কাকলির শয়তানের পুজো - অধ্যায় ১৯
রোহান কিছুক্ষণ চিৎকার করে আবার চুপ হয়ে গেল। বুঝলো কেউ নেই তার কথা শোনার মতো। অন্ধকার ঘরে পরে থাকতে থাকতে আবার কখন ঘুমিয়ে গেছে নিজেও বুঝতে পারে নি। যখন ঘুম ভাঙল দেখল সকাল। মা কাকলির গলা পাচ্ছে। সাথে দুজন পুরুষের গলা। একটা তো ওই শয়তান লোকটার। অন্য গলাটা? রোহান ভাবলো এই লোকটার সামনে আসতে হবে যেমন করেই হোক।
রোহান হাঁক দিলো, কাঁদো কাঁদো গলায়।
রোহান: মা মা ও মা। আমাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমাদের থেকে অনেক দূরে চলে যাব।
কাজ ও হলো। সেলিম চাচা এসেছিল। তার কানে আওয়াজ যেতেই সে ছুটে এল।
সেলিম: হাঁ বেটা সাগর। এত ধনঞ্জয়ের বেটা। ওকে ওভাবে বেঁধে রেখেছিস কেন?
সাগর: আরে না চাচা। এগুলো ওর পাপের শাস্তি। ওর জন্য আমরা আমাদের বাচ্চা হারিয়েছি। ওর জন্য একটা মেয়েকে পরিবার পরিজন দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।
সেলিম: তাও তুই শাস্তি দেওয়ার কেউ না বাপ। আল্লাহ ওর গুনাহের হিসাব করবে।
ছেড়ে দে। তুই এমনি করবি আমি ভাবতে পারি নি সাগর। ছি ছি। তোকে আমি এই জন্য ছেলের জায়গা দিয়েছি বাপ? ছেড়ে দে ওকে। নাহলে তোর সাথে আমার সম্পর্ক থাকবে না।
সাগর আমতা আমতা করে। কাকলি সবটা শুনে বলে
কাকলি: ও আমার ছেলে। বাপের অন্যায় প্রশ্রয়ে অমানুষ তৈরি হয়েছে। ওকে কষ্ট দিতে চাই না চাচা। কিন্তু এই টুকু দরকার।
সেলিম: আমি এই অন্যায় কিছুতেই হতে দেব না। ভুল করছিস মা। এটা অমানুষিক অত্যাচার।
কাকলি: না। কিছুতেই না।
কাকলি আর সেলিম চাচার ঝগড়া হাতাহাতিতে পরিণত হয়। রোহানকে মুক্ত করতে যায় সেলিম চাচা। আর বাঁধা দেয় কাকলি। সাগর কিন্তু চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে যায়।
মিনিট খানেক পর কাকলি হাত চালিয়ে দেয়। সেলিম চাচাকে একটা চড় মারে। বৃদ্ধ চাচা এমনটা কল্পনাও করে নি। সাগর আর কাকলির দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে। কাকলির তখন রাগ সপ্তমে। আবার মার গিয়ে পড়ে রোহানের উপর। অকাতরে মারতে থাকে রোহানকে। সাথে নিজেও কাঁদতে থাকে। কিন্তু মার থামে না। রোহান অজ্ঞান হয়ে যায়। সাগর তখনও চুপ। সে অন্য এক ভাবনায় হারিয়ে গেছে।
এই ঘটনার দিন চারেক পর সাগর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়। কাকলিকে বলে যায়। কিন্তু এই চার দিনে কাকলিকে চোদা তো দূরে জড়িয়ে ধরে নি অবধি একবার ও। কোনো কথাও বলে না সেভাবে। মুখে হালকা একটা হাসি। কিন্তু চোখে গভীর এক চিন্তা। কাকলি এই মানুষটার কোনো তল খুঁজে পাই না।
সাগর বেরিয়ে গিয়ে সেই কালিবাড়ির পিছনের শ্মশানে। নদীর ধারে পা ঝুলিয়ে বসল। অনেক ক্ষণ বসে থাকার পর কেঁদে উঠল। কিন্তু রিয়ার জন্য নয়। মা মা বলে।
নিজের নিজেই মাকে উদ্দেশ্যে বলে,
সাগর: মা একবার এসো তুমি। আমি আর পারছি না। সত্যি আমি প্রতিশোধের খেলায় খেলতে খেলতে শয়তান হয়ে গেছি মা। এত দিন তোমার প্রতি এত ক্ষোভ এত অভিমান সব শেষ হয়ে গেছে। ভালোবাসার সামনে স্বামী সন্তান সব অনেক ছোট । কাকলিকে দেখে আমি বুঝেছি। কিন্তু এ কেমন ভালোবাসা? যাতে করে কোনো মানুষকে, নিজের ছেলেকে একরকম বলি দিয়ে দিচ্ছে। তুমি তো আমাকে এভাবে অত্যাচার করো নি। আমার সামনে একবার এসো মা।
কতক্ষন ওখানে ছিল জানি না। তবে ঘোর কাটল একটা ফোনে। কাকলির ফোন।
কাকলি: বাড়ি এস। আমার খুব ভয় লাগছে। প্লিজ বাড়ি এস।
সাগর: ভয়ের কিছু নেই। আমি ফিরব। একটু সময় দাউ। প্লিজ।
কাকলি: রাত হবে?
