একটি ভুল! প্রায়শ্চিত্ত থেকে প্রনয় - অধ্যায় ১৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-70313-post-6038559.html#pid6038559

🕰️ Posted on September 19, 2025 by ✍️ mlover69 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 2095 words / 10 min read

Parent
আপডেট : শওকত আম্মাকে এইভাবে ভোগ করার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না, স্বপনের সাথে আম্মার রঙ লীলা দেখে রাগ আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের ফলাফল ছিলো একটু আগের ঘটনা। এখন শওকতের ও খারাপ লাগছে এইরকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটানোর জন্য।শাহনাজ বেগমের মনে শওকতের জন্য ঘৃণা ছাড়া আর কিছু নাই এই মুহূর্তে। শাহনাজ বেগম মনে মনে ভাবছে আমি কেন শওকতের মত জানোয়ার জন্ম দিলাম? আমার সারাজীবনের  প্রাপ্তি ই তো  ছিলো শওকত আর বুশরা । আমার সেই প্রাপ্তি ই আমার জীবন নরক করে দিলো।রাগে ক্ষোভে শাহনাজ বেগম শওকতের মুখে থুতু ছুড়ি দিয়ে বলে দুর হয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে তোর মত জানোয়ারের চেহারা আমি কোনোদিন দেখতে চাই না।শওকত আম্মার কথা শুনে মাথা নিচু করে আম্মার রুম থেকে বের হয়ে গেলো। রুম থেকে বের হয়ে নিজেকে নিজে ধিক্কার দিতে লাগলো!  কেন সে আম্মার রুমে গেলো।আম্মা সারাজীবন আব্বার কাছ থেকে সুখ পায় নাই এইটা তো সে জানে!  এখন আম্মা যদি নিজের সুখ খুজে নেয় তাইলে সে কেন বাধা দিতে গেলো?তার কেন এত খারাপ লাগবে? আম্মার কি সুখ পাওয়ার অধিকার নেই? শওকত এসব ভাবতে ভাবতে নিজের রুমে এসে শুয়ে পড়লো। শাহনাজ বেগমের চোখে ঘুম নেই,ঘুম কিভাবে আসবে নিজের ছেলে যদি এমন ঘৃণ্য কান্ড করে একজন মা কোথায় নিরাপদ থাকবে?মানুষ মাত্রই তো ভুল করে আমি নাহয় শয়তানের ধোকায় পড়ে একটা ভুল করে ফেলছিলাম তাই বলে নিজের ছেলে আমাকে এইভাবে ধ্বংস করে দিবে! এসব ভাবতে ভাবতে অনেক রাত হয়ে গেলো কিন্তু শাহনাজ বেগমের চোখে ঘুম আসছে না।শাহনাজ বেগম আ**** ইবাদত করতে বসতেও আগ্রহ পাচ্ছে না।এই অপবিত্র শরীর নিয়ে কোন মুখে আ**** কাছে মাফ চাইবে!অনেক ভাবনা চিন্তার পর ইবাদতে বসার মনস্থির করলো।আ**** বান্দা যত জঘন্য ভুল ই করুক খাস দিলে মাফ চাইলে আ**** নিশ্চয়ই মাফ করে দিবে তিনি তো দয়ার সাগর।  ইবাদতে বসার আগে অযু গোসল করে নিজেকে পবিত্র করতে হবে।এই ভেবে বাথরুমের দিকে পা বাড়ালো। দুই কদম হেটেই যৌনাঙ্গ আর তলপেটের ব্যাথায় কাকিয়ে উঠলো শাহনাজ বেগম। অনেক কস্টে বাথরুমে গিয়ে গিজার অন করে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে নিজেকে ঢলে ঢলে পবিত্র করে নিলো। গোসল শেষে সেলোয়ার-কামিজ পড়ে ভালো করে * পড়ে ইবাদতে মগ্ন হয়ে গেলো।