❤️গল্পের খাতা❤️ ﴾ ইচ্ছে পূরণ- সমাপ্ত ﴿ - অধ্যায় ১০
ইচ্ছে পূরণ
ইনসেস্ট, অলৌকিক, এন্ড মেইবি অল্পস্বল্প কমেডি
অভয়চরণ রেলের স্টেশন মাস্টার: লম্বায় সে পাঁচ ফুট দশ। দেখতে নিতান্তই অসাধারণ না হলেও গৌড় বর্ণের সুস্থ সবল যুবক, তবে সে অতি নরম সরম স্বভাবের। বয়স ২৬ হলেও এখনোও মায়ের আদুরে ছেলে। বিবাহিত, কিন্তু স্ত্রীর স্বভাবের প্রতি বিরক্ত ও মায়ের স্বভাবের প্রতি মুগ্ধ।
বিজয়া ডাক্তার: শহু্রে, ক্যারিয়ার-মনস্ক, অতি সুন্দরী ও লম্বাটে গড়নের সুঠামদেহী সেক্সি পাতলা পাতলা দেহের অধিকারীণি, স্বামীর ও শাশুড়ির আচার আচরণে বিরক্ত। একটু রাগি, কিন্তু খারাপ মেয়ে নয়।
মা সুভাষিণী হাউজ ওয়াইফ: দেখতে সহজ সরল, আয়ত্ত চক্ষুর ও লম্বা কেশরাশির অধিকারীণি, দেহের রং শ্যাম বর্ণ, দেখতে মাঝিরি আয়তনের অল্প চর্বিযুক্ত রমণী।,স্বভাবে স্নেহময়ী ও ঘরের কাজে পারদর্শী গৃহিণী। তবে স্বামী ভক্ত সহজ সরল মহিলা মনে হলেও—তিনি যথেষ্ট বুদ্ধিমতী।
বাবা মঙ্গলচরণ অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক: এখন গ্রামের জমি জমা দেখভাল করছেন। বয়স ৫৫ হলেও বলিষ্ঠ দেহের গঠনেই বোধকরি তিনি এখনো সুস্থসবল যুবকদের মতোই মাঠে কাজকর্ম করেন। এছাড়া তিনি কড়া মেজাজের মানুষ। কথা কাজে গড়মিল মানেই রেগে আগুন।
///////////
অভয়চরণ নাম হলেও অভয় ভয় পেত খুব। তার মধ্যে ভূতের ভয় ছিল তার সবচেয়ে বেশি। তাই ভূতের গল্প হলে এখনো সে রাতে একা শুলে ভয়ে কাঁপে। বয়স ২৬, ও নিজের পায়ে দাড়ালেও যে এখনো মায়ের কথা মতো চলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বাবার আদেশ অমান্য সে খুব একটা করে না বললেই চলে, এমনিকি ইদানিং বউয়েও ব্যাপারেও তাই।
তার এই নরম স্বভাবের জন্যে বছর দুই আগে বাপ মঙ্গলচরণ যখন ছেলের বিয়ে ঠিক করলেন, তার বাল্যকালের বন্ধুর মেয়ের সাথে। তখন ছেলের অমতের কোন কারণ দেখা যায়নি। এমনকি দুই পরিবারের কোন চাওয়া পাওয়াও ছিল না। তাছাড়া ছোটবেলা থেকেই এই বিয়ে ঠিক ছিল। তাই বন্ধুর শহুরে মেয়েকে ছেলের বউ করে গ্রামে আনতেও মঙ্গলচরণের আপত্তি হয়নি। সুতরাং শুভ বিবাহ হয়েছিল অতি শুভক্ষণেই,এতে কোন বাঁধা আসেনি।
কিন্তু সমস্যা এল অন্য দিক দিয়ে,বা বলা যায় আর পাঁচটা মানুষের মতোই তারা নিজেদের মতো সমস্যা গুলো তৈরি করে নিলে। শহরে পড়ালেখা করার দরুন বউ বিজয়া – খানিক আধুনিকা। তাছাড়া মেজাজটাও তার একটু চড়া বটে। মানে আজকালকার মেয়েরা নিজেদের মতেই চলা বেশি পছন্দ করে কি না। সুতরাং সেও অধিকাংশ সময়েই চলতো নিজের মতে।
