প্রজনিকা - অধ্যায় ১১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-53498-post-5150335.html#pid5150335

🕰️ Posted on February 27, 2023 by ✍️ নীল পৃষ্ঠা (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1061 words / 5 min read

Parent
সেখান থেকে তারা চলে যাবে চাটহাম দ্বীপে তাদের নিজস্ব হোটেল এ। তাদের এখানে টোটাল ৩ টে ব্রাঞ্চ আছে। এর মধ্যে সব থেকে ভালো হোটেল টি হলো হলোহ্যাভলক দ্বীপ এ অবস্থিত। আর এই হ্যাভলক দ্বীপ টি তে বেশির ভাগ বাঙালি অধ্যুষিত। বাংলা ভাষাই হলো অধিবাসীদের সর্বাধিক ব্যবহৃত কথ্যভাষা। এর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ (২৮.৪৯ শতাংশ) অধিবাসী বাংলা ভাষায় কথা বলে। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন চলাকালীন বাংলা থেকে যে বিপুলসংখ্যক বিপ্লবীকে এ দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয় তথা সেল্যুলার জেলে কারাবন্দী করা হয় তাদের অনেকেই স্থায়ীভাবে এখানে রয়ে যান। সে কারণেই এ দ্বীপপুঞ্জে বাঙালির সংখ্যা বেশি। তা ছাড়া ১৯৪৭ সালে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই ভিটেমাটি হারিয়ে এ দ্বীপে দেশান্তরী হন আর চাটহাম দ্বীপে এখানে ও আগে ছিল ব্রিটিশ রাজত্ব ও জাপানি রাজত্ব, ১৭৮৮ সালে দুই নৌ-আধিকারিকের সুপারিশক্রমে ১৭৮৯ সালে তদনীন্তন গভর্নর-জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিশ, পোর্ট কর্নওয়ালিশের কাছে চাটহাম দ্বীপে একটি ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপন করেন। তাই এই জায়গা টা এখন বিশেষ ভাবে জনসমাগম ও উন্নত। সকাল ১২:১০ এ তারা "veer savarkar international airport" অবতরণ করে , এর পর তারা বিমান বন্দর এর বাইরে আসে। এর মধ্যে প্রজনিকা র মোবাইল টা বেজে ওঠে দেখে তার স্বামী ফোন করেছে। - হেল্লো, হা বলো - কি ব্যাপার বলো তো , কাল থেকে তোমায় কল করছি সুইচ অফ বলছে। চিন্তা হয় না বলো?. শোনো আমি জরুরি প্রয়োজন এ তামিলনাড়ু তে এসেছি ব্যাবসার কাজে সেটা জানানোর জন্যই কাল এতো বার ফোন করেছি। - কি তুমি নেই ?.এই যা এখন কি হবে ? -কেনো কি হয়েছে? - কিছু না। আমি তোমার এখানে এসেছি। ভেবেছিলাম তোমার মতো আমিও তোমায় সারপ্রাইজ দি। ধুর মন টা খারাপ হয়ে গেলো। - আরে ! এই দেখো ,মন খারাপ করো না । আমি খুব খুশি হলাম শুনে । ঠিক আছে আমি ৪ দিন এর মধ্যেই আসছি। ততো দিন তোমরা মা ছেলে মিলে ঘুরে দেখো না। কতো দিন পর আসলে বলো তো। চিন্তা করো না লক্ষীটি আমি খুব শিগগিরই আসছি , খুব এনজয় করবো আমরা সবাই মিলে । - কি ঘুরবো বলো তো? এই জায়গা কি আমার অচেনা?. অনেক দেখেছি , ঘুরেছি। - আচ্ছা , আমি ম্যানেজার কে বলে দিচ্ছি তোমাদের আসার খবর। বিমান বন্দর এই অপেক্ষা করো। আমাদের ম্যানেজার ই সব বন্দবস্ত করে দেবে। আমাদের হ্যাভলক দ্বীপ এর হোটেল ব্রাঞ্চ নিয়ে যাবে। ঠিক আছে? - ওকে, টাটা, লাভ ইউ। - লাভ ইউ টু বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে করতে তারা বিরক্ত হয় , প্রজনিকা ভাবে আগে থেকে বলে এলেই ভালো হতো তাহলে তো আর এতক্ষণ অপেক্ষা করতে হতো না। বহু সময় পর প্রজনিকা দেখে ম্যানাজার নিজে এসেছে তাদের নিতে , সঙ্গে আরও একজন আছে। ম্যানাজার তাদের কাছে এসে হাসি মুখে নমস্কার জানায় এবং অন্য একজন তাদের ব্যাগ গুলো তুলে নেয় । ম্যানাজার দায়িত্ব সহকারে তাদের হোটেল এর নিজস্ব রুম টিতে নিয়ে আসে আর বলে - ম্যাডাম অনেক দিন পর আসলেন , আপনাকে দেখে খুব খুশি হলাম । স্যার অনেক আপনাদের কথা বলে আপনাদের নিয়ে চিন্তা করে । "দ্য ল্যান্ড অব হেড হান্টার্স" এর সুন্দর্য আপনাদের কি আকর্ষণ করে না? প্রজনিকা একটু হাসে তার পর জবাব দেয় - দেখুন বিকাশ বাবু ( ম্যানেজার) এই সব কিছুর বাইরেও মানুষ এর অনেক স্বপ্ন আছে । জীবন এর সংগ্রামে মানুষ তো কতো কিছুই ভাবে সব কি পূরণ হয়?. এখানে শিক্ষার হার ৭৮ শতাংশ হলেও। স্কুল-কলেজ অবধি পড়ালেখার সুযোগ থাকলেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ বা চিকিৎসা ও প্রকৌশল