সাগর: তা একটু হবে। তুমি চিন্তা করো না।
ওখান থেকে বেরিয়ে সেলিম চাচার কাছে যাই সাগর। কিন্তু সেলিম চাচাও বাড়িতে নেই। চাচা আবার ফোন ব্যবহার করে না। একে তাকে জিজ্ঞাসা করেও কোন উত্তর পাই না। খোঁজে অনেক।
ব্যর্থ হয়ে সাগর ফিরে যাই কাকলির কাছেই। দরজা লাগিয়ে কাকলির নগ্ন শরীরে শরীর লেপে দিয়ে মেতে ওঠে খেলায়। এক সময় কাকলি বোঝে সেক্স নয়। আজ তার ডাগর শরীরে ভালোবাসার মানুষটা মুখ লুকিয়ে কাঁদছে। কাকলি আঁকড়ে ধরে সাগরকে। সাগরের সবটুকু কষ্ট শুষে নিতে চাই ও।
ওদিকে পাশের ঘরে আজ রোহানকে বিছানা দিয়েছে। খাবার ও দিয়েছে কাকলি। কিন্তু অপমানের কমতি হয় নি। রোহানের চোখে ঘুম নেই। ওর মনে পড়ে সেই অনেক দিন আগের বাবা মা আর তার ভালো থাকার দিন গুলো। না ভালো থাকার নয়। মা ভালো ছিল কি? বাবার সেই মায়ের গায়ে হাত তোলা। সেই কথাই কথাই অপমান গুলো? সেও ভুল করেছে। তার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়ে ।
আজ সকালে ধনঞ্জয়ের কাছে গেছিলো একজন আয়া। মহিলা। আধ বয়সী। মোটাসোটা একটু বেশিই। গায়ের রং কালো। গায়ে সামান্য দুর্গন্ধ। সকালে মাছ বেচে। তারপর আয়ার কাজ করে। দিনে দুবার আসবে। কাজ করে চলে যাবে। খরচ যোগাবে কাকলি। কাকলির আদেশ মতোই সেবা কম অপমান আর অত্যাচার করে বেশি। খাবার ঠিক মতো পাই না। গলার আওয়াজ একদম কমে গেছে। আজ একটু মোটা চালের ভাত আর কি একটা তরকারি করে দিয়ে গেছে। খাবার খেয়ে বমি চলে আসে ধনঞ্জয়ের। কিন্তু কোমর থেকে নিচের দিকে আর কোনো সার নেই। ধনঞ্জয় মনে মনে গাল দেয় কাকলিকে।
পরের দিন সকালে উঠে আবার চাচাকে খোঁজা শুরু করে সাগর। সাগরের লোকেরা। কিন্তু পাই না। এভাবে আবার সময় চলে যেতে থাকে। রোহানকে আর মারধর করে না। কাকলি যদিও অপমান করে ভালোই। কিন্তু রোহান মানিয়ে নিয়েছে। মায়ের অনেক কাজ ওই করে দেয়। কাকলি সাগরকে শরীর মন সব দিয়ে পুজো করতে থাকে। সাগরও তাতে খুশি। কিন্তু সাগরের জীবন এখন লক্ষ্যহীন।