সাধারণ পরিবার থেকে পতিতা পরিবার হয়ে ওঠার উপাখ্যান। - অধ্যায় ১
বিশেষ ঘোষণা গল্পের প্রতিটি চরিত্র কাল্পনিক গল্পে ব্যবহৃত স্থান-কাল-পাত্রের কোন অস্তিত্ব নেই যদি অস্তিত্ব পাওয়া যায় তাহলে তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ও শুধুমাত্র গল্প লেখার জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে সম্পূর্ণ গল্পটি কাল্পনিক।
পার্ট ১
অবতরণিকা:
ঘটনার সূত্রপাত বহু বছর আগে তখন আমার বয়স মাত্র বছর এবং আমার মা (মিতালী) কম বেশি বয়স ৩৪ বছর আমার কাকিমার (সোমা) কম বেশি বয়স ৩০ বছর।
আমাদের যৌথ পরিবার ছিল আমি, মা, বাবা, দুই দাদা, কাকু, ও কাকিমা। আমাদের গ্রামে বেশ কিছুটা জমি ছিল তাতে চাষাবাদ করেই কোনরকম সংসার চলতো গ্রামের পাশেই ছিল নদী প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় গ্রামে জল ঢুকে যেত কিন্তু আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকার জন্য পাকা বাড়ি করার সামর্থ্য ছিল না আমাদের গ্রামের কারোরই। আমাদের গ্রামে প্রায় ৫০ টা পরিবার বসবাস করত প্রত্যেকের জীবিকা ছিল চাষাবাদ ও মাছ ধরা গ্রামের অনেকেই মাছ ধরে নিয়ে গিয়ে শহরে বিক্রি করে আসতো আমাদের গ্রামের থেকে শহরের দূরত্ব ছিল চার ঘণ্টার আশেপাশে অন্য কোন গ্রাম ছিল না তারফলে আমাদের জীবনজীবিকা ছিল অত্যন্ত সাধারণ আশেপাশে কোন সুযোগ-সুবিধা ছিল না কোন সময় কেউ অসুস্থ হলে দূরে শহরে নিয়ে যেতে হতো তাও নদী পেরিয়ে পড়াশোনার জন্য কলেজও ছিল না আমাদের গ্রামে।
গ্রামে কেউ অসুস্থ হলে গ্রামের কবিরাজ নির্মল কাকু লতাপাতা শিকর বাকর দিয়ে চিকিৎসা করতেন। আমাদের গ্রামে খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যেত।
বিয়ের পরের বছর আমার মা দুই যমজ সন্তানের (দাদা) জন্ম দেন এবং তার কয়েক বছর পর আমার জন্য হয় কিন্তু কাকিমার কোন সন্তান হয়নি অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখানোর পরেও কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি কাকিমা আমাদেরকে সন্তানের মত স্নেহ করে। আগেই বলেছি গ্রামে খুব অল্পদিনেই বিয়ে হয়ে যায়, যথারীতি আমার দুই দাদার অল্প বয়সেই বিয়ে দেওয়া হয় বাড়িতে দুই বৌদি আসে আমি বাড়ির ছোট হবার জন্য সকলের আদরের ছিলাম দাদার বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই কাকা মারা যায় সংসারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব এসে পড়ে বাবা এবং দাদাদের উপর আগেই বলেছি গ্রামে প্রত্যেকেই চাষবাস ও নদীতে মাছ ধরে জীবন ধারণ করত।