বিষয়ে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধে নেই। তাই পরিস্থিতি সব বদলে দিয়েছে। - জি ম্যাডাম , তা ঠিক। স্যার আপনাদের আসার খবর জানিয়েছে। অনেক দিন পর আসলেন , ভালোই হলো এই সুযোগে মন খুলে ঘুরে নিন। - কোথায় ঘুরবো এই সব ই তো ঘোরা, ঘুরতে যদি হয়ই তাহলে এবার ভাবছি কিছু অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণ পছন্দ করবো। অনেক দিন এর সখ এটা আমার এমণ কোনো জায়গা তোমার জানা আছে যেখানে তেমন কোনো জনবসতি নেই , সুমদ্র গাছ পালা প্রাকিতিক দৃশ্য, সেখানে আমি এবং আমার ছেলে রাত কাটাব। সেখান কার সূন্দর্য উপভোগ করবো। ম্যানেজার বাবু বেশ চিন্তায় পড়ে যায় , কিছুক্ষন ভেবে বলে - জি ম্যাডাম , এমন জায়গা আমার জানা শুনো আছে , কিন্তু এমন ধরনের ভ্রমণ এ খুব রিস্ক থাকে , আমি কিভাবে আপনাদের একা ছাড়তে পাড়ি। আর স্যার জানলে আমার চাকরি ই না শুধু আমায় ফাঁসি তে ঝোলাবে। সরি ম্যাডাম আমি এই কাজ করতে পারবো না। - বিকাশ বাবু আপনি শুধু শুধু চিন্তা করছেন , এমন কিছুই হবে না। আর আপনি যদি আমার অনুরোধ টা রাখেন তাহলে আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেবো বলে বোঝাতে পারবো না। আপনার প্রতি চিরো কৃতজ্ঞ থাকবো। স্যার কে আমি ম্যানেজ করে নেব। ম্যানেজার বিকাশ বাবু শেষ মেষ নিমরাজি হয়ে যায় । তিনি বলেন - দেখুন ম্যাডাম আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ৫৭২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত, যেগুলির মধ্যে মাত্র ৩৮টি জনবসতিপূর্ণ। আর বাকি গুলি সরকার কর্তিপক্ষ দ্বারা সংরক্ষিত তথা প্রবেশ নিষিদ্ধ। জারোয়া ও সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী র দ্বীপ গুলিতে তো আরো কঠোর ভাবে সাধারণ মানুষ বা পর্যটন দের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।গ্রেট আন্দামান উত্তর সেন্টিনেলী দ্বীপপুঞ্জে এই জনগোষ্ঠীর বাস। বহিরাগতদের ওপর আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য তারা বিশেষভাবে পরিচিত। সেন্টিনেলী জাতি মূলত একটি শিকারী-নির্ভর জাতি। তারা তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ শিকার, মাছ ধরা, এবং বন্য লতাপাতার মাধ্যমে সংগ্রহ করে। এখন পর্যন্ত তাদের মাঝে কৃষিকাজ করা বা আগুন ব্যবহারে প্রমাণ পাওয়া যায় না। কিন্তু এছাড়াও আরো কিছু দ্বীপ আছে যেখানে কোনো জনবসতি পূর্ণ নেই , শুধুই গাছ পালা আর পাখি দের রাজ। তবে তেমন কোনো পশু ও দেখতে পাওয়া যায় না। সেই সমস্ত কিছু কিছু কয়েকটা দ্বীপ এ সরকার দ্বারা কিছু সেখান কার অধিবাসী দের প্রবেশ এর অধিকার দিয়েছে তারা মধু ও কাঠ সংগ্রহ করে তাদের জীবিকা নির্বাহের কাজ করার জন্য তবে এই ধরনের দ্বীপ গুলি তে রাতে পুরো নির্জন থাকে , সেখানের সুন্দর্যের ও আপনাদের অন্য জনবসতি হিন প্রবেশ নিষিদ্ধ দ্বীপ গুলোর মতোই হবে। - আচ্ছা ঠিক আছে , তাই ব্যাবস্থা করে দিন । আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেবো । - কোনো ব্যাপার না , আজ রেস্ট করুন ততো ক্ষন এ আমি আপনাদের ভ্রমণ এর ব্যবস্থা করছি। কাল আপনাদের নিয়ে যাবো , আর সঙ্গে নেবো একটা টেন্ট , পর্যাপ্ত খাবার , safty জ্যাকেট এর ব্যাবস্থা করছি। আর ওই সমস্ত দ্বীপ এ সিগনাল তেমন আসে না তাই আপনাদের টেন্ট এর সামনে একটি সিগনাল বুস্টার লাগিয়ে দেবো। যাতে করে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে আমায় কল করতে পারেন। কিন্তু আমার একটাই অনুরোধ , জঙ্গলে বেশি ভেতরে যাবেন না । সমুদ্রে বেশি ভেতরে নামবেন না । সব সময় টেন্ট এর আসে পাশেই থাকবেন। আমার লোক এখানে হোটেল এ সব সময় পস্তুত থাকবে আপনাদের সাহায্য করার জন্য। কোনো সমস্যার সমুখিন হলে আমায় কল করবেন। আমি পুরো ২৪ ঘণ্টা পর আপনাদের নিতে যাবো । - কথা দিলাম , আপনার অনুরোধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো , আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন। আরো কিছুক্ষন কথাবার্তা বলে ম্যানেজার প্রস্থান করে । (চলবে).
Parent