কাকলির শয়তানের পুজো - অধ্যায় ৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-49749-post-4963192.html#pid4963192

🕰️ Posted on September 24, 2022 by ✍️ Momscuck (Profile)

🏷️ Tags:
📖 959 words / 4 min read

Parent
ঘন্টাখানেক পর সাগর যখন মোবাইল চালালো প্রথমেই কাকলির মেসেজটা পেলো। বেশ বড় একটা মেসেজ। কাকলি: এমনি করে কেন সরিয়ে দিলে তুমি? সারাজীবনে যে অনুভুতিটা কোনো দিন হয় নি সেটা তোমাকে দেখে হয়েছে। স্বামী সংসার সব মিথ্যা। আমি কি এমন দোষ করলাম। কি চেয়েছি তোমার কাছে? একটু ভালোবাসা। তোমার মত করে কেউ কোনোদিন আমাকে এত কিছু বলে নি যেগুলো তুমি আমাকে বললে। আমি আমার সবটুকু দিয়ে তোমাকে চেয়েছিলাম। আর তুমি। আমারই পোড়া কপাল। তোমাকে আর কোনোদিনও কিচ্ছু বলবো না। তুমি ছি বলে চলে গেলে। আমি এতই খারাপ তো। তুমি ভালো থেকো। আমাকে আর কোনোদিন দেখতে হবে না। তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে চাই না। মেসেজের কথাগুলো পরে সাগরের মনে হলো কোনো কিশোরী তার নতুন প্রেমিকের অবহেলায় এসব লিখেছে। রাগে ঘৃণায় সাগর অগ্নিবর্ণা হয়ে মোবাইল টাকে মারলো মেঝেতে এক আছাড়। টুকরো টুকরো হয়ে গেল ওটা। তখন বিকাল। সাগর মিনিট পনের আগেই ফিরেছে। তার আজ পড়াতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। বিছানায় শুয়ে পড়লো। শীতকাল তার উপর কয়েকদিন সূর্য ওঠে নি। বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। সাগর দরজাটা বন্ধ করতে যাবে ঠিক এমন সময় দুজন পুলিশ এসে দরজায় টোকা দিলো। পুলিশের অফিসার বিদ্যুৎ সান্যাল আর সঙ্গে একজন কনস্টেবল। বিদ্যুৎ সান্যাল: আপনি ই সাগর চ্যাটার্জী? সাগর: হম কিন্তু কি দরকার? আপনারা এখানে। বিদ্যুৎ সান্যাল: আপনি কাকলি চৌধুরীকে চেনেন? সাগর বুঝতে পারে ঘটনা গুরুতর। সাগর: চিনি মানে..... আর বেশি কিছু বলতে না দিয়ে অফিসার বললো," কাকলি চৌধুরীকে আত্মহত্যায় বাধ্য করার জন্য আপনাকে একবার আমাদের সাথে যেতে হবে। এর্রেস্ট এখনই করছি না। তবে কাকলি দেবী যদি না বাঁচেন তবে আপনার জীবনে দুঃখ আছে। চলুন। ও হাঁ ভালো কথা আপনার ফোনটা আমরা উদ্ধার করেছি। এভাবে প্রমান লোপাট করা যায় না। " সাগরের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। সে কিছু বলতে পারে না। আমতা আমতা করে। পুলিশের আগমনে উৎসুক পাড়ার লোকে এগিয়ে আসে। সবার সামনে দিয়েই পুলিশের গাড়িতে সাগরকে চাপিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ খবর সেলিম চাচার কাছেও যায়। থানায় ঢুকেই দেখে ধানঞ্জয়বাবু আর তার ছেলে বসে আছে। ধনঞ্জয় সাগরকে দেখতেই চিনতে পারে, আবার হামলে পড়তে যায়। পুলিশের কারণে সে চেষ্টা ব্যর্থ হলেও সে ফুঁসতে থাকে। সাগরের পিছনে পিছনে সেলিম চাচা ও এলো।  ধনঞ্জয়কে দেখে সে দরজার বাইরেই দাঁড়ালো। একটা ইতিহাসের পাতা খুলে যায় সেলিম চাচার সামনে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে সাথে আশা আনারুলকে বলে " দেখ সাগরকে ছাড়ানোর কি পদ্ধতি আছে। আমি এসেছিলাম বলিস না। আমি গেলাম।" আনারুল অবাক হয়ে শেষে ভেতরে ঢুকে গেলো। সেই রাত আর তার পরের দু রাত থানার লক আপেই কাটাতে হলো সাগরকে। তারপরের দিন কোর্টের হলে হুইল চেয়ারে এলো কাকলি। তার জবানবন্দিতেই ছাড়া পেল সাগর। সাগরের সাথে কাকলির চোখা চোখি হলো। যদিও এই দুদিনেই বদলে গেছে অনেক সমীকরণ। কাকলীদের পাশেই বাড়ি ছোট্ট বাবানের। বাবান খুব দুস্টু। বয়স সবে তিন বছর। দুপুরে মা ওকে নিয়ে জালনার ধারে বসে। শীতকালের মিঠে রোদে বাবানের মা একটু শুয়ে নেয়। বাবান খেলে। সেই জালনা দিয়েই বাবান দেখে কাকলি কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ঢোকে। কিন্তু ওই ছোট