তাই বিয়ের পর গ্রামে এসেই বিজয়া ছ মাসের মধ্যেই গ্রামের সরকারি হাসপাতালে প্রধান ডাক্তার হিসেবে নিয়োগ হলো। পরে অবশ্য জানা গেল— মেয়ে আগেও এই কাজ করেছে বছর দুই। তবে এতেও পরিবারের কোন আপত্তি ছিল না। হাজার হোক এখন আগের যুগ গিয়েছে। তাই পুরোনো কিছু ভাবনা এখন ছেড়ে দেওয়াই ভালো। বদলে যাওয়া সমাজে মেয়েরা এখন বাইরের কাজ করলে ক্ষতি কি? বরং এতে করে পরিবারের আর্থিক উন্নতি ও সামাজিক ভাবে সম্মানিত হবার সুবিধাই বেশি। এই ছিল বুড়ো মঙ্গলচরণের ভাবনা।
তবে সমস্যা ত শুধু বিজয়ার কাজ নিয়ে নয়। আগেই বলেছি,জীবন যাত্রার হাল শক্ত করে কেউ না ধরার ফলে,সে চলে নিজের মতে। তাই বলাবাহুল্য ঝামেলায় সে জড়ায় ঘন ঘন। সেই ঝামেলার আবার নানান রূপ! এমনি এক বর্তমান গন্ডগোল এক কলেজ ছাত্রীর বাল্যবিবাহ নিয়ে। সমস্যা গুরুতর,কেন না স্বামীর মানা করা শর্তেও বিজয়া মেয়েটির বাল্যবিবাহ রোধে করে, কিন্তু তার পরদিনই মেয়েটা গ্রামের এক নেতার পাতি গুন্ডার সাথে পারিবারিক গয়নাগাটি নিয়ে উধাও! এখন ভালো করতে গিয়ে দান উল্টে গেলে যা হয় আর কি। তবে দোষ শুধু বৌমাকে দিলে চলে না। কারণ, বুড়ো মঙ্গলচরণের মতে তার ছেলে একটা অপদার্থ! মায়ের আচল তলায় থেকে থেকে হয়েছে একটা পৌরুষ হীন নিরামিষ ভীতুর ডিম!
সত্য বলতে অভয় কিন্তু গ্রামের শান্ত ছেলে। কোন রকম ঝুটঝামেলায় নিজেকে জড়াতে সে চাইতো না। লোকে বলে অভয় এখনো মায়ের আঁচল তলে দুধের গন্ধ ভুলতে পারেনি, দুধের বোঁটা মুখে ছুঁইয়ে দিলেই চুক চুক করে খেতে শুরু করবে এ বেলা। এখন এই রূপ অবস্থায় বউ যদি ঘাড়ে করে ঝামেলা বয়ে আনে,তবে অভয়চরণের মনে যে ভয়েরা নাড়াচাড়া দেবে— এটাই তো স্বাভাবিক। তবুও সব দেখে শুনে সন্ধ্যায় অভয়চরণ তার বউকে বললে,
– ঘোষ বাড়ির ব্যক্তিগত পারিবারিক ব্যপারে তুমি নাক গলাতে গেল কেন?
বউ স্বামী কথা খানিক রেগে গিয়ে কড়া স্বরে জবাব দেয়,
– নাকটা আমার একটু বড় কি না, তাই গলিয়ে খানিক ছোট করলাম। ওসব নিয়ে তোমায় ভাবতে হবে না........
খানিক বকাঝকার পর যদিও তখন আর এই বিষয়ে কথাবার্তা বেশি গড়ায়নি অভয়ের মা সুভাষিণী ঘরে আসার দরূন। কারণ বৌমা জানে তিনি সাদাসিধে গ্রাম্য গৃহিণী— এখনও ছেলের জন্য প্রাণপাত করেন। ভোরে উঠেই তুলসী জল, গাঁদা ফুলে ঠাকুর পুজো, স্বামী ও ছেলের পছন্দের লুচি-আলুরদম রান্না—সব কিছুতেই তিনি নিবেদিত প্রাণ। তাছাড়া সভাষিণীকে কখনো স্বামীর মুখের ওপড়ে কথা বলতে দেখেনি বিজয়া— উঁচু গলায় ধমক দেওয়া ত দূরের কথা। তাই শাশুড়ি ঘরে ঢুকতেই বিজয়া নিজেকে সামলে নেয়। ওদিকে সুভাষিণী ছেলে ও বউমার ঝগড়া শুনে খানিক ভীতু কন্ঠে বললেন,
– কি হয়েছে বৌমা? এত চেঁচামেচি....!
