কথা মালা - বড় গল্প, বড়দের গল্প - অধ্যায় ৮
নীচে এসে মুনমুন সেন হলুদ ট্যাক্সি ডাকতে ডাকতে বললেন, "চলো, এখন আমাদের 'বয়ফ্রেন্ড' হলো সোচকার্ট বুটিক! আজকে ওকেই আমরা ডেট দেব!"
হাসির ফোয়ারা আর কথার ঝড়ের মধ্যেই তিন বন্ধু ট্যাক্সিতে চড়ে বসলেন। "দাদা, সোচকার্ট বুটিক যাবো!" মুনমুন সেনের গলার স্বরে একটু বেশিই উচ্ছ্বাস।
ট্যাক্সি ছুটল। রাস্তায় চৈত্রের রোদে পথচারীরা ছাতা মেলে হাঁটছে। সুমিত্রাদি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বললেন, "এই গরমে নতুন জামা কিনতে যাওয়াটাই তো পাগলামি!"
"পাগলামি না, থেরাপি!" ঋতু হাসলেন, "স্বামীরা যখন 'অফিস মিটিং' করে, আমরা করব 'শপিং থেরাপি'!"
ট্যাক্সির ভেতর হাসির রোল। ড্রাইভার মাঝে মাঝে রিয়ারভিউ মিররে উঁকি দিচ্ছেন—এই মধ্যবয়সী শিক্ষয়িত্রীদের কথাবার্তায় তাঁর কৌতূহল।
হঠাৎ ঋতু বললেন, "সুমিত্রাদি, তুমি যে বললে কালো খাঁড়ার কথা... তোমার স্বামীরটা কি..."
"আরে! ড্রাইভার দাদা আছেন তো!" মুনমুন সেন তড়িঘড়ি ঋতুর মুখ চেপে ধরলেন।
ট্যাক্সি সোচকার্ট বুটিকের সামনে থামতেই তিন বন্ধু গিজগিজ করে বেরিয়ে পড়লেন। দোকানের সেলসগার্লরা দেখে চমকে উঠল—এই তিন প্রাণবন্ত মহিলার আগমনে দোকানটা যেন হঠাৎ জীবন্ত হয়ে উঠল।
দোকানটি এল-আকৃতির, সামনের প্রদর্শনী অংশটি বেশ প্রশস্ত। স্টিলের র্যাকগুলো ঝকঝকে কাচের ভেতর দিয়ে রঙবেরঙের পোশাক সাজিয়ে রাখা। কাউন্টারে দাঁড়িয়ে ছিল এক তরুণী, তার বয়স ছাব্বিশ-সাতাশের কোঠায়। গোলাপি রঙের সালোয়ার কামিজ পরা মেয়েটি হাসিমুখে এগিয়ে এল, "আসুন ম্যাডামরা, ভিতরে আসুন!"
"আরে! নুসরাত ম্যাডামের নাম শুনেই তো আমাদের দোকানটা আলো হয়ে গেল!" রুকসানার চোখে চকচকে উৎসাহ, তার গোলাপি রঙের সালোয়ার কামিজে বগলে একটু ঘামের দাগ দেখা যাচ্ছে গরমে। "আমি রুকসানা, দোকানের সেলস ম্যানেজার। নুসরাত ম্যাডাম তো আমাদের প্রিয় কাস্টমার - গত মাসেই তিনটা অ্যানার্কালি স্যুট কিনে নিয়েছেন!"
