KOMOLATA- কোমলতার কোমল মন√ - অধ্যায় ১
PARTXONE
By..samsuuu
মদনপুর ছোট সুন্দর একটা গ্রাম। চারিদিকে সবুজ শ্যামল মাঠ দিয়ে ভরা। রাস্তার ধারে ধারে চাষের জমি বিভিন্ন ধরনের ফসল সেখানে খেলা করে বেড়াচ্ছে। গ্রামের নামকরা একটা বাড়ি নয়নভিলা। বাড়িটির কর্তা বিনয় ঘোষ। তিন জনের সুখি পরিবার।
বড় বাজার থেকে ত্রিশ মিনিট হেটে গেলে মদনপুর গ্রামের দেখা পাওয়ার যায়। সেখানে অবস্থিত পঞ্চাশ ষাটটা বাড়ির অবস্থান। সে কয়টা বাড়ি নিয়েই এই ছোট সুন্দর গ্রাম।
এই গ্রামের মাঠের বুক চিরে বয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে একটা নিঃসঙ্গ নয়নভিলা বাড়ির দেখা মিলবে। একাকি বাড়িটা দেখে অনেকে ভূল ধারনা পোষণ করে। বলে হয়ত এদের কে লোকজন গ্রাম থেকে বের করে দিছে এমন ধারনা করে। কিন্ত গ্রামের মানুষের মুখের কথায় তাদের ভূল ভেঙ্গে সেখানে ভর করে একরাশ মুগ্ধতা।
°
°
ঘোষ পদবি..!!
এই অঞ্চলের ঘোষ পদবির লোকেরা হয় গাভি পালন করে থাকে নাহলে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে গাভির দুধ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে।
কিন্তু বিনয় ঘোষের এসবের কিছুই করতে হয়নি। কারন তাকে নিজের বাবা মা বাড়ি থেকে তাজ্যপুত্র করে দিয়েছিলো যখন সে মাস্টাস পড়তো।
অপরাধ ছিলো ভালোবেসে এক নারীকে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে এসে বিয়ে করেছিলো।
নতুন বউকে নিয়ে যখন আপন ভিটাতে গিয়েছিলো. ভেবেছিলো বাবা মা ওর সিদ্ধান্ত কে গুরুত্ব দিবে বোঝার বা মেনে নেওয়ার চেষ্টা করবে।
না সেটা হয় নি বাবা মা ওকে বুঝেনি উল্টো বলেছিলো। এই গ্রামে যেটা কেউ আগে করেনি সেটাই তাদের ছেলে ঘটিয়েছে।
ফলাফল দুই পুত্রের মধ্যে ছোট পুত্রকে ত্যাজ্য করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরের পাচটা বছর তাদের অনেক বাধা বিপত্ত্বির মধ্যে দিয়ে পার হয় তাদের টুনাটুনির ভালোবাসার সংসার।
এরপর..
অবস্থান করলো মদনপুর গ্রামে। বিনয় চাকরি পেলো মদনপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে।
বাড়ি তুললো মাঠের বুক চিরে বয়ে যাওয়া রাস্তার ধারে। আস্তে আস্তে পরিপূর্ন হতে থাকলো বিনয়ের সংসার।
জিবনের অনেক খারাপ দিন পার করেছে তারা। বিনয় সব সময় নিজের পরিবার নিয়ে সুখি জীবন গড়তে চাইতো। যেটা বিনয় পেরেছে।
বিনয়ের সহধর্মিণী বিনয়ের সমান শিক্ষিত হলেও। সে নিজে প্রস্তাব দিলো যে তিনি আর বাইরে জিবনে পা দিবেন না বা তিনি চাকরি করবেন না। চাকরি করার ইচ্ছা নেই স্বামি সন্তান নিয়েই সে জিবন কাটাতে চাই । কিন্তু বিনয় তার গিন্নির কথা রাখলো না। জিবনের বহুত কাঠখোর পুড়িয়ে তাহলে পড়ালেখা করে কি লাভ হলো ?
ছেলে যখন কলেজে যাওয়ার মতো হলো। সেই সময় গিন্নিকে নিজের কলেজে জয়েন করিয়ে দিলো সহকারি শিক্ষিকা হিসিবে।
মদনপুর গ্রাম একতো ছোট তার ওপর বেশির ভাগ দরিদ্র।
অশিক্ষিত কৃষক মানুষের বসবাস। গ্রামে এরকম শিক্ষিত একটা পরিবারের বসবাস দেখে গ্রামের লোকেরা আলাদাই কদরের চোখে দেখতো। লোকজন ওদের অনেক সম্মান দিয়েছেন। গ্রামে যে অনুষ্ঠানই হোকনা কেনো সব টাই বিনয় পরিবারের আমন্ত্রণ থাকে। বিনয় গ্রামের লোকের ভালোবাসার প্রতিদান দিতো। যে কোনো বিপদে আপদে আগে বিনয় ঘোষ ও তার সহধর্মিণী এগিয়ে যেত। কোনদিন পিছু পা হয়নি .. নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী সব সময় পাশে থেকে সাহায্য করতো..!
