নিষিদ্ধ বচন bipulroy82 - অধ্যায় ১৮১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-2640-post-96733.html#pid96733

🕰️ Posted on January 16, 2019 by ✍️ pcirma (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2002 words / 9 min read

Parent
নিষিদ্ধ বচন ১০৯(৩) বাস নিউমার্কেট আসতে লোকজন হুরমুড় করে নামতে শুরু করল। এতোক্ষন সটান ছিলো রাতুলের সোনা। মানুষজন কমতে শুরু করায় সেটা ডাউন হতে লাগলো কারন তার মনে হচ্ছে সবাই তার দিকে দেখছে। রাতুল দেখলো মহিলা মোটেও নড়ছেন না। এরই মধ্যে রাতুল নিজেকে একটু পিছিয়ে এনেছে মহিলার থেকে। তার ভিতরে আদিম বাসনা খেলছে অনেকদিন পর। বাস অনেকটা খালি হতে রাতুলও মহিলাকে রেখেই নেমে গেলো। রাস্তা পেড়িয়ে নিউমার্কেটে এসে ফোন করতে শুরু করল একটার পর একটা। নাহ্ টিউশনিগুলো সব আছে। মানুষজন ওকে মনে রেখেছে সবাই। শুধু কাকলি চলে গেছে জীবন থেকে। মিষ্টি চেহারার কাকলি আর নেই রাতুলের জীবনে। এই তৃষ্ণা রাতুলের থাকবে জীবন ভর। হঠাৎ কারো ডাকে রাতুল ফিরে তাকালো। মা? তুমি কখন বেড়িয়েছো? মাকে দেখে হঠাৎ ভিমড়ি খেয়ে গেলো রাতুল। তারচে বেশী অবাক হল যখন দেখলো বাসে সামনে দাঁড়ানো মহিলার শাড়ী আর মামনির শাড়ি একই। বিষয়টা মাথাতে খেলছে কিছুতেই। মা বললেন-তুমি নিউমার্কেটে কেনো এসেছিস? রাতুল মায়ের কথার কোন জবাব না দিয়ে বলল-তুমি কেনো এসেছো আম্মু? নাজমা বললেন-আমি এসেছি তোর আব্বু আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। তিনি তার এক বন্ধুর কাছ থেকে গাড়ি কিনবেন। তোর বাবা আর তার বন্ধু এখানেই কোথাও আছেন। ডিবিবিএল এর একটা বুথ আছে সেখানে থাকতে বলেছে আমাকে। রাতুল বলল-তুমি উল্টো দিকে হাঁটছো কেন তাহলে? ওটাতো পিছনে। নাজমা বললেন আমাকে নিয়ে চল তাহলে সেখানে। রাতুল আর নাজমা নিমিষেই হাজির হল ডিবিবিএল কাউন্টারের সামনে। বাবা জামশেদ আঙ্কেলের সাথে দাঁড়িয়ে আছেন। দুজনেই পুলিশের পোষাক পরা। রাতুল কাছে গিয়ে আঙ্কেলকে সালাম দিতেই তিনি বললেন-স্যার এ আপনার ছেলে? হেদায়েত বললেন-তুমি ওকে নিয়ে এলে কেনো আবার! ওর আরো রেস্ট নিতে হবে তো! নাজমা কিছু উত্তর করলেন না। জামশেদ আঙ্কেল বললেন-স্যার আপসার ছেলেকে আমি দেখেছি আগে। মিসেস শায়লার বাড়িতে। রাতুল মুচকি হেসে দিলো। বলল-আঙ্কেল সরি। আমি সেদিনই আপনাকে চিনতে পেরেছিলাম। প্রথমে বেয়াদবি করে ফেলাতে আর পরিচয় দেইনি। বাব্বাহ্ যা ডেয়ারিং ছেলে তুমি! বললেন জামশেদ আঙ্কেল। হেদায়েত বললেন-হ্যা নিজের খেয়ে বনের মোষ তাগিয়ে বেড়ায় শুধু। বাদ দাও ওসব কথা। এখন বলো কি গাড়ি নেবে? জামশেদ বলছে প্রেমিও নিতে। আমার কাছে অত টাকা নেই। ত্রিশ লক্ষ টাকা দিতে পারবো না আমি। জামশেদের চাচার গাড়ির ব্যবসা। এই সামনের গেট দিয়ে নিউমার্কেট থেকে বেরিয়ে ডানদিকে কিছুদুর হাঁটলেই তার শোরুম। সেখানে প্রেমিও আছে। অ্যালিয়ন আছে। এক্সিও আছে। আমি এক্সিও নিবো। তুমি গাড়ির রং পছন্দ করবে। রাতুল অবাক হল। বাবা কখনো মামনির চয়েসের তোয়াক্কা করতেন তেমন মনে পড়ছে না রাতুলের। মামনিকে রীতিমতো ডেকে এনেছেন বাসা থেকে বাবা কেবল চয়েস করার জন্য। এটা অবিশ্বাস্য। মামনি বললেন আমার ব্ল্যাক পছন্দ। জমশেদ বললেন-চলেন তাহলে যাওয়া যাক। চারজন হেঁটে হেঁটে গাড়ির শোরুমে যেতে বেশী সময় লাগলো না। রাতুল এই ফাঁকেই বলল-মা ফাতেমাকে কোথায় রেখে এসেছো? মা জানালেন-তোর নানুর কাছে। এই কদিন বোনের সাথে অনেক সময় কেটেছে রাতুলের। বেশ কিছু বাক্য শিখেছে বোন। আমি খাবো। আমি যাবো। লাতুল ভাইয়া। এসব সারাদিন বলে ফাতেমা। আরেকটা বাক্য শুনে রাতুল নিরবে কাঁদে শুধু। লাতুল ভাইয়া তুমি দায়ো না। যেয়ো না বলতে পারেনা বেচারি। দায়ো না বলে। ওর বলতে ইচ্ছে করে আমি তো যাইনা বোন কাকলি চলে যায় শুধু। কাকলিকে ভুলতে রাতুল ফাতেমাকে নিয়ে মেতে থেকেছে গেল বেশ কদিন। লক্ষ্য করেছে রাতুল কোন গভীর চিন্তায় মগ্ন হলেই বোন থুতুনি ধরে ভাইয়া ভাইয়া বলে চিৎকার করেছে। শোরুমে বেশীক্ষণ সময় লাগলো না। আসলে বাবা সবই ঠিক করে রেখেছিলেন। মাকে খুশী করতেই তিনি ডেকে এনেছেন এখানে। এই মাসখানেক রাতুলের কখনো সঙ্গমের কথা মনে হয় নি। এখন মনে হচ্ছে। মামনি আজও জানেন না তার সন্তানই তাকে পাছাতে ধনের খোঁচা দিয়েছে। মামনিও সুখ নিয়েছেন। মামনি অন্য পুরুষের সাথেও সুখ নেন? কাকলিও নেবে। রাতুল শুরু থেকেই নিচ্ছে। মামনির অন্য পুরুষের সাথে সুখ নেয়া রাতুলকে অসুখী করেনি। কিন্তু কাকলিরটা অসুখী করেছে। টুম্পা প্রায়ই ফোন দিতো রাতুলকে। রাতুলের ভালো লাগতো না টুম্পার সাথে কথা বলতে। একদিন সেটা জানিয়ে দেয়ার পর সে আর ফোন করেনি। মেয়েটা নাকি অনেক কেঁদেছে রাতুল যখন অজ্ঞান ছিলো তখন। মাকে সাথে সাথে রেখেছে। কিন্তু ওর জন্যে রাতুলের মনে কোন প্রেম জমানো নেই। যদি কখনো জমে যায় তখন দেখা যাবে। আপকতত সে টুম্পার কথা ভাবতে পারছেনা।