গ্রামের অসহ্য বুড়া মেহমান রতন - অধ্যায় ৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-70622-post-6046427.html#pid6046427

🕰️ Posted on September 30, 2025 by ✍️ Mr. X2002 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1110 words / 5 min read

Parent
পর্ব ৫ পরদিন সকাল ঢাকা শহরের সকালের আলো জানালা বেয়ে ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। রান্নাঘর থেকে ভেসে আসছে পরোটা ভাজার ঘ্রাণ, সঙ্গে ডিমভাজির ঝাঁঝালো সুবাস। রেহানা সকালবেলার ব্যস্ততায় টেবিল সাজিয়ে দিলেন—গরম পরোটা, ডাল, ডিমভাজি, চায়ের পেয়ালা। সিয়াম তখন টেবিলে বসে নাস্তা খাচ্ছে। অফিসের তাড়া মাথায়—চোখে-মুখে কেমন এক চাপা ক্লান্তি। ঠিক সেই সময় ঘরে ঢুকল রতন। মাথায় গামছা প্যাঁচানো, কপালে ঘাম চিকচিক করছে যেন স্নান সেরে এসেছে। গলার ভাঙা হাসিতে বলল— —“ওহো বাবা, খাইতাছিস নাকি? অফিসে যাইবি নাকি?” সিয়াম হালকা হেসে মাথা নাড়ল, —“হ্যাঁ কাকা, আজ একটু আগে বের হতে হবে।” রতন চেয়ার টেনে বসল, গ্লাসে পানি ঢালল। তার গলায় স্বাভাবিক ভরাট হাসি, কিন্তু চোখের ভেতরে যেন অন্য কিছু খেলে যায়। এই সময় আয়েশা ভেতর থেকে বের হলো। মুখটা শান্ত, কিন্তু চোখে বোঝা যায় রাতভর কান্নার দাগ আছে। গলায় কাঁপা সুরে বলল— —“মা…কালকের জন্য সরি।” রেহানা এক মুহূর্ত তাকিয়ে রইলেন, তারপর গাম্ভীর্য নিয়ে বললেন— —“আমাদের কাছে না মা। তুমি তো মেহমানের সামনে এমনটা করেছো। তার কাছে চাও ক্ষমা।” আয়েশার মুখ মুহূর্তে গম্ভীর হয়ে গেল। মনে পড়ে গেল গত রাতের রান্নাঘরের দৃশ্য। লোকটা কেমন করে টিজ করছিল, সেই হাসিটা এখনো বুকের ভেতর কাঁটার মতো বিঁধে আছে। তবুও সামলালো নিজেকে। রতন তাড়াতাড়ি হেসে উঠল, —“আরে না ভাবি, ছাইড়া দেন। ছোট মানুষ, রাগ-অভিমান থাকবেই।” রেহানা দৃঢ়ভাবে মাথা নাড়লেন, —“না রতন। এভাবে শিখতে হবে ওকে। অতিথির সামনে এভাবে দরজা বন্ধ করা যায় না।” আয়েশা ঠোঁট কামড়ে দাঁড়িয়ে রইল। তারপর ধীরে ধীরে রতনের দিকে তাকাল, গলায় কষ্ট মিশে যাওয়া শব্দ— —“সরি।” রতন মুচকি হেসে জবাব দিল, —“আহারে, এত কথা কইতে হবে না। আমি তো কিছুই মনে করি নাই।” তার চোখে অদ্ভুত এক ঝিলিক। আয়েশা সেই দৃষ্টি এড়িয়ে গেল, দ্রুত কুশল সেরে চুপ করে বসে রইল। আয়েশা হঠাৎ বলল— —“আমাকে আজকে একটা লাইব্রেরিতে যেতে হবে। কিছু বই কিনতে হবে। নতুন কোর্স শুরু হয়েছে।” সিয়াম মুখ গম্ভীর করে রুটি ছিঁড়ে বলল— —“না, আজ পারব না। আমার অনেক কাজ আছে।” আয়েশা হতাশ দৃষ্টিতে তাকাল। মুখে কিছু বলল না, শুধু দৃষ্টি সরিয়ে নিল। এই সময় রেহানা হেসে উঠলেন— —“তা হলে রতনকে নাও সঙ্গে। ওরও তো শহর দেখা হবে, বাজারটাও ঘুরে নেবে।” আয়েশা সঙ্গে সঙ্গেই কপালে ভাঁজ ফেলল, —“না, থাক। আমি একাই যাব। একা গেলেই ঠিক আছে।” রেহানা অবাক হয়ে বললেন, —“একা? একা আবার কেমন করে যাবে? এত বড় শহর, তুমি জানোই না ঠিকঠাক রাস্তা-ঘাট। রতনকে সঙ্গে নাও। এতে ওরও সময় কাটবে, আর তোমারও সুবিধা হবে।” রতন মুচকি হেসে চুপচাপ বসেছিল। তার চোখের কোণে আবার সেই দুষ্টু আলো খেলে গেল। আয়েশা তা লক্ষ্য করে ফেলল, বুকের ভেতর হঠাৎ অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ল। আয়েশার মনে তখনো কাল রাতের রান্নাঘরের দৃশ্য—বিস্কুট, দুধ আর রতনের সেই অদ্ভুত হাসি। সে গলা শক্ত করে বলল— —“না মা, আমি একাই যাব।” রেহানা একটু বিরক্ত হলেন, —“মেয়েটা আজকাল কথা শুনতেই চায় না।তুমি রতনকে নিয়ে যাবে, আর রতন তোমাকে বই আনতে সাহায্য করবে। ” টেবিলের চারপাশে এক মুহূর্তে যেন উত্তেজনা জমে গেল। বাইরে সূর্যের আলো ক্রমেই ঝলমল করছে, অথচ ভেতরে পরিবেশ কেমন ভারী হয়ে উঠল। পর্ব ৬ সকালের রোদ তখন ধীরে ধীরে চারপাশ ভরে তুলছে। সিয়াম অফিসে বের হয়ে গেছে খাওয়ার পরই। ঘর ফাঁকা হয়ে আসছে, শুধু রেহানার কাজকর্ম আর রতনের অবসর সময়। আয়েশা কাল রাতে ঘুমাতে পারে নি। তাই আবার একটু ঘুমিয়ে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে নীল কামিজ পরে আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নিলো। তার চোখেমুখে ক্লান্তি থাকলেও নীলের ভেতর একটা সতেজতা যেন তাকে অন্যরকম করে তুলছিল। রতন তখনও পরনে লুঙ্গি, গায়ে হালকা গেঞ্জি। যেন হুটহাট যে কোনো কাজে বেরিয়ে পড়বে। রেহানা কিছু টাকা হাতে দিল রতনকে। আয়েশা একটু বিরক্ত হয়ে বলল, — মা, আমাকে দেন। আমি রাখতে পারব। আমার নিজের হাতে থাকলেই সুবিধা। রেহানা ঠান্ডা গলায় বললেন, — না থাক মা, তুই এসব রাখতে শিখলি না তো। যা লাগে রতনকে বলিস। রতন রাখুক। আয়েশার মুখ ভারী হয়ে গেল। সে ভেতরে ভেতরে কষ্ট পেলেও চুপ করে রইলো। এ বাড়িতে বউ হয়েও কেনো যেন তাকে সবসময় ছেলেমানুষ ভেবে আলাদা করে রাখা হয়—এই বেদনা তার বুকের ভেতর পাথরের মতো চেপে বসলো। বাড়ির নিচে এসে দাঁড়ালো দুজন। সকাল তখন বেশ গরম হতে শুরু করেছে, কিন্তু হালকা বাতাসে নীল কামিজটা উড়ছিল আয়েশার গায়ে। রাস্তার ভাঙাচোরা চিত্র যেন চিরচেনা, তারপরও প্রতিবার বের হলেই বিরক্তি লাগে। রিক্সাও তাড়াতাড়ি পাওয়া গেল না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে শেষে একটা রিক্সা থামল। আয়েশা উঠে বসলো ভেতরে। রতনও তার পাশেই বসল। রিক্সা চলতে শুরু করলো। রাস্তাটা খানাখন্দে ভরা। হঠাৎ একটা গর্তে পড়তেই রতন আয়েশার দিকে হেলে পড়লো। আয়েশা গম্ভীর হয়ে সরে দাঁড়াল। দুই মিনিট বাদেই আবারো একই হলো। রতনের কাঁধ আয়েশার গায়ে লেগে গেলো। এবার আর সামলাতে পারলো না আয়েশা। — আপনি কেন বারবার আমার