গরীব মা ছেলের সংসার - অধ্যায় ৫
সকালে ষ্টেশনে গিয়ে পায়খানা বাথরুম করে এসে দোকান খুললাম রাতে খাওয়া হয় নাই চা খেয়ে দোকান্দারী করতে লাগলাম।
৮ টা বাজতে না বাজতে মা আর ভাই এল কি হল রাতে বাড়ি যাসনি কেন দাদা। মামা বাড়ি গেছিলি।
আমি না কাজ ছিল তাই দোকানেই ছিলাম।
ভাই টাকার কি করবি।
আমি আমার কাছে টাকা নেই যা ছিল মাল তুলেছি আর সব বিক্রি করলেও অত টাকা হবেনা, তোরা বাড়ি বেচে দে আমি সই করে দেবো।
মা নাই মানে তোকে দিতে হবে, তোর জন্য তোর বাবা মরে গেছে তোঁকেই দিতে হবে। সে থাকে আমাদের এত ভাবতে হতনা।
আমি জানি কিন্তু নেই তো দেবো কি করে সব আমার দোষ কিন্তু তবুও আমি দিতে পারবোনা কারন আমার কাছে নেই। দেখ বাড়ির খদ্দের দেখ আমি বললেই সই করে দেবো।
মা বলল বললেই হল আমরা থাকবো কোথায়।
আমি কেন চাকরি হয়ে গেলেই তো বাড়ি কিনতে পারবে।
মা তুই থাকবি কোথায় খাবি কি রান্না কে করে দেবে আমি তোর সাথে থাকবনা।
আমি লাগবেনা এই অপয়ার মুখ তোমার না দেখলে ভালো হবেনা। আমি একা দোকানেই থাকতে পারবো। আমাকে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি তোমার ছেলেনা আমি আসলে বাবার খুনি। কেন কেস দিয়ে জেলে ভরে দিচ্ছনা তুমি। এতদিন মাকে কোন কথা বলিনি। আজকে কটা কথা বললাম।
মা বেশ তো কথা শিখে গেছ তাইনা। এত ক্ষমতা কে দিল তোমাকে। এর আগে তো কোনদিন কথা বলোনি।
আমি দেখ আমি টাকা থাকলে দিয়ে দিতাম এখন তোমরা যাও।
মা বাজার লাগবে ঘরে কিছু নেই বাজার করে দাও।
আমি খুনি খুনির কাছ থেকে কেউ খায় নাকি এখন থেকে নিজেরা ব্যবস্থা করে নাও আর হবেনা, বাড়ি যেদিন দলিল দেবে বলবে গিয়ে সই করে দিয়ে আসবো এ ছাড়া তোমাদের সাথে কোন কথা হবেনা। এইরকম কথা কাটাটিতে ভাই আমার উপর তেরে আসলো।
আমার আশে পাশের দোকানদার সবাই এল কি হয়েছে বলতে ওরা মা আর ভাইকে অনেক কথা শোনালো আর বলল চলে জান বাজারে এসে ঝামেলা করবেন না এটা আপনার বাড়ি না বাজার এরপর আর কথা বললে গন দিয়ে দেবো কিন্তু এত ভালোছেলের সাথে এমন ব্যবহার আপনাদের। এটা কি টাকার মেশিন নাকি আমরা দেখি নাই সেই কতটুকু বয়স থেকে সব করে যাচ্ছে তারপরও এত গরম জান কামাই করে দেখুন কেমন লাগে।
আমি ওদের সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বেচাকেনা করতে লাগলাম। মা এবং ভাই চলে গেল। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে একবার হাসলাম কষ্টের হাসি।
কিছুখনের মধ্যে মামার ফোন কিরে কি হয়েছে আমাকে তোর মা নালিশ করল তুই নাকি ওদের মেরেছিস।
আমি মামা এস তবে শুনতে পাবে। এখন ব্যাস্ত আছি তুমি আসো ছুটি তো আছে।
মামা আচ্ছা রাখ আমি আসছি।
আমি বেচাকেনা করতে লাগলাম, মামা আধ ঘন্টার মধ্যে চলে এল। মামাকে দেখে সবাই বলল কেমন ব্যবহার করেছে আমার মা আর ভাই।
মামা টাকা দিয়েছিস বাজারের।
আমি না দেইনাই, এই নাও তুমি বাজার করে নিয়ে যাও দিয়ে আবার আসো তোমার সাথে বাড়ি যাবো।