কাকলি নেই এটা মেনে নিতে সময় লাগবে রাতুলের। কত সময় সে জানেনা রাতুল। টুম্পা অভিমান করেছে। রাতুলের তাতে কিছুই যায় আসে না। গাড়ি কেনা শেষ হলে জামশেদ আঙ্কেল আর বাবা পুলিশের জীপে করে চলে গেলেন। শোরুম থেকে একজন ড্রাইভার দেয়া হল রাতুল আর মামনিকে গাড়িসহ বাসায় পৌঁছে দিতে। গাড়িতে উঠতে রাতুল মামনির হাঁটুতে হাত রেখে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল-মা বাসে ওটা আমি ছিলাম। নাজমা নির্বিকার ভাবে বললেন-বাবু আমি জানি। রাতুল অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকাতে তিনি বললেন-বাবু তবে কি অনেকদিন আগে যেদিন তোর সাথে নিউমার্কেটে আমার দেখা হয়েছিলো সেদিনও তুই ছিলি? রাতুল দুই কান বিস্তৃতি হাসি দিয়ে বলল-হ্যা মা আমি ছিলাম। নাজমা রাতুলের কাঁধে চাপড়ে দিয়ে ফিসফিস করে বললেন-শয়তান তোর দুদু টেপার ভঙ্গি দেখে আমার তাই মনে হয়েছে। রাতুলও ফিসফিস করে বলল-লাভ ইউ মা। নাজমা বললেন-আমিও বাবু, আমিও তোকে অনেক ভালোবাসি।  হঠাৎ গাড়িটা জোড়ে ব্রেক কষলো। মা আর রাতুল দেখলো সামনে একটা গাড়ি হঠাৎ ইউ টার্ন নিতে শুরু করায় তাদের ড্রাইভার জোড়ে ব্রেক কষে দিয়েছে। ঘটনাটা সেখানেই শেষ হতে পারতো। মানে দুপক্ষের ড্রাইভার চ্যাচমেচি না করলে রাতুল জানতো না অপর গাড়িতে কাকলি বসে আছে। কাকলির ড্রাইভারকে রাতুলদের ড্রাইভার গালি দিয়েছে। সেকারণে কাকলি কাঁচ নামিয়ে ড্রাইভারের সাথে চ্যাচামেচি শুরু করেছে। ও বিয়ের মেকাপ নিতে বেড়িয়েছে নিজের মা আর বান্ধবীদের সাথে। রাতুল কাকলিকে দেখে অবাক হল। ওর কিছুই ঠিক নেই। বিয়ের সাজের কনে কখনো এরকম চ্যাচামেচি করে না। মানুষ জড়ো হয়ে গেছে। কাকলি অকথ্য সব গালাগাল করছে। রাতুল নিজেকে দেখাতে গাড়ি থেকে নেমে কাকলির কাছে যেতে সে চুপ হয়ে গেলো। রাতুল শুধু বলল-একি কাকলি তোমার একি দশা! কি হয়েছে তোমার? কাকলি গাড়ি থেকে নেমে এলো কিছু না বলেই। রাস্তার মধ্যেই সে রাতুলকে জড়িয়ে ধরল। আমি ভুল করেছি রাতুল আমাকে বাঁচাও। প্লিজ আমাকে বাঁচাও। আমি এমন জীবন চাইনি কোনদিন। আমাকে কোথাও নিয়ে চলো। খোদার কসম রাতুল আমাকে কোথাও নিয়ে চলো। আমি এ বিয়ে করতে চাই না। আমি পড়াশুনা করবো। রাতুল নিজের গাড়ির দরজা খুলে কাকলিকে বলল-ঢুকে পরো যদি সত্যি পালাতে চাও। কাকলি রাতুলদের গাড়িতে উঠতে উদ্যত হতেই গাড়ি থেকে কাকলির মা চিৎকার চ্যাচামেচি শুরু করলেন। রাতুল কাকলিকে ঠেলে নিজেদের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে কাকলির মায়ের কাছে গিয়ে বললেন-আন্টি আপনি বাসায় যান। কাকলি আপনার সাথে ফোনে কথা বলবে। আমার যদি মনে হয় ওর সাথে কোন অবিচার করা হচ্ছে তবে ও যা চাইবে আমি তাই করব। আর যদি মনে হয় ও কিছু ভুল বলছে