গ্রামের অসহ্য বুড়া মেহমান রতন - অধ্যায় ২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-70622-post-6046418.html#pid6046418

🕰️ Posted on September 30, 2025 by ✍️ Mr. X2002 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 660 words / 3 min read

Parent
পর্ব ৩ ঢাকার ফ্ল্যাটে রাত নামল ধীরে ধীরে। বাইরে শহরের আলো ঝলমল, কিন্তু ভেতরে খানিকটা টানটান নীরবতা। ডাইনিং টেবিলে রেহানা, রতন আর সিয়াম তিনজন বসে ডিনার করছে। ভাত, মাছের ঝোল, একটু ভর্তা—সবকিছু সাজানো। কিন্তু আসন খালি একটাই—আয়েশার। আজ কেউ তাকে ডাকেনি। রেহানা মনে মনে রাগে গুমরে আছেন, “একজন অতিথি সামনে এসে দরজা বন্ধ করে বসে থাকা! এ আবার কী শিষ্টাচার?” সিয়ামও নীরব। একটু পরে রতন চামচ নামিয়ে সিয়ামের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল— —“কি রে বাবা, তোর বউ কই? খাইতে বসল না নাকি?” সিয়াম গম্ভীর স্বরে উত্তর দিল, —“ওর একটু অভিমান হয়েছে কাকা। খেতে চাইলে নিজেই আসবে।” রতন মাথা নাড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল, —“আরে মাইয়া মানুষ। রাগ-অভিমান থাকবেই। তুই ডাক না।” রেহানা দ্রুত জবাব দিলেন, —“না রে রতন, আজ ডাকব না। শিখতে হবে ওকে। অতিথির সামনে এমন ব্যবহার ভালো লাগে না।” পরিস্থিতি যেন আরও ভারী হয়ে উঠল। এরপর আর কোনো কথা হয়নি। সবাই নীরবতায় খাওয়া শেষ করল। খাওয়া-দাওয়ার পর রতনকে ফ্ল্যাটের একটি আলাদা ঘরে বিছানা করে দেওয়া হলো। তিনি ধীরে ধীরে শুয়ে পড়লেন। সিয়ামও শুভরাত্রি বলে নিজের রুমের দিকে এগোল। --- শোবার ঘরে ঢুকতেই সিয়াম দেখল, আয়েশা খাটে বসে আছে, চোখে স্পষ্ট অভিমান। সাজানো মুখটায় ক্লান্তি মেশানো। সিয়াম গম্ভীর হয়ে বলল— —“চলো, খেয়ে আসো।” আয়েশা মুখ ঘুরিয়ে ঠাণ্ডা গলায় উত্তর দিল, —“খিদে নেই।” সিয়াম বিরক্ত হয়ে বলল— —“সবাই খাচ্ছে, তুমি রাগ করে বসে আছো। অতিথির সামনে এরকম করা ঠিক হয়েছে?” আয়েশা চোখ রাঙিয়ে দিল, —“তুমি আমার কথা ভাবলে? এতক্ষণ ধরে আমি রেডি হয়ে বসেছিলাম। একটা কথাও বললে না আমাকে, শুধু কাকার কথাই ভাবলে।” সিয়াম গলার স্বর উঁচু করল, —“কাকা কত বছর পর এসেছে! তার জন্য একটা দিন বাদ দিলে কী এমন হতো?” আয়েশা পাল্টা বলল, —“তোমার কাছে আমি নাকি কিছুই না? সবকিছুর আগে শুধু কাকা কাকা!” কথার ঝাঁজ বাড়তেই লাগল। দুজনের স্বর ধীরে ধীরে নরম হলো না, বরং আরও ঠাণ্ডা হয়ে গেল। প্রথমবারের মতো এভাবে তর্ক হলো তাদের মধ্যে। শেষে দুজনই ক্লান্ত হয়ে পড়ল। সিয়াম চুপ করে গায়ে কম্বল টেনে নিল। আয়েশাও আর কিছু না বলে মুখ ঘুরিয়ে খাটের বিপরীত