– কিছু হয়নি মা! শুধু শুধু তুমি উঠে এলে কেন?
বিজয়া তখন স্বামীকে আর কিছু না বলে শাশুড়িকে নিয়ে চলে গেল ঘরের বাইরে। তাই সুভাষিণীর কথা হলো না ছেলে সাথে। ছেলেও বউয়ের ভয়ে মাকে ডাকতেও পারলো না। কেন না বউয়ের ধমক শুনে অভয় তখন কাঁচুমাচু— মায়ের আচল ধরা ২৬ বছরের দামড়া ছেলে! বউটি তার আদর সোহাগ যতোই করুক,কড়া স্বভাবের জন্য সে প্রায়ই চুপিচুপি মন্দিরের পাশে তিনশ' বছর পুরোনো বট তলায় বসে ভাবে,“আহা, আমি যদি বাবার জায়গায় থাকতাম! তবে মায়ের মতো স্নেহময়ী অমনি একটা বউ থাকত আমার...”
সে যাই হোক, বিজয়া ঘরকন্নায় তেমন পরিপক্ক না হলেও, শাশুড়ির সাথে খারাপ কিছু কিন্তু করে না। তবে স্বামীদেব ও তার পরিবারে আচার-আচরণে সে বন্দি হয়ে থাকতেও চায় না। বিশেষ করে সবাই যখন তাকে বলে,
"রান্নাঘরে স্নান না করে ঢোকা যাবে না", "বিকেলে স্নান না করলে ঠাকুরঘরে যাওয়া বারণ", "ওটা করছো কেন?" "লোকে কি ভাববে!" "ভাত ত লক্ষ্মী, ওকি ফেলতে আছে মা..... এই ইত্যাদি ইত্যাদি। তার সাথে স্বামীর ভীতূ ভীতু ভাবটাও বিজয়ার ভাড়ি অপছন্দ। বিশেষ করে শশুড়ের কাছ থেকে উপদেশ শোনাটা বিজয়ার জন্যে একটু লজ্জারই বটে। সে গ্রামের মেয়ে নয়। চিরকাল সে শহরে কাটিয়েছে। তাই এই অবস্থায় আদর করে তাকে শেখানোর মতো শুধু শাশুড়ি ছাড়া আর কেউকে সে খুঁজে পায় না। সে স্বামীকে আরো ঘনিষ্ঠ ভাবে চায়। চায় কেউ তার পাশে দাঁড়াক। কিন্তু কাউকে সে পাশে পায় না। তবে এই নিয়ে সে স্বামীকে কথা শোনায় না । আসলে সবার ভাগে সব কি আর মেলে?
শুভর বাবা মঙ্গলচরণ এক রকম নিজের ইচ্ছাতেই অবসর নিয়েছেন। তার ধৈর্য্য কম, পুরাতন চিন্তা ভাবনায় বেশী বিশ্বাসী। বউমার ঢং তার একেবারেই সহ্য হয় না। চিরকাল স্ত্রীর কাছে দেবতা জ্ঞানে সেবা পেয়ে পেয়ে স্বভাব তার গেছে খানিক বিগড়ে। তবে বউকে সে প্রবল ভাবে ভালোবাসে। বিশেষ করে সুভাষিণীর মতো একাধারে শারীরিক ও মানসিক সুখ আর কেউ তাকে দিতে পারে— এই বিয়ষে তার ঘোরতর সন্দেহ আছে। এমন সঙ্গী লাক্ষে একটা মেলে বলে তার মনে হয় না।
তবে উনি যা ভাবেন তা কিন্তু পুরোটা সত্য নয়! আসলে সুভাষিণী অতি সুক্ষ্ম বুদ্ধির দ্বারা মঙ্গলচরণকে চালনাকরে থাকেন,যা মঙ্গলচরণ নিজেও জানেন না। তবে তাকে দোষ দেওয়া যায় না,তার মনে স্ত্রী প্রেম ও ছেলের মঙ্গল চিন্তা এতো প্রবল যে স্ত্রীর অসাধারণ গুণ গুলো তার চোখেই পরে না। তাই বৌমা যেদিন ছেলেটি কে ধমকায়, সেদিন তিনি মন্দিরের বট গাছের পাশের নিচু মাঠে বসে মনে মনে বলেন,“ছেলেটা আমার হয়েছে একটা ভেড়া, আমি ওর জায়গায় থাকলে একদিনেই শিখিয়ে দিতাম কীভাবে ঘর সামলাতে হয়! বউ নাকি স্বামীকে ধমকায়! আমার ছেলেটা হয়েছে একটা বলদ!”