ইবাদতে বসে শাহনাজ বেগমের দুই চখ বেয়ে টপটপিয়ে পানি ঝড়তে লাগলো।চোখের পানিতে শাহনাজ বেগমের বুক ভেসে গেলো।ইবাদতরত অবস্থায় ই শাহনাজ বেগম ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম ভাংলো ফজরের আযানের আওয়াজে। ঘুম থেকে উঠে আবার কোনরকমে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আবার অযু করে ইবাদতে বসে গেলো। এখন ব্যাথা টা একটু কম লাগছে।ইবাদাত শেষ করে বিছানায় শুইতে গেলো।অন্যদিন সাধারণত ফজরের ইবাদাতের পর হাদিস কোরান তেলওয়াত করে নাস্তা বানানোর আগ পর্যন্ত। আজকে ঘুম পুরা না হওয়াতে এবং ব্যাথার জন্য ভাবলো আরেকটু ঘুমিয়ে নিলে হয়তো আরাম লাগবে।বিছানায় গিয়ে শাহনাজ বেগম বিছানার চাদরে রক্তের দাগ দেখে মনে মনে আবার শওকত কে জানোয়ার বলে বিছানার চাদরটা উঠিয়ে নতুন চাদর বিছিয়ে ঘুমাতে গেলো।অইদিকে ওসমান মুন্সী আর সজল ফজরের আগে ঘুম থেকে উঠে দুজন একসাথে উলংগ হয়ে গোসল করতে লাগলো। গোসল করার সময় সজল ওসমান মুন্সীর বাড়াতে হাত বুলিয়ে দিয়ে ওসমান মুন্সীকে আবার বুশরার প্রস্তাবের ব্যাপারে স্মরণ করিয়ে দিলো।ওসমান মুন্সী সজলের ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে কতক্ষণ চুমু দেওয়ার পর বললো তোমার আর টেনশন করতে হবে না এইটা নিয়ে।আমি তোমার আব্বুর সাথে কথা বলে বুশরাকে তোমার সাথে বিয়ে দিয়ে তোমাকে সারাজীবনের জন্য আমার করে নেবো।গোসল শেষ করে পাঞ্জাবী পায়জামা পড়ে দুজনেই  মসজিদে চলে গেলো। ইবাদাত শেষ করে সজল সজলের দড়সে চলে গেলো আর ওসমান মুন্সী নিজের রুমে চলে গেলো। সফরে বের হওয়ার আগ পর্যন্ত ওসমান মুন্সী রেস্ট নিবেন। শওকতের ঘুম ভাংলো সকাল সাতটার দিকে। ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হয়ে দেখলো আম্মা তখনো রুম থেকে বের হয় নাই।শওকত আম্মাকে ডিস্টার্ব না করে বাইরে চলে গেলো বাইরে গিয়ে নিজে নাস্তা করে, আম্মার জন্য একটা নাস্তা পার্সেল করে নিলো।পার্সেল নিয়ে বাসায় এসে নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে নাস্তা ডাইনিং টেবিলে রেখে শওকত আবার মাদরাসার উদ্দেশ্য বের হয়ে গেলো।আজকে একটু আগেই বের হয়ে গেলো, গতকালের অপকর্মের পরে শওকতের নিজের ই বাসায় কেমন দমবন্ধ লাগে। শওকত মাদ্রাসায় আসার কিছুক্ষন পরে শওকতের হঠাৎ মনে হলো আম্মার তো মনে হয় নিয়মিত পিরিয়ড হয়।গতকাল বীর্যপাত যে আম্মার ভিতরে করলাম যদি আম্মা গর্ভবতী হয়ে যায় তবে তো কেলেংকারী হয়ে যাবে।আম্মাকে যেইভাবে হোক গর্ভ নরোধক  বড়ি খাওয়াতে হবে।কিন্তু খাওয়াবো কিভাবে? আম্মাকে কিভাবে বলবো গর্ভ নিরোধক বড়ি টা খেয়ে নেন!আম্মা তো আমাকে ঘৃণা ছাড়া মনে হয় কিছু করে না আর। আম্মা আমাকে জীবনে কখনো বকে নাই অথচ কালকে লাথি মারছে থুতু মারছে,জানোয়ার বলছে।