লোভী ও ভীতু - অধ্যায় ৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-47587-post-4843130.html#pid4843130

🕰️ Posted on June 16, 2022 by ✍️ Momscuck (Profile)

🏷️ Tags:
📖 652 words / 3 min read

Parent
কারোর জীবনই সবসময় একই রকম চলে না। আমার মা বাবার জীবনও চললো না। তাদের ভালোবাসা আনন্দ খুনসুটি গুলো যখন অভ্যাস হয়ে গেছিল তখনই একদিন বাবার ক্যান্সার ধরা পড়লো। ব্লাড ক্যান্সার। তখন আমার বয়স ওই 22 মতো। সিউড়ি থেকেই বাংলায় অনার্স পাস করার পর আমার MA পড়া চলছে শিলিগুড়িতে। আমি তখন শিলিগুড়িতে থাকতাম। মাসে একবার করে বাড়ি আসতাম। আমার ফাইনাল পরীক্ষার পর যখন মাকে ফোন করলাম বাড়ির ফোন বেজে বেজে কেটে গেল। গত কয়েকদিন পরীক্ষার জন্য বাড়িতে ফোন করি নি। যে সময়ের কথা বলছি তখন 2010 সাল। আমার কাছে একটা মোবাইল ফোন থাকলেও বাড়িতে কোনো মোবাইল ছিল না। তখন ও জনে জনের হাতে মোবাইল আসে নি। শিলিগুড়ি থেকে ট্রেনে চেপে সিউড়ি যাবো। সাইথিয়া তে ট্রেন বদলাতে হবে। রাতের ট্রেন কি ভুল করে আমি ঘুমিয়ে গেলাম। ট্রেন যখন হাওড়া ঢুকছে তখন আমার ঘুম ভাঙল। ইতিমধ্যে একজন সুন্দরী মেয়ের সাথে আমার একটু গাঢ় বন্ধুত্ব হয়েছে। অমৃতা। ওকে ফোন করলাম হাওড়া থেকে। ও আমার কথা শুনে হেসে হেসে পাগল। বললো কলকাতা তে যখন চলেই গেছো একটু ঘুরে নাও। আমি ও ভাবলাম বিকালের ট্রেন আছে ময়ূরাক্ষী তাতেই যাবো। এখন সবে সকাল আটটা পনেরো। যেমন ভাবা অমনি কাজ। হাওড়া নেমে বাস ধরে গঙ্গা পার করে গেলাম কলকাতায়। আগেও বহুবার বাবার সাথে কলকাতা গেছি। আমার ভালোলাগে হেঁটে হেঁটে পুরোনো কলকাতার রাস্তায় ঘুরতে। ভাবলাম ধর্মতলা থেকে পায়ে হেটে কলেজ স্ট্রিট যাবো। কলেজ স্ট্রিট পৌঁছানোর আগেই মেডিক্যাল কলেজের সামনে দেখলাম দু জোড়া চেনা মুখ। অবাক অভিব্যক্তি তাদের মুখেও। মা, ছোট মামা, পাশের বাড়ির পলাশ দা আর বাবার বন্ধু অনিমেষ কাকু। মায়ের সামনে যেতেই মা হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।গত প্রায় 14দিন ধরে বাবার জ্বর ছাড়ছে না। সিউড়ির হসপিটাল থেকে এখানে নিয়ে এসেছে। এরপর আমি ও বললাম কি হয়েছে যে আমি কলকাতায়। সে বারের মতো বাবা বাড়ি ফিরলেও বছর 2 পরেই বাবা চলে যায়। বাবা বাড়ি ফিরে আসার পর অনিমেষ কাকু আর তার বউ পূর্ণা কাকিমা অনেক করে আমাদের জন্য। আমাদের সময় অসময় ওদের সব সময় পেতাম। অনিমেষ কাকুর ছেলে প্রসেনজিৎ ছিল আমার চেয়ে বড়। কিন্তু মহা গবেট। আমি ভাবতাম তাই হয়তো আমাকে উনারা খুব ভালোবাসে। বাবা মারা যাওয়ার পর ওরা নিজেদের আসল রূপ দেখায়। বাবা মারা যাওয়ার পর পুরো সংসারের সব দায়িত্ব আমার কাঁধে এসে পড়ে। সরকারি অফিসের কাজ আমি কিছুই জানতাম বা বুঝতাম না। তাই সাহায্য নিতাম অনিমেষ কাকুর। এমনি একটা কাজে ওর সাহায্য নিয়েই ঘটলাম বিশাল বিপদ। না বুঝে এমন এক দলিলে সই করে দিলাম আমি আর মা। যাতে ব্যবসা সম্পত্তি সব অনিমেষ কাকুর নামে হয়ে গেল। যখন জানতে পারলাম তখন অনেক দেরি হয়ে গেছিলো। অনিমেষ কাকু একদিন লোক জন নিয়ে শাসিয়ে গেল। 6 মাসের মধ্যে যেন সব কিছু ছেড়ে দি। কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির বদলে মাকে 2 লাখ টাকা ছুঁড়ে দেয়। কয়েকমাস আগেই রাজ্যে ক্ষমতা বদল হয়েছে। এখন অনিমেষ কাকুর জোর অনেক বেশি। সে নতুন ক্ষমতাশীল দলের নেতা। রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক কিছুই যে বদলছিলো তা সত্যি। আমাদের জীবনেও এলো পরিবর্তন। মা আমি অনেক চেষ্টা করেও তখন পারলাম না কিছুই করতে। বাবার নামে ব্যাংকে একটা পাসবইয়ে 3 লাখ টাকা আর সেই দু লক্ষ টাকা নিয়ে আমরা উঠে গেলাম নতুন একটা ছোট বাড়িতে। মায়ের কাছে দুটো বছর সময় চাইলাম। আমি চাকরি পাবই। এই সময় আমাদের অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে বাড়িতে যদি কোনো লোক আসত তাহলে আমাদের মাসের শেষের কয়েকটা দিন কম খেয়ে বা না খেয়েও থাকতে হতো। মনে আছে একটা সময় 6 মাস মাছ ডিম মাংস চোখে দেখি নি। আমার আর অমৃতার সম্পর্ক ভেঙে যায়। আমিই ভেঙে দি। খেতেই পাই না। আবার প্রেম পীড়িত। অমৃতা সেদিন কেঁদেছিল খুব। আর বলেছিল এত দিন আমি ওকে বেশি ভালোবাসতাম, এবার থেকে সে আমাকে বেশি ঘৃনা করবে। সে নাকি আমাকে চেয়েছিল শুধু আমি নাকি স্বার্থপর তাই নিজের অসুবিধা হবে বলে আমি ওকে ছেড়ে দিচ্ছি। অনেক কেঁদেও সেদিন আমার মন গলাতে পারে নি। ভাগ্য তখন আমার সাথে খেলা খেলতে শুরু করলো। পুরোনো দলের ক্ষমতায় থাকার সময় যে ssc পরীক্ষা প্রতি বছর নিয়ম করে হতো সেই পরীক্ষা নেওয়া হয়ে গেল অনিয়মিত। 5 লাখ টাকাও সব শেষ হয়ে যাচ্ছিল। মা এই সময় নতুন ভাবে তৈরি করে সব কিছু। কি করে ? সেটাই বলবো পরের দিন ... (আমি পাটনায় এসেছি। আশা করবো একটু অপেক্ষা করবেন)
Parent