তবে আপনি যা বলবেন আমি তাই করব। দ্রুত গাড়িতে উঠে রাতুল ড্রাইভারকে বলল-তাড়াতাড়ি যান মোহাম্মদপুর। ড্রাইভার বেকুব বনে গেছে। এরকম সিন কখনো দ্যাখেনি সে। বলল-স্যার কিডন্যাপিং কেসে পরবেন কিন্তু। রাতুল বলল-সেটা আমি ভাববো। নাজমা বললেন-বাবুটার ফর্ম ফিরে এসেছে। তিনি গাড়ির বাঁদিকের কোনায় বসেছেন। কাকলি কেঁদেই চলেছে অবিরাম। রাতুল কিছু বলছে না। মিনিট দশেকের মধ্যে রাতুলের কাছে কম করে পাঁচটা ফোন এলো। একটা করেছেন ছোটভাই নিজে। তিনি শুধু বলেছেন-আমারে সবাই ছোটভাই বলে জানে। কিন্তু আমি ছোটদের কাজ করিনা। বড়দের কাজ করি। তোমার চোদ্দগুষ্টি যদি এই দেশে ভালো থাকতে চাও তবে গাড়ি নিয়ে সোজা ন্যাম ফ্ল্যাটে চলে আসো। রাতুল বলেছে-আপনি রং নাম্বারে ডায়াল করেছেন। অনুগ্রহপূর্বক সঠিক নাম্বারটি জেনে পুনরায় ফোন করুন। তারপরের ফোন পেয়েছে আনিস সাহেবের কাছ থেকে। তিনি বান্দির পুত গালি দিয়ে শুরু করেছেন। রাতুল বলেছে-রাজাবাদশাহ্ রা বান্দি রাখতো। তাদের পেটে সন্তান এলে তাদের বান্দির পুত বলত। আপনি আমাকে বান্দিরপুত বলছেন কেনো আঙ্কেল, আপনি তো রাজা নন। ভিখিরি। মানে ফকিন্নির পুত ফকিন্নি। আনিস রাগে তোতলাতে তোতলাতে বলছে-তুই নিজের অনেক ক্ষতি করতেছিস। মনে রাখিস আমি এমপি ইলেকশানের নমিনেশান পাইসি। সরকারি চাকরি ছেড়ে দিসি। তোর বাপের মত পুলিশের পেয়াদা আমার গেটের দাড়োয়ান। তোর বাপেরে খগড়াছড়ি পোষ্টিং দিমু। দুই কাকলিরে এই মুহুর্তে আমার কাছে দিয়া যাবি। রাতুল ধৈর্য ধরে শুনে বলেছে-আঙ্কেল আমি আন্টিকে বলেছি যদি কাকলির প্রতি আপনারা অবিচার করে থাকেন কোন তবে ও যা বলে তাই হবে। আর আপনারা সঠিক হলে আমি নিজে ওকে আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে আসবো। আমাকে ঘন্টাখানেক সময় দিন প্লিজ। আনিস রেগে বলেছেন-শুয়োরের বাচ্চা তোরে হজম করে ফেলবো আমি। রাতুল রাগেনি। সে বলেছে ঠিকাছে আঙ্কেল আমি অপেক্ষা করব। পরের ফোনটা আজগর সাহেবের। তিনি বলেছেন-তুমি বাসায় যেয়োনা। সেখানে পুলিশ তোমাকে এ্যারেস্ট করতে অপেক্ষা করছে। তারপর জামাল মামার ফোন পেলো রাতুল। তিনি বললেন-বাপ তুই হাচাই খেলবি? রাতুল বলল-হ্যা মামা। আমি খেলবো। জামাল মামা বললেন-তাইলে এহন বাসায় আহিস না ভাইগ্না। পরে আয়, কতক্ষন পরে। রাতুল ‘ওকে’ বলতেই তিনি ফোন কেটে দিলেন। কাকলি কেঁদেই যাচ্ছে। হেচকি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে সে বলছে তোমার সাথে প্রতারনা করে আমি ফেঁসে গেছি রাতুল। আমি সুইসাইড করব। ড্রাইভার বলল-স্যার