মামা আবার ফিরে এল একটা নাগাদ তারপর মামার সাথে কথা বলে বললাম দিতে পারি টাকা মামা তবে একটা শর্তে যে তুমি বলবে তুমি দিয়েছ আমার নাম বলতে পারবেনা।
মামা অত টাকা আছে তোর কাছে।
আমি আছে মামা নিজে জমিয়ে রেখেছি ভেবনা তুমি তবে মামা তোমার পায়ে ধরে বলছি তুমি বলবে তুমি দেবে আমি দেবনা। পড়ে তোমাকে দিল না দিল সেটা আলাদা কথা। কিন্তু আমার নাম বলা যাবেনা মামা। দেখ যদি চাকরি হয় তো ভালো বাবার সব তো নষ্ট করে দিয়েছে এবার বারিও যাবে না হলে।
মামা ঠিক আছে আজকে না কালকে দেবো তাহলে এই আমি বলব। চলো বাড়ি যাই।
আমি হ্যা চলো বাড়ি চলো গিয়ে আমরা খেতে বসলাম। না আজকে মা আমাকে ভালো খাবার দিল বহুদিন পড়ে।
খাওয়া হতেই মা আর ভাই একই কথা টাকা কখন দেবে জিজ্ঞেস কর।
মামা আরে আমি অনেকবার বলেছি ওর কাছে অত টাকা আছে নাকি যে দেবে। নাই দেবে কোথা থেকে।
ভাই মামা তুমি একটা ব্যবস্থা কর মামা না হলে সব চলে যাবে আমার। খুব বিপদে পরে যাবো বাড়ি বেচারো টাইম পাবোনা। সব কাগজপত্র দিয়ে এসেছি আমার অরিজিনাল মামা তবে আর ফেরত দেবেনা।
মামা ও তো দিতে পারবেনা, আমি একটা ব্যবস্থা করতে পারি কিন্তু কতদিনে ফেরত দিবি সেটা বল।
ভাই মামা চাকরি হয়ে গেলে একটা লোন করে তোমাকে ফেরত দিয়ে দেবো।
মামা দেখ এক বছর টাইম দেবো আমার মেয়ের বিয়ের টাকা তোদের দেবো।
ভাই অতদিন লাগবেনা মামা। ৬ মাসের মধ্যে দিয়ে দেবো।
মামা তবে আমি কালকে নিয়ে আসবো আর হ্যা ভাগ্নে বলে বলছিনা আমাকে তোমাদের বাড়ির দলিল দিতে হবে একবছর পড়ে আমি কিন্তু টাকা না পেলে এই বাড়ি বিক্রি করে আমার টাকা তুলে নেবো, কিরে বড় তোর আপত্তিনেই তো।
আমি না মামা আমার আপত্তিনেই তাই করে দিও তুমি তবে ওর চাকরি হোক।
মামা তবে চল এবার যাবো গিয়ে সব ব্যাবস্থা করতে হবে একটা স্টাম্প আনতে হবে তারপর লিখে নিয়ে আসবো আর টাকা ভেবে দেখ তোমরা।
মা না দাদা ঠিক আছে তবু ওর চাকরিটা হোক। তুমি তাই কর। আর উনি কি বাড়ি আসবে নাকি আবার থাকবে অন্য কোথাও বাজারের টাকা দেয়নাই ছোটর চাকরিটা হোক তারপর দেখবো। কটা বাজার করে খাওয়া বলে এত গরম। দেখি ওকে কে রান্না করে খাওয়ায়। ছোটর চাকরি হয়ে গেলে আমি আর ছোট থাকবো, অকে এই বাড়িতে ঢুক্তেও দেবনা।
মামা আর যদি কোন কারনে চাকরি না হয় টাকা জলে যায় তবে তো তোদের বাড়িও চলে যাবে তখন কি করবি, আগে খেয়েছিস স্বামীর কামাই এখন খাচ্ছিস বড় ছেলের কামাই তারপরেও এত দেমাগ, দেখ বোন সব কিছুর একটা সীমা আছে। ভালো ছেলেটাড় ভবিষ্যৎ এমনিতেই নষ্ট করে দিলি আবার এত অত্যাচার আমার একদম ভালো লাগছেনা কিন্তু।
মা মরে তো জাইনাই বেচে তো আছি পরেও বেচে থাকবো তুমি টাকার ব্যাবস্থা করে তারপর দেখবো।
মামা এই ওটা তোর পেটের ছেলে না নাকি কুরিয়ে পেয়েছিস, এত রাগ কেন ওর ওপরে, সেই থেকে তো ছেলেটা তোদের সব অত্যাচার সহ্য করছে এরপর যদি ও কোনদিন প্রতিবাদের রুপ নেয় পারবি তো সামলাতে।
মা পেটে ধরে তো মহাপাপ করেছি ওকে দেখলেও আমার সারাদেহে জলন শুরু হয়। তুমি বুঝবেনা দাদা ওর মৃত্যু খবর পেলেও আমার একটু কষ্ট হবেনা।