পল্লী সমাজ - অধ্যায় ১০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-26381-post-1986989.html#pid1986989

🕰️ Posted on May 24, 2020 by ✍️ Jaybengsl (Profile)

🏷️ Tags:
📖 434 words / 2 min read

Parent
সূর্যর নিকট সব শুনিয়া বাটিশুদ্ধ পরিজন ব্যথিত ও শঙ্কিত হইল। অপূর্বর বিষয়ে রুদ্র নারায়ন কাহাকেও এতদকাল কিছু বলেন নাই।বিজয়াকেও প্রকাশ করিতে নিষেধ করিয়াছিলেন।  রাসমণী অপূর্বর ঘরের বন্ধ দরজায় কয়েকবার আঘাত করিলেও দরজা খুলিল না।  রাসমণী এমনিতেই ব্যক্তিত্ব সম্পন্না।এতদিনের জপ তপে তাঁহার ব্যক্তিত্ব আরো বৃদ্ধি পাইয়াছে।তদুপরি সন্যাসীর কথায় দেব নারায়ন ও বিভাদেবী সমেত বাটির সকলেই তাঁর সিদ্ধান্ত বিনা প্রতিবাদে মানিয়া লয় ।  আজ সন্ধ্যায় তিনি পূজার ঘরে গেলেন না।গেলেন শ্বশুর শাশুড়ির ঘরে। দেব নারায়ন আরাম কেদারায় বসিয়াছিলেন ।স্বল্প আলোয় নারীমূর্তি দেখিয়া তাহাকে ডুংরি ভাবিয়া স্তনে হাত দিবেন ভাবিয়াছিলেন।মুখ তুলিয়া অবগুণ্ঠিতা রাসমনীকে দেখিয়া চমকাইয়া গেলেন ।  রাসমনী তাঁহাকে পায়ে হাত দিয়া প্রণাম করিবার সময় বরাবরের ন্যায় তাঁহার হাতটি রাসমনীর মাথা হইতে নিতন্ব স্পর্শ করিল। দেব নারায়ন বলিলেন,"এই অসময়ে এলে বড় বৌমা।কিছু বলবে? কিছু কি বিপদ হোলো?"  রাসমনী ঘোমটার ভিতর হইতে কহিলেন,"বিপদের আর কি বাকি আছে বাবাঠাকুর।আপনি তো সবই শুনেছেন।"  দেব নারায়ন উত্তর দিলেন না। ক্ষণকাল চুপ থাকিয়া রাসমনী বলিলেন,"বাবাঠাকুর,আমি মনে করছি,আপনার ছেলে,আমার স্বামীর ঠুনকো সম্মানের চেয়ে আমার ছেলের জীবনের দাম অনেক বেশী।আমি চাই ঐ মেয়েটার সাথেই অপুর বিয়ের কথা হোক।তাদের পরিবারের খবর নেওয়া হোক।আর তেমন গলদ কিছু থাকলে আমরা তাকে গড়ে পিটে নিতে পারবো ।আপনি অনুমতি দিন।"  বিভাদেবী চোখের জল মুছিয়া বলিলেন,"হ্যা বড়বৌমা,ছোটোমোটো কারনে নাতিটা আমার মরতে চলেছে।তুমি যা বলছো তাই হবে।ওগো,তুমি তুমি রুদ্রকে জানিয়ে দাও,এখানেই আমার অপু দাদাভাইয়ের বিয়ে হবে।"  অতঃপর দেব নারায়ণের আদেশে রুদ্রকে তাহার কঠিন সিধাণ্ত বদল করিতেই হইল।  বিজয়া মারফত এই সংবাদ পৌছিবা মাত্র তারক বাবুর গৃহে যেন আনন্দের বান ডাকিল। ইতিপূর্বে বিজয়া এই বিষয়ে একবার আভাস দিয়াছিল বটে তবে পরে আর কথা না হওয়ায় তারক বাবুও বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন নাই ।  তারক বাবুর মা এখন দ্বিপ্রহরে পুষ্করিণীর ঘাটে,সন্ধায় চন্ডী মন্ডপে মানিকের মা,নেতাইয়ের খুড়ী,হাবুলের পিসি বা দত্ত বাড়ির গৃহিনীদের বলিতে লাগিলেন,"মাধব পুরুষ মানুষ,রক্ত গরম।ভুল করে একটা কাজ করে ফেলেছে।বলতে কি আমাদের যৌবন বযেসেও তো পণ ছাড়াও দু চারটে পুরুষ মানুষ আমাদের সাথে ফুর্তি করেছে।ওতে দোষ হয় না।নাকি বলো?"  তাহাতে কেহ ঘাড় নাড়াইয়া সম্মতি জানাইয়াছে,কেহ আড়ালে মুখ বাঁকাইয়াছে।  ভারতীকে চুলে রীঠা আর গায়ে হলুদ মাখাইয়া স্নান করান হইতেছে নিয়মিত।তাহার কেশ দীর্ঘ হইবে, গাত্র বর্ন উজ্জল হইবে বলিয়া। প্রতি সন্ধ্যায় বন্ধ ঘরে তারক মাস্টার কন্যাকে সাধ্বী স্ত্রীর পালনীয় কর্তব্য শিখান ।শ্বশুর বাড়ির বয়স্কদের প্রতি কেমন ব্যবহার করিতে হইবে।তাহাদের মুখের উপর কোনো কথা বলা চলিবে না।শ্বশুর শাশুড়ি কে প্রত্যহ প্রাতে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিতে হইবে ইত্যাদি  ইত্যাদি । ভারতীর যৌবন যেন আরো ফুটিয়া বাহির হইতে লাগিল। গ্রামের মানুষ এখন তারক মাস্টারের পরিবারকে মনে মনে ঈর্ষা করিলেও পথে দেখা হইলে গদগদ হইয়া চটুকারিতা করিতে ছাড়ে না।  বিজয়ার পত্র পাইয়া ইতিমধ্যে মাধবও বুক ফুলাইয়া গ্রামে ফিরিয়াছে ।  বিজয়ার কাছে ফের পত্র আসিল।দেব নারায়ন যেহেতু প্রবীণ হইয়াছেন,সেই হেতু পরিবারের কর্তা হিসাবে দেওয়ালির পর দিন রুদ্র নারায়ন স্বয়ং কন্যাকে দেখিতে আসিবেন। তখন এই বিষয়ে সমাজে মহিলাদের আসার রেওয়াজ ছিল না।
Parent