আমি যেই কাজ করছি এইগুলো আমার জন্য কম ই হয়ে গেছে।এখন গর্ভ নিরোধক বড়ি নিয়ে খেতে বললে আম্মা আমাকে আরো বেশি ঘৃণা করবে। আম্মার ঘৃণা আর বাড়ানো যাবে না। কৌশলে  বড়ি খাওয়াতে হবে,আম্মার খাবারে মিক্স করে দিলে কেমন হবে? এইটাই করতে হবে তাইলে আম্মা গর্ভধারণ ও করবে না আমার প্রতি ঘৃণাও আর বাড়বে না।৪৮ ঘন্টার আগে বড়ি টা খাওয়াই দিলেই হবে।দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে একটু দুরের ফার্মেসি তে গিয়ে একটা পিল কিনে নিলো।তারপর আম্মার প্রিয় বিড়িয়ানির দোকান থেকে বিরিয়ানি নিয়ে নিলো সাথে নিলো বোরহানি। বাসার কাছাকাছি গিয়ে বোরহানিতে পিল টা গুড়ো করে মিশিয়ে দিলো।বাসায় গিয়ে কলিংবেল চাপলো কেউ দরজা খুলতে আসলো না।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ডুকে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে দেখলো সকালের নাস্তা যেইভাবে রেখে গেছে সেইভাবেই পড়ে আছে।কিচেনে গিয়ে চেক করে দেখে আজকে মনে হয় চুলাই জ্বলে নাই।শওকত কাপা কাপা পায়ে আম্মার রুমের গেলো।দরজা ভেজানো ছিলো।শওকত আম্মা বলে ডাক দিলো ভিতর থেকে কোন জবাব আসছে না।দ্বিতীয় বার ডাক দেওয়ার পর শাহনাজ বেগম বললো তোর মতো জানোয়ারের মুখে আম্মা ডাক শুনতে চাই না।শওকত জবাবে শুধু বললো মাফ করে দেন আম্মা আমার ভুল হয়ে গেছে!  আমার ভুলের জন্য আপনি কেন না খেয়ে থাকবেন?  সকালে নাস্তা দিয়ে গেছি খান নাই। এখন বিড়িয়ানি আনছি খেয়ে নেন আম্মা। জানোয়ার আমাকে শান্তি দিতে চাইলে আমার দরজার সামনে থেকে চলে যা শাহনাজ বেগম বললো।আচ্ছা ঠিক আছে আম্মা চলে যাচ্ছি আপনি প্লিজ খাবার টা খেয়ে নিয়েন। জানোয়ারের জন্য আপনি কেন না খেয়ে থাকবেন। এই বলে শওকত নিজের রুমে চলে গেলো।   শাহনাজ বেগম গতকাল থেকে এখনো কিছু মুখে নেয়নি একটু পানিও না।সারাক্ষণ চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝড়ছে এতবড় পাপ তার মাধ্যমে কিভাবে হলো।আ*** কি তার এই পাপ মাফ করবে! সারাক্ষণ মনে মনে তওবা করে যাচ্ছে তার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য। এভাবে কি প্রায়শ্চিত্ত হবে?  ধর্মে তো জিনার শাস্তি রজব,একশোটা অথবা আশি টা বেত্রঘাত। সে কি ধর্মের শাস্তি মেনে নিয়ে নিজেকে পাপমুক্ত করে নিবে? কিন্তু ওসমান মুন্সী এসব জানলে তো তাকে তালাক দিয়ে দিবে।তাহলে কিভাবে পাপমোচন হবে? কাউকে না জানিয়ে গোপনে আ*** কাছে তওবা করলে কি আ*** মাফ করবে! খাস দিলে তওবা করলে নিশ্চয়ই আ**** মাফ করবে।আমিতো গতকাল থেকে খাস দলেই তওবা করছি। সন্ধ্যায় শওকত মুন্সী রুম থেকে বের হয়ে দেখে যেইভাবে আম্মার রুমের সামনে খাবার রেখে গেছে সেইভাবেই খাবার পরে আছে। শওকত আম্মার রাগের পরিমান বুঝতে পেরে চুপি চুপি বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।