সুমিত্রাদি এগিয়ে গিয়ে রুকসানার হাত ধরে বললেন, "নুসরাত তো তোমাদের দোকানের খুব প্রশংসা করে।" তারপর সঙ্গীদের পরিচয় করিয়ে দিলেন, "এঁরা আমার কলিগ - মিসেস মুনমুন সেন, মিসেস ঋতু মাইতি, আর আমি সুমিত্রা মুখার্জি।"
রুকসানা তড়িঘড়ি কাউন্টারের নিচের ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা কোকের বোতল বের করে হাতে ধরাল, "এই গরমে একটু ঠান্ডা পান করুন ম্যাডামরা..." বোতলের গায়ে জমে থাকা জলবিন্দুগুলো রুকসানার নখকাটা আঙুলগুলো ভিজিয়ে দিচ্ছিল।
দোকানের ভেতর থেকে ভেসে আসা নতুন সিল্কের মৃদু গন্ধে মন ভরে উঠছিল। এসির শীতল হাওয়ায় মিশে থাকা জেসমিন ফ্র্যাগরেন্স সবার ক্লান্তি দূর করে দিল। রুকসানার পরিপাটি বিন্যস্ত লম্বা চুল আর ফ্যাশনেবল সালোয়ার-কামিজ তার পেশাদারিত্বের সাক্ষ্য দিচ্ছিল।
"আপনারা নিখুঁত সময়ে এসেছেন, দুপুর দিকে কاس্টমার কম থাকে!!" রুকসানা উৎসাহিত হয়ে বলল, তার কণ্ঠে ছিল পেশাদার বিক্রেতার সেই চেনা জোর, "গতকালই গুজরাট থেকে নতুন ডিজাইনের শাড়ি আর ট্রেন্ডি ব্লাউজ এসেছে - একবার দেখবেন?"
ঋতুদি কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, "তোমাদের এখানে শুধু রেডিমেড নাকি সেলাইয়েরও ব্যবস্থা আছে?"
রুকসানা হাসিমুখে উত্তর দিল, "ম্যাডাম, এখন বেশিরভাগই বানিয়ে পরতে চান। তবে রেডিমেড ব্লাউজেও এখন দারুণ সব ডিজাইন আসে। অনেকে তো অন্য দোকান থেকে কিনে এনে আমাদের এখানে অল্টার করান। আমরা ২৪ ঘণ্টায় ডেলিভারি দিই।"
মুনমুন সেন মাথা নাড়লেন, "আমি সবসময় বানিয়েই পরি। ফিটিং একদম ঠিকঠাক হয়, আর..." - তিনি ইশারা করে বললেন, "বয়স বাড়লে কাস্টম মেইডই ভালো!"
রুকসানা তড়িঘড়ি বলল, "আমাদের মাস্টারজির কাজ দেখলে বানানো আর রেডিমেডের পার্থক্য বোঝা যাবে না ম্যাডাম!"
সুমিত্রাদি চোখ টিপে বললেন, "আমাদের তো বানানো ব্লাউজই পরতে হয়, দিন দিন তো মোটা হচ্ছি! আর মুনমুনের পাহাড়সম শরীর দেখেছো? বানানো ব্লাউজও কি ওই ভার সামলাতে পারবে?"
মুনমুন লজ্জায় রাগ করে বললেন, "সুমিত্রা! তোমার মুখে একটুও লাগাম নেই!"
রুকসানা সুযোগ বুঝে বলল, "মিসেস সেনের ফিগার তো একদম মডেলের মতো! লম্বা, ফর্সা, স্লিভলেস-ব্যাকলেস ব্লাউজে একদম মানায়!"
"ওরে বাবা!" সুমিত্রা হাসতে হাসতে গলা উঁচু করে বললেন, "দেখো তো, রুকসানা আমাদের মুনমুনকে আজ একেবারে ফ্যাশন শোয়ের মডেল বানিয়ে দিল!"
