গৃহবধূ : বাড়ির রক্ষাকর্ত্রী - অধ্যায় ৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69944-post-6010462.html#pid6010462

🕰️ Posted on August 16, 2025 by ✍️ Mr. X2002 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1095 words / 5 min read

Parent
পর্ব ৪ রুমে ফিরে এসে রিয়ার গা জ্বলে যাচ্ছিল। হরিশের রূঢ় আচরণ আর দরজা বন্ধ করে দেওয়ার দৃশ্য যেন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। — “এই লোকটার সাহস কত! আমার সঙ্গে এমনভাবে কথা বলে!” বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করল, কিন্তু ঘুম আসছিল না। জানলার বাইরে বৃষ্টির শব্দ ধীরে ধীরে থেমে এলো, তবুও মনে হচ্ছিল বুকের ভেতরে একধরনের শব্দ বাজছে—রাগ আর অপমানের মিলেমিশে থাকা এক অস্থিরতা। শেষমেশ ক্লান্ত হয়ে চোখ লেগে গেল। সকালবেলা, কাঁধে হালকা স্পর্শে রিয়া চমকে উঠে চোখ খুলল। — “উঠো… সকাল হয়ে গেছে।” রাতুল বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে হাসছে। চুলে হালকা ভেজাভাব, হয়তো সবে ফ্রেশ হয়ে এসেছে। রিয়া আধো ঘুমে বলল, — “তুমি কবে এলে?” — “দেরি করেই এসেছি… তুমি তখন ঘুমিয়ে ছিলে।” — “ডাকোনি কেন?” রাতুল মৃদু হাসল, হাত দিয়ে তার চুলে আলতো করে ছুঁয়ে বলল, — “বউয়ের এত সুন্দর ঘুম ভাঙতে মন চাইল না।” রিয়ার মনে অজান্তে একটু নরম ভাব এলো, তবে রাতের ঘটনাটা এখনও কাঁটার মতো বিঁধে ছিল। নাস্তার টেবিলে নাজমা বেগমের বানানো গরম লুচি, ডিমের কারি, চা—সব মিলে সকালটা যেন বেশ প্রাণবন্ত। তবে রিয়ার মন বারবার রাতের দিকে ফিরে যাচ্ছিল। খাওয়ার সময় রাতুল বলল, — “আজ অফিসে যাচ্ছি না। তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাব।” — “ভালো তো… তবে গাড়ি কে চালাবে?” — “হরিশকে ডাকব।” হরিশের নাম শুনতেই রিয়ার হাতের চামচ থমকে গেল। মনে পড়ল রাতের কথা—দরজা বন্ধ করার সেই মুহূর্ত, তার মুখের রূঢ়তা। বুকের ভেতরে আবার রাগের স্রোত বয়ে গেল। অল্প সময় পরেই গেট দিয়ে হরিশ ভেতরে এলো। পরিপাটি শার্ট, মাথায় আঁচড়ানো চুল, কিন্তু তার সেই কালো চোখে আজও আগের মতো স্থির দৃষ্টি। রিয়া টেবিল থেকে তাকিয়ে রইল—চোখে স্পষ্ট বিরক্তি, আর মনে যেন প্রতিজ্ঞা— “আজ আমি ওর সঙ্গে অত সহজে কথা বলব না।” পর্ব ৫ পরে হরিশকে রাতুল গাড়ি ধোয়ার নির্দেশ দেয়। সকালবেলার রোদ ঝলমলে, আকাশে হালকা সাদা মেঘ ভাসছে। গেটের সামনে হরিশ গাড়ি ধুয়ে চকচকে করে রেখেছে। ইঞ্জিন চালু করে দরজা খুলে দাঁড়িয়েছে, মুখে ভদ্রতাপূর্ণ হাসি—যেন কাল রাতের ঘটনাটা ঘটেইনি। রিয়া একবার তাকাল, ঠোঁটে কোনো কথা নেই, শুধু চোখে ঠান্ডা অবজ্ঞা। রাতুল এসে বলল, — “চলো, বের হবো। আজ শুধু আমরা দু’জন।” গাড়িতে উঠে রিয়া ব্যাগটা কোলে রাখল, আর রাতুল স্টিয়ারিংয়ের পেছনে বসা হরিশকে নির্দেশ দিল, — “গুলশান