বাইরে কিছুক্ষণ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে হোটেল থেকেই রাতের খাবার খেয়,আম্মার জন্য একটা পার্সেল নিয়ে বাসায় ফিরলো।আম্মার রুমের সামনে খাবার রেখে, আম্মা রাতের খাবার রেখে গেলাম ইচ্ছা হলে খেয়ে নিয়েন এই বলে নিজের রুমে চলে গেলো। এইভাবে দুইদিন কেটে গেলো,দুইদিনে শাহনাজ বেগম একটা দানাও মুখে নেয়নি।তৃতীয় দিন সকালে ফজরের **** আদায় করার পরে শাহনাজ বেগমের মনটা একটু হালকা লাগতেছে।রান্নাঘরে গিয়ে রুটি,আলুভাজি আর ডিম ভেজে ডাইনিং টেবিলে নিয়ে বসে খেতে লাগলো।নাস্তা শেষ করে অবশিষ্ট নাস্তা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে শাহনাজ বেগম রুমে চলে গেলো।শওকত রুমে থাকতেই রান্নাঘরে টুংটাং আওয়াজ পেয়েছে,ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে নিজের জন্য খাবার দেখে শওকতের চোখে পানি চলে আসলো।মা তো মা ই যত অন্যায় ই করুক না কেন মায়েরা সন্তানকে একা রেখে নিজে খেতে পারে না।মুখে মুখে যত জানোয়ার, মুখ দেখতে চাই না বলে অন্তরে কিন্তু ঠিকই মমতা থাকে সন্তানের জন্য।শওকত নাস্তা সেড়ে আম্মার রুমের সামনে গিয়ে বলে আম্মা আমি বেরচ্ছি বলে মাদরাসার উদ্দেশ্য বের হয়ে গেলো। শওকত মাদরাসায় আসার কিছুক্ষন পর ওসমান মুন্সী সফর থেকে মাদরাসায় ফিরে খাদেমের মাধ্যমে শওকত কে ডেকে পাঠালো। খাদেম যখন এসে বললো বড় হুজুর আপনাকে দেখা করতে বলছে তখন শওকত এর হার্ট ফেল হওয়ার উপক্রম হলো ভয়ে,নিজেকে কোনমতে সামলে খাদেম কে বললো আচ্ছা যাচ্ছি একটু পরে।শওকত মনে মনে ভাবতে লাগলো আম্মা কি আমার কুকীর্তির ব্যাপারে আব্বাকে বলে দিছে? আব্বা জিজ্ঞাসা করলে কি বলবো?আম্মা কি নিজের ব্যাপারেও বলে দিছে,আমি নিজ থেকে আম্মার ব্যাপারে কিছু বলবো না।আম্মা যদি পুরো ঘটনা না বলে তাইলে আমি সব দোষ নিজের কাধে নিয়ে নেবো।আম্মাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ দিবো না।এসব ভেবে কাপা কাপা পায়ে শওকত ওসমান মুন্সীর রুমের সামনে গিয়ে সালাম দিয়ে, আব্বা আসবো? সালামের জবাব দিয়ে আয়। শওকত রুমে প্রবেশ করার পর ওসমান মুন্সী শওকতের দিকে তাকিয়ে বললো দুপুরে আমি বাসায় যাবো, তুই বাসায় থাকিস। তোর আম্মাকে বলে দিস ফোন করে আমার যাওয়ার কথা। শওকত জ্বি বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।  শওকত কি করবে ভেবে পাচ্ছে না, কি জবাব দিবে আব্বার কাছে! শওকতের শরীর থেকে অনবরত ঘাম বের হতে লাগলো টেনশনে। নিজের মক্তবে গিয়ে ফ্যানের নিচে বসার পরেও ঘামানো বন্ধ হচ্ছে না।শওকত আম্মার নাম্বারে ফোন দিলো।ফোন একবার রিং হওয়ার পর বিজি দেখাচ্ছে তারমানে আম্মা ফোন কেটে দিলো।নিশ্চয়ই আম্মা আব্বার কাছে আমার ব্যাপারে বিচার দিয়েছে।