গোধূলি আলো'র গল্পগুচ্ছ - অধ্যায় ৯৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-62343-post-6009969.html#pid6009969

🕰️ Posted on August 15, 2025 by ✍️ Godhuli Alo (Profile)

🏷️ Tags:
📖 742 words / 3 min read

Parent
পীরের কথা শুনে আমরা সবাই এতো অবাক হয়ে গেলাম যে, কিছু সময় কেউ কোনো কথাই বলতে পারলাম না। তারপর আমি উত্তেজনায় দিগ্বিদিক হয়ে আমার বোনের স্বামীর দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলাম, কোথা থেকে ধরে এনেছেন এসব ভন্ড পীর আউলিয়া? কীসব যা তা বলছে দেখুন! আমার দুলাভাই চুপ করে র‌ইলেন। পীর সাহেব‌ও নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে চুপ করে র‌ইলেন। তখন মুখ খুললেন আমার বাবা। তিনি বললেন, শান্ত হ‌ও সুমন। পীর সাহেব, আপনি সম্মানিত মানুষ। এতো কষ্ট করে আমার বাড়িতে এসেছেন বলে আমরা ধন্য। কিন্তু এখন আপনি আসতে পারেন। এমন সব অপমানের পরেও পীর সাহেবের মুখের শান্ত, সৌম্য ভাবটা কিন্তু দূর হলো না। তিনি হাসিমুখে বললেন, ঠিক আছে। উঠছি তাহলে। বলেই তিনি উঠবার জন্য প্রস্তুতি নিলেন। তখন আমার দুলাভাই মরিয়া হয়ে উঠলেন। যতো যাই হোক তিনি নিজে পীর সাহেবকে ডেকে এনেছেন। তার এভাবে অপমানিত হয়ে চলে যাওয়াটা তিনি মানতে পারলেন না। বললেন, যেতে যদি হয় পরে যাবেন। এভাবে মুখে একটু পানি না দিয়েও চলে যাওয়াটা খুব খারাপ দেখায় পীর সাহেব। পীর সাহেব তেমনি হাসিমুখে বললেন, এখানে যা হয়ে গেলো তারপর এখানকার জলপানি আমার মুখে উঠবে না। কিন্তু জেনে রেখো, আমার পরামর্শকে যতোই অবজ্ঞা করো না কেনো, এটাই তোমার শ্বাশুড়ির আরোগ্য লাভের একমাত্র পথ। তোমার শ্বশুর সারা জীবনে অনেক মেয়ে লোকের সাথে সঙ্গম করেছেন কিন্তু তোমার শ্বাশুড়ি সারা জীবনে স্বামী ছাড়া আর কারো সাথে সহবাস করেন নি। এই অসামঞ্জস্যতা দূর করবার জন্য‌ই তোমার শ্বাশুড়ির এই রোগ হয়েছে। নিজের পুত্রের সাথে বৈবাহিক জীবন যাপন ছাড়া এর থেকে উত্তরণের আর পথ নেই। সেটা হয়তো তোমরা নিজেরাও এক সময় টের পাবে। তখন আবার স্মরণ কোরো আমাকে। সেদিন এই অপমানের কথা আমি মনে রাখবো না। আবার আসবো। বলেই তিনি বেরিয়ে গেলেন। আমি ঘৃনায় নাক, মুখ কুঁচকে বললাম, কোথা থেকে যে এমন সব পাগল ছাগল ধরে আনেন ভাই? এসব কবিরাজ, পীরের ধান্ধা এবার বন্ধ করুন। ডাক্তারি ট্রিটমেন্টেই আবার ফিরে যাওয়া যাক। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। মায়ের শরীর দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছিল। কী থেকে কী করা উচিত কেউই ভেবে পাচ্ছিলাম না। তখন এক রাতে আমার বাবা একটি স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলাপ করতে তিনি আমার বড় বোন আর ভাইকে ডাকেন। স্বপ্নে নাকি আমার বাবার শ্বাশুড়ি মানে আমার মায়ের মা যিনি অনেক আগেই গত হয়েছেন