.
বিনয় সহধর্মিণীর প্রেমে পড়েছিলেন তার কোমলমতি মন এবং ব্যাবহার দেখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্টে পড়ার সুবাদে বিনয় প্রায় খেয়াল করতো, সবাইকে নিজ থেকে এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়ি দিচ্ছে। এসব দেখে বিনয় ভাবতো এই মেয়ের নামের সাথে কি সুন্দর তার ব্যাবহার।
প্রথম যেদিন নামটা শুনেছিলো ছিলো সেদিন অবাক হয়ে গিয়েছিলো বিনয়। এটা কিভাবে সম্ভব নামের সাথে ব্যাবহারের এত মিল..
"কোমলতা"
"আহা কি সুন্দর নাম..কোমলতা কোমলতা "
কোমলতা মানুষের বিপদ আপদে পাশে থাকে সেই ছোট থেকে..
সে শুনেছিলো তার বাবা তাকে দুই বছর বয়সে মামার বাড়ি রেখে গিয়েছিলো। মা নাকি কোন পরপুরুষের সাথে ভেঁগে গিয়েছে । ওর দিদা তখন বেচে ছিল। তাই হয়ত ঠাই মেলেছিলো মামার বাড়ি।
আস্তে আস্তে বড় হতে থাকলো কোমলতা। কারো দুঃখ দেখলে ওর খুব কান্না পেতো। কারন তার নিজের জিবন ছিলো দুঃখে ভরা।
জিবনে দিদা ছাড়া কেউ সেভাবে আদর করেনি মামা মামিরা কেউ তাকে দেখতে পারতো না।
কোমলতা মাধ্যমিক গন্ডিপার করে কলেজে উঠলো তখনি মামারা বেঁকে বসলো তাকে আর পড়ানোর খরচ চালানো সম্ভব না।
বিয়ে দিয়ে দাও ঝামেলা মিটে যাক। এখবর শুনে কোমলতা খুব দুঃখ পেলো আজ যদি সে মামাদের মেয়ে হতো তাহলে কি এভাবে ফেলে দিতো তাকে..?
রাতে সে দিন দিদাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে হেঁচকি তুলে ফেললো। সে পড়তে চাই, ওর নিঃসঙ্গ জীবনে একমাত্র সঙ্গী হলো পড়াশোনা। বিয়ের পর যদি তার স্বামি বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাহলে সে কোথায় যাবে। পড়ালেখা জানা থাকলে আর সমস্যা হবে না চাকরি করে পেট চালাতে পারবে। পরদিন দিদা সকালে ছেলেদের জানালো কোমলতা কে না পড়ালো তিনি তার নামের সব সম্পত্তি নাতনির নামে লিখে দিবেন। এটা শুনে রাজি হলো মামারা।
কিন্তু বিপদ হল তখন যখন বিনয়ের সাথে প্রেম থাকা কালীন দিদা পরলোক গমন করলেন। সেই দিনই মামারা বেকে বসলো কোমলতাকে বিয়ে দিয়ে দিবে দুইদিনের ভেতরে আর ফাও খরচ টানা সম্ভব না।
বিনয় এই খবর শুনে আর দেরি করেনি তুলে নিয়ে এসেছে জিবনের প্রথম ও শেষ ভালোবাসাকে।
এখন জিবনে ভরপুর সুখ। যেখানে তাকায় সেখানে সুখ খুজে পায় । গ্রামে সব ছেলেরা বিনয়কে হেড মাস্টার হিসেবে সমীহ্ করে চলে।
কোমলতা শিক্ষিকা হিসাবে সকল ছাত্র ছাত্রীর কাছে সব চেয়ে পছন্দের। কারন কোমলতা কাউকে মারা তো দূরে থাক কোনো ছাত্রছাত্রীদের গরম দিয়েও কথা বলতো না। সবাই সম্মানের সাথে দেখতো ওকে। মায়া মমতা ভরা ব্যাবহার দেখে।
এরপর দিন গেলো মাস গেলো বছর গেলো.. শুরু হল বর্তমান!