মুনমুন সেন তৎক্ষণাৎ দু'হাতে মুখ ঢাকলেন, কিন্তু তার ঠোঁটের কোণে আঁকা ছলছলে হাসি সবাইকে দেখিয়ে দিল আসলে তিনি খুবই খুশি।
"আমার মেয়েটার জন্য একটা মডার্ন ব্লাউজ দেখতে চাই," ঋতুদি বললেন, "সাইজ ৩০ লাগবে।"
রুকসানা তৎক্ষণাৎ স্টিলের র্যাক থেকে কয়েকটি ঝলমলে ব্লাউজ বের করে বলল, "এই নিন ম্যাডাম, একদম লেটেস্ট বলিউড স্টাইল! দেখুন না এই ডিপ নেক ডিজাইন, ওল্ড কলেজ কাট কিন্তু মডার্ন টুইস্ট!" সে ব্লাউজগুলো টেবিলে সাজাতে সাজাতে ব্যাখ্যা করল, "এখনকার মেয়েরা তো ফেস্টিভ্যাল হোক বা ওয়েডিং, সবখানেই এই স্টাইল পছন্দ করছে। পুরনো শাড়ির সাথেও কনট্রাস্ট ব্লাউজ পরার চল হয়েছে।"
হঠাৎ তার গলার সুরে বাস্তবতার ছাপ পড়ল, "কিন্তু ম্যাডাম, রেডিমেড ব্লাউজেরও সমস্যা আছে। অনেকেরই ফিটিং ঠিক হয় না, তখন দর্জির শরণাপন্ন হতে হয়। আবার কাস্টম মেড করাতে গেলে এমব্রয়ডারি, স্টিচিং - সব মিলিয়ে খরচও বেড়ে যায়।"
মিসেস ঋতু মাইতি ক্ষুব্ধ স্বরে যোগ দিলেন, "আমার মেয়েটা তো এখন অনলাইন কেনাকাটায় মত্ত! গত মাসেই একটা ডিজাইনার ব্লাউজের অর্ডার দিয়েছিল।" তার চোখ পাকিয়ে, "টাকা পাঠানোর পর কী পেল জানো? এক টুকরো সাধারণ কাপড়! হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করলে কোন উত্তরই পায়নি। ফোন নাম্বারটা চেক করে দেখলাম - গুজরাতের!"
"এসব এখন খুব সাধারণ ঘটনা হয়েছে," রুকসানা সহানুভূতিশীল সুরে বলল, "আমাদের দোকান থেকে অনলাইনে অর্ডার দিলে কিন্তু এমন হবে না ম্যাডাম। আমরা প্রতিটি অর্ডার নিজেরা চেক করে পাঠাই।"
"তা তো ঠিক," সুমিত্রা মুখার্জি এবার বাস্তবসম্মতভাবে বললেন, "কিন্তু দামটামও তো দেখতে হবে। আমাদের মতো কলেজের টিচারদের বাজেটও তো সীমিত!"
"একদম নির্ঘাত ডিসকাউন্ট দেব ম্যাডাম!" রুকসানা চোখে চকচকে উৎসাহ নিয়ে বলল, "নুসরাত ম্যাডাম তো আমাদের অতি প্রিয় কাস্টমার!"
দোকানজুড়ে আবারও গড়িয়ে পড়ল হাসির খলখলানি। রুকসানার ঠোঁটের কোণে জমল এক গোপন তৃপ্তির হাসি—বিক্রি নিশ্চিত!
"চলো মুনমুন," সুমিত্রা চোখ টিপে বললেন, "ওদের ব্লাউজ দেখা যাক, আমরা বরং ওই এক্সক্লুসিভ কালেকশনটা ঘেঁটে দেখি!"
মুনমুন সেনের চোখে জ্বলজ্বল করছে শপিংয়ের উন্মাদনা, "হ্যাঁ, একদম!"
হঠাৎ রুকসানা বাধা দিয়ে বলল, "ম্যাডাম, আপনাদের সাইজের ব্লাউজ তো ভেতর দিকে..." তারপর জোরে ডাকল, "শামীম...!"
একজন ২৪-২৫ বছরের যুবক বেরিয়ে এল—সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামায় মোড়া, মাথায় গোল সাদা টুপি। "জি রুকসানা আপা...?"
রুকসানা নির্দেশ দিল, "মিসেস মুখার্জি আর মিসেস সেনকে আমাদের কটনের কালেকশনটা দেখাও তো..."
"জি আপা!" শামীম বিনয়ের সাথে মাথা নুইয়ে বলল, "ম্যাডামরা, অনুগ্রহ করে আমার সাথে..."
সুমিত্রা আর মুনমুন একে অপরের দিকে তাকালেন - এক মুহূর্তের নীরব বোঝাপড়া! সুমিত্রা ঠোঁট কামড়ে ফিসফিস করে বললেন, "দেখলি তো মুনমুন? শামীমের টুপি দেখে নিশ্চিত খাৎনা করা...কি বলিস?"
মুনমুন সেন গম্ভীর হয়ে চাপা গলায় বললেন, "চুপ করো! ছেলেটা শুনে ফেলবে..."