শওকত মনে মনে নিজেকে সাহস দেওয়ার জন্য বলে যা হয় হোক কি আর করবে।এভাবেই যোহরের ওয়াক্ত হয়ে গেলো শওকত মসজিদে **** পড়ে বাসার উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলো।ওসমান মুন্সী মসজিদ থেকে মাদরাসার নিজের রুমে গেলো।রুমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে সজল খাবার নিয়ে আসলো দুইজন একসাথে খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পরে ওসমান মুন্সী বাড়ির উদ্দেশ্য বের হলো।বাড়িতে পৌছে কলিংবেল বাজালো। শওকত এসে দরজা খুলে দিলো। শওকতের কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে আব্বাকে দেখে।ওসমান মুন্সী ঘরে ঢুকেই বললো তোমার আম্মাকে ডাক।ওসমান মুন্সীর গলার আওয়াজ পেয়ে শাহনাজ বেগমের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে মনে হচ্ছে।শাহনাজ বেগমের অবস্থাও শওকতের মতই হলো।হঠাৎ ওসমান মুন্সী বাসায় কেন এসেছে? আমার কুকীর্তি কি তাইলে ওসমান মুন্সী জেনে গেছে?  আমি এখন কি করবো,আমাকে কি তালাক দিয়ে দিবে? এসব ভাবতেছে তখন শওকত দরজার বাইরে থেকে বললো আম্মা আব্বা আপনাকে ডাকতেছে।শাহনাজ বেগম ভয়ে কাচুমাচু হয়ে রুম থেকে বের হয়ে দেখলো ওসমান মুন্সী ড্রয়িংরুমে বসে আছে।শাহনাজ বেগম কে আসতে দেখে ওসমান মুন্সী চা করতে বললো।শাহনাজ বেগম চা বানাতে চলে গেলো।শওকত কে ডেকে অপর পাশের সোফায় বসতে বললো।ওসমান মুন্সী, শওকত দুইজনেই চুপ করে বসে আছে। শাহনাজ বেগম চা করে এনে ওসমান মুন্সী আর শওকত কে দিলো নিজের টা ট্রে তে রেখেই দাড়িয়ে রইলো ওসমান মুন্সী শাহনাজ বেগম কে বসতে বললো।তিনজন ই বসে আছে শুধু ওসমান মুন্সী ই চায়ে চুমুক দিচ্ছে বাকি দুইজন মাথা নিচু করে বসে আছে।ওসমান মুন্সী চায়ে চুমুক দিয়ে নিরবতা ভেংগে বললো আমি আসলে আজকে বাসায় এসেছি একটা সিদ্ধান্ত নিতে।ভাবলাম তোদের ও জানিয়ে দেই।ওসমান মুন্সীর কথা শুনে দুইজনের ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। আসলে আমি সিদ্ধান্ত নিছি আমাদের এডিশনাল আইজিপি হাবিব সাহেবের ছেলে আমাদের মাদ্রাসায় পড়ে, ছেলেটার আচার-আচরণ ভালো, ফ্যামিলিও উচ্চবংশীয় ।ছেলেটার সাথে আমাদের বুশরাকে বিয়ে দেওয়ার মনস্থির করেছি।  ওসমান মুন্সীর কথা শুনে মা ছেলের দুইজনের বুক থেকে মনে হলো একটা পাথর নেমে গেলো,দুইজনেই স্বস্তির নিশ্বাস নিলো। আপনি যা করবেন আমাদের ভালোর জন্যই করবেন এতে আমাদের কোনো দ্বিমত নাই। শওকত চুপচাপ বসে চায়ে চুমুক দিতে লাগলো। চা শেষ করে ওসমান মুন্সী উঠে বললো মাদ্রাসায় যেতে হবে, সফরের উদ্দেশ্য বের হতে হবে। দেরি করে রওয়ানা দিলে ওয়াদা মোতাবেক পোগ্রামে গিয়ে পৌছাইতে পারবো না।এই বলে ওসমান মুন্সী বাসা থেকে বের হয়ে গেলো। শওকত ও ওসমান মুন্সী বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর বের হয়ে গেলো।