মায়ের সাথে মাছ ধরা - অধ্যায় ২৭
দিদি- না বাবা ও একদম একা আমরা না গেলে খাবেও না কিছুই। ছেলের জন্য পাগল সব সময়, অফিস গিয়ে কতবার ফোন করে ছেলে কি করে সেইসব খোঁজ নেয়।
আমি- নেবে না বুড়ো বয়সে বাপ হলে চিন্তা একটু বেশী করে আর আমার বাপ আমার কোন খোঁজ রাখত না মায়ের দৌলতে আমি জেটুকু পড়াশুনা করেছি।
মা- এই থাম তোরা যা এবার মা তুই যা তো না হলে অনেক কথা হবে।
দিদি-হ্যা চল ভাই।
আমি- চল বলে বাড়ি থেকে বের হলাম। টর্চ নিয়ে হাটা শুরু করলাম। দিদি আগে যা আমি লাইট ধরি হাটতে সুবিধা হবে।
দিদি- আচ্ছা বলে আমরা হাটতে শুরু করলাম।
আমি- দিদি রাগ করেছিস আমার উপর।
দিদি- কেন কিসের রাগ, অইসব বছিস বলে না না পাগল।
আমি- না মানে নাগর দোলায় বসে যা করেছি।
দিদি- আমি তোর দিদি সেটা ভুলে গেছিলি। এই বয়সে এরকম হয় কিন্তু আমি তোর দিদি না। এমন কাজ আর করবি না।
আমি- আমাকে মাপ করেদিস কেমন।
দিদি- ঠিক আছে ঠিক আছে আর বলতে হবেনা। চল এবার।
আমি- দিদি জামাইবাবু তোকে নিয়মিত আদর করে তো। আমাকে ভাই না ভেবে বন্ধু ভাবতে পারিস।
দিদি- আবার, না ভাই এসব নিয়ে কোন কথা বলবি না। আমার ঠিক পছন্দ না।
আমি- দিদি মা বলছিল তোর দিদিকে তোর বাবার কথায় বিয়ে দিয়েছি কিন্তু মেয়েটা সুখে নেই তাই, কারন তোদের তো অভাব নেই তাই এটা ছাড়া আমি কিছু দেখতে পাচ্ছিনা।
দিদি- যা আছে ভালো আছি আর কিছুর দরকার নেই, ছেলেটাকে মানুষ করতে পারলে হবে। তোদের এসব নিয়ে ভাবতে হবে না।
আমি- কিরে আবার বয়ফ্রেন্ড জোগার করে নিস নি তো।
দিদি- পাগল ও জানলে আমাকে মেরে ফেলবে এক গুন না থাকলে কি হবে সে গুন আছে, বাড়ি এসে মোবাইলের কল লিস্ট দেখে আমাকে ফেসবুক খুলতে দেয়না। বুঝিস না।
আমি- দিদি বুঝি বলেই তো এতকিছু জিজ্ঞেস করছি।
দিদি- মা আমাকে নিয়ে খুব চিন্তা করে তাই না ভাই।
আমি- হ্যারে মাকে নাগর দোলায় বসে জামাইবাবুর চেহারার কথা বলেছি মা শুনে খুব দুঃখ করছিল, বলছিল মেয়েটার জীবন নস্ট করে দিয়েছি আমরা। মা বলছিল যেমন আমার জীবনটা গেল তেমন আমার মেয়ের জীবনটা নস্ট করে ফেললাম।
দিদি- মায়ের আবার কি হল।
আমি- কেন বাবা ওই রকম মাল খায়, কামাই করেনা মা একাই মাছ ধরে বিক্রি করে এই কদিন আমি মাকে হেল্প করি বলেই আমাকে বলে। বাবাকে তো সামনে বলে তোমার কোন মুরাদ নেই বাবাকে একদম সইতে পারেনা। আমি বাবাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে পথে আনার চেষ্টা করেছি মাত্র। মা রেগেবলে তুমি মালখেলে আমার কাছে ঘুমাতে আসবেনা কত কি।