কোথায় যাবো? রাতুল বলল-আমি তো আপনাকে বলিনি দিক বদলাতে। আপনি বাসায় যাবেন। কাকলি চিৎকার দিয়ে বলল-ওদের সব কেনা রাতুল। তুমি আজগর আঙ্কেল আর জামাল মামার কথা শুনছোনা কেনো? রাতুল কাকলির হাত ধরে ঝাকি দিয়ে বলল-আমি ভিন্ন স্টাইলে খেলি, তুমি বুঝবানা। এরপর রাতুল টিটুকে ফোন দিলো। বলল -চামেলি আন্টিকে নিয়ে মোহাম্মদপুর আসতে কতক্ষণ লাগবে টিটুভাই? টিটু বলল বস আমারে আধঘন্টা সময় দিতে পারবেন? ওকে- বলে রাতুল ফোন রেখে কাকলির কাঁধে হাত রাখলো। কাকলি কান্না থামিয়ে বলল-সত্যি তুমি পারবা? রাতুল বলল-রাতুল হয় পারে নয় মরে যায়। নাজমা চিৎকার দিয়ে উঠলেন-বাবু কি বলছিস? মরা থেকে ফিরে এসেছিস? আমার বুক খালি করে দিস না বাপ! রাতুল জবাবে বলল-মা গত একমাস কি আমি বেঁচেছিলাম? তুমি বলো আমি বেঁচেছিলাম? নাজমা সন্তানের দিকে ছলো ছলো করে চাইলেন। রাতুল যোগ করল-মা এভাবে বেঁচে থেকে কি লাভ বলো মা? কাকলি বলল-আন্টি আমাকে ক্ষমা করে দেন প্লিজ। আমি লোভে পরে গেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম কারো সম্পদ থাকলেই তার কাছে সুখ থাকে। এই যে এখানে আপনাদের মধ্যেখানে বসে আছি এখানে আমার কাছে স্বর্গ মনে হচ্ছে। ওদের জীবন খুন খারাবীর, ওদের জীবন শুধু টাকার। ওরা বিয়ে করে ঘরে একটা পুতুল রাখতে চায় যাকে শারীরিক সুখ দেয়ার মানসিকতাও ওদের নেই। ওরা জানে শুধু মানুষকে অপদস্থ করতে। টাকার গড়িমা দেখিয়ে যা খুশী তাই করতে। আমি তেমন জীবন চাইনা আন্টি। বিয়ের আগেই গায়ে হাত তুলে এমন কখনো দেখেছেন আন্টি? নাজমা কাকলিকে জড়িয়ে ধরলেন। বললেন-কি বলছো তুমি? গায়ে হাত তো তুলে জানোয়ারেরা। না মা তুমি জানোয়ারের কাছে যাবা না। সংসদ ভবনের সামনে গিয়ে রাতুল অনর্থক গাড়ি দাঁড় করালো। টিটুকে ফোন দিয়ে বলল কতক্ষণ? টিটু বাইক চালাচ্ছে। পিছনে চামেলি বেগম বসে। সে জানালো বস আর দশ মিনিট। রাতুল বলল টিটু ভাই আপনি সংসদ ভবনের মেইন গেইটে চলে আসেন। কিছু টেকনিক জানাতে হবে আপনাকে। টিটু ‘ওকে’ বলতে রাতুল মা আর কাকলিকে নিয়ে সংসদ ভবনের সামনে নেমে গেলো গাড়ি থেকে। চটপটি আর ফুচকার ককটেল অর্ডার দিলো তিনজনের জন্য। কাকলির চোখেমুখে আতঙ্ক। অপরাধবোধ আর আতঙ্কে পরীটার মুখটা ছোট হয়ে আছে। মাকে একদিকে রেখে কাকলিকে নিয়ে আরেকদিকে গেল রাতুল। হাঁটতে হাঁটতে বলল-বলবি কি সমস্যা? কাকলি বলল-জানিস লোভে আর তোর উপর জেদ করে আমি ওকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই। পরিচয়ের সময় যে আচরন সেগুলো আমি মত দেয়ার দুইদিনের