এই ঘটনা একদিনের নয়। প্রায় দিন অভয়চরণ আর মঙ্গলচরণের মনে এই ভাব। এদিকে শরৎপুর গ্রামের বড় রাস্তার ঠিক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা তিন শতবর্ষী বট গাছটার গায়ে একটা লাল শালু কাপড় বাঁধা। লোকজন বলে, ওখানেই বাস ইচ্ছে ঠাকুরণের। কারও অকারণ আকাঙ্ক্ষা, কারও নিঃশব্দ দুঃখ — ঠাকুরণ সব শোনেন।
ঘটনা এখনকার নয়, সেই ১২৯৮ বঙ্গাব্দের চৈত্র মাস। কোন এক গরিব দিন-দুঃখী চাষি নাকি একদিন এই বটতলায় শুয়ে স্বপ্ন দেখে। সেদিন ছিল চৈত্রের শেষ রাত্রি। হালকা দক্ষিণা বাতাস বইছে, দূরে কোথাও ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। বট গাছের নিচে চটের বিছানায় শুয়ে নবীনচন্দ্র স্বপ্ন দেখলো।
স্বপ্নে এক বৃদ্ধা আসেন — সাদা শাড়ি, কপালে সিঁদুর, হাতে ধুপ, আর চোখে অদ্ভুত জ্যোতি। তিনি নবীনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন
— নবীন, আমি ইচ্ছে ঠাকুরণ। এই গাছের নিচে আমার বাস। যুগ যুগ ধরে আমি অপেক্ষা করছি, কেউ যেন এখানে আমার মন্দির গড়ে। তুই করবি কি?
নবীন মাথা নিচু করে, সে বেচারার নেই কিছুই,তাই মায়ের দিকে তাকিয়ে সে বলে,
— মা! আমি তো গরিব চাষি। গরুটা গতমাসেই মরেছে, বাড়িতে এক মুঠো চাল পর্যন্ত নেই যে বউটা,ছেলেটাকে খেতে দিই। আমি কী করে মন্দির গড়ি মা?
ঠাকুরণ একটু হেসে বললেন,
— ইচ্ছা থাকলেই উপায় হবে। মন থেকে শুরু কর নবীন। আমি আছি তো,ভয় কিসের?
