গোধূলি আলো'র গল্পগুচ্ছ - অধ্যায় ৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-62343-post-5599034.html#pid5599034

🕰️ Posted on May 15, 2024 by ✍️ Godhuli Alo (Profile)

🏷️ Tags:
📖 475 words / 2 min read

Parent
ননাশ বাঘিনীর মতো আমার সামনে তেড়ে এসে বলল, আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম। প্রায়‌ই ঘুম থেকে উঠে তোর ঘরের ভেতর থেকে এমন সব শব্দ পেতাম যা স্বাভাবিক মনে হতো না। বিষয়টা বোঝার জন্য একদিন বিপুলকে ডাকতে গিয়ে দেখি ওর ঘরের দরজা বাইরে থেকে লক করা। সারা বাড়ি খুঁজেও পাই নি ওকে। তখন‌ই সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু একেবারে হাতেনাতে ধরতে চেয়েছিলাম তাই এতো দিন চুপ ছিলাম। কিন্তু আর তো চুপ থাকা যায় না। সকালটা হোক শুধু। ভাইকে ফোন দিয়ে সব বলবো তারপর সে এসেই ব্যবস্থা নেবে। ভাইটা আমার আজ এখানে তো কাল ওখানে ছুটে খেটে মরছে আর তোরা তার‌ই টাকায় আয়েশ করছিস আবার তাকেই ঠকাচ্ছিস! ছিঃ ছিঃ ছিঃ স্বামী কাছে না থাকায় শরীরে যদি জ্বালা ওঠে তাহলে অন্য কোনো মরদ পেলি না? শেষকালে কিনা নিজের পেটের ছেলের সাথে! নরকেও যে তোদের জায়গা হবে না। কথা শেষ করে মুখ ঝামটা দিয়েই সে চলে গেলো। আর আমি নিঃশব্দে কান্না করতে লাগলাম। কোনো অনুভূতিই কাজ করছিল না। বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। অনেকক্ষণ এভাবে কেটে গেলো। তারপর দরজাটা লক করে নিঃশব্দে খাটে এসে বসলাম। কাল কি হতে পারে বা না পারে ভাবতেই গা শিউরে উঠছিল। এমন সময় ফোনে বিপুলের একটা টেক্সট পেলাম। "এখনো কি আর দ্বিধা করবে বাড়ি ছাড়তে? বাবা কাল এসে আমাদের কি আর আস্ত রাখবে? শিগগির কাপড় চোপড়, টাকা পয়সা, গহনাগাটি যা আছে গুছিয়ে নাও। ভোর হবার আগেই আমরা এখান থেকে চলে যাবো।" আমি চমকে উঠলাম। রিপ্লে দিয়ে বললাম, "সেটা কিভাবে সম্ভব? শুধু তুমি আর আমি হলে একটা কথা ছিল। কিন্তু আমার কোলের দুটো বাচ্চা নিয়ে অজানার পথে কিভাবে পাড়ি জমাই?" তার রিপ্লে এলো, "দুটোকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না তাই শুধু আমাদেরটাকে নেবো। বিভানকে ফুপি আর বিদিশাই মানুষ করতে পারবে।" আমি লিখলাম, "মা হয়ে কিভাবে ওকে আমি ফেলে যাবো?" জবাব পেলাম, "এখন ইমোশনাল হবার সময় না। ভীষণ বিপদ সামনে। এই বিপদ পার করে একবার বাইরের জগতে থিতু হয়ে গেলে পরে বিভান, বিদিশা সবাইকে ফেরত পাওয়া যাবে।" ভেবে দেখলাম, ঠিক‌ই বলেছে সে। এখন আপাতত এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়াটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। আর কিছু চিন্তা না করে সবকিছু গুছিয়ে নিলাম। ভোর হবার আগেই ঘুমন্ত বিভানকে একটা চুমু দিয়ে, ছোটটাকে কোলে নিয়ে বিপুলের হাত ধরে বাড়ি ছাড়লাম আমি। আমরা উঠলাম বিপুলের বন্ধুর এক রুমের একটা ঘরে। বন্ধুটির বাড়ি চট্রগ্রামে। এখানে এই রুমটি ভাড়া নিয়ে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিপুল তার বন্ধুটিকে খুব অনুনয়ের সুরে বলল, দোস্ত ব্যাপক ঝামেলায় পড়েছি। পরকীয়া করে ধরা পড়ে গেছি। এখন আমার আর তোর ভাবির একটা ব্যবস্থা তোকে করে দিতেই হবে। আমাদের দুজনেরই আর পরিবার বলতে কিছু নেই। সব শুনে বন্ধুটি বলল, ঠিক আছে। তোরা আজ সকালের বাসেই চট্রগ্রাম চলে যা। সেখানে আমার চাচার নিজস্ব হোটেল আছে। একটা না একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারবে। আমি তার ঠিকানা লিখে দিচ্ছি তোকে। আর আমার চাচাকেও ফোন করে বলে দিচ্ছি। শুনে আমি আর বিপুল যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। সেই লোকের ঠিকানা নিয়ে জলদি স্টেশনের উদ্দেশ্যে র‌ওনা হলাম। তারপর বাসে উঠে ছেলেকে কোলে নিয়ে আর তার বাবার কাঁধে মাথা রেখে আমি নতুন গন্তব্যের পথে ছুটলাম।
Parent