মাথায় বদলে গেছে। বলেছে-নটির বাচ্চা আমি সেক্স করার জন্য তোরে বিয়ে করছি না। আমি বিয়ে করছি ঢাকায় আমার একটা ঘর দরকার। সেটা সামলানো ছাড়া তোর আর কোন কাজ নাই। পরে শুনি লোকটার আসামে বৌ ছেলেমেয়ে আছে। দুবাইতেও নাকি সংসার আছে একটা। ওর ভাতিজা রোহান সব জানে। কিন্তু সে সবসময় চাচার পক্ষে থাকে। একটা বিস্ময়কর দুনিয়া ওদের। মানুষের জীবনকে জীবনই মনে করে না। বাবু আমি ওর সাথে একদিন মাত্র সেক্স করেছি। বাবু তুই কি আমাকে সত্যি মেনে নিবি? রাতুল বলল-সেক্স করা অন্যায় কিছু নয়। তুই বল আমার জন্য তোর মনটা আছে কিনা এখনো। কাকলি দাঁড়িয়ে গেলো। বলল-তুই জানিস যেদিন ওকে মত দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই সেদিন ভেবেছিলাম তুই বেঁচে ফিরবিনা। সারারাত কেঁদেছি। তবু আমি বলছি সেটা অন্যায় করেছি। তুই আমাকে সত্যি নিবি বাবু? রাতুল চুপচাপ ওর হাতটা হাতে নিয়ে বলল-তোকে তো নিয়েই নিয়েছি বোকা। তুইই তো আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলি। কাকলির বধু বেশ হঠাৎ যেনো ঔজ্জল্য ছড়াতে লাগলো। ওর মুখ থেকে আতঙ্ক আর অপরাধবোধ সরে গেলো। বলল-বাবু আমি সত্যি অপবিত্র নই? না, মানুষ কখনো অপবিত্র হয় না৷মানুষ শুধু বদলে যায়। সেই বদলে যাওয়াটা কখনো কখনো কারো জন্যে কষ্ট বয়ে আনে। তবে আমার কাছে বদলে যাওয়া মানে নিজেকে গড়ে নেয়ার অন্য একটা পন্থা। মা এদিকে আসছে দেখে রাতুল কাকলির হাত ছেড়ে দিলো। এসেই মা বলল-বাবু পরিস্থিতির কিছু জানলি? ভাইজান আমারে বলেছেন বাসায় না যেতে। মামলা করছে ছোটভাই। আনিস সাহেবও করছেন। তুই সুস্থ হোসনি এখনো। এতো বড় ঝামেলা সামাল দিতে পারবি? রাতুল বিড়বিড় করে বলল-মা ওরা জানেনা রাতুলকে। তাই ওরা ভাবছে মামলা দিয়ে ঝামেলা করার ভয় দেখালেই আমি সরে আসবো। তুমি ভেবোনা। কাকলি নাজমার সামনেই রাতুলের বুক খামচে ধরল। নাজমা সেদিকে দেখেও না দেখার ভান করলেন। বাবুটা তেজস্বী হয়েছে আবার তিনি এতেই খুশী। তিনি জোড়ে জোড়েই বললেন-যা বাবু দুনিয়াটা জয় কর। সবাইকে দেখিয়ে দে-তুই আর দশটা মানুষের মত নোস। তুই তোর প্রেমের জন্য মমতার জন্য হাসতে হাসতে খুন হতে পারিস। দেখিয়ে দে তোর কথার নড়চড় হয় না। দেখিয়ে দে তুই যা করিস সব জেনে বুঝে করিস। কোন লাভ লোভে অন্ধ হয়ে তুই নিজেকে বিসর্জন দিস না। তুই দেখিয়ে দে নাজমা বেগমের সন্তান কখনো কথার বরখেলাপ করে না। মিনমিনে জীবন নাজমা বেগমের সন্তানের জন্য নয়। যা বাবু যা। সমাপ্ত। সমাপ্ত।। সমাপ্ত।।। সমাপ্ত।।।। সমাপ্ত।।।।।
Parent