দিদি- তাই, ভেবেছিলামামি ভালো নেই এ তো দেখছি মাও আমার মতন। তুই ভাই মাকে দেখিস মা খুব কষ্ট করে। মায়ের অভাবের জন্য আমাকে চাকরিজীবীর কাছে বিয়ে দিয়েছে যাতে অর্থের অভাব না হয়।
আমি- হ্যা, আবার মা এখন তোর কথা ভেবে কষ্ট পায়। তুই সুখে নেই তা ভেবে। সব তো খুলে বলতে পারেনা কিন্তু হাবভাবে আমি তো সব বুঝি রে দিদি। তুই আমার কাছে বলিস আর না বলিস।
দিদি- নারে ভাই ও আমাকে খুব ভালবাসে আমারজাতে কষ্ট না হয় সবসময় ভাবে আবার সন্দেহ করে। আমার কিছু করার নেই ভাই।
আমি- দিদি আমরা যোগাযোগ রাখলে তবে আর সন্দেহ করবেনা।
দিদি- মানে আমরা তো যোগাযোগ রাখি আর কি রাখবো। এই ভাই এসেগেছি এবার আর কথা হবেনা।
আমি- দারানা এসে তো গেছি।
দিদি- না কাল অফিস গেলে তোর সাথে কথা বলব। এখন চল ঘরে চল।
আমি- তোর কোন নাম্বারে হোয়াটসাপ।
দিদি- যে নাম্বারে কথা বলি ওটাতেই।
আমি- আচ্ছা চল ঘরে যাই। বলে দরজা নক করতে জামাইবাবু দরজা খুলল।
জামাইবাবু- আস শালাবাবু আস।
আমি- যা বসে বসে ভূরিতে হাওয়া লাগাছিলেন বুঝি।
জামাইবাবু- কি করব তোমার দিদি নেই বাবু নেই এই টিভি দেখছিলাম। বসে বসে কি করব।
আমি- না রাত হল বাড়ি যাবনা।
জামাইবাবু- আমি বাড়ি থাকিনা এসে তো ভাগ্নের সাথে দিদির সাথে সময় কাটাতে পার।
আমি- না মানে মাকে একটু সময় দেই চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত চলতে তো হবে।
জামাইবাবু- তবুও সময় বের করে এস নিজের দিদির বাড়ি আসবে। দিদি একা একা থাকে তুমি না আসলে কে আসবে। আমি সকালে বের হই ফিরতে ফিরতে ৫ টা বেজে যায়। আবার নাইট পড়ে মাঝে মাঝে তকন তোমার দিদি একা থাকে ছেলেকে নিয়ে। সাম্নের সোমবার থেকে নাইট আছে তুমি এসে থাকবে এখানে।
আমি- ঠিক আছে আসবো প্রতিদিন এসে একবার দিদিকে আর আমার বাবাকে সময় দিয়ে যাবো। আর যদি নাইট চালু হয় তো আসতে হবে।
জামাইবাবু- আমার কেউ নেই তোমরা আসবে তোমরা দেখবে, আর তোমার বাবার কি অবস্থা কয়দিন দেখছিনা বাজারে।
আমি- না বাবাকে ছারাতে পারবো মনে হয় এখন আর যাচ্ছেনা।
জামাইবাবু- আমারোই একটা জায়গায় আপত্তি।
আমি- দাদা এখন যাই আপনি বিরিয়ানী খেয়েনিন।
দিদি- ভাই তুই কিছু খেয়ে যা ও রাতে এত খাবেনা।
আমি- আরে না না ওটা দাদার জন্য তোরা খা তুই আর জামাইবাবু খেয়ে নে, বলে ভাগ্নেকে কোলে নিয়ে বাবা আসি আমি।
জামাইবাবু- আচ্ছা যাও।