শামীম চতুরতার সাথে পথ দেখাতে দেখাতে বলল, "ম্যাডামরা আসুন, আমাদের নতুন কালেকশনে সব সাইজেই এক্সট্রা ফেব্রিক দেওয়া থাকে - ফিটিং একদম পারফেক্ট হবে!"
হঠাৎ সে সুমিত্রার দিকে তাকিয়ে বুকের দিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে জিজ্ঞেস করল, "মিসেস মুখার্জি, কোন সাইজ দেখাবো? আর কোন ধরণের ডিজাইন পছন্দ করবেন?"
সুমিত্রা ও মুনমুনের গালে লজ্জার রং ফুটে উঠল। মুনমুন সেনের মতো লম্বা ও ভারী গড়ন না হলেও সুমিত্রার শরীরে বয়সের ছাপ স্পষ্ট। "এই গরমে হাতকাটাই ভালো..." বলতে বলতে সে হাত তুলে হালকা সোনালী চুলে ঢাকা বগলের দিকটা সামান্য উন্মুক্ত করল, "৪২ সাইজ হলে চলবে না...?" - এমন ভঙ্গিতে বলল যেন শামীম চোখেই মাপ নিয়ে নিতে পারে।
শামীমের চোখে পেশাদারিত্বের ঝিলিক, "ম্যাডাম, এই মডার্ন কাটের ডিজাইনটি একবার দেখুন..." - বলে সে সযত্নে একটি হালকা নীল হাফ-স্লিভ ব্লাউজ বেছে নিল, "এটি আপনার স্কিন টোনের সাথে পারফেক্ট মানাবে, আর ফিটিংও হবে একদম নিখুঁত!"
মুনমুন সেন একপাশ থেকে গম্ভীর হয়ে মন্তব্য করলেন, "আমাদের বয়সে তো ফিটিংই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার!"
সুমিত্রা ব্লাউজের হাতা টেনে দেখতে দেখতে সন্দিহান স্বরে বললেন, "এই হাতার সাইজ তো আমার জন্য হবে কিনা সন্দেহ হচ্ছে!"
শামীম আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রস্তাব দিল, "ম্যাডাম, চাইলে আমি আপনার আন্ডারআর্ম মেপে নিতে পারি? নিখুঁত ফিটিংয়ের জন্য..."
সুমিত্রা একটু ইতস্তত করে বললেন, "আচ্ছা... মেপে নাও তো। গতবার ৪২ সাইজ নিলেও এবার মনে হচ্ছে..." - বলতে বলতে তিনি হাতটা আরেকটু উঁচু করে ধরলেন, তার হালকা সোনালী চুলে ঢাকা বগলটি সামনে আসল।
শামীম দক্ষতার সাথে মাপের ফিতে নিয়ে এগিয়ে এলো। তার আঙুলের স্পর্শে ছিল প্রশিক্ষিত হালকা স্পর্শ, তবু সুমিত্রা নির্লজ্জভাবে বগলটা আরও ফুলিয়ে ধরলেন, যেন মাপ নেওয়ার মুহূর্তটা আরেকটু দীর্ঘায়িত হয়।
শামীম পেশাদার হাসি দিয়ে বলল, "ম্যাডাম, ৪২ সাইজই আপনার জন্য পারফেক্ট হবে। এই ডিজাইনে এক্সট্রা ফেব্রিক আছে, কোনো চাপ লাগবে না!"
সুমিত্রা ভ্রু কুঁচকে বললেন, "কিন্তু আমার বগলটা কি একটু বেশি ফুলে গেছে না?"
শামীম সাহস করে বগলের ভাঁজে হাত রেখে বলল, "মোটেও না ম্যাডাম!" সে সতর্কভাবে মাপ দেখিয়ে বলল, "চাইলে ট্রায়াল রুমে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।"
মিসেস মুনমুন সেনের চোখে পড়ল শামীমের পাঞ্জাবির নিচে অস্বস্তিকর উত্তেজনা। "দেখে নাও না একবার ট্রায়াল দিয়ে!" মুচকি হেসে ফিসফিস করলেন সুমিত্রাকে।
শামীম তড়িঘড়ি বলে উঠল, "ম্যাডাম, আমাদের ট্রায়াল রুমে ফুল লেন্থ মিরর আছে, সব অ্যাঙ্গেল থেকে চেক করতে পারবেন!"
