খুব শখ তাই না! - অধ্যায় ১৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42220-post-4130857.html#pid4130857

🕰️ Posted on December 19, 2021 by ✍️ Baburoy (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 643 words / 3 min read

Parent
বাইরে থেকে আওয়াজ আসছে "হ্যাঁ হ্যাঁ নিয়ে এসো এবার।"  ঘরের ভেতর ফুলি আর সুলেখা ঢুকল। ফুলি নিজের কাজ সেরে এখন একটা নতুন শাড়ি পরেছে। দুজন আমাকে বারান্দায় নিয়ে চলল। বারান্দায় ছোট একটা মন্ডপ বানানো হয়েছে। ঠাকুর মশাই বসে মন্ত্র পাঠ করছেন। সামনে বাবু ওরফে নিশিকান্ত ওরফে আমার হবু বর আসন গেড়ে ধুতি পাঞ্জাবি মাথায় টোপর পরে বসে আছে। মাথা আমার অজান্তেই নিচু হয়ে গেল। এদিক সেদিক তাকানো তখন মাথায় উঠল। এত লজ্জা আমি কোন দিন পেয়েছি? মনে পড়ল না। ওর পাশে আমাকে দুজন বসিয়ে দিল।  ঘোরের মধ্য দিয়ে সব কাজ সমাপ্ত হল। মনে আছে যখন ও আমার পানপাতা সরিয়ে মুখ দেখল মাসির সইয়েরা সবাই উলুধ্বনি দিতে লাগল। একে ওপরের গলায় মালা বদল করলাম। ফুলি আমার মাথার ঘোমটা সরিয়ে দিলে ও সিঁদুর দিয়ে আমার সিঁথি রাঙিয়ে দিল। তারপর মাসি আমার গলার মঙ্গলসূত্র খুলে ফেললে ও মাসির মঙ্গলসূত্র আমার গলায় বেঁধে দিল। হয়ে গেলাম আমি নিশিকান্তর বউ। বাবুর স্ত্রী। হয়ে গেলাম আমরা স্বামী স্ত্রী। বিয়ের সময় বুঝি এমনই হয়, কোনো কথা কোনো ভাবনা আমার মাথায় আসছে না। কেবল মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে একেরপর এক কাজ করে গিয়েছি।  এসব কাজ সম্পন্ন হবার পরে বিশু ফুলি রামগোপাল আর যারা মাসির কাজের লোক তারা সবাই খাওয়ার আয়োজন করতে লাগল। আমাকে নিয়ে আবার মাসির ঘরে বসিয়ে দেওয়া হল। মাসির সই, ফুলির বান্ধবীরা, ঠাকুর মশাই সবাইকে খাওয়াতে খাওয়াতে বেশ রাত হয়ে গেল। ঠাকুরকে দক্ষিনা দিয়ে মাসি ছেড়ে দিল। ফুলি আমাকে আর সুলেখাকে এক সঙ্গে খেতে দিল।  খাওয়ার পর সুলেখা আমাকে ওপরের ঘরে নিয়ে এল। আজ থেকে দশদিন পর্যন্ত এই ঘর আমার আর নিশির। এই ঘরে আমি ও নিশি স্বামী স্ত্রী হয়ে থাকব। ঘরে ঢুকে আমি একেবারে থ মেরে গেলাম। এ যে দেখছি পুরো ভোল পাল্টে গেছে। খাটজুড়ে ফুলের মেলা। ফুল দিয়ে পুরো বাসরসজ্জা সাজানো হয়েছে। পুরো ঘরময় ফুলের সুবাসে ম ম করছে।  আমাকে বসিয়ে সুলেখা পাশে বসল। "এটা তোমার ঘর দিদি। আমি নিজে থেকে সাজিয়েছি। কেমন হয়েছে গো?" আমি তেমন কিছু বলতে পারলাম না। শুধু বললাম "ভালো"।  এরপর মাসি আসল। ফুলি। মীনাদেবী। আরো অনেকে।  "তোমরা ওকে আশীর্বাদ করো। ও যেন সুখি হয়।" মাসি সবাইকে বলল। সবাই আমাকে আশীর্বাদ করতে লাগল। একে একে সবাই বিদায় জানিয়ে চলেও গেল। সুলেখা যাওয়ার আগে বলে গেল, দিদি আমি আবার আসব। তুমি কোনো দরকার হলে ফুলিকে দিয়ে আমাকে খবর দিও।"  "ফুলি নীচে যা। একটু পরে নিশিকে নিয়ে উপরে আসিস।" বলতে ফুলি চলে গেল। মাসি পাশে বসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। "আজ খুব খুশি জবা। মনে হচ্ছে নিজে থেকে মেয়ের বিয়ে দিলাম। তুই আমার আদরের মেয়ে রে।" মাসির কথা জড়িয়ে গেল। আমিও কেমন যেন হয়ে গেলাম।  "মাগো।।" বলে অজান্তে মাসিকে জড়িয়ে আমি কেঁদে ফেললাম।  "কাঁদিস না মা। তোর আজ বড় সুখের দিন। এইদিন কাঁদতে নেই।"  "মাসি আমি তোমার পেটে কেন জন্ম নিলাম না গো? আমি তো আজ থেকে সত্যিই তোমার মেয়ে হয়ে গেলাম। তুমি আমাকে খুশি দেখার জন্য এত করলে?"  "আমার আর কে আছে বল। তোকে আমি মেয়ে ভাবি না। তুই আমার মেয়েই। তাই আমার যা আছে সবই তো তোর না? নে এবার চোখের জল মুছে নে। নববধূর চোখে জল ভালো দেখায় না। তোকে দেখে তোর বরটাও দুঃখে চলে যাবে। আচ্ছা এবার আমি যাই, নিশি আসছে। ও এলে ওর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম নিবি। এখান থেকে ও তোর স্বামী। ওকে একদম তুই তোকারি করবি না। স্বামী বলে মর্যাদা দিবি। তুই মর্যাদা দিলে ওও তোকে স্ত্রী হিসেবে প্রাধান্য দেবে। কাঞ্চন তোকে যে কথাগুলো বলেছিল সেসব মনে রাখবি।"  "হ্যাঁ, হ্যাঁ ঠিক আছে। আমি কচি খুকি নই। আমার সব মনে আছে।"  "যাক বাবা, এবার আমার মেয়েটার মুখ খুলেছে। আর হ্যাঁ এতবেশি লজ্জা যেন পাস না যে নিশির আনন্দটা মাটি হয়ে যায়।"  "মাসি, একটা কথা জিজ্ঞেস করি, ঠাকুর যেভাবে বিয়ে দিলেন স্বামীবরণ বিয়েটা এইভাবেই হয়? ঠাকুর তো দেখ্লাম বিয়ের বিধি রীতি পালন করলেন।" আমার কথায় মাসি হেসে আমার কপালে একটা চুমু এঁকে দিল। "ও নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। শুধু জেনে রাখ তুই নিশিই এখন তোর স্বামী। আর ঘোমটাটা নিচু করে রাখ ওর যেন তুলে দেখতে হয়।" ঘোমটা নীচে নামিয়ে মাসি উঠে পড়ল। দরজা পর্যন্ত গিয়ে বলল, নিশি আসলে আমি সিড়ির দরজাটা লাগিয়ে দিচ্ছি। তুই নিশ্চিন্তে থাকতে পারিস।" বলে দরজা ভেঁজিয়ে চলে গেল।
Parent