বাচ্চা আর কি বুঝবে। অনেক খন পর মাকে জিজ্ঞাস করে কাকলি আন্টিকে কে বকেছে? প্রথমে ঝুমা কিছু বুঝতে পারে নি। খানিক পরে কাকলীদের বাড়ি থেকে সমাণে জল পড়ার আওয়াজ পেয়ে সন্দেহ হয়। তবে কি কাকলিদি বাথরুমের কল খোলা রেখেছে। দুটো কথাকে মিলিয়ে হটাৎ একটা মারাত্মক কিছু চিন্তা মাথায় আসে ঝুমার। দৌড়ে যায় কাকলীদের বাড়িতে। সব দরজা খোলা বাথরুমের সাওয়ার খোলা। আর কাকলি সোফায় পরে আছে। তারপর ডক্টরদের দয়ায় প্রাণে বেঁচে যায় , শরীর থেকে রক্ত অনেক খরচ হয়েছে। এই তিনদিনে বদলে গেছে অনেক কিছু। ধনঞ্জয় ত্যাগ করেছে স্ত্রীকে। এই ঘরে তার আর কোনো জায়গা নেই। ফিরলেই কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করবে এমনি নষ্টা মেয়েকে। আর এদিকে হাজতে থাকতে থাকতে সাগরও ঠিক করে নেয় এই অপমানের প্রতিশোধ হবে চরম। কোর্টের বাইরে বেরিয়ে আসতেই কাকলির সামনে এসে দাঁড়ালো সাগর। পুলিশের যে মহিলা কনস্টেবল টি কাকলিকে নিয়ে যাচ্ছিল সে সামান্য দাঁড়িয়ে আবার চলে গেল কাকলিকে নিয়ে। এর মাঝেই সাগরের চোখের আগুন ভাষা পরে ফেলেছে কাকলি। একটু ভয় লাগতো ওর। না জানি কি করবে। যখন ফিরে এলো সাগর পাড়ায় তখন ও উৎসুক জনতার ভিড়। ঘরে ঢুকে দেখলো সেলিম চাচা আগের থেকেই বসে আছে। হাতে একটা কিছু। সাগর ঘরে ঢুকতেই সেলিম চাচা দরজা বন্ধ করতে বললো। অবাক সাগর দরজা বন্ধ করে জিজ্ঞাস করলো কিছু হয়েছে কিনা? সেলিম : ধনঞ্জয়ের সাথে আমার পুরনো একটা হিসাব বাকি আছে সাগর। সাগর: কি? তোমার সাথে ধনঞ্জয় বাবুর হিসাব? কিসের হিসাব? এক পশলা দম নিয়ে একটা কাগজ এগিয়ে দেয় সাগরের দিকে।  সাগর হাতে নিয়ে দেখে একটা FIR এর কপি। সেলিম চাচা বলতে শুরু করে।  সেলিম: আমার বিবি ছিল। শান্তা। কাফের বাড়ির বিটি। শাদি করেছিলাম। শাদির পর নাম হয়েছিল রুকসানা। আমি কিন্তু হৈ শান্তাই বলতাম। অনেক বড় বয়সে বিয়ে। তারউপর শান্তার আগে বিয়ে হয়েছিল, বিধবা । লোকে অনেক কথা কইতো। হাসাহাসি করতো। তাই পালিয়ে এলাম। গাঁয়ে বাপের সাথে জমিতে খাটতাম। এখানে এসে পড়লাম বিপদে। খাওয়ার জোগাড় নেই। দুরাত কাটালাম এক দোস্তের বাসায়। একরাত একটা রেল ইস্টেশনে। মুশকিল হলো সারাদিন রাত খুঁজেও কোনো কাজ পেলাম না। গাঁয়েও ফিরে যাওয়া যাবে না। মুন্ডু কেটে ফেলে দেবে দুজনের। শেষে কাজ পাওয়া গেলো। একটা দোকানে বাসন মাজার কাজ। দিনে 1 বার খাওয়া দিত। মাসে 30 টাকা দেবে বলেছিল। খালপাড় বস্তির গলিতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা হলো। খড়ের চালের মাটির বাড়ি। মাস তিনেক সুখেই কাটলো। শান্তা বিবি আমার পোয়াতি হলো। হেলথ সেন্টারে দেখাতে নিয়ে গেছিলাম। কয়েকটা কলেজ পড়ুয়া ছেলে গাড়িতে যাচ্ছিল পিষে দিলো শান্তাকে। আমার চোখের সামনে।  এতটা বলে মুহূর্ত খানেকের জন্য চুপ করলো সেলিম চাচা। সাগর বললো, ও ধনঞ্জয় তার মানে খুন করেছে শান্তা চাচীকে?  সেলিম : না বাবাঃ। তারা অন্য। তারপর পুলিশ, থানা, আদালত অনেক কিছুই হলো। ধনঞ্জয়ের প্রথম মামলা ছিল ওটা। খুনিদের উকিল। বিভিন্ন ভাবে যখন ওদের বাঁচানো যাচ্ছে না। তখন বললো আমি নাকি গাড়ির সামনে শান্তাকে ঠিলে দিয়েছি। টাকার জোরে আমার উকিল, প্রমান সব কেমন ওর সুবিধা মতো বানিয়ে নিলো। হিদুর বিধবা শান্তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে এসে বেশ্যাগিরি করতাম আরো কত কি। আমার শাস্তি হলো সাত বছরের জেল।  আমি ভাগ্য বলে মেনে নিলাম। কোনোদিন প্রতিশোধের কোনো চেষ্টা করি নি। আজ আবার ওই লোকটার সামনে তোকে দাঁড়াতে হলো। এত অপমান।  সাগর ভেবে নিলো শাস্তি ও দেবে। ধনঞ্জয় চৌধুরীর মান সম্মান , টাকা, অহংকার সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবে। আর কাকলি হবে ওর অস্ত্র।
Parent