পাশে শুয়ে পড়ল। ঘরের ভেতর অন্ধকারে শুধু দুটো নিঃশ্বাসের শব্দ ভেসে এলো—কিন্তু তাদের মধ্যে দূরত্বটা সেই রাতে সবচেয়ে বেশি হয়ে গেল। পর্ব ৪ মধ্যরাত। ফ্ল্যাটের সব আলো নিভে গেছে, শুধু করিডরের এক কোণে হালকা নীল আলো টিমটিম করছে। সিয়াম গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে। কিন্তু আয়েশার চোখে ঘুম নেই। বালিশ ভিজে গেছে অশ্রুতে, বুক ভরা অভিমান আর অনাহারের যন্ত্রণা তাকে নিঃশব্দে কাঁদিয়েছে। আয়েশা ছোটবেলা থেকেই জানে—রাগ করে খাওয়া না মানে আসলে নিজের কষ্ট ডেকে আনা। বাবার বাসায় যখন ঝগড়া হতো, তখনও সে অনেক সময় না খেয়ে থাকত, পরে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে চুপিচুপি রান্নাঘরে ঢুকে কিছু খেত। আজও যেন সেই অভ্যাসটাই ফিরে এলো। খুব আস্তে বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলল সে। অন্ধকার করিডর পেরিয়ে রান্নাঘরে ঢুকল। রান্নাঘর নীরব, কেবল ফ্রিজের ভোঁ ভোঁ শব্দ শোনা যায়। আলমারি খুলে একটা বিস্কুটের প্যাকেট হাতে নিল আয়েশা। ভেতরে যেন ক্ষুধার আগুন জ্বলে উঠেছে। ঠিক সেই মুহূর্তেই পায়ের শব্দ। দরজার ফাঁক গলে ভেতরে ঢুকল রতন। লম্বা কালো দেহটা ছায়ার মধ্যে আরও গাঢ় হয়ে উঠল। —“আরে মা, তুমি?” আয়েশা চমকে তাকাল, চোখে লালচে অভিমান। উত্তর না দিয়ে শুধু বিস্কুট মুখে দিল। রতন মুচকি হেসে বলল, —“খালি বিস্কুট খাইতেছো? এগুলোতে কেমনে পেট ভরবে?” আয়েশা কিছু বলে না। শুধু বিস্কুট চিবোয়। আর ত্যাড়া ভাবে চেয়ে থাকে। কতক্ষণ পর আয়েশার বুকের দিকে তাকিয়ে রতন আবার বলে- “আমার ত দুধ দিয়ে বিস্কুট খাওয়ার বড় শখ। তোমাদের শহরের দুধও বড্ড মিষ্টি লাগে। গ্রামের দুধ সব খাওয়া শেষ।” আয়েশা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল তার দিকে। স্বরটা ঠাণ্ডা কিন্তু কড়া— —“আপনার শখ আপনার কাছে রাখুন কাকা। আমার খিদে মেটাতে এতেই হবে।” রতন হেসে মাথা নেড়ে আরেকটু কাছে এসে বলল, —“তুমি মেটাতে পারো আমার ক্ষুধা।” আয়েশা অস্বস্তি আর রেগে- “ কিভাবে? কি বলতে চান আপনি।” - আরে তুমি দুধ গরম করে দাও না, আমি বিস্কুট দিয়ে খাই। - আমার এখন দায় না, মধ্যরাতে আপনার জন্য আমি এটা করব। আয়েশা আর কোনো জবাব দিল না। চোখ সরু করে তাকিয়ে হাতের বিস্কুট শেষ করল, তারপর প্যাকেটটা টেবিলে ছুঁড়ে রেখে দ্রুত বেরিয়ে গেল রান্নাঘর থেকে। রতন সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল। ঠোঁটে অদ্ভুত এক হাসি, যেন মজা পাচ্ছে এই পরিস্থিতিতে। রান্নাঘরের নীরবতা আবারও ফিরে এলো, কিন্তু সেই নীরবতায় রয়ে গেল এক অদ্ভুত উত্তেজনার ছাপ।
Parent