সুমিত্রার চোখে চকচকে দৃষ্টি, "তাহলে এই নীলটাই ট্রাই করি।" বলতে বলতে তার ঠোঁটে খেলল এক রহস্যময় হাসি।
"একটু হুকগুলো লাগিয়ে দাও তো..." সুমিত্রার গলা ভেসে এল ট্রায়াল রুম থেকে।
মুনমুন সেনের ঠোঁটে কুটিল হাসি ফুটে উঠল। "শামীম, যাও.. একটু সাহায্য করে দাও!"।
শামীমের গলা শুকিয়ে এসেছে। "জি...জি ম্যাডাম..." বলতে বলতে সে ট্রায়াল রুমের দরজার সামনে দাঁড়াল।
"হুমম... ভেতরে আসো..!" সুমিত্রার কণ্ঠে আমন্ত্রনের ঝিলিক।
ট্রায়াল রুমের ভেতর থেকে ভেসে আসছে কাপড়ের খসখস শব্দ। শামীমের কপালে ঘাম দেখা দিয়েছে। সে দরজায় টোকা দিয়ে বলল, "ম্যাডাম... আমি..." দরজা ভেতরে ঢুকলো শামীম। "হাঁ সামনের হুক দুটো.."
ওদিকে রুকসানা এখনও ঋতু মাইতিকে ব্লাউজ দেখাচ্ছে। ঋতুদি একের পর এক ব্লাউজ বাদ দিচ্ছেন - "এটা খুব টাইট... ওটার রং ভালো না... এটা তো পুরনো ফ্যাশনের..."
মুনমুন সেন ট্রায়াল রুমের দরজার গায়ে কান পেতে রইলেন, তার শ্বাস যেন থমকে এসেছে।
"একটু উপরে... হ্যাঁ, ঠিক সেখানে..." সুমিত্রার গম্ভীর কণ্ঠস্বর ভেসে এল।
ভিতরে আটোসাটো জায়গায় সুমিত্রা ফুল-লেন্থ মিররের সামনে দাঁড়িয়ে, নীল ব্লাউজটি তার শরীরের কার্ভে আটকে আছে। শামীমের আঙুলগুলো কাঁপছে পিছনের হুকগুলো লাগাতে গিয়ে, তার হাতের পিছনটা মাঝেমাঝেই সুমিত্রার সাড়ির পল্লবের নিচের উষ্ণ ত্বক স্পর্শ করে যাচ্ছে।
"বগলের ফিটিংটা... কি খুব টাইট হচ্ছে?" সুমিত্রা ইচ্ছে করে হাতটা আরও উঁচু করে ধরলেন, সোনালী রোমে ঢাকা কোমল ত্বক উন্মুক্ত করে।
শামীমের গলায় থুতু আটকে গেল। "না...না ম্যাডাম, পারফেক্ট ফিট।" তার আঙুলগুলো সেই কোমল ত্বকে এক পলক দীর্ঘক্ষণ থেকে গেল।
বাইরে মুনমুনের নিঃশ্বাস দ্রুত হয়ে এল। তিনি শুনতে পেলেন কাপড়ের খসখস শব্দ, আর একটি তীক্ষ্ণ শ্বাসের রোল - যখন সুমিত্রা ট্রায়াল রুমের সংকীর্ণ জায়গায় ঘুরে দাঁড়ালেন, তার শরীর শামীমের সাথে ঘষা খেল।
"আয়নায় তো সবকিছু পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, না?" সুমিত্রা ফিসফিস করে বললেন, শামীমের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে - যার চোখ আটকে আছে ব্লাউজের টাইট ফ্যাব্রিকে আটকে থাকা তার পূর্ণ স্তনের রেখায়।
"জ-জি ম্যাডাম..." শামীমের গলা শুকিয়ে গেল।
"ওই যে দেখো, বগলে সুতো বেরিয়ে আছে..." সুমিত্রা ঠোঁটে কুটিল হাসি নিয়ে শামীমের হাত ধরে নিজের বগলের গভীরে নিয়ে গেলেন, "একটু ঠিক করে দিতে পারো?"