দিয়ে বনানীর দিকে চালাও।” রাস্তায় বের হতেই রাতুল রিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল, — “জানো, তোমাকে নিয়ে বের হলেই মনে হয় পুরো শহরটা যেন আমাদের জন্য দাঁড়িয়ে আছে।” রিয়া চোখ সরিয়ে জানলার বাইরে তাকাল, — “আহা… নাটক করো না।” — “নাটক নয়, সত্যি বলছি। তুমি সবচেয়ে সুন্দর।” রিয়া কাঁধ ঝাঁকাল, একটু খোঁচা মেরে বলল, — “হ্যাঁ, যেন আর কোনো মেয়ে নেই দুনিয়ায়!” রাতুল হাসতে হাসতে সামনে বসা হরিশের দিকে তাকাল, — “আচ্ছা, হরিশ… তোমার কি মনে হয়, সবচেয়ে সুন্দর নারী কে?” হরিশ সামনের আয়নায় রিয়ার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে শান্ত গলায় বলল, — “মেমসাহেব… তিনি দেবীর মত সুন্দর। এমন দেবীর পূজা করতে কোন পুরুষ চাইবে না?” গাড়ির ভেতর হঠাৎ যেন কয়েক সেকেন্ড নীরব হয়ে গেল। রাতুল হেসে বলল, — “দেখো, আমি একাই বলছি না।” কিন্তু রিয়ার বুকের ভেতরে হরিশের এই সরাসরি মন্তব্য কেমন যেন কাঁটার মতো বিঁধে গেল। ঠোঁট শক্ত করে বসে রইল সে, চোখে স্পষ্ট রাগের ছায়া। বাইরে শহরের রোদ ঝিলমিল করছিল, কিন্তু রিয়ার মনে যেন কালো মেঘ জমতে শুরু করেছে। পর্ব ৬ ব্যস্ত সড়কে গাড়ি এসে থামল এক নামকরা ব্যাংকের সামনে। রাতুল রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, — “তুমি আর হরিশ এখানে বসো, আমি একটু কাজ সেরে আসছি।” গাড়ির দরজা খুলে সে ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে গেল। বাইরে তখন দুপুরের হালকা রোদ, রাস্তায় মানুষের ভিড়, আর গাড়ির ভেতরে এক চাপা নীরবতা। হরিশ স্টিয়ারিংয়ের ওপর হাত রেখে জানলার বাইরে তাকিয়ে আছে। রিয়া চুপচাপ বসে ছিল, কিন্তু বুকের ভেতরের অস্বস্তি আর রাগ তাকে বেশি সময় চুপ থাকতে দিল না। — “আপনি জানেন, কাল রাতে আমাকে আপনি অপমান করেছেন। আজও ক্ষমা চাননি।” হরিশ ধীরে তার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল, — “আমি কখনো ক্ষমা চাই না কারো কাছে। তুমি আমার বয়সে মেয়ের থেকেও ছোট। আর কাল রাতে আমি কিছু ভুল করিনি—ঘুম থেকে ডাকার জন্য রেগে গিয়েছিলাম, ওই পর্যন্তই।” রিয়া ভ্রু কুঁচকাল, — “তাহলে আজ? আজ আমার স্বামীর সামনে এমন বাজে কথা বললেন কেন?” হরিশ ঠোঁটে এক হালকা হাসি টেনে বলল, — “আজ আমি কোনো বাজে কথা বলিনি। আমি শুধু এক নারীর সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছি। সেটা তো অপরাধ নয়।” রিয়ার চোখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি জমল, কথা বলতে যাবে—ঠিক তখনই জানলার পাশে এক কচি গলার শব্দ, — “সাহেব… ফুল নেন না? আপনার ভালোবাসাকে দিন। আপনাদের খুব সুন্দর লাগছে।” এক ছোট্ট মালিনী, হাতে লাল গোলাপের গুচ্ছ, দাঁড়িয়ে মিষ্টি করে হাসছে। তার কথায় যেন মুহূর্তের জন্য গাড়ির ভেতরের উত্তেজনা থেমে গেল। হরিশের চোখে