ওদের এখন কলেজ বড় করে মাধ্যমিক পর্যন্ত করে দেওয়া হয়েছে। বিনয়ের বয়স এখন পয়তাল্লিশের কোটায় কিন্তু তাকে দেখে যে কেউ বলবে ষাট পার করে ফেলেছে।
দশ বছর আগে একটা জিনেটিক্স সমস্যা হয়েছিলো। সেখান থেকে এমন হয়েগেছে। কোমলতার এসবে কোন দুঃখ নেই। সে বিনয় কে ভালোবাসে। তাই বুড়ো অবস্থায় হোক আর তাগড়া যুবক অবস্থায় হোক। এখনো সমান ভাবে ভালোবাসে বিনয় কে..!
আজ ছুটির দিন কোমলতা রান্না ঘরে রান্না করছে। গরমে ঘেমে আছে। ব্লাউজটা ভিজে চিপচিপে হয়ে গেছে পাতলা একটা শাড়ি জড়ানো গায়ে। একেবারে সেটে আছে গায়ের সাথে। শরীরের প্রতেকটা আকর্ষণীয় অঙ্গ সুন্দর ভাবে ফুটে আছে।
বিনয় বসার ঘরে বসে টিভি দেখতে ছিলো।
তখনি সিড়ি বেয়ে নিজেদের ভালোবাসার একমাত্র সম্বল কোমলতার নয়নের মনি।
বিনয় চোখ জুড়িয়ে ছেলেকে দেখে আহ.. ওদের ছেলে যেন কোন গ্রীক গড যেমন তার গায়ের রং তেমনি তার উচ্চতা, ছয় ফিট এক উচ্চতা। শরীরের কাঠামো দেখে পুরুষ হোক আর মহিলা দ্বিতীয় বার দেখতেই হবে।
বয়স কম বলে এখনো বুকের শেপ বেশি চওড়া হয়নি।
লম্বাটে মাঝারি আকারের বডি তার। তার ছেলের আরেকটা জিনিস দেখে অবাক হয়ে যান নয়নের হাত অত্যাদিক লম্বা আর হাতের থাবা ভিষন বড় বড়..
বিনয়ের নিজ ছেলেকে নিয়ে খুব গর্ভ হয়..
সাক্ষাৎ রাজপুত্র..!!
নয়ন চোখ ডলতে ডলতে বাবাকে বলে,
নয়ন-মা কোথায় বাবা....
বিনয় খোচা দিয়ে উত্তর দিলো,
বিনয়-কেনো মাকে কি দরকার..? তুমি কি এখনো ছোট নাকি..? ঘুম উঠেই মা মা করো..তোমার এই অভ্যাস টাকে আমার কেমন লাগে জানো.? মনে হয় কি ছোট বাবু ঘুম থেকে উঠে মাকে পাশে না পেয়ে দুধ খাওয়ার জন্য ভ্যা ভ্যা করে কাদছে....হা হা হা
শেষের কথা গুলো বলে ঘর কাপিয়ে শব্দ করে হেসে উঠলো বিনয়..
নয়ন বোঝে বাবার ইয়ারকি তবুও মিছে রাগ দেখালো..
নয়ন-বাবা তুমি আবারো আমাকে খেঁপাচ্ছো কিন্তু... আমি তোমার নামে মায়ের কাছে নালিশ দিবো তখন দেখবে কেমন লাগে।
বিনয়-কেনো বাবা জিবন, মায়ের কাছে কেনো নালিশ দিবে তোমার কি বাবা নেই...?
নয়ন হাফ ছাড়ে.. বাবা যে এখন খোশ মেজাজে আছে সেটা বাবার কথায় বোঝা যাচ্ছে। নয়ন ও একটু মাস্তি করতে বলে,
নয়ন-ওকে ওকেহ
আমি আমার বাবার কাছে নালিশ দিচ্ছি।
জোরে জোরে নিঃস্বাস নিয়ে সোজা হয়ে দাড়িয়ে ভদ্র ছাত্রদের মতো করে বলে উঠে,
নয়ন- বাবাহ শোনো ওইযে বিনয় মাষ্টার আছেনা তার ছেলে নয়ন। হয়েছে কি নয়ন তার মাকে বেশি ভালোবাসে।এটা ওই বিনয় মাষ্টার সহ্য করতে পারেনা। সব সময় নয়ন কে খেপায় ছোট বাবু বলে। এটা কি ঠিক বলো বাবা.. তুমি এর একটা সমাধান করে দাও..