মুনমুন নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে রইলেন, কল্পনায় দেখতে পেলেন সেই দৃশ্য - সুমিত্রা কীভাবে নির্লজ্জভাবে বালে ভরা বগল উঁচু করে ধরেছে, আর শামীমের যুবক দেহ... উফ্ফ...
"আরেকটু হাত তুলুন দেখি... কোন সুতো..." শামীমের কণ্ঠে কাঁপুনি, "এক্সট্রা সুতো... ছিঁড়ে দিচ্ছি..."
এক মুহূর্ত নিস্তব্ধতা। তারপর সুমিত্রার মধুর কণ্ঠ:
"হাত দিয়ে না পারলে... দাঁত দিয়ে কামড়ে কেটে দাও..."
মুনমুনের পা দুটো যেন মাটিতে গেঁথে গেল। দরজার ওপাশ থেকে ভেসে এল কাপড়ের টানটান শব্দ, আর শামীমের একটি গভীর দীর্ঘশ্বাস...।
"আহা, ওইটা সুতো না শামীম, তুমি তো আমার বগলের চুল..." সুমিত্রার গলায় মিষ্টি কাকুতির সুর।
"মাফ করবেন ম্যাডাম, আরও একটু উঁচু করে ধরুন..." শামীমের কণ্ঠে টেনশনের টান, "এইবার ঠিক..."
"সাবধানে... ভালো করে দেখে কাটো সুতোটা..." সুমিত্রার গলা থেকে বেরিয়ে এল একটি মৃদু কাতরানো, "উম্মম..."
"আরেকটু... আরেকটু ওপরে..." ফিসফিস করে বললেন সুমিত্রা, তারপর একটু থেমে, "না না... আরেকটু বাঁদিকে..."
ট্রায়াল রুমের বাইরে মুনমুন সেনের শ্বাস আটকে আসছে। তার কল্পনায় ভেসে উঠছে সেই দৃশ্য—সুমিত্রা কীভাবে বগল উঁচু করে ধরে আছে, শামীমের মুখ তার কাছাকাছি, আর...
"এভাবে...?" শামীমের কণ্ঠে কাঁপুনি, তার নিঃশ্বাস গরম হয়ে সুমিত্রার বগলের কোমল ত্বক স্পর্শ করছে।
"হ্যাঁ... ঠিক... ওইখানেই..." সুমিত্রার গলায় মধুর টান, "কাটল...?"
"হুম্ম... এইবার একদম নিখুঁত..." শামীমের আঙুল হালকা করে বগল ঘেঁষে চলল, "মাফ করবেন... আমার... মুখের লালা লেগে গেছে..."
মুনমুনের হাতের মুঠো শক্ত হয়ে এল। তার কল্পনায় ভেসে উঠল সেই উত্তপ্ত দৃশ্য - শামীমের উষ্ণ জিভ সুমিত্রার সোনালী রোমে ঢাকা বগলে স্পর্শ করছে, দাঁতের ফাঁকে আঁটকে থাকা সূক্ষ্ম সুতো টেনে ছিঁড়ছে...
"কোনো ক্ষতি নেই..." সুমিত্রার গলায় খেলল এক রহস্যময় কাকুতি, "লালা তো শুকিয়ে যাবে... কিন্তু তুমি যে ভুল জায়গায় কামড় দিয়েছ..."