যাই হোক মূল ঘটনায় প্রবেশ করি সে বছর বর্ষাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবার জন্য নদীর বাঁধ ভেঙে যায় সেই সময় বাবা দুই দাদার সাথে বাঁধের পাশের জমিতে চাষ কাজ করছিল হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় গ্রামের বাড়ি সবই জলের তলায় চলে যায় প্রায় দুই দিন যাবত বহু খোঁজাখুঁজির পরেও বাবা এবং দুই দাদা কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি গ্রামের অন্যান্যরা সান্তনা দিয়ে বলেছিল হয়তো নদীর স্রোতে দূরে কোথাও ভেসে গেছে ফিরে আসবে কিন্তু মাস খানেক কেটে যাবার পরেও ওরা ফিরে আসে না যথারীতি বন্যার ফলে চাষ জমি নষ্ট হয়ে গেছে সমস্ত জমি জলের নিচে তলিয়ে গেছে, যথারীতি খাবারের আকাল শুরু হয়। মা ও কাকিমা দুজনে খাবার যোগাড় করার জন্য চেষ্টা করতে থাকে খুব কষ্ট করেই এইভাবে দুই মাস কেটে গেল হঠাৎ একদিন খবর এলো বৌদিদের বাবা মা দুজনেই খুব অসুস্থ (দাদারা যেহেতু জমজ ছিলেন সেই জন্য দুই জমজ বোনের সাথে দাদাদের বিয়ে হয়েছিল) খবর পেয়ে আমরা সবাই হাজির হলাম বৌদিদের বাড়ি কবিরাজ কাকুর সাথে সেদিন রাত্রেই বৌদিদের বাবা মারা গেলেন পরের দিন সকালে মারা গেলেন বৌদির মা যথারীতি দুজনের দেহ সৎকার করার পর আমরা ওখানেই বেশ কিছুদিন থেকে গেলাম, পরিবারটা সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে কারণ জমি জায়গা সবই জলের নিচে তলিয়ে গেছে তাই চাষাবাদ করার মত পরিস্থিতি নেই আমার মামার বাড়ি তরফেও কেউ আর বেঁচে নেই।
গ্রামের মোড়ল ছিল কবিরাজ কাকু একদিন সন্ধ্যাবেলায় কবিরাজ কাকু কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এলেন এবং মা কাকিমার সঙ্গে আলোচনা করতে বসলেন মা কাকিমা মোড়ল মশাইকে বললেন মোড়ল মশাই একটা কিছু ব্যবস্থা করে দিন যাতে আমরা দু'মুঠো খেয়ে বাঁচতে পারি মোড়ল ওরফে কবিরাজ বললেন ঠিক আছে দেখছি কি করা যায় আমরা জানতাম না মোড়ল মশাই আমাদের বাড়িটা দখল করার পরিকল্পনা করেছে কয়েকদিন পর মোড়ল মশাই আরো দুজনকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাড়ি এলেন এবং বললেন তোমাদের জন্য একটা কাজের ব্যবস্থা করেছি শহরে তোমরা শহরে গিয়ে কাজ করতে পারবে মা কাকিমা খুবই খুশি বললেন নিশ্চয়ই পারব কিন্তু ছেলেটা এবং দুই বৌমাকে কোথায় রেখে যাব ওদেরকে তো সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে না হলে তো সম্ভব নয় মোড়ল মশাই বললেন ওসব নিয়ে মাকে বললেন মিতালী ওসব নিয়ে তুমি চিন্তা করো না তোমরা তৈরি থেকো আগামীকাল তোমাদেরকে নিয়ে যাব শহরে বাড়িঘর না হয় আমরাই দেখব তোমাদের ফিরে আসা পর্যন্ত।
মা কাকিমা দুজনেই জিজ্ঞাসা করল কি কাজ কোথায় কাজ করতে হবে মোড়ল মশাই বললেন একটা বাড়িতে কাজ করতে হবে তোমাদেরকে থাকা খাওয়া বাদেও মাসে কিছু টাকা দেবে মা কাকিমা দুজনে মিলে আলোচনা করলো বৌদিদের সাথেও আলোচনা করলো তারপর মোড়ল মশাই কে বলল ঠিক আছে মোড়ল মশাই আমরা আগামীকাল সকাল সকাল তৈরি হয়ে থাকবো আপনি আমাদেরকে কাজের জায়গায় নিয়ে যাবেন। তখনও আমরা যে কেউই জানিনা আমাদের সঙ্গে কি হতে চলেছে! কি কি ঘটবে ভবিষ্যতে ?
চলবে?
** যদি কিছু ভুল ত্রুটি হয় নিজ গুনে ক্ষমা করবেন প্রথমবার লিখছি তাই ভুলত্রুটি হবার সম্ভাবনা প্রচুর।**
প্রত্যেক পাঠক পাঠিকার মন্তব্য জানতে চাই।
খুব নোংরা কমেন্ট চাই।