ওয়ালায়কুম,কিরে সূর্য্য
— আব্বু, আম্মুর ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে তাই, এমাসের বাজারের ঘরের ভাড়া দিয়ে আম্মুর জন্যে একটা ফোন কিনবো ভাবছি ৷
—আচ্ছা, সমস্যা নেই ৷ কিনে দে,
আর শোন, রোজার জন্যে একসাথে বাজার করে নিস ৷ ছোলা,ডাল, সেমাই যা লাগে নিয়ে নিস,তোর বিকাশে ৫হাজার টাকা পাঠাচ্ছি ৷
বাকি টাকা তোর আম্মুর হাতে দিস ৷
—আচ্ছা ৷ আস্লামুয়ালাইকুম
১১,৪,২০
দীপকের কাছ থেকে গত মাসের দোকান ভাড়া নিলাম, তার সাথে আরো দুহাজার দিয়ে,
মায়ের জন্যে সাড়ে পাচের মধ্যে একটা ক্যামরা সেট কিনলাম, সেম্পনি i30 মডেলের ৷
সাথে, রোজার মাসের জন্যে বাজার করে নিলাম,
বাড়িতে গিয়ে,
বাজার আম্মুকে বুঝিয়ে দিলাম,তারপর যখন সব রান্না ঘরে রেখে মা ঘরের দিকে গেলেন আমি তার পেছনে গেলাম,
ঘরে যেতেই মাকে ফোনের বক্সটা দিলাম,
আম্মু পুরাই অবাক হলেন,তিনি ভেবেছিলেন, সাধারন কোনো সেট নিবো, কিন্তু ক্যামারা সেট কল্পনা করেন নি,
যদিও মায়ের কিন্তু ক্যামরা সেটের সখ ছিলো, কারন,
বাবার কাছে তাকে একবার বলতে শুনেছিলাম,
তাছাড়া আমার খালাদের দুজনই ক্যামরা সেট ব্যাবহার করতেন ৷
এরপর,মাকে টুকি নাকি দেখিয়ে দেওয়ার ছলে চোখ দিয়ে মায়ের গতর মাপছোপ করি কিছুক্ষন তারপর চলে আসি আমার রুমে,
ছোট ভাই সেখানে ডানে এনিমি বায়ে এনিমি বলে চিতকার দিচ্ছিলো,
খেলা শেষে সুর্য্যকে বললাম, আম্মুর জন্যে নতুন সেট এনেছি, এখন থেকে তুই সেটাতে গেম খেলতে পারবি ৷
সূর্য্য সুজোগবুঝে, মায়ের রুমে চার্জ থেকে মায়ের ফোন নিয়ে টিপাটিপি শুরু করে দিলো!
১৫,৪,২০
সূর্য্য গত কয়েকদিনে অনেকবার আমার ফোনের জন্যে এসেছিলো বললাম, যা আম্মুরটা টিব, বলে ভাইয়া ঐটাতে তো পাবজি খেলা যায় না!
অন্য গেম খেল, ভাইর ফোনে কাজ আছে ৷
সুর্য্য চলে যেতেই মা আবার আমার কাছে আসলেন,
আম্মু সুর্য্যের বিরুদ্ধে নালিশ জানালেন, সে সারাদিন মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকে ৷
আম্মু আপনার হাতটা এদিকে দেন,
—কি?
—দেন না,
আমি মায়র হাতের ধরে ফোনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেট করে দিলাম,
আম্মুর দু হাতের চারটা আঙ্গুলে লক সেট করলাম যাতে করে কোনো সমস্যা না হয় ৷
প্রথমে উদাহরণ হিসেবে দেখাতে গিয়ে যে আমার আঙ্গুলের লকও সেট করে নিয়েছিলাম ৷
মায়ের হাতের আঙ্গুল গুলো ফোলা এবং মোলায়েন ছিলো ৷ কিন্তু দ্রুতই মা কাজ সেরে হাত সরিয়ে নেন ৷ এবং রান্নার কাজে চলে যান ৷
মায়ের সাথে আমার সম্পর্ক এখন স্বাভাবিক বললেই চলে ৷ মা প্রয়োজন হলে যে কোনো কিছু আমাকে বলে ৷
এদিকে বাজার খরছ সেরে বাবা যদিও বাকি টাকা মাকে দিয়ে দিতে বলেছিলেন, কিন্তু আমি দিই নি, মাও এখনো চান নি ৷