বিনয় ও অভিনয়ের ভিতরে ঢুকে গেছে এমন ভাব করলো সেও একটু কৌতুক করে বলে,
বিনয়-হুমমম আসলেই তো ব্যাপারটা চিন্তার বিষয়।
একটা উনিশ বছরের ছেলেকে বাবু বলা খুবি অনুচিত।
ছেলে আবার শুনলাম ক্রিকেটে খুব ভালো বোলিং করে। তার সামনে কোন ব্যাটসমান দাড়াতে পারেনা গতির কারনে। তাহলে তো তার গায়ে প্রচুর শক্তি। এমন সামত্ত্ববান ছেলেকে তিনি এভাবে বাবু বলে ছোট করতে পারেনা।
তার পরে ভাবুক হয়ে আবার বললেন..
বিনয়-পেয়েছি.. সে যেহেতু নিজেকে বড় দাবি করে..! তাহলে আমি মাষ্টার মশাই কে একটা বুদ্ধি দিবো।
নয়ন বাবার লম্বা ভাষন শুনে বলে,
নয়ন - কি বুদ্ধি
বিনয়-মেয়ে দেখতে বলবো.. কি বলো তুমি..?
বলেই মুচকি হাসি দিয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলো..
নয়ন অবাক চোখে বাবাকে বললো
নয়ন-বাবা আমি এখনো ছোট বাবু। তুমি কিভাবে এই বুদ্ধি দিতে পারো
বিনয়-কই তুমি যে বললে তুমি যে বললে তুমি বাবু না..!
নয়ন চোখ বড় বড় করে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।
তার বাবা তাকে আবারো মাষ্টারি বুদ্ধি দিয়ে কাবু করে ফেললো..
নয়ন-তুমি তুমি আবারো আমাকে বাবু বললে, তোমার সাথে আমি কথাই বলবোনা..
বলেই নয়ন নিজের লম্বা লম্বা পা দিয়ে রান্না ঘরে চলে গেলো..
বিনয় তাকিয়ে রইল ছেলের গমনের পথে।
নয়ন মা বাবার সামনে শুধু এই বাচ্চামো করে কিন্তু বাড়ির বাইরে গেলে একজন দ্বায়িত্ব বান সুপুরুষ তার ছেলে।
খুব ভালো লাগে ছেলের সাথে একটু আকটু হাসি ঠাট্টা করতে। একমাত্র ছেলে তাদের। আর কোন সন্তান হয়নি তারা নিতে চেয়েছিলো কিন্তু বিনয়ের অসুস্থতার কারনে সেটা সম্ভব হয়নি।সেটা নিয়ে অবশ্যই কোমলতাকে প্রকাশ্যে আফসোস করতে দেখেনি তিনি।
তবুও.. মনে একটু খুঁত থেকে যায়..
যখন নয়ন জন্মেছিলো তখন তাদের টাকা পয়সার কত অভাব। আর এখন তাদের টাকা ভরপুর স্বামি স্ত্রি দুজনি চাকরি করছে টাকার ছড়াছড়ি।
সন্তান হলোনা.. এই নিয়ে কোমলতার আফসোস না থাকলেও বিনয়ের অনেক গভীর দীর্ঘশ্বাস বের হয় যখনি মনে পড়ে তার জন্য তার স্ত্রি পরিপুর্ন না.. কিছুটা হলেও ঘাটতি থেকে যায়। এই নিয়ে বিনয়ের বা কোমলতার খুব যে কষ্ট তাও না। তাদের আদরের চোখের মনি নয়ন।
ছেলেটা কোমলতার কলিজা বলা যায়। আসলেই এতিম রা হয়তো নিজের সন্তানদের একটু বেশিই ভালোবাসে।
সে এবার টিভি বন্ধ করে রান্না ঘরের দিকে হাটলো।
আস্তে করে ভিতরে গেলো।
হুমমম যা ভেবেছিলো তাই।
নায়ন তার মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে মায়ের গলায় মুখ গুজে আস্তে আস্তে বিরবির করে বাবার নামে নালিশ দিচ্ছে মায়ের কাছে। আর তার গিন্নি হু হা করে প্রতিউত্তর করছে। আর দুই হাত চলছে কড়াইয়ের ভেতরে হাতে খুন্তি..
বিনয়-হুমমমম... হুম ম-ম।
সংকেত দিলেন যে আসামি হাজির এবার যা বলার তাকে বলুন। কিন্তু দেখা গেলো তার দিকে এই দুই মানব-মানবির কেউ তার দিকে ফিরেই তাকালো না। বিনয় দেখলো ছেলে তার শব্দ শুনে নিজের মুখটা আরো লুকিয়ে রাখলো মায়ের ঘামন্ত গলায়।
একটু পর কোমলতা মুখ খুললো..