তিনি দেখা দিয়ে বলেছেন, পীরের কথা মেনে নিতে। এতেই নাকি মায়ের রোগমুক্তি ঘটবে। তিনি সকাতরে নিজের মেয়ে জামাইকে অনুরোধ করেছেন জলদি তার মেয়ের জীবন বাঁচানোর ব্যবস্থা করতে। সব শুনে আমার বড় ভাইবোনের মুখ শুকিয়ে গেলো। আমার বাবা তখন বিড়বিড় করে বলতে থাকলেন, ঐ পীর ছাড়া যে যা বলেছে সব তো করেছি কিন্তু কোনো লাভ হয় নি। এখন কী করতে পারি? এভাবে তো তোমাদের মাকে ধুঁকে ধুঁকে চলে যেতে দিতে পারি না পৃথিবী থেকে। আমার ভাই মুখ গম্ভীর করে বলল, কিন্তু বাবা, পীর যা বলেছে তা কীভাবে সম্ভব? পরিবারের কথা বাদ‌ই দিলাম। সমাজ বিষয়টিকে কীভাবে মেনে নেবে? আমার বোন এবার বলল, পরিবার, সমাজ এসব কিছুই মায়ের জীবনের চেয়ে বড় নয়। আমার মনে হয় সেই পীরকে আবার একবার ডাকা উচিত। তিনিই বলে দেবেন কীভাবে কী করতে হবে। ভাই বলল, এতো কিছুর পর সে কি আর আসবে? বাবা বললেন, তিনি তো বলেই গিয়েছিলেন যে আবার ডাকা হলে তিনি স্বচ্ছন্দে আসবেন। একবার ডাকাই যাক না। পীর সাহেবকে এবার আগের চেয়েও বেশি হাসিখুশি মনে হলো। আমাদের পরিবারের সবার পরাজয় আর তার নিজের জয় হয়েছে বলেই হয়তো। কিন্তু মুখে তিনি তেমন কিছুই প্রকাশ করলেন না। হাসিমুখে বললেন, সমাজের কাছে এসব প্রকাশ করার দরকার নেই। এমনকি আত্মীয়দের কাছেও না। শুধু পরিবারের গন্ডির ভেতরেই থাকবে বিষয়টি। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ের কাজটা সেরে ফেলাই মঙ্গল। তিনি নিজেই বিয়ে দিয়ে যাবেন। বাইরের কেউ জানতেও পারবে না। বাবা বললেন, কিন্তু বিয়ের পর আমার স্ত্রী আর ছেলে যদি স্বামী-স্ত্রী হয়ে যায় তাহলে আমার অবস্থানটা কী হবে? পীর বললেন, আপনি ছেলের বাবা এবং আপনার স্ত্রী হবে আপনার বৌমা। সেই হিসেবে আপনি তখন ছেলের বৌকে স্পর্শ‌ও করতে পারবেন না। বাবা শিউরে উঠে বললেন, এটা কীভাবে আমি মেনে নেবো? পীর বললেন, স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে এই কোরবানি আপনাকে দিতেই হবে। বাবা কিছু সময় চুপ থেকে বললেন, ঠিক আছে। কিন্তু আমার তো দুই ছেলে। কোন্ জনের সাথে বিয়ে দেবো? পীর বললেন, একজন যেহেতু বিবাহিত তাই ছোটজনের সাথেই দিতে হবে। তার কথা শুনেই আমি চমকে উঠলাম। কিন্তু আগের বারের মতো চিৎকার চেঁচামেচির কথা ভাবতেও পারলাম না কারণ বাবা আগেই নিষেধ করে রেখেছেন। বাবা বললেন, কিন্তু ও তো স্টুডেন্ট। ওর পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটবে না? পীর বললেন, এতো বড় বড় বিষয়কে মেনে নিয়ে ওসব ছোটখাটো বিষয়কে বড় করে তুললে তো চলবে না। পড়ায় মন থাকলে সব অবস্থাতেই চালিয়ে নেয়া যাবে। আমি আর স‌ইতে পারলাম না। সোজা ড্র‌ইংরুম ছেড়ে নিজের ঘরে গেলাম। রাগে গায়ে আগুন জ্বলছিল আমার। মাকে মা ছাড়া অন্যকিছুর কথা আমি ভাবতেও পারি না। সেখানে তাকে নাকি আমার বিয়ে করতে হবে! কী অদ্ভুত কান্ড!
Parent