ঘুম ভেঙে নবীন চমকে উঠল। আকাশ তখনও অন্ধকার, তবে তার মনে যেন আলো নেমেছে। পরদিন থেকে সে কাজের ফাঁকে গাছের পাশে খোলা জায়গাটার মাটি পরিষ্কার করতে শুরু করল। বাঁশ কেটে ছোট বেড়া বানাল, ধূপধুনো জ্বালিয়ে প্রার্থনা করল।এইসব দেখে গ্রামের লোকজন প্রথমে হাসাহাসি করলেও, অল্পদিনেই কৌতূহল শুরু হলো। গ্রামের বিধবা লক্ষ্মী বউ একদিন বলল,
— নবীনদা, আমি একটা নারকেল দেব। মায়ের পুজোতে লাগবে।
তখনকার সময়ে নবীন নিজেই খড় মাঠি দিয়ে একটা ছোট আসন গেঁথে ছিল। যেখানে ঠাকুরণের প্রতিমা সে নিজে কাঁচা হাতে কোন রকমে গড়ে পুজো করল শুরু। দিন যেতে থাকল। কেউ বাঁশ দিল, কেউ রঙ, কেউ বা খাটলো নিজে। আশেপাশের গ্রামের লোকজনও শুনে এল দর্শন নিতে। তখন সবাই মিলে মাটির একটা ছোট মন্দির তৈরি হলো। মায়ের দর্শনে অসুস্থ রোগী সুস্থ হয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি গেল। তাই দেখে লোক সমাগম বাড়লো তরতরিয়ে। এদিকে ঘটনা আশ্চর্য হলেও সেবার নবীনের ফসল হলো ভরপুর।গরিব দুঃখী নবীন আর গরিব রইলো না। তার মধ্যেই নবীন আবার স্বপ্ন দেখল। দেখলো হাসি হাসি মুখে ঠাকুরণ তার পাশে বসে বলছেন,
— তোর ইচ্ছা ছিল, মন খাঁটি ছিল। তাই আমি নিজের রূপে এসেছি। এই মন্দিরে মানুষের মনের সরল ইচ্ছে পূরণ হবে।
মনে যার সরল বিশ্বাস,তার ইচ্ছে পুরণ করেন ইচ্ছে ঠাকুরণ। বহু বছর ধরে এই প্রবাদ চলে আসছে গ্রামে। দিন পাল্টে গেছে অনেক, চলছে ১৪২৯। মন্দির এখন পাকা,তবে মানুষের মনের সরল বিশ্বাসে ফাটল ধরেছে অজস্র। তবে অভয়চরণ ও মঙ্গলচরণ যখন এই সব ভাবতে ভাবতে ইচ্ছে ঠাকুরণ কে স্মরণ করতো,তখন ইচ্ছে ঠাকুরণ এদের কান্ড দেখে মিটি মিটি হাসতেন। তবে রোজ রোজ একই জিনিস হচ্ছে দেখে সব ভেবে তিনি একদিন নিজের মনেই বললেন ,“যা, এবার একটুখানি মজা হোক। কেউ কেউ শুধু ভাবেই, বোঝে না অন্যের জায়গায় দাঁড়াতে কেমন লাগে।”
ব্যাস শুরু হলো নতুন কাণ্ড। ইচ্ছে ঠাকুরণের ইচ্ছে তে হলো অভয় ও মঙ্গল চরণের ইচ্ছে পূরণ। সেই রাতেই ঘটে গেল অদ্ভুত এক ঘটনা—অভয় সকালে উঠে দেখে, তার পাশেই বিছানায় শুয়ে আছে অর্ধনগ্ন মা সুভাষিণী! ক্লান্ত, ঘুমন্ত রমণী। বুকে তার কোন আবরন নেই, সেদিকে তাকিয়ে অভয়ের মনে হয় যেন দুইটি দুধেভরা কলসি কিংবা বসন্তের দুইটি পাকা শিমুল—বড়, কোমল, আর জীবনের পূর্ণতা দিয়ে ফুটে থাকা; যেন কোনো ক্ষুধার্ত শিশুর মুখের জন্য অপেক্ষমাণ এক নিঃশর্ত মায়া। দেখতে যদিও স্বর্গীয় অনুভুতির প্রাপ্তি নিশ্চিত,তবে আয়নায় চোখ পরতেই অভয়চরণের মাথা ঘুরে গেল, কেন না আয়নায় তার বাবার মুখ!
আর ওপর দিকে মঙ্গলচরণ ঘুম থেকে উঠে বলে উঠলেন—
– আরে আমার গলা কী এমন হালকা হয়ে গেছে?
বলার সাথে সাথেই হটাৎ হেঁচকা টানে তার মুখ ডুবে গেল উষ্ণ ও নগ্ন নারী দেহের ঘনিষ্ঠতায়। মুখ তুলে বৌমাকে দেখেই মঙ্গলচরণ একরকম লাফিয়ে নামলেন মেঝেতে। কিন্তু তিনি কিছু বলার আগেই বিজয়া বললে,
– কি হলো অভয়! তুমি হঠাৎ ওমন লাফিয়ে উঠলো কেন?
আমার আসলে তেমন কিছুই বলার নেই,গল্পটার আইডিয়া গুরুদেবর একটি ছোট গল্প থেকে নেওয়া।,আর দেখি কী হয়,তবে গল্প তেমন বড় নয় মোটেও। ধন্যবাদ