দিকে পড়ছেন? — চোখ রাঙিয়ে বলল আয়েশা। রতন একটু হকচকিয়ে গেল। — আরে মা, আমার দোষ নাই রে। রাস্তাই এমন ভাঙা। রিক্সা ঝাঁকুনি দিচ্ছে। আয়েশা ত্যাড়া চোখে তাকাল। — বাহানা শুনতে চাই না আমি। সাবধানে বসেন। রতন চুপ করে গেলো, তবে ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি লেগে রইল রিক্সা চলতেই থাকলো। রাস্তার ভাঙা অবস্থা যেন থামছেই না। এবার একটা বিশাল গর্তে চাকা পড়তেই পুরো রিক্সা কেঁপে উঠলো। ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার আগে আয়েশা বুঝতেও পারল না—সে সরাসরি রতনের বুকে ঝুঁকে পড়েছে। স্বভাবতই পরার ভয়ে আয়েশা দুহাত দিয়ে রতনকে জড়িয়ে ধরল। রতনের বুকের গায়ে তার মাথা ঠেকে রইল কয়েক সেকেন্ড। আশেপাশে মানুষের ভিড়, বাজারের হইচই, রিক্সার ঝনঝন—সবকিছু মিলিয়ে সেই মুহূর্তটা আয়েশার কাছে একেবারেই অপ্রস্তুত, লজ্জাজনক হয়ে উঠলো। আয়েশা তাড়াহুড়ো করে নিজেকে সরাতে চাইলো। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলো, রতনের হাত তার কোমরের চারপাশে শক্ত করে বাঁধা। — ছাড়েন! — বিরক্ত কণ্ঠে বলল আয়েশা। রতন একটু গম্ভীর গলায় বলল, — তুমি তো নিজেই জড়িয়ে ধরেছো। আমি কি করবো? — আমি ভয় পেয়েছিলাম, পড়ে যাবো বলে। এখন ছাড়েন। রতন মুচকি হেসে বলল, — ভয় তো আবার আসবেই। এখানে গর্ত কম নাকি? আয়েশার গলা কেঁপে উঠলো। — আপনার মতো মানুষকে আবার সম্মান করতে হয়! ঘরে এসে কত ভদ্র সাজেন! — ভদ্র আছি বলেই তো ছাড়ছি না। চোখ নামিয়ে বলল রতন। আয়েশা লজ্জায় গালে হাত রাখল। সে বুঝতে পারছে, লোকজন তাকাচ্ছে। আয়েশা মানুষের নজর থেকে বাঁচতে রতনের বুকে শক্ত করে মাথাটা লুকিয়ে রাখে। রতন – “ মুখ লুকাচ্ছো নাকি। কিন্তু মনে হয় মানুষ দেখে নিবে।” আয়েশা কিছু বলে না।। কতক্ষণ পর রতন- আয়েশা, আরো বড় ভাঙা আছে রাস্তায়, কাছে আসো আমি শক্ত করে ধ্রি, না হয় পরে যাবে। আয়েশা রতনের বুকে মুখ লুকিয়েই- না মিথ্যা। - সত্যি কথা। একটু কাছে আসো। আয়েশা ভাবে যদি থাকে বড় গর্ত কি হবে, আমি ত পরে যাব, কত লজ্জা সবাই তাকিয়ে থাকবে। এটা ভেবে সে রতনের একটু কাছে আসে। রতন তাকে আরো জোরে ধরে নেয়। এরপরে সত্যিই ধাক্কা খায় রিক্সা। এরপর আয়েশাকে মাথায় হাত বুলাতে থাকে রিক্সা চলতে থাকে। এরপর যখন ভালো রাস্তা আসে, তখন রিক্সা আর ধাক্কা খায় না। আয়েশা বুঝে যায়। আয়েশা রতনের বুক থেকে মাথে উঠায় আর বলে ছাড়ুন। এখন আর ভাঙা নেই। রতন ছেড়ে দেয়। আয়েশার তেজ আর রাগ বুঝতে পারে। রতন বলে – এত তেজ কেন? আমি ত সাহায্য করছি। আয়েশা হেসে- সাহায্য? তুমিও ত মজা পেয়েছো।( ভুলে মুখ থেকে বের হয়ে যায়।) রতন না বুঝার ভান ধরে- মজা? কেমন মজা। আর কোনো উত্তর দেয় না আয়েশা, শুধু রাগে ফুঁসতে থাকে।
Parent