গরীব মা ছেলের সংসার - অধ্যায় ২২
খেয়ে আমি দোকানে চলে গেলাম দোকান খুলতে অনেক চাপ ঘন্টা দুই কোন স্কোপ পাইনাই। একটু ফাঁকা হতে মাকে ফোন করলাম আর বললাম মা কিছু লাগবে।
মা হ্যা ঐটা ব্যাগে নিও আর কিছু আজকে আল্গবেনা তাড়াতাড়ি বাড়ি এস তুমি।
আমি আচ্ছা বলে রেখে দিয়ে দোকান গুছাতে লাগলাম ৯ টায় বন্ধ করব। রাত বেশী হয়নাই তাই বসেই আছি বসে বসে মোবাইল ঘাটছিলাম। এরমধ্যে রিং বেজে উঠল দেখি একটা নাম্বার তারপর মনে পড়ল এ তো রিমার মায়ের নম্বর। ধরে বললাম বলেন মাসীমা কখন বাড়ি ফিরেছেন।
মাসীমা এই তো আসতে আসতে সন্ধ্যে হয়ে গেছে। রিমা আমাকে ফোন করেছিল তোমরা তো আধ ঘন্টার মধ্যে পৌছে গেছ, জার জন্য ফোন করা তারিখ এখনও জানতে পারিনি আর ওদের কালকে জেলে দেবে তাইনা।
আমি হ্যা মামা তো ছিল ওখানে কথা হয় নাই।
মাসীমা হ্যা হয়েছে, কিন্তু জানো বাবা কি বলব তোমাকে ওর ব্যাঙ্ক আকাউন্ট ফিরিজ করে দিয়েছে, কোন টাকা নেই আমাদের কাছে খুব বিপদে আছি আমি আর মেয়ে। কি করে চলবো বুঝতে পারছিনা।তুমি একবার আসবে আমাদের বাড়ি একটু কথা বলব তোমার সাথে তোমার মাকে আবার বলনা উনি তো খুব রেগে আছেন, কি বলব বাবা এ সম্নধে আমি মেয়ে কিছুই জানতাম না। তোমাকে সত্যি বলছি, যা করবে একসাথে করবে আমাদের জানিয়ে করবে সেইজন্য তোমাকে আসতে বলছি আমি কি আসবে একটু।
আমি আজকে আর যাবো কখন কালকে না হয় যাবো।
মাসিমা কেন বাবা বন্ধ করে আসো বাড়ি যাওয়ার আগে ঘুরে যাবে, চিন্তায় আমাদের মা মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ।কত সময় আর লাগবে বাড়ি তো তুমি চিনে গেছ তাইনা আসোনা বাবা,
আমি আচ্ছা দেখছি বলে একটু পরে দোকান বন্ধ করে ওইদিক দিয়ে গেলাম, গেটে গিয়ে হর্ন মারতেই দৌড়ে এসে রিমা দরজা খুলল। পেল্লাই বাড়ি ওদের।
রিমা আসেন দাদা আসেন। পেছন পেছন ওদের ঘরে ঢুকলাম। দেখি ওর মা সোফায় বসা রিমা বলল বসেন দাদা।
আমি সিঙ্গল সোফায় বসলাম রিমা আর ওর মা বড় সোফায় বসা। মাকে যে নাইট গাউন কিনে দিয়েছি সেরকম মা মেয়ে পরে আছে, মাসীমা যে ভেতরে কিছু পরেনি বোঝা যায় দুধ দুটো ঝুলে আছে, তবে রিমা পরে আছে বোঝা যায় দুধ দুটো বেশ খাঁড়া। একবাড় মা মেয়েকে দেখে নিলাম, দারুন, আমার মায়ের থেকেও অনেক বেশী সুন্দরী।
মাসীমা এই মা রিমা যা না দাদা এসেছে একটু চা করে নিয়ে আয় আমি কথা বলছি।
রিমা আচ্ছা মা বলে চলে গেল।
মাসিমা কি বলব বাবা তোমাকে আমাদের কোন অভাব ছিলনা, কিন্তু এখন ওর ব্যাঙ্ক আকাউন্ট সীজ হয়ে আছে কি করে যে চলবো আমরা। কিছু টাকা ছিল রিমার আকাউন্টে তাই দিয়ে উকিল ধরেছি এখন আমাদের বাচা দায়। কয়দিন আগে আমার বাবা মারা গেছেন ভাইরাও কোন সাহায্য করতে পারবেনা একবার আসল না পর্যন্ত।