"ক-কোথায় ম্যাডাম?" শামীমের দম আটকে আসছে।
"সুতো ভেবে আমার বগলের চুলে কামড় দিয়েছ..." সুমিত্রার ঠোঁটে কুটিল হাসি, "তবে ব্লাউজটা তো ভালোই ফিটিং হয়েছে। চলো মুনমুনকে দেখিয়ে আসি।"
ট্রায়াল রুমের দরজা খুলতেই বেরিয়ে এলেন সুমিত্রা, পেছনে শামীম লজ্জায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে—তার সাদা পায়জামার সামনের দিকটা স্পষ্টভাবে ফুলে উঠেছে।
"দেখো তো মুনমুন, কেমন লাগছে!" সুমিত্রা দুই হাত উঁচু করে বগল ফাঁক করলেন, নীল ব্লাউজের আঁটসাঁট ফিটিংয়ে তার পূর্ণ বুকের রেখা আর লালা-ভেজা বগল সম্পূর্ণ উন্মোচিত।
মুনমুনের চোখ আটকে গেল সুমিত্রার চুলে ভরা বগলে, যেখানে শামীমের লালা এখনও শুকোয়নি, তারপর নিচে নামল শামীমের পাঞ্জাবির অস্বস্তিকর ফোলাভাবের দিকে। "ফিটিং তো... একদম পারফেক্ট," তিনি গলাটা খাঁড়ি করে বললেন, "শামীমের... হাতের কাজ দেখছি নিখুঁত!"
"হ্যাঁ গো!" সুমিত্রা চোখ টিপে বললেন, "দেখো না, কত সুন্দর করে এক্সট্রা সুতোটা কেটে দিলো..." – তার আঙুল বগলের ভেজা জায়গায় ঘুরিয়ে দেখালেন।
শামীমের মুখ টকটকে লাল হয়ে উঠল। সে তড়িঘড়ি পেছনের র্যাকের দিকে এগিয়ে গেল, "আমি... আমি অন্য ব্লাউজগুলো ঠিক করি..."
মুনমুন সুমিত্রার কানে ফিসফিস করে বললেন, "তোমার যে খাৎনা মাল টেস্ট করার ইচ্ছে ছিল বলছিলে না...! ছেলেটাকে দিয়েই করাবে নাকি!!"
"ও তো এখনও ট্রায়াল ভার্সন!" সুমিত্রা ঠোঁটে রহস্যময় হাসি টেনে বললেন, "ফাইনাল প্রোডাক্ট তো বাড়িতে!"
দোকানের অন্য প্রান্তে রুকসানা ঋতুদিকে বলছিল, "এই ডিজাইনটা আপনার মেয়ের জন্য একদম পারফেক্ট হবে!"
"তাহলে এইটা নিলাম," ঋতুদি দৃঢ়ভাবে বললেন।
"শামীম, বিলটা তৈরি করো... বিশেষ ছাড়সহ!" রুকসানার কণ্ঠে পেশাদারিত্বের ছাপ।
"জি আপা!" শামীম তড়িঘড়ি পাঞ্জাবির সামনের ভাঁজ সামলে নিল, কপালের ঘাম মুছতে গিয়ে।
সুমিত্রা ট্রায়াল রুম থেকে বেরিয়ে নিজের ব্লাউজ বদলালেন। মুনমুনকে টেনে নিয়ে কাউন্টারে এলেন।
"কালেকশন কেমন লাগল ম্যাডামদের?" রুকসানা উৎসাহিত হয়ে জিজ্ঞেস করল।
"খুবই ভালো," সুমিত্রা বললেন, "এই ব্লাউজটা পছন্দ হয়েছে... শুধু হাতা একটু আলগা করতে হবে।"
"হ্যাঁ, একটু বেশি টাইট হয়েছে," মুনমুন যোগ দিলেন, চোখের পলকে ইশারা করে।
রুকসানা হেসে বলল, "চিন্তার কিছু নেই মিসেস মুখার্জী! মাস্টারজি ঠিক করে কাল শামীম আপনার বাড়ি পৌঁছে দেবে... সমস্যা হবে না তো?"
"বরং খুব ভালো হবে!" মুনমুন সুমিত্রার দিকে অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন।
শামীম বিল মেলাতে গিয়ে কাগজপত্র উল্টেপাল্টে ফেলল।
"শামীম! একটু সতর্ক হও!" রুকসানা ধমক দিল।
"জি আপা..." শামীমের গলায় অস্বস্তির টান।
"মেয়ে যদি না পছন্দ করে, ফেরত দিতে পারব তো?" ঋতুদি জিজ্ঞেস করলেন।
"নিশ্চয়ই ম্যাডাম!" রুকসানা আত্মবিশ্বাসী সুরে বলল, "আমাদের রিটার্ন পলিসি খুবই ফ্লেক্সিবল।"
- চলবে