শাহনাজ বেগম বিষন্ন মনে বসে বসে ভাবতে লাগলো এত ছোট মেয়ে বিয়ে দিলে সংসার করতে পারবে?কতটুকুই বা বয়স হয়েছে মেয়েটার!এই বয়সে সংসার সামলাতে পারবে তো? ওসমান মুন্সীর মুখের ওপর না ও তো বলতে পারবো না।  এইসব ভেবে শাহনাজ বেগমের মন আরো খারাপ হয়ে গেলো। শওকত বাসা থেকে বের হয়ে এদিক সেদিক সময় কাটিয়ে মাগরিবের পর রহমান ভাইয়ের হোটেলে চলে গেলো।রহমান ভাইয়ের হোটেল দেশী মাছের জন্য বিখ্যাত। শওকত হোটেলে গিয়ে ডিমওয়ালা টেংরা মাছ ভুনা আর চিংড়ি মাছ ভুনা নিলো, আম্মার প্রিয় মাছ এইগুলো। দুপুরে শুধু ডাল ভর্তা দিয়ে ভাত খেতে শওকতের ভালো লাগে নি এইজন্য আম্মার প্রিয় মাছের তরকারি নিয়ে নিলো।হোটেল থেকে বেরিয়ে শওকত বাসায় চলে আসলো।বাসায় এসে খাবার টা ডাইনিং টেবিলে রেখে  ড্রয়িং রুমে বসে পড়লো।আম্মা এশার নামাজের পর রুম থেকে বের হয়ে শওকত কে ড্রয়িং রুমে বসা দেখে একটু থেমে কিছু একটা ভেবে আবার হাটা ধরে কিচেনে চলে গেলো।কিচেন থেকে খাবার এনে ডাইনিং টেবিলে রেখে নিজের জন্য খাবার প্লেটে নিয়ে খাওয়া শুরু করে।শওকত আম্মাকে খেতে বসতে দেখে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বাটি নিয়ে মাছগুলো আম্মার সামনে বেড়ে দিলো।শাহনাজ বেগম মাছের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না ডাল,ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে যাচ্ছে।শওকত চামিচ এ করে টেংরা মাছ ভুনা শাহনাজ বেগমের প্লেটে তুলে দিলো।শাহনাজ বেগম প্লেট সরিয়ে নিতে গিয়েও সরাতে পারলো না। আম্মা মাছ দিয়ে খান,টেংরা মাছ তো আপনার খুব পছন্দের।  শাহনাজ বেগম মনে মনে ভাবলো খাবারের সাথে রাগ করলে পাপ হবে,প্লেটে না নিলে না খেলেও কিছু হতো না কিন্তু এখন না খেলে পাপ হবে।আর প্রিয় মাছ খাওয়ার লোভ তো আছেই সাথে,তাই শাহনাজ বেগম চুপচাপ মাছ দিয়ে খেতে লাগলো।আম্মাকে মাছ খেতে দেখে শওকত খুশি হলো।শওকত এবার চিংড়ি মাছও প্লেটে তুলে দিলো শাহনাজ বেগম চুপচাপ খেয়ে নিলো।খাওয়া শেষ করে প্লেট ধুয়ে শাহনাজ বেগম নিজের রুমে চলে গেলো।শওকত ও মনের আনন্দে প্লেটে খাবার নিয়ে খেতে লাগলো।শওকত খাবার খেয়ে প্লেট ধুয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। এইভাবে করেই শাহনাজ বেগম আর শওকতের সময় চলে যাচ্ছে। শাহনাজ বেগম শওকতের সাথে কোনো কথা বলছে না কিন্তু শওকত সুযোগ পেলেই আম্মাকে খুশি করার চেষ্টা করে,আম্মার কাছে বারবার মাফ চায় তার ভুলের জন্য।শাহনাজ বেগমের পিরিয়ডের টাইম ওভার হয়েছে আজকে  আট দিনের মত। শাহনাজ বেগমের মাঝে মাঝেই পিরিয়ড দুই এক মাসের জন্য অফ থাকে তারপর আবার শুরু হয়।তাই শাহনাজ বেগম বিষয় টাকে তেমন গুরুত্ব দিলো না।
Parent