কোমলতা-কি চাই
বিনয়-বলছিলাম কি আমাকে কি আজ খেতে দেওয়া হবে..?
কোমলতা- হবে কিন্ত তার আগে তোমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিচ্ছি এখনি।
বলে হাত থেকে খুন্তি রেখে দিয়ে গায়ের সাথে চিপকে থাকা ছেলেকে ছাড়িয়ে নিলো।
স্বামির সামনে গিয়ে মুখোমুখি দাড়িয়ে ছেলেকে ডাকলো।
কোমলতা-সোনা এদিক আয় তো..
মায়ের ডাকে মায়ের পাশে দাড়ালো
কোমলতা-বাবার পাশে গায়ে গা লাগিয়ে দাড়া..
নয়ন তাই করলো। সে বুঝতে পারছে না মা কি করতে চাইছে।
কোমলতা-এবার বলো কে বাবু তুমি নাকি আমার ছেলে।
দেখো ভালো করে দেখে নাও তোমার থেকে আমার ছেলে কত লম্বা। তুমি কত কেজি আটচল্লিশ কেজি আর আমার ছেলে পয়ষট্টি কেজি। এবার বলো কে বাবু তুমি নাকি আমার টা..?
নয়ন মায়ের এমন বাচ্চামো দেখে ফিক করে হেসে দিলো।
নয়ন- হাহ.. হা হা..
(হাসতে হাসতে) মা জানো বাবা আমাকে কি বলেছে..? আমি নাকি ঘুম থেকে উঠে তোমার দুধ খাওয়ার জন্য কান্না করি। যেমন বাবুরা ছোট থাকতে করে থাকে।
কোমলতা- দরকার পড়লে খাওয়াবো। তার আগে তোর বাবাকে সোজা করেনি দাড়া। বলো কিহলো..?
বিনয় হতবাক নজরে তাকিয়ে আছে তার বউটা তাকে এভাবে জব্দ করবে ভাবেনি সে। নাহ না মেনে নেওয়া যাবে না..
নিজে একজন হেড মাষ্টার। সে যদি একজন যদি জুনিয়ায় শিক্ষিকার কাছে কথায় হেরে যায় তাহলে তো তার মান যাবে।
বিনয়-বাবা নয়ন বলোতো নিউটনের সুত্র কি..?
মা আর বেটা দুজনি তব্দা খেয়ে গেলো।
এই গাই তার বাছুরের পড়ালেখার নমুনা জানে। মায়ের মন হায় হায় করে উঠলো ইশশ ওর বাচ্চাটা যদি একটু লেখা পড়ায় ভালো থাকতো তাহলে আজ হেড মাষ্টার করে জব্দ করতে পারতো। আজও হেরে গেলো মাষ্টারের সাথে..
নয়ন- মা দেখো বাবা আজও চিটিং করলো..
বিনয়-(মুচকি হেসে) আসলেই কি চিটিং করলাম বলতো গিন্নি। তোমার ছেলে আমার পাওয়ারে কলেজে থাকতে সাইন্স নিয়ে পড়েছে। ভালো ছাত্র দেখে সিট ফেলালাম পাশও করলো তাকে দেখে. কিন্ত সামান্য জিনিস জিগ্যেস করলাম পারলো না। তাতে কি প্রমান হয় বলোতো গিন্নি।
এটাই প্রমান হয় যে তোমার ছেলে গোবর মাথা নিয়ে একজন বাবু বাছুর।
নাহ এই লোকের সাথে সে এই জিবনে পারবে না।
কোমলতা এবার ছেলেকে বললো,.
কোমলতা - যা সোনা... টেবিলে বস আমি খাবার আনছি..
নয়ন বাবা মা রান্না ঘরে রেখে টিভি চালু করে ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে শুরু করলো। তার একটাই স্বপ্ন খেলোয়ার হওয়া..!
বিনয় দেখলো তার স্ত্রির বাদামি কালারের ত্বকে হালকা হালকা ঘাম।
জোরে জোরে নিঃস্বাস নেওয়ার তালে তালে তার ভারি বুকটা অস্বাভাবিক উঠানামা করছে। লাল শাড়ি টা কোন রকম বুকের উপরে দিয়ে রাখা। কালো রংয়ের ব্লাউজটা ঘামে ভিজে গেছে পুরোটাই।
আস্তে করে স্ত্রির মুখটা দুই হাতে ধরে গোলাপের পাপড়ির মতো পুরু ঠোটটা নিজের আয়াত্বে নিয়ে নিলো।
এবার এক হাত দিয়ে শাড়ির আচলটা মেঝেতে ফেলেদিলো।সেই হাত দিয়ে খামছে ধরলো নিজের স্ত্রির সব থেকে সুখের সব থেকে স্পর্শ কাতর চল্লিশ ডাবল ডি সাইজের মধু ভান্ডার টা। মুখ দিয়ে চালালো হিংস্রতা চুষে নিতে চাইলো কোমলতার মুখের সব কামনিয় রস।
কোমলতা এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিলো স্বামির বাহু বন্ধন থেকে।
বিনয় একটু পিছিয়ে গেলো ঝাকিতে...
