কাকলির শয়তানের পুজো - অধ্যায় ১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-49749-post-4957842.html#pid4957842

🕰️ Posted on September 18, 2022 by ✍️ Momscuck (Profile)

🏷️ Tags:
📖 664 words / 3 min read

Parent
সাগর বাস ধরলো। কালীবাড়ি মোড়ে বাসে চাপা বা নামার জন্য সাধারণত কেউ থাকে না। কিন্তু আজ সাগর ছিল। সাগর বছর বাইশের তাগড়া যুবক। কিন্তু আজ যদি তাকে কেউ ভালো করে দেখে তবে কোনো বয়স্ক লোক মনে হবে। বাসের পিছনের দিকে একটা সিটে বসে জালনা দিয়ে তাকালো কালিবাড়ির পিছনের শ্মশানের দিকে। তখনও মরা পোড়ার ধোয়া উঠছে। সাগরের বুকটা যেন ফেটে গেল। একরাশ কান্না বেরিয়ে আসতে চেয়েও বের হতে পারলো না। বাম হাতের মুঠোটা আরো শক্ত করে চিপে ধরলো সামনের হাতলটা। সাগরের সাথে বারবার এমনি হয়। ছোট থেকেই সে বাবার কাছে মানুষ। তার মা ছিল অত্যন্ত লোভী। সাগর যখন 2 মাসের তখন কোনো এক প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যায় তার মা। মায়ের মুখ সে ওই ছবিতে দেখেই যা চিনেছে। বাবাই তার সব কিছু। বাবার সেই আদর, ভালোবাসা, তার সাথে খেলা, কত কি বারবার মনে পড়ে সাগরের। তার বাবা ছিল সেনাবাহিনীতে। কার্গিলের সময় ডান পায়ে গুলি লাগে। 3 দিন গুলি খাওয়া পা নিয়ে পড়ে ছিল। ডান পা কেটে বাদ দিতে হয়। কিন্তু ছেলের জন্য সে আবার সব বাঁধা কে অতিক্রম করেছে। ছোট থেকেই সাগরকে শিখিয়েছে পুরুষ মানুষকে শক্তিশালী হতেই হবে। সব দিক থেকে শক্তিশালী। কিন্তু বাবাও বছর দুয়েক আগে মারা গেছে। এই দুই বছরে তার একমাত্র সঙ্গী ছিল রিয়া। কলেজের বান্ধবী থেকে প্রেম, সব সময়ের সঙ্গী। রাতে রিয়া গান শোনাত তবে সাগর ঘুমাতো। কিন্তু সেটাও ভগবান বেশি দিন থাকতে দিলো না। গত সপ্তাহে হটাৎ রক্তবমি করতে করতে হসপিটালে ভর্তি হলো রিয়া। ডক্টর বললো অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু সেসব কিছুই আর লাগলো না। তার আগেই মারা গেল রিয়া। এবার কে থাকবে সাগরের পাশে? বাসের কন্ডাক্টর টিকিট কাটতে এলো। সাগরকে টিকিট চাইতেই সাগর বললো শেষ স্টপেজে নামবে।তার কোনো ঠিকানা নেই। যতখন এই বাস যায়। ততক্ষন সে চলুক। কিন্তু বাস ও এক সময় থেমে গেলো। বেলা তখন দুটো পনেরো। সাগরের হাতে ধরা একটা সুটকেস। তাতে আছে অনেক টাকা। বসত বাড়িটা বিক্রি করে 20 লাখটাকা পেয়েছে। রিয়ার চিকিৎসার জন্য সে বিক্রি করেছিল। কিন্তু একটা টাকাও রিয়া নিলো না। আর একবার হুহু করে উঠলো তার বুকটা। সামনের মসজিদের বাইরে একজন লোককে দেখতে পেল সাগর। তাকে জিজ্ঞাসা করলো "এখানে খাওয়ার কিছু পাওয়া যাবে দাদা? " পাশের গলিতে হোটেল আছে বলে সেও চলে গেল। চারিদিক জন শুন্য। জ্যেষ্ঠ মাসের প্রথম দিন। ধীরে ধীরে পাশের গলিতে গিয়ে ভাতের হোটেলে ঢুকলো। সেখানে একজন লোক একটা ফ্যানের নীচে বসে আছে কেবল। আনমনে টিভি চলছে। মগে জল নিয়ে মাথায় ঢেলে নিলো সাগর। তারপর এক প্লেট ভাত বলেই সে বসে পড়লো চেয়ারে। ভাত এলো। আবার তার মনে পড়ে গেল রিয়াকে। এবার তার চোখের জল বেরিয়ে এলো। টপটপ করে থালায় জল পড়তে লাগলো। নিজেকে একটু সামলে সে ভাত মুখে তুলতে গেল। অমনি তার হাত ধরল দোকানে মালিক। মালিক- কি হয়েছে বেটা তোর। গলায় পৈতে ঝুলিয়ে '.ের দোকানে খেতে এলি যে। আবার মনে পড়ে গেল। রিয়াও বলতো। "সাগর তুমি তো বামুন মানুষ। আমরা কিন্তু কলু। চ্যাটার্জী - গড়াই অসুবিধা হবে না তো?" সাগর যেন রিয়াকেই উত্তর দিলো। " আমি মানি না ওসব। " মুখে দিলো ভাত। লোকে বলে ভাত পেটে পড়লেই ধীরে ধীরে শোক কমতে থাকে। সাগরের মুখের ভাত মুখেই রইলো। এতক্ষণের চেপে রাখা কান্না বেরিয়ে এলো। সন্ধ্যের সময় ওই হোটেলের মালিক দু কাপ চা নিয়ে সাগরের কাছে এসে বসলো। সাগরের জীবনের কথা সে আগেই শুনেছে। এবার সাগরকে বললো, "দেখো বাবা জীবনে মাঝে মাঝে এমনি দুর্বিপাক আসে। তুমি আবার নতুন করে সব শুরু কর। এই সেলিম চাচা তোমাকে সব রকম সাহায্য করবে। তোর ও কেউ নেই। আমার এই দোকানটা ছাড়া কিছু নেই। আর ওই ফটিক আছে হাতে হাতে কাজ করে দেয়ার। তুমি তো বললে তুমি বড় কি সব পড়াশুনা করেছ। তা পাড়ার একটা ক্লাব আছে। ওখানের ছেলে গুলো আমাকে খুব মানে। আমার দোকানে এসে বিনি পয়সায় গোস্ত নিয়ে যায়। হেহে। ওদের ছেলে মেয়েদের পড়াবে? গরিবের ছেলে ছোকরা সব। কিন্তু মন খুব ভালো। তারপর আস্তে আস্তে টাকাও কামাবে। " সাগর রাজি হলো। ক্লাবের পিছনের ঘরেই থাকার ব্যবস্থা হলো। ঘরটা ছোট তবে সাগরের চলে যেতে থাকলো। সেলিম চাচাই হয়ে উঠলো সাগরের বাবার মতো। বছর খানেকের মধ্যেই সাগর স্যারের নাম ছড়িয়ে পড়লো। ইতিহাসের এত ভালো স্যার গোটা শহরে কমই আছে। ধনী লোকেরা মাসে 5 হাজার টাকা অবধি দিতে রাজি হলো সপ্তাহে একদিন পড়াতে। এমনি একদিন একটা ফোন আসলো সাগরের ফোনে। ট্রু কলারে নাম উঠলো কাকলি।
Parent