ক্ষণিকের কৌতুকমাখা ঝিলিক দেখা গেল। সে যেন কিছু বলার জন্য ঠোঁট সামান্য খুলল, কিন্তু রিয়ার দৃষ্টি তার দিকে এমন ছিল—যেন কোনো শব্দই উচ্চারণ করার সাহস সে পায় না। পর্ব ৭ হরিশ পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে ফুলওয়ালির হাতে দিল। লাল গোলাপের গুচ্ছ নিয়ে সে হঠাৎ রিয়ার দিকে ছুঁড়ে মারল। ফুলগুলো রিয়ার কোলের ওপর এসে পড়ল, কয়েকটা পাপড়ি গড়িয়ে মেঝেতে পড়ল। রিয়ার মুখ লাল হয়ে উঠল রাগে। — “এটা কি ধরনের অসভ্যতামি!” হরিশ গম্ভীর কিন্তু ধীর স্বরে বলল, — “আমি আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর নারীকে দিলাম। এতে অসভ্যতামি কোথায়?” রিয়ার বুকের ভেতর হঠাৎ যেন কিছু নড়েচড়ে উঠল—তার প্রশংসার কথা শুনে একটা অদ্ভুত আনন্দ কেমন যেন ছুঁয়ে গেল তাকে। কিন্তু মুখে সেটা প্রকাশ না করে কঠোর গলায় বলল, — “এই অধিকার আপনার নেই। আর এভাবে ফুল দেওয়া যায় না।” হরিশ ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি টেনে বলল, — “পরের বার ভালো করে দেব।” রিয়া চোখ কুঁচকে তাকাল, — “আপনি সীমা অতিক্রম করছেন।” ঠিক তখনই গাড়ির গেট খোলার শব্দ শোনা গেল। রাতুল ব্যাংক থেকে ফিরে এসে গাড়িতে বসল। — “কি নিয়ে এত কথা?” হরিশ মুচকি হেসে বলল, — “কিছু না… মাইয়া মানুষের তো অনেক কথা।” রাতুল মজা করে বলল, — “এত জলদি হাঁপিয়ে গেছ? চিন্তা কর আমার কথা।” রিয়া তার কাঁধে হালকা চড় মেরে রাগ দেখাল, কিন্তু চোখে ছিল মৃদু হাসি। স্টিয়ারিংয়ের পেছনে বসা হরিশ চুপচাপ গাড়ি চালু করল, ইঞ্জিনের গর্জন ভেতরের অস্বস্তি আর অদ্ভুত আবহটাকে ঢেকে দিল। পর্ব ৮ সেদিনের পর অনেক কিছু যেন স্বাভাবিক হয়ে গেল। রিয়া আর রাতুল প্রায়ই বাইরে যায়—কখনো শহরের নতুন ক্যাফে, কখনো পার্ক, আবার কখনো রেস্টুরেন্টে একসাথে খাওয়া। গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হরিশ থাকলেও, রিয়া আর তার মধ্যে খুব বেশি কথা হয় না—শুধু প্রয়োজনমতো কয়েকটি শব্দের বিনিময়। দিন কেটে যায়, মাস খানেক এমনভাবেই চলে। এদিকে লতার সঙ্গে হরিশের গোপন দেখা-সাক্ষাৎ যেন ক্রমে কমে আসছে। একদিন রান্নাঘরের এক কোণে ফাঁকা সময় পেয়ে লতা গম্ভীর গলায় বলল, — “হরিশ, আমি আর এভাবে লুকিয়ে দেখা করতে পারব না। কেউ জানলে খুব বিপদ হবে।” হরিশ চোয়াল শক্ত করল, চোখে চাপা রাগের ঝিলিক দেখা গেল। তবুও ধীর স্বরে বলল না কিছু—শুধু মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকাল। কারণ সে জানে, লতার কথায় যুক্তি আছে। ওই মাসের শুরুতে একবার নাজমা বেগমের হাতে প্রায় ধরা পড়ে গিয়েছিল সে—পোর্টে লতার কাছ থেকে কিছু নিতে গিয়েছিল। ভাগ্যক্রমে নাজমা বেগমের সরলতা আর অপ্রশ্নকারী স্বভাব তাকে বাঁচিয়ে দেয়। এরপর আরও এক মাস কেটে গেল। বাড়ির প্রতিদিনের জীবন যেন আগের মতোই হয়ে যায়।
Parent