খুব শখ তাই না! - অধ্যায় ২৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42220-post-4569855.html#pid4569855

🕰️ Posted on January 3, 2022 by ✍️ Baburoy (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 791 words / 4 min read

Parent
সকালে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে আমার ঘুম ভাঙল।  "ও দিদি, ওঠো। কত বেলা হল দেখো?" ফুলি এসে চেঁচাচ্ছে।  ধড়মড় করে উঠে বসলাম। দুজন একে অপরকে জড়িয়ে শুয়ে ছিলাম। এক মুহুর্তে কি করব বুঝে উঠতে পারলাম না।  "হ্যাঁ রে এই তো উঠেছি। কি হল?"  "আরে কত বেলা হয়েছে দেখেছ? আর কত শুয়ে থাকবে? তাড়াতাড়ি নীচে এসো।"  "হ্যাঁ হ্যাঁ আসছি। তুই যা।" বাব্বাহ সত্যিই কত বেলা হয়ে গেল। ১০:৪০ বাজে। তড়িঘড়ি বাথরুমে গেলাম। স্নান করে ঘরে এসে নিজের জামা কাপড় ঘাঁটতে দেখি সব নতুন কাপড়গুলোও রয়েছে। তার মধ্যে একটা লাল ডুরে কাটা শাড়ি আর হাত কাটা ব্লাউজ পরলাম। নিশি এখনো ঘুমিয়ে আছে। মুখে হাল্কা প্রসাধনী মেখে ওকে জাগাতে লাগলাম।  "এই নিশি ওঠো। দেখো কত সকাল হয়ে গেছে। বাবারে কি ঘুম। এই উঠবে তো?"  "কি হয়েছে?"  "আরে ওঠো। দেখো কত বেলা হয়ে গেছে? তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করে নাও। এই এখন ধরবে না। আমি স্নান করে নিয়েছি। ছাড়ো বলছি। আহ কি দুষ্টু দেখো। বদমাশ একটা। মাসি নীচে ডাকছে। ওঠো এবার"  "আর একটু ঘুমোতে দাও না।"  "সেটা রাতে খেয়াল করলে হত। সারারাত আমায় ঘুমোতে দেয়নি আর উনি এখন ঘুমোবেন। ওঠো বলছি। ছি, পুরো চাদরটা রসে ভিজে রয়েছে। ওঠো তুমি, আমি চাদরটা তুলে গুটিয়ে রাখি।। এই আমাকে ছোঁবে না। নোংরা কোথাকার। যাও বলছি। বাথরুমে গিয়ে আগে স্নান করে নাও।"  "যাচ্ছি তো। আচ্ছা বউয়ের পাল্লায় পড়লাম? দু দণ্ড ঘুমোতেও দিচ্ছে না। হ্যাঁ হ্যাঁ যাচ্ছি। ঠেলো না।"  জোর করেই ওকে বাথরুমে পাঠালাম। ও বাথরুমে ঢুকতে ঢুকতে বলল, "তোমাকে কিন্তু এই শাড়িতে খুব দারুণ দেখাচ্ছে। এসে তোমার খবর নিচ্ছি দাঁড়াও।"  "খুব শখ তাই না।" বলে ওকে মুখ ভেংচে দিলাম। তড়িঘড়ি চাদর পাল্টে ফেলে নোংরা চাদরটা একপাশে রেখে দিলাম। সিড়ি ভেঁঙে নীচে নামতে নুপুর জোড়া ছন ছন করে আমার নীচে নামার অগ্রিম জানান দিয়ে দিল। মাসি আর ফুলি রান্না ঘরে বসে গুলতানি মারছে। আমাকে দেখে দুজনই এক গাল হেসে বলল, "আয় রে বোস।" মাসি নিজের পাশে বসাল।  "কি ব্যাপার বলো তো দিদি, তোমার যে ঘুম ভাঙতেই চায় না। রাতে বুঝি ঘুম হল না? আমি তো সেই থেকে কড়া নেড়ে চলেছি। বাব্বা তোমাদের যা মড়ার মতো ঘুম।"  "তুই উঠলি কখন?"  "আমার ওঠার ঠিক আছে কি? সেই ভোর থেকে কাজে লেগে রয়েছি। কালকের রাতের সব এঁটো বাসন হাঁড়িকুড়ি মেজেঘষে করতে করতে এই বেলা হয়ে গেল। আমার কথা ছাড়ো তুমি শোনাও দিদি, তোমার বাসর কেমন কাটল গো?" ও চোখ নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল। লজ্জায় আমার মাথা নুয়ে গেল।  "দেখলে মাসি, দিদি কি লজ্জা পাচ্ছে। কাল অব্দি বিয়েতে অমত করে গেল আর এক রাতেই দিদি পুরো পাল্টে গেল? কি এমন জাদু করল গো দিদি তোমার স্বামী?"  "এই ফুলি ওকে জ্বালাতন করিস না। বেচারা এতদিন দমবন্ধ রেখে সংসার করে এসেছে। ওকে এবার প্রাণ ভরে বাঁচতে দে। আমার সোনা মা, তুই খুব সুখি হবি রে। তোকে সংসারী করতে পেরে আমার মন ভরে গেল রে।" মাসি আমাকে বুকে টেনে নিল।  "কি যে বলো না মাসি! দিদির তো এটা দ্বিতীয় সংসার তাই না?"  "তুই খুব বুঝিস, না? তোকে বেশি বকবক করতে হবে না। ওর দুঃখ আমি জানি। জবা তুই ফুলির কথায় যেন রাগ করিস না। ওর একটু মুখ আলগা। কোথায় কি বলে দেয় তার ঠিক নেই। কিন্তু মনে মনে ও তোকে খুব শ্রদ্ধা করে ভালবাসে। তোর অবর্তমানে ওর মুখে শুধু তোর কথাই চলতে থাকে।"  "হ্যাঁ রে ফুলি তাই নাকি? সেদিন কাঞ্চনও বলছিল তুই নাকি আমাকে নিয়ে গল্প করিস। কোনো বদনাম গেয়ে বেড়াস না তো?" আমার কথায় ও একটু মিটে হাসল। কিছু বলল না।  "বদনাম কেন করবে? পাগল। ও তোকে খুব মান্য গন্যি করে। গ্রামের কেউ ওর সামনে বড়াই করলে ও তোকে নিয়ে সবার মুখ বন্ধ করে। তুই হয়তো জানিস না, ফুলির তোকে নিয়ে এইসব গল্প করার জন্য গ্রামের অনেকেই তোকে চেনে। হয়তো তোকে দেখেনি কিন্তু যদি কারো সামনে বলিস আমি জবা, দেখবি তারাই তোকে বলবে ও ফুলি যার কথা বলে সেই জবা? এবার বুঝলি?"  "বারে ফুলি, তুই তো দেখছি আমার ফ্যান হয়ে গেলি?" বলে আমি হাসতে লাগলাম।  "দিদি, আমি তোমার কোনো ফেন নই গো। আমি তোমার ছোট বোনের মতো। এই বাড়িতে আমি যখন আসি মাসি আমাকে সেদিনই বলেছিল, ফুলি আজ থেকে আমার দুটো মেয়ে হল। তুই ছোট আর তোর বড় জবা। সেদিন থেকে আমি তোমাকে বড় দিদির মতই সম্মান করি দিদি।"  "আমিও ফুলি তোকে ছোট বোনের মতো ভালোবাসি রে। আমার বোনেদের সঙ্গে তো আমার আর দেখাশুনা নেই, তাই তুইও আজ থেকে আমার ছোট বোন হলি।" আমাদের এই কথাবার্তাগুলো একটু আবেগঘন হয়ে গেল। মাসি ছলছল চোখে আমাদের দেখে যেতে লাগল।  "এই তোদের এসব কথা শেষ হল? জবা তুই জলখাবার খেয়ে নে। বাবুকেও এবার জলখাবারটা দিয়ে আয়। ও কি নীচে আসবে?"  "মাসি তুমি কখন বের হবে?" ফুলি জিজ্ঞেস করল।  "এই এবার বের হই। তোরা কাজ সামলে রাখিস। আর সেই বিশুটা কোথায় গেল?"  "মাসি ও ছোটটাকে নিয়ে ডাক্তারবাবুর কাছে গিয়েছে। রাত থেকে ওর সর্দি বয়ে চলেছে। চলে আসবে এক্ষুণি।"  "মাসি কোথায় যাচ্ছ নাকি?" আমি জানতে চাইলাম।  "হ্যাঁ ওই ঠাকুরদা ডেকেছেন। কি জানি কি ব্যাপার? কি যে হচ্ছে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। আচ্ছা তোরা থাক, আমার যদি দেরি হয় তাহলে তোরা দুপুরের খাবার খেয়ে নিস। ফুলি জবাকে জলখাবার দিয়ে দে।" বলে মাসি উঠে গেল।
Parent