একটু সময়ের ব্যাবধানে কোমলতা বিধস্ত হয়ে গেছে..
বুকে শুধু ব্লাউজটা নিয়ে দাড়িয়ে আছে শাড়ির আচল মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। হাপাচ্ছে সে..
বিনয়ের মনে হলো স্ত্রির মাইজোরা ব্লাউজ ছিড়ে বের হয়ে আসবে। নিচের দিকে একটা হুক খোলা নিচ দিয়ে কিছু সোন্দয্য বের হয়ে আছে। এই দৃশ্য টা খুব হট লাগলো বিনয়ের কাছে..
বিনয়-কি হলো জান..? তুমি কি শর্ত ভূলে গিয়েছো..?
কোমলতা হাপাতে হাপাতে নিচু হয়ে শাড়ির আচল তুলে গায়ে জড়ালো...
ইশশশ বদ মাষ্টারের সাথে যে কেনো সে এমন চুক্তি করেছিলো। চুক্তি ছিলো দুজনের যেকোনো ধরনের ছোট হোক বা বড় তর্ক তে যে জিতবে সে যা বলবে তা মেনে নিতে হবে। যার ফল স্বরুপ বিনয় তার ঠোটের উপরে এ তর্ক জেতার রোমান্টিক অত্যাচার করে। এ নিয়ে তার কোন অভিযোগ নেই। সেও স্বামির এই সামান্য ভালোবাসা টুকু ইনজয় করে সব সময়। কিন্তু আজকে এই মুহুর্তে ইনজয় করা সম্ভব না। ছেলে বাইরে আছে মায়ের অপেক্ষায়। ছেলেকে খেতে দিতে হবে..
কোমলতা-হয়েছে হয়েছে তোমার শর্ত পরে দেখা যাবে আগে ছেলেকে খেতে দিতে হবে ভুলে গেছো..?
বিনয় এবার রসিকতা করে তার গিন্নি কে বললো..
বিনয়-কেনো তুমি তোমার বাছুর কে দুধ খেতে দাওনি...?
কোমলতা এ প্রশ্ন শুনে হতবাক হয়ে গেলো। তখন না হয় ইয়ারকি মেরে বলেছে। ছেলের কথার সাথে তাল মিলিয়ে।সেই কথা নিয়েও তার বদ স্বামি তার সাথে ঠাট্টা করছে।
নাহ এবার স্বামিকে জব্দ করার অস্ত্র মাথায় এসেছে।
কিন্তু বিনয়কে টের পেতে দিলো না তার মনে কি আছে..!
বিনয়কে ঠেলতে ঠেলতে রান্না ঘর থেকে বের করে দিয়ে বললো..
কোমলতা- (হেসে হেসে)আরেহহ যাও শুধু জ্বালাবে কি যে শান্তি পাও আমাকে জ্বালিয়ে তোমরা বাপ বেটা..
দুপুরে ভর পেট খাওয়া দাওয়া হলো।
যে যার রুমে ভাত ঘুম দিতে চলে গেলো বাপ বেটা।
কোমলতা সব থালা বাসন গুছিয়ে খাবার টেবিল সব কিছু পরিষ্কার করে।ছেলের রুমে গেলো দেখতে ছেলে ঘুমিয়েছে কিনা।দরজা খোলা ভিতরে ঢুকে পড়লো দেখলো ছেলে কার সঙ্গে ফোনে খেলার বিষয় আলোচনা করছে। তার মানে খেলতে যাবে।
নয়ন পেছন ফিরে দেখলো মা এসেছে সে ফোন টা কেটে দিলো..
নয়ন-মা আমি একটু খেলতে যায়। আজ গুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচ আছে..
আবদারের সুরে বললো.. মা না যেতে দিলে সে খেলতে যেতে পারবে না..কারন তার বাবা মা তাকে এতটাও সাহস কখনো দেয়নি যে তাদের কথার উপর দিয়ে সে চলতে পারবে...
কোমলতা ঠান্ডা নরম গলায় বললো
কোমলতা-তোর ম্যাচ কয়টায়..?
