পল্লী সমাজ - অধ্যায় ৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-26381-post-1980421.html#pid1980421

🕰️ Posted on May 22, 2020 by ✍️ Jaybengsl (Profile)

🏷️ Tags:
📖 336 words / 2 min read

Parent
রুদ্রর প্রবল ব্যক্তিত্বপুর্ণ ভ্রুকুটির কাছে অপূর্ব হার মানিয়াছিলো।মনস্থ করিয়াছিল,ভারতীর ব্যপারে আর অগ্রসর হইবে না, প্রথম কয়দিন তাহাতে ভুলিবারও চেষ্টা করিয়াছে। তবুও অসুখে পড়িল।  এ অসুখ যে সহজে সারে না তাহার প্রমাণ তো লায়লা মজনু,রোমিও জুলিয়েট,দেবদাস পার্বতী।  রাতের পর রাত নিদ্রাহীনতার কারনে তাহার চোখের নীচে কালি পড়িল।আহারে রুচি নাই,দুর্বলতার কারনে মাথা ঘোরে ।বিপ্রদাস ,রমেশ কারণটি খানিকটা অনুমান করিয়া সাধ্যমত চেষ্টা করিল অপূর্বকে বোঝাইবার ।ফল হইলো না। অপূর্বর কালেজ যাওয়া বন্ধ হইলো।ধুতি চাদর নিয়মিত না ধুইবার কারনে মলিন হইল।পাঠ্য পুস্তকে ধুলা জমিলো।  সারাদিন অপূর্ব মেসের ঘরের জানলাটির কাছে বসিয়া থাকে।ভারতীকে ভুলিবার জন্য বৈকালে খালাসিটোলার দেশী মদের আড্ডায় যাইতে লাগিল। একদিন এক বিহারী ছাতুওয়ালা প্রায় অচৈতন্য অপূর্বকে ভদ্রলোক অনুমান করিয়াই মেসে পৌছাইয়া দিয়া গেল।বলিল,সে নাকি ওয়েলিংটনে ট্রাম লাইনের কাছে পড়িয়াছিল।কোনো রকমে মেসের ঠিকানাটি বলিতে পারিয়াছে । বিপ্রদাসেরা আরো শঙ্কিত হইয়া পড়িল।এই রকম চলিতে থাকিলে ভবিষ্যতে অপূর্ব ভারতীকে ভুলিতে সোনাগাছীর কোনো "ভারতী"র কাছে গেলেও তাহা অসম্ভব হইবে না হয়তো।  অপূর্বর অনুপস্থিতিতে কয়দিন বিপ্রদাস তাহার বাক্স প্যাটরা তন্ন তন্ন করিয়া তাহার বাটির ঠিকানা খুঁজিয়াছে,পায় নাই ।আজ একটি বইয়ের মধ্য হইতে ঠিকানা সমেত রুদ্র নারায়ণের পত্রটি পাইয়া গেল এবংসমস্ত অবগত হইল। বিন্দুমাত্র বিলম্ব না করিয়া বিপ্রদাস হেড পোষ্টাপিসে গিয়া রুদ্র নারায়নকে টেলিগ্রাম করিল,"অপূর্ব সিরিয়াস,কাম সুন।"  দুইদিন পর অপরান্হে একটি ঘোড়ার গাড়ি মেসের দরজায় আসিয়া দাঁড়াইল।তাহা হইতে অপূর্বর কাকা সূর্য নারায়ন নামিলেন ,সঙ্গে চাকর।তাহার মাথায় ঝুড়ি ভর্তি ফল আর কৃষ্ণগঞ্জের বিখ্যাত দধির হাঁড়ি । বিপদের সংবাদ পাওয়া সত্বেও জমিদারের স্বাভাবিক চরিত্রের সৌজন্যেই এইসব আনিতে তিনি ভোলেন নাই । অপূর্ব তখনো ফেরে নাই । অপূর্বকে না দেখিয়া তিনি আরো বিচলিত হইয়া,তাহার পীড়িত হইবার কারন জিজ্ঞাসা করায় ,বিপ্রদাস কোনো কথা না বলিয়া রুদ্র নারায়ণ লিখিত পত্রটি তাহার দিকে বাড়াইয়া দিল। অপূর্ব রাত্রি প্রায় নয়টায় মেসে ফিরিল।কাকাকে দেখিয়া হাসিয়া বাক্যালাপ করিলেও নেশাগ্রস্ত হইবার কারনে তাহার আসিবার কারন জিজ্ঞাসা করিতে ভুলিয়া গেল।  চাকরকে অপুর্বদের মেসে রাখিয়া,রাত্রিটি কোনোমতে কাছের একটি হোটেলে কাটাইয়া পরদিন প্রত্যুষেই সূর্য নারায়ন অপূর্বকে লইয়া রওয়ানা হইলেন।বিপ্রদাস ও রমেশ হাওড়া স্টেশন গিয়া তাহাদের রেলে চড়াইয়া দিয়া আসিল।  বাটিতে আসিবার পর অপূর্বকে দেখিয়া সকলেই প্রায় শিহরিত হইল।অসুস্থ অপূর্ব হিস্টিরিয়াগ্রস্ত রুগীর ন্যায়,"বাবা যা ঠিক করবেন তাই হবে,তাই হবে" বলিয়া টলিতে টলিতে নিজ ঘরটিতে ঢুকিয়া দরজা বন্ধ করিল।
Parent