আমি আর বলবেন না, জানেন তো আমার মা এবং ভাই আমাকে তো মানুষ বলে মনে করত না এখন ছাই ফেলতে ভাঙ্গা কুলা লাগে আমাকে সব দেখতে হচ্ছে। বাড়ি তো বন্ধক দিয়ে টাকা নিয়ে এসেছিল এগুলো আপনারা জানতেন না ভাইয়ের তো আপনাদের বাড়ি আসা যাওয়া ছিল।
মাসীমা হ্যা ওই আসলে রিমার সাথে কথা বলত না হলে ওর বাবার কাছেই থাকতো আমার সাথে কথা হতনা। আর সত্যি বলব তোমার ভাইকে আমার একদম পছন্দ হত না।
আমি সে আমি জানি মাসিমা আমার মা এবং ভাই যে কি আমার থেকে কেউ ভালো জানেনা, এইজন্য আমি সব সেপারেট করে নিয়েছি। মা তো তাই ফেলতে পারছইনা। ৭ টা বছর মাকে আমি মা বলে ডাকতে পারিনাই, ওই ভাইয়ের জন্য। আমার থেকে ছাত্র খারপ ছিল কিন্তু বাবার মৃত্যুর অপবাদ দিয়ে আমাকে আর পড়তে দিলনা কারন সংসার চলবে কি করে। বাধ্য হয়ে আমাকে ব্যাবসায় নামতে হল এখন ওই ব্যবসা নিয়ে আসি।
মাসিমা হ্যা সব শুনেছি রিমার কাছ থেকে কারন ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসতো, এবার কি হবে আমার মেয়েটার আর আমাদের শুনেছি ৩ থেকে ৫ বছরের জেল হবে ওদের। আমি কোন কাজ জানিনা কি করে বাচব, এই বাড়ি দিয়ে তো খাবার হবেনা বাবা। তোমার কাছে অনুরোধ আমাদের একটু দেখ সেজন্যই তোমাকে ডাকলাম তোমার দোকান তো চিনি না আর দেখ তোমার ভাই আর আঙ্কেল কে বের করতে পারো কিনা, আমাদের এই উপকারটুকূ করো।
আমি না দেরী হয়ে যাচ্ছে আমাকে যেতে হবে মা চিন্তা করবে।
মাসিমা কিরে রিমা কি হল চা হয়নি।
রিমা হ্যা আসছি একটু দাদা বসেন। এই বলে চা নিয়ে এল। তাও এক কাপ মাত্র।
আমি কি হল আর কই তোমরা খাবেনা চা।
রিমা না দাদা এই রাতে আমরা চা খাবোনা তারপর ওর মায়ের কানে কি যেন বলল আমি বুঝলাম সব বাড়ন্ত।
মাসিমা কি বলব বাবা ঘরে কোন ক্যাশ টাকা ছিলনা অল্প কিছু ওর একাউন্টে ছিল তাই দিয়ে উকিল চালিয়েছি বাজার করার টাকা পর্যন্ত নেই।
আমি আচ্ছা মাসিমা আসি এখন দেখি কালকে একবার আসবো বারিতেই থাকবেন তো।
মাসিমা হ্যা আমি বাড়ি আছি সব সময় ওর টিউশনি আছে আমি বাড়ি থাকবো তুমি এস বাবা। তোমাকে ফোন করলে আবার বিরক্ত হবেনা তো।
আমি না তবে বাড়িতে থাকলে ফোন করবেন না, মা থাকবে তো, সকাল ৮ তা থেকে বেলা দেরটার মধ্যে আবার বিকেল ৫ টা থেকে ৯ তার মধ্যে আমি দকানে থাকবো তখন কথা বলা যাবে। আসি এখন কালকে আসবো বলে উঠে এলাম।
মাসিমা আমার পেছন পেছন গেট পর্যন্ত এল। আমার হাত ধরে বলল কি বাবা একটু দেখবে আমাদের। পরে তোমাকে শোধ দিয়ে দেবো ওর বাবার একাউন্ট খুল্লেই।
আমি বললাম আমি কি করে দেখবো আমাকে কে দেখবে।
মাসিমা তুমি এখন একটু দেখ পরে সময় পেলে আমরাও দেখবো, আমাদের এখন কেউ নেই বাবা তুমি ছাড়া, রিমা বলেছে তুমি অনেক ভালো একটু দেখ বাবা আর কালকে আসছ তো, দুপুরে এস আমি একা থাকবো রিমা থাকবেনা। একদম কাছে এসে কি আসবে তো কথা দাও আমাকে। বলে হাত জরিয়ে ধরল।