নয়ন-চারটাই মা..
কোমলতা-এখন কত বাজে..?
নয়ন ঘড়ির দিকে তাকালো এক নজর
নয়ন-দুইটা পয়তাল্লিশ..
হালকা শাষনের স্বরে বলে কোমলতা..
কোমলতা-আধাঘন্টা হলেও তোমাকে ওই বিছানো শুয়া অবস্তায় দেখতে চাই আমি।সেই ভোরে ঘুম থেকে উঠে চলে গেছো পাড়ার ছেলেদের সাথে এসেছো একটাই। আধাঘন্টাও ঘুমাওনি তুমি সেসময় আবার খেয়ে উঠতেনা উঠতেই তুমি চলে যাচ্ছো।
তুমি লেখা গাফিলতি করো মেনে নিয়েছি কিন্তু তোমার স্বাস্থর দিকে তোমার এক বিন্ধু পরিমানে ধ্যান নেই আমি খেয়াল করে দেখেছি বর্তমান..!!
নয়ন এবার একটু ভয় পেলো কারন মা তার সাথে তুমি করে কথা বলছে তার মা খুব রেগে গিয়েছে।
কি যে হবে আজকে কেন যে দুপুরে একটু আগে বাড়িতে আসলোনা..
নয়ন মাথাটা নিচু করে মাকে নরম স্বরে বলে উঠলো..
নয়ন-সরি মা আর কোন দিন হবে না এমন আজকের মতো ক্ষমা করে দাও..
আর কোনদিন যাবোনা..
কোমলতা- আমি যেতে বারন করিনি।তুমি নিজের প্রতি নিজের স্বাস্থর প্রতি অনেক বেশি উদাসীন হয়ে যাচ্ছ দিনদিন..
শুধু লম্বাই হয়েছো নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছো হাড় সব বেরিয়ে পড়ছে যত দিন যাচ্ছে ততো..
(এবার ফুপিয়ে উঠে বলতে বলতে)আমার জিবনে তুমি আর তোমার বাবা ছাড়া কেউ নেই। তোমার বাপটা আজ অসুস্থতার কবলে দেখছো কি অবস্থা । টেনশনে আমার ঘুম চলে গিয়েছে। শেষ সম্বল তুমি। সেই তুমিও নিজের যত্ন নাও না শুধু মাকে কষ্ট দিতে তাইনা।
এবার শব্দ করে কান্না করে উঠলো সে তার স্বামি সন্তান ছাড়া এই জিবনের অস্তিত্বে খুজে পাই না এই দুটো মানুষ ছাড়া কি হবে তার ভাবতেই চোখে জল চলে আসে।
স্বামিটা কত কষ্টে দিন কাটায়। গায়ে শক্তি পাচ্ছেনা।
ভালো ভাবে খেতে পারেনা। রোগা শুটকি গেছে কখন কি হয়ে যাবে কে জানে..
নয়ন নিজের জিবনের অর্ধেক যার নাম যপে সেই মায়ের কান্না দেখে তার নিজের চোখ ছলছল করে উঠে।
ঝড়ের বেগে মাকে নিজের বুকে ঢুকিয়ে ফেললো যেনো মায়ের কান্না টুকু নিজের ভিতরে বিলিন করে দিয়ে মায়ের কান্না থামিয়ে দেবে..
ইশশ মা কত দুঃখ পেলো তার জন্য সে জানে তার মা এতিম। একাকি জীবন কাটিয়েছে, এখন সে আছে.. বাবা আছে। কিন্তু বাবা অসুস্থ আবার সেও মায়ের কথার বাইরে গিয়ে স্বাস্থর যত্ন নেয়না। হয়ত ওকে হারানোর ভয়ে থাকে সব সময়। নয়নের যদি কিছু হয়ে যায়, বিনয় ঘোষ ও কোমলতার অস্তিত্ব ও বংশ এখানেই শেষ ঘোষনা করা হবে। এবার মায়ের চাদের মতো গোলাগাল মুখটা আজলা করে দুই হাতে তুলে নিয়ে মায়ের মায়ায় ভরা চোখটার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে আবেগ ভরা কন্ঠে বলে উঠে,
নয়ন- মা জানো..
একটা কার্টুন দেখেছিলাম, একটা লোক থাকে তার খুব শক্তি কেউ তাকে হারাতে বা ধ্বংস করতে পারেনা। কেনো জানো..? লোকাটার জীবন বা প্রান লোকটার নিজের কাছে থাকতো না। একটা পাখির ভিতর বাস করতো। তুমি আমার সেই পাখি তোমার সামান্যতম কষ্টে আমার দম বন্ধ হয়ে যায়। তোমার চোখের জল দেখলে আমার প্রানটা ব্যাথায় ছঁটপঁট করে। আমাকে বাইরের কোনো কিছুই আঘাত করতে পারেনা কিন্তু তোমার একফোঁটা চোখের জল আমাকে শেষ করে দেয়।
এখন আমাকে বলো, তুমি আর কোনোদিন আমার সামনে কষ্টের কান্না করবে না.. তোমার চোখে আমি শুধুমাত্র সুখের কান্না দেখতে চায়। যে সুখটা কেবল আমি তোমাকে দিবো....?
নয়ন মায়ের কপালে আদর ভরা একটা চুমু দিলো চোখের পাতায় চুমু দিয়ে চোখের পানি টুকু ঠোট দিয়ে চুষে নিলো।ওর কাছে এই পানি অনেক মুল্যবান।
মাকে নিয়ে তার খাটে শুইয়েদিলো বালিশ এনে মাথার নিচে রাখলো। মায়ের আচঁল দিয়ে নিজের চোখ মায়ের চোখ মুছে বলে উঠলো..
নয়ন- শুতে লাগো আমি একটু আসছি...
কোমলতা কাতর চোখে ছেলের প্রস্থান দেখলো। ছেলেকে কি সে বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছে..? না না আর কান্না করবে না সে। সে কি জন্য কান্না করবে যার এমন সোনার টুকরা ছেলে আছে। স্বামিটা নাই হয় একটু অসুস্থ, মারা তো যায়নি। শুধু গায়ে শক্তি কমেছে আর আগের মতো খেতে পারেনা এই ছাড়া প্রাই সব কিছু ভালো। সে একটু আজকে বেশিই আবেগি হয়ে গিয়েছিলো আজকে। তারতো কেউ ছিলনা যত্ন নেওয়ার মতো। এই জন্য সন্তানের প্রতি একটু বেশি সচেতন সে। হালকা গাফিলতি সহ্য পারেনা ছেলের ।
উফফ ছেলেটা মনে হয় বেশি কষ্ট পেয়েছে। ছেলেটা কত গভির ভাবে কথা গুলো বললো এত বড় কবে হলো তার ছেলে যে শিক্ষিকা মাকে কথা দিয়ে ঠান্ডা করে দিচ্ছে।
সব মনে হয় তার বাবার কাছ থেকে পাওয়া গুন...!
নয়ন দেখলো মা বাবার ঘরে উকি দিয়ে দেখলো বাবা ঘুমাচ্ছে। বন্ধুদের ফোন করে জানিয়ে দিলো আজকে সে আসবে না খেলতে. জরুরি কাজ আছে বাসায়।
খেলার থেকে শত কোটি গুন বড় ওর কাছে মা.. মায়ের জন্য দুনিয়া ত্যাগ করতে একমুহূর্ত ভাববেনা।
নিজের ঘরে ঢুকে দেখলো মা দরজার দিকে মুখ করে কাত হয়ে শুয়ে আছে।
নয়ন সোজা গিয়ে খাটের উপরের উঠে মায়ের এক হাত আড় করে রেখে সেই হাতের উপরে মাথা দিয়ে মায়ের বুকে মুখ গুজে এক পা মায়ের পায়ের উপর তুলে দিলো হাত দিয়ি রাখলো মায়ের পিঠে । মাকে না যেনো সে কোন কোলবালিশকে জড়িয়ে ধরেছে..
কোমলতা-উমমম সোনা আমি কোনো কোলবালিশ নাকি..?
নয়ন মাকে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে দেখে সস্তির নিঃশ্বাস নিলো।মায়ের ফোমের তুলার মতো নরম বুকে মুখ গোজা অবস্তায় উত্তর দিলো বিরবির করে।
নয়ন-উম..কোনো কথা বলোনা আমি ঘুমাবো। তুমি আমার জিবন্তু কোলবালিশ তুমি জানো তোমার শরীরের মতো নরম কোলবালিশ এই দুনিয়াতে নেই।
কোমলতা ছেলের মাথাটা বুকের ভেতরে আলতো করে চেপে ধরে কপালে গভীর ভাবে আবেগ ভরা চুমু দিয়ে বললো।
কোমলতা-ঘুমা সোনা তোর মা আছে তোর পাশে ঘুমিয়ে পড়। নয়ন মাকে আরেকটু জোরে নিজের সাথে চেপে ধরে সুখের নিদ্